একটি স্বপ্নের মৃত্যু অথবা ঈর্ষার জয়

ঈর্ষা (জানুয়ারী ২০১৩)

ফিদাতো মিশকা
  • ২৬
  • ৬৯
বশির মোল্লা চেয়ারে বসে আছেন । তিনি চোখ বন্ধ করে রেখেছেন । তাঁর ডান হাতে তসবিহ রয়েছে । তিনি মনে মনে তসবিহ জপছেন । বশির মোল্লা রতনপুর ইউনিয়নের চেয়ারমান । তিনবার তিনি বিপুল ভোটে রতনপুরের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। । চেয়ারম্যান মেম্বারদের প্রতি সাধারন মানুষের ভালবাসা থাকে না । এক ধরণের ঘৃণা থাকে । সাধারন মানুষ সবসময় একটা পা সামনে বাড়িয়ে রাখে , যাতে সুযোগ পেলে এইসব চেয়ারম্যান মেম্বারদের পাচায় লাথি বসাতে পারে । তবে তার ক্ষেত্রে এর বাতিক্রম হয়েছে । তাকে তাঁর ইউনিয়নের জনগণ পছন্দ করেছে । তার সামনে তাঁর চাচাতো ভাই রজব মোল্লা বসে আছে । রজবের চোখেমুখে একধরনের ভয় কাজ করছে । বশির মোল্লা তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন । তিনি তাকে ছোটখাটো ব্যাপারে তাকে সাধারনত ডাকেন না । ভয়ংকর কিছু ঘটেছে । সে তা ধারনা করতে পারছে না ।বশির মোল্লা চুপ করে বসে আছেন । রজব অপেক্ষা করছে কবে তিনি চোখ খুলবেন ।
আধঘণ্টা পর বশির মোল্লা চোখ খুললেন । রজবকে কাছে ডেকে নিলেন । তারপর রজবের ডান গালে ঠাস করে একটা চড় বসালেন ।
বশির মোল্লা বললেন,

- চড়টা কি হালকা হয়েছে । হালকা হলে সমস্যা নাই । সকাল বেলাত হালকা নাস্তা করাই উচিত । সকালে ভারী খাবার পেটে হজম হয় না । আমাশয় হয় । বুঝেছ ।

- জী

- জী জী করবা না , বিরক্ত লাগে ।গালে কেন চড় মারলাম । জানতে ইচ্ছে হচ্ছে । সমস্যা নাই । জানাব । তোমার ইচ্ছা পোক্ত হউক । কাঁচা ইচ্ছায় বলব না । বুঝেছ ।

- জী বুঝেছি ।

- কথার মাঝখানে কথা বলবা না । তুমি ভালো করেই জানো আমি কড়া মেজাজের মানুষ । তাঁর উপর মানুষ সুবিধার না । চেয়ারম্যানগিরি করা জটিল কাজ । তাদের তোষামোদি করা আরো জটিল কাজ । প্রতেক মানুষেরই উচিত তাঁর কাজ ঠিকমতো করা । বুঝেছ । কিন্তু তুমি তোমার কাজ ঠিকমত করছ না । তোমার হাতে ইউনিয়ন ছেড়ে দিয়ে আমি বসে বসে তসবিহ পড়ি দেখে তুমি কি ভেবেছ আমি দুনিয়ার কোন খুঁজ খবর রাখি না ।

- ভাইজান , আসলে আমি কি ভুল করেছি । বুঝতে পারছি না । প্রয়োজনে আপনি আমার বা গালেও ঠাস করে আরেকটা চড় বসান । তাও তাড়াতাড়ি বলেন টেনশনে আমার প্যান্ট ভিজে যাচ্ছে ।

- চেয়ারম্যানদের জনগনের সব খবর রাখতে হয় । তাদের ঘরে বসে থাকলেও বাইরের খবর জানতে হয় । চেয়ারম্যান হওয়া সহজ ব্যাপার না । গতবছর স্কুলের মাঠে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমি কি করেছিলাম । তুমি ভুলে গেছ ।

- জ্জি না ভুলি নাই । আপনি করিম মাঝির পুলার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন ।

- তোমার চোখ জহুরীর চোখ না । আমি যা বুঝি তুমি তা বুঝ না । আসল ঘটনা হল সেদিন স্কুলের মাঠে যাত্রা হয়েছিল । পুরো ইউনিয়নের লোক এসেছিল । আমি সবার সামনে এই ঘোষণা দিয়েছিলাম । সবাই শুনেছে । খবরটা পুরো ইউনিয়নে বাতাসের সাথে চড়িয়ে পড়েছিল । সবাই বশির চেয়ারমানের দয়া দেখে খুশি হয়েছিল । অথচ আমি করিম মাঝির ছেলেকে মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়েছি । ওইসময় দুই হাজার টাকায় যে কাজ হয়েছে । সেটা নির্বাচনের সময় দশ হাজারে হবে না । চেয়ারম্যানদের হাতের টাকা খরচ করতে হয় টিপে টিপে তারা অকারনে কিছু করেন না । তাদের এক পয়সা খরচের পিছনে অর্থ থাকে বুঝেছ।

-ভাইজান বুঝেছি কিন্তু আপনি আমাকে কেন ডেকে পাঠিয়েছেন ?

- উতলা হচ্ছ কেন! বলতেছি । কিছু ঘটনা থাকে যা ভুমিকা না করে বলা যায় না ।তুমি রাশেদের খুঁজ খবর কিছু রেখেছ । রাখো নাই । সে বিদেশ থেকে ফিরেছে । সবার ঘরে গিয়ে সুখ দুঃখের খবর নিচ্ছে । বিষয়টি বুঝতে পেড়েছ ।

- হালকা হালকা বুঝতে পারছি । পুরোটা বুঝি নাই । বুঝাইয়া বলেন ।

- রাশেদ পরিচিতি তৈরি করছে । সে জনগণের কাছকাছি যেতে চাচ্ছে । তাদের সুখ দুঃখের অংশীদার হতে চাচ্ছে । তুমি না বুঝলেও আমি বুঝতে পেরেছি । সে ইলেকশনে দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিচ্ছে । এইবার বুঝেছো ।

- বুঝেছি । ব্যাবস্থা নিতে হবে ।

- কি কি ব্যাবস্থা নিতে হবে বুঝ নাই । ওর চব্বিশ ঘণ্টার খবর নিতে হবে । কই যায় , কি করে । সব । চেয়ারম্যান বশির মোল্লা তিনবার বিপুল ভোটে রতনপুরের চেয়ারম্যান হয়েছে । এইবারও হবে ।

কথা শেষ করে বশির মোল্লা রজবকে সামনে দেখে নিলেন । রজবের বাম গালে একটা চড় বসালেন । অতঃপর বললেন ,
তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি তুমি কি বিষয়টা বুঝতে পারো । অবশ্য বুদ্ধির দিক দিয়ে তুমি নিছু প্রজাতির প্রাণী । তোমাকে আরেকটা চড় দিলাম যাতে তুমি আর নিজের দায়িত্ব না ভুল । আর শুধু এক গালে মারলে অন্য গাল রাগ করতে পারে । তুমি এইবার বিদেয় হও। তোমার চেহারা বেশিক্ষন দেখব না । কারো চেহারার দিকে বেশিক্ষন তাকালে মায়া ধরে যায় । মায়া ভয়ানক জিনিস, মায়ায় মৃত্যু ।

রজবকে বিদায় করে দিয়ে বশির মোল্লা ঘরের দিকে চলে আসলেন । বশির মোল্লার বউ মনুয়ারা বেগম ভিতরে অপেক্ষা করছেন । বশির মোল্লা সকাল বেলা বউয়ের হাতের একটা পান খান । ঠুকঠাক কথা বলেন ।বশির মোল্লা যতক্ষন বউয়ের পাশে থাকেন । বউকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় । উনার মতো বউদের আস্কারা দিতে নাই । আস্কারা দিলে তারা মাথার উপর উঠে নাছে । বশির মোল্লা , মনুয়ারা বেগমকে বললেন,

- পানে জর্দা বেশি দিয়েছ কেন । আমি জর্দা বেশি খাই না, ব্যাপারটা তুমি জানো না ।

- আমি তো জর্দা বেশি দেই নাই প্রতেকদিন যা দেই , তাই দিয়েছি ।

-গলা উঁচু করে কথা বলছ কেন । মেয়ে মানুষদের গলা উঁচায়ে কথা বলা আমার পছন্দ না । আমি এখন কিছু কথা বলব চুপ করে শুনবা । ঠিক আছে কথার মাঝখানে কথা বলবা না । ঠিক আছে ।

- জি বলেন

- আমি সিধান্ত নিয়েছি একটি নিকাহ করব । তোমাকে দিয়ে আমার পুষাচ্ছে না । আমি পানে বেশি জর্দা দেওয়া মহিলার সাথে সংসার করব না ।

- আপনের মাথা কি খারাপ হয়ে যাচ্ছে । ঘরে জোয়ান মেয়ে তাঁর বিয়ে দেওয়ার খুঁজ নাই , নিজের বিয়ে করার খায়েশ হয়েছে ।

-চুপ করে থাকো । কথার মাঝখানে কথা বলতে নিষেধ করেছি । আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি বিবাহ করবই। তোমার সতীনের ঘর করার ইচ্ছে না থাকলে বিদেয় হও । তোমাকে আমি ফকিরের ঘর থেকে তুলে রাজরানী করেছি । রাজরানী হিসেবে না থাকতে চাইলে ফকিরনী হয়ে থাকো । আমার ইউনিয়নে ভিক্ষা করার সার্টিফিকেট আমি তোমাকে দিয়ে দেব । দিগদারি করবা না ।

মনুয়ারা বেগম কাদতে শুরু করলেন ,বশির মোল্লা বললেন
-জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ আল্লাহর ইচ্ছেয় হয় । এগুলোর উপর মানুষের নিয়ন্ত্রন থাকে না । আমাদের নবী করীম (স) চারটি বিবাহ করেছেন । আমিও চারটা বিয়ে করতে পারতাম । তোমাকে চারটা সতিন উপহার দিতে পারতাম । সেখানে আমি একটি দিয়েছি । তোমার তো খুশি হওয়ার কথা । তুমি কাদতেছ কেন । তুমি আমার সামনে সাপের মতো ফোঁসফোঁস করে কাদবা না । মেয়ে মানুষের মায়াকান্না আমার পছন্দ না । মায়াকান্নায় আমার হৃদয় গলবে না । চেয়ারম্যানদের হৃদয় পাথরের তৈরি সহজে গলে না ।

- আপনি নিকাহ করলে আমি বিষ খাব । আত্মহত্যা করব । আত্মহত্যা করার আগে চিরকুটে আপনার নাম্ লিখে যাব ।

- আমার সাথে চু কুতকুত খেলবা না । আমি চু কুতকুত খেলার মানুষ না ।তুমি ২২ বছরের সংসার জীবনে যতবার মরতে ছেয়েছ । এতদিনে তোমার দুইশ কবর হয়ে যেত। তুমি এবার বিদেয় হও । তোমার গা থেকে গোবরের গন্ধ আসছে । গোবরের গন্ধওয়ালা মেয়ে মানুষের সাথে আমি সংসার করব না ।

মনুয়ারা বেগম সাপের মতো ফুঁসতে ফুঁসতে বের হয়ে গেলেন । তিনি এখন কাচের গ্লাস ভাঙবেন । ৫ টি গ্লাস ভাঙলে তাঁর রাগ কমবে । ৫ টার কমে কমবে না ।
বশির মোল্লা বিছানায় শুয়ে আছেন । বিছানায় শুয়ে থাকলে তিনি কঠিন চিন্তা করেন । তিনি ধাধার উত্তর খুঁজার চেষ্টা করেন । এই মুহূর্তে তিনি একটা কঠিন ধাধার সমাধান করা চেষ্টা করছেন । ছাগল ,পান, আর বাঘকে নদী পার করতে হবে , নৌকা একটা এবং একবারে একটার বেশী নেওয়া যাবে না । বাঘ নিয়ে গেলে ছাগলে পান খেয়ে ফেলবে , পান নিয়ে গেলে বাঘে ছাগল খেয়ে ফেলবে । বশির মোল্লা অথৈ সাগরে পড়ে গেছেন । তিনি কিভাবে এদের পার করবেন বুঝতে পারছেন না । তিনি দ্রুত ডুবে যাচ্ছেন চিন্তা থেকে চিন্তার অতলে ।


2
বশির মোল্লা বারান্ধায় চেয়ারে বসে আছেন । রাতের বেলা খাওয়া দাওয়ার পর তিনি বারান্দায় চুপ করে খানিকক্ষণ বসে থাকেন । আকাশে জোৎস্না থাকলে হ্যাঁ করে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। আর অন্ধকার রাতগুলোতে তিনি অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যান । মানুষ জন্মায় অন্ধকারে , বেঁচে থাকে আলোতে আবার মৃত্যুর পর অন্ধকারে চলে যায় । জীবন হচ্ছে আলো অন্ধকারের খেলা । বশির মোল্লা অন্ধকারের মধ্যে একটা ছায়া দেখতে পেলেন । অন্ধকারের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়াটি হচ্ছে রেশমি । বশির মোল্লার একমাত্র মেয়ে। একটা প্রাইভেট মেডিকেলে পড়ে । রেশমি সচরাচর বাবার সামনে আসতে চায় না । খুব প্রয়োজন হলে বাবার আশে পাশে দাঁড়িয়ে থাকে । বশির মোল্লা ডেকে নিলে তারপর যায় । বশির মোল্লা মেয়েকে কাছে দেখে নিলেন । তারপর বললেন

-মারে তুই অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছিস । কিছু বলবি। বললে বলে ঘরে চলে যা । অন্ধকার রাতে মেয়ে মানুষদের বাইরে থাকা উচিত না । দুষ্ট জীনের নজরে পড়ে ।

-বাবা একটা কথা বলি । রাগ করনা আচ্ছা ।

-বলরে মা একটা কেন একশটা কথা বল । তুই আমার একমাত্র মেয়ে তুই তো কথা বলবিই । তোর মুখ দিয়ে কথার খই ফুটবে। অথচ তুই তা না করে আমার থেকে একশ হাত দূরে থাকবি । মারে আমি না হয় তোর দুষ্ট সন্তান তাই বলে তুই আমার থেকে এতো দূরে দূরে থাকবি । সন্তান খারাপ হলে মা কি তাঁকে দূরে ঠেলে দেয় ।

-বাবা তুমি অনেক চালাক মানুষ । তোমার পাশে একটা পিঁপড়ে নিঃশ্বাস নিলে তুমি সেটা বুঝতে পারো । অথচ কাছের মানুষের কাছে এমন একটা ভাব ধরে থাকো যেন তোমার মতো সহজ সরল মানুষ এই পৃথিবীতে নাই।

-কথাটা ঠিক নারে মা । একজন বোকা মানুষ তিন বার চেয়ারম্যান হতে পারে না । আমি চালাক মানুষ ,শুধু চালাক না অনেক বড় মাপের চালাক । তবে একটা কথা সত্য মা অতি চালাকের গলায় দড়ি । আমার মনে হচ্ছে আমার গলায় দড়ি পড়বে । তবে কখন পড়বে বুঝতে পারছি না ।

-বাবা তুমি মাকে বলেছ, তুমি নাকি দ্বিতীয় বিয়ে করবে । অথচ আমার মনে হচ্ছে তুমি বিয়ে টিয়ে কিছু করবে না । তোমার এটা বলেছ যাতে মা কষ্ট পায়।

- তুই কি একটা ব্যাপার জানিস । তোর মা একজন অতিশয় ভালো মহিলা । এরকম একজনকে বউ হিসেবে পাওয়া বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার । একটা উদাহরন দেই তাহলে বুঝতে পারবি সে আমাকে কতটা ভালবাসে ।একবার আমার জ্বর হয়েছিল ।আমি দুই দিন কিছু খেতে পারিনি । ঐ দুই দিন সে না খেয়ে ছিল । জিজ্ঞেস করায় কি বলেছিল জানিস , আমি নিয়ত করেছি তুমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কিছু খাব না ।

- আর এরকম একজন মানুষকে তুমি এইরকম কষ্ট দিয়ে যাচ্ছো ।

- নারে মা আমি এতোটা খারাপ না । তুই বুঝতে পারছিস না সে আমাকে কতটা ভালবাসে । এই যে এখন কান্না কাটি করছে । কিছুক্ষণ পর যখন ঘুমাতে যাব তখন সে আমাকে কি বলবে জানিস । তুমি যদি সত্যিই নতুন বউ নিয়ে সুখি হও । তাহলে বিয়ে কর আমার বিয়েতে আপত্তি নাই । এই কথাটা বলতে তাঁর বুক ফেটে যাবে তবুও সে বলবে । একটা মানুষ কতটা ভালবাসলে এই রকম ত্যাগ করতে পারে । এবার বুঝেছিস তোর মা আমাকে কতটা ভালবাসে ।

-তাহলে বাবা তুমি এরকম করছ কেন ।

- মারে ২২ বছর আগে একটা সুন্দর মুখকে ঘরে বউ করে নিয়ে এসেছিলাম । তারপর সেই মুখটাকে ভালবেসে গেছি ।তাই মানুষটাকে বেশি আনন্দ দেওয়ার জন্য ছোটখাটো কষ্ট দিয়েছি । কষ্টের পর পাওয়া আনন্দ অমৃতের মতো । আজ কি করেছি জানিস , নতুন একটা লাল শাড়ি কিনে এনেছি । তাঁর হাতে লাল শাড়িটা দিয়ে বলেছি , গুছায়ে রাখ । বিবাহের কেনাকাটা শুরু করেছি । বিবাহ জটিল কাজ গুছায়ে করতে হয় । সে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আলমারিতে শাড়িটা রেখেছে ।মারে , বলত কালকে কত তারিখ ।

-হ্যাঁ বাবা , আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম । কাল ২৩ শে শ্রাবণ । তোমাদের বিবাহবার্ষিকী ।

-সবাই ভুললেও আমি ভুলি না । তোর মাও ভুলে নাই । এই দিনে প্রত্যেক বার আমি তাঁর সাথে খুব ভালো আচরণ করেছি । এইবার বিয়ের কথা বলেছি । এই জন্য সে বেশি রেগে আছে । আর ভেতরে ভেতরে কষ্ট পাচ্ছে ।

- কেন এমন করছ বাবা?


- কাল কি করব জানিস ।রাত ১২ টার সময় ঘুম থেকে ডেকে তুলে কি বলব জানিস , শাড়ি বের করে দাও ।আমি এখন বিয়ে করতে বের হবো । তোমার গা থেকে কাঁচা গোবরের গন্ধ বের হচ্ছে । রাস্তায় বের হয়ে যেদিকে খুশি সেদিকে চলে যাব ।তারপর যে বিয়ে করতে রাজি হবে তাঁকে বিয়ে করে নিয়ে আসব । তোর মা তা শুনে কষ্টে কাদতে কাদতে শাড়িটা বের করে দিবে। আমি বলব শাড়িটা পর । তোমাকে আরেক বার বিয়ে করব । তোর মা আনন্দে কাদতে কাদতে আমাকে জড়িয়ে ধরবে ।বুঝতে পেরেছিস ।

-হ্যাঁ বাবা । তোমাকে আমি না জেনে অনেক ভুল বুঝেছি । ক্ষমা করে দিও বাবা ।

- নারে মা তোর তো কোন দোষ নাই । এই পৃথিবীতে মানুষকে ভুল বোঝাটা খুবই সহজ , কিন্তু বোঝা খুবই কঠিন । তুই এতো দূরে বসেছিস কেন কাছে এসে বস । তোকে একটা গল্প শুনাই

রেশমি এগিয়ে যায় । বশির মোল্লা বলতে শুরু করেন ,

- মারে , মানুষের জীবন কতই বিচিত্র , তাই না ।আজ এই চেয়ারে বসে আছি । একদিন শুয়ে থাকব কবরে । এই অন্ধকারে এই চেয়ার হয়ে যাবে আমার স্মৃতি ।
মারে এই যে আমি বশির চেয়ারম্যান। সে তো জন্ম থেকে বশির চেয়ারম্যান না । আমি বড় হয়েছি এক এতিমখানায় । আমার বয়স যখন দুই বছর তখন আমার বাবা মারা যান । আমাকে নিয়ে আমার রূপবতী মা বিপদে পড়ে যান । আমি যখন পাঁচ বছর বয়সের বালক তখন মা আমাকে এতিমখানায় রেখে এক আমেরিকান ভদ্রলোককে বিয়ে করে আমেরিকা চলে যান । মাকে আমি দোষ দেই না । এই অবস্থায় তিনি যা করেছেন ভালো করেছেন । আমি বড় হতে থাকি এতিম খানায় । আমাকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন এই বাড়ির মালিক করীম মোল্লা । তিনি আমাকে নিজের সন্তানের মতো করে বড় করেছেন । স্নেহ দিয়েছেন । ভালবাসা দিয়েছেন ।মারে ভালবাসা বড় সংক্রামক । করীম মোল্লা এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন । তিনি তার স্বপ্ন পুরন করতে পারেন নি । তিনি মরার আগে আমাকে বলেছেন , বাবা বশির আমি রতনপুরের চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলাম পারি নাই । তুমি চেয়ারম্যান হবা । লোকজন বড় গলায় বলবে করীম মোল্লার ছেলে বশির চেয়ারম্যান ।

- বাবা আমার মনে হচ্ছে গল্পটা সত্য না । তুমি বানিয়ে বানিয়ে বলছ ।

- মারে জীবনের অনেক সত্যই বানানো মনে হয় । কিন্তু আমি কঠিন জীবনের ভিতরের দিয়ে গিয়েছি তাই আমার জন্য যা জীবন । তোর জন্য তা রুপকথা ।

- তাহলে বাবা তোমার সৎ চেয়ারম্যান হওয়ার কথা । কিন্তু তুমি তো সৎ না । সৎ ভাবে তুমি এতো টাকা উপার্জন করতে পারতে না । তুমি পেড়েছ। আমার মাঝে মঝে এতো কষ্ট লাগে যে তোমার পাপের টাকায় আমি ডাক্তার হচ্ছি ।

- মারে মানুষের জীবনটা একটা বড় রকমের ধাধা ।মানুষ এই ধাধা থেকে সহজে বের হতে পারে না । এখন আমি তোকে কিছু কথা বলব । তোর বিভ্রম কেটে যাবে । আমার মা আমেরিকায় থাকাকালীন সময়ে তার স্বামীর মৃত্যু হয় । তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক হন । তিনি তার মৃত্যুর আগে তার সম্পত্তি আমাকে দান করে যান । তার সেই টাকা দিয়ে আমি একটা আশ্রম করেছি । তোকে ডাক্তারি পড়াচ্ছি । ইউনিয়নের মানুষের উপকার করা । মারে এই সমাজে ভালো মানুষের বন্ধুর সংখ্যা কম । তাদের শত্রুর সংখ্যা বেশি ।তুই জানিস না আমি রাতের বেলা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সমস্যা সমাধান করি , তবে শর্ত দেই ,যদি কেউ আমার সাহায্য করার কথা কাউকে বলে । তবে তার বিপদ হবে
একটা ঘটনা বলি , কলিম উদ্দির মেয়েটা হঠাৎ করে প্রেগন্যান্ট হয়ে যায় । আমি কলিম উদ্দিকে টাকা পয়সা দিয়ে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেই । সেখানে তার মেয়ের আবরশন করাই । তারপর মেয়েটাকে ভালো জায়গায় বিয়ে দেই । এলাকায় থাকলে মেয়ের বদনাম হতো । অথচ রটিয়ে দিয়েছি , আমি কলিম কে গুম করে তার জমি দখল করেছি ।আমার শত্রুরা বুঝতে পেরেছে আমি খারাপ মানুষ । খারাপ মানুষদের লোকজন সমীহ করে চলে , ভালো মানুষদের করে না ।এবার ভেবেছি আর ইলেকশন করব না । রজবকে চেয়ারম্যান করব । পাগলটা জানে না আমি তাঁকে অনেক পছন্দ করি ।

- বাবা তুমি জীবনকে অনেক জটিল করে ভেবেছ । আর তাই আমাকে কখন বাবার আদরে কাছে টেনে নিতে পারনি ।

-মারে আমি তোকে অনেকবার আদর করে কাছে টেনে নিতে চেয়েছি ।আসলে জন্ম থেকে এক ধরণের যন্ত্রনায় মানুষ হয়েছি । তাই মনটা খানিকটা পাথরের মতো হয়ে গেছে । মারে আজ আয় না এই মন্দ বাবার বুকে একটু ।

রেশমি হাউমাউ করে কাদতে কাদতে তার বাবার বুকে যাপিয়ে পড়ে । বশির মোল্লার চোখ দিয়ে অশ্রু গরিয় পড়ে ,তিনি বলে যান

- মারে , তোর হাত মানুষকে সেবা করার হাত । আমার মৃত্যুর পর তুই আমার আশ্রম টা দেখবি । এবার কান্না থামিয়ে একটা গান শুনা । বাবার জন্য গান। দেখ তোর পাজি বাবাও জানে তুই অনেক ভালো গান গাইতে পারিস ।

রেশমি গান গাইতে শুরু করে । রেশমির কিন্নর কণ্ঠের বেদনা ঝরে পড়ে আকাশে বাতাসে । রেশমি গাচ্ছে ,
চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে ,উচলে পড়ে আলো,
ও রজনী গন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢালো




৩।
বশির মোল্লাকে চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে । তার হাত পা রশি দিয়ে বাঁধা রয়েছে । বশির মোল্লার প্রস্রাবের বেগ পেয়েছে। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারছেন না । তার আশেপাশে কেউ নেই । তাঁকে রাখা হয়েছে , গোয়াল ঘরের পাশে একটা খুপরি ঘরে । তার নাকে গোবরের গন্ধ আসছে । তার তীব্র অস্বস্তি হচ্ছে । তাঁকে এখানে কেন ধরে আনা হয়েছে ব্যাপারটা তিনি বুঝতে পারছেন না । বুঝতে পারলে ভালো হতো । কোন বিপদ সম্পর্কে আগে থেকে জানা থাকলে বিপদ মোকাবেলা করা সহজ হয় । তিনি মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছেন । ইয়া মুকাদ্দেমু, ইয়া মুকাদ্দেমু ।

রাত এখন কয়টা বাজে , তিন টা না চারটা । নাকি আর বেশি । তিনি রাতের আঁধার মেপে সময় বলতে পারেন । কিন্তু আজ বলতে পারছেন না । মানুষ বিপদে পড়লে তার সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায় । তিনি কি খুব বড় ধরণের বিপদে পড়েছেন ।

হঠাৎ করে ঘরের মধ্যে দুইজন লোক প্রবেশ করে । বশির মোল্লা একজনকে চিনতে পারলেন । রজব । আরেকটা মুখ অন্ধকারে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না । রজব বশির মোল্লার ডান গালে ঠাস করে একটা চড় মারল । তারপর বলতে লাগলো ,

-ভাইজান চড়টা কি বেশি জোরে হয়েছে । আসলে শত্রুপক্ষের সাথে আলোচনার পূর্বে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করতে হয় । আমি আপনাকে চড় মেরে পরিবেশ গরম করে নিয়েছি । আমি আপনার সাথে থেকে আপনার চড় ছাড়া আর কিছু পাই নাই । রাশেদ ভাই , মানুষ ভালো । আমাকে উপযুক্ত সম্মান করেছেন । আপনার মতো সৎ মানুষের সাথে থেকে আমার পোষাবে না । আপনার সাথে থেকে আমি ইউনিয়ন থেকে ১ কেজি গম সরাতে পারিনি । আমি মানুষ না । আপনি বোধহয় খেয়াল করেননি আমার চোখ বিড়ালের চোখের মতো , যেসব পুরুষের চোখ বিড়ালের মতো , তারা পাপকর্মে লিপ্ত হয় । আমি পাপকর্মে লিপ্ত হব এটা আমার ধর্ম , আমি এর বাইরে যেতে পারব না ।

পিছন থেকে রাশেদ মির্জা বলে উঠেন ,
চেয়ারম্যান সাব আপ্যায়নে সমস্যা হলে বলবেন । গরীবের বাড়িতে এসেছেন । ঠিকমতো নাস্তা না করালে আমার অসম্মান । কারন কয়দিন পর আমি রতনপুরের চেয়ারম্যান হচ্ছি । চেয়ারম্যান বাড়ির বদনাম হওয়া খারাপ্ লক্ষন ।

রজব মোল্লা বলে ,
রাশেদ ভাই রাত পুরায়ে যাচ্ছে । আপনি কাজটা শেষ করুন । লাশটা কুচিকুচি করতে সময় লাগবে । লাশটা কুচিকুচি করে কেটে নদীতে ভাসায়ে দিতে হবে। শত্রুকে বেশিক্ষিন বাচিয়ে রাখতে নেই ।

বশির চেয়ারমান চুপ করে বসে আছেন । তার অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু তিনি কিছু বলতে পারছেন না ।
রাশেদ বলে যায় ,
অবশ্যই করব রজব । এই লোকের জন্য আমার বাবা তিন বার চেয়ারম্যান হতে পারেনি ।লজ্জায় আমার বাবা আত্মহত্যা করেছেন ।আমি তাঁকে কুচিকুচি করে তার মাংস কুত্তা দিয় খাওয়াব ।

বশির মোল্লা হঠাৎ বলে উঠেন ,
রাশেদ খনার বচনে আছে ,
না পাইয়া পাইছ ধন
বাপে পুতে কীর্তন
। আমাকে মারতে চাইলে মেরে ফেল । কীর্তন করে সময় নষ্ট কর না । অযথা সময় নষ্ট আমার পছন্দ না ।

রাশেদ বশির মোল্লার বুকে একটা ধারালো ছুরি বসিয়ে দেয় । তীব্র রক্তক্ষরণ শুরু হয় । বশির মোল্লা বলতে থাকেন ,
রাশেদ তুমি আমাকে খুন করেছ , আমার তোমার উপর রাগ নাই না । জন্ম মৃত্যু আলাহর ইচ্ছায় হয় । আমার মৃত্যু তোমার হাতে লিখা ছিল । তাই হয়েছে । তবে তুমি রজবকে বিশ্বাস করে ভুল করছ ।বুঝতে পারছ না । আমি রজবে অনেক স্নেহ করতাম । বড় ভালবাসতাম ।তাই তাঁকে কখন সন্দেহ করিনি । আজ বুঝতে পারছি আমি দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষেছি । সে সাপ আজ আমাকে চোবল দিয়েছে ।সাপের ধর্ম চোবল দেওয়া । সে আমাকে চোবল দিয়েছে সে তোমাকে চোবল দিবে ।

রজব হাসতে হাসতে বলে ,
ভাইজান , শান্তিমতো ঘুমান । আপনার কথা বলা ঠিক না । পুলিশ আসার আগেই আপনি ঘুমান। আর উপরে যাওয়ার আগে রতনপুরের নতুন চেয়ারম্যান রজব মোল্লাকে দেখে যান ।। রাশেদ ভাই আপনি সাহসী মানুষ । তবে বোকা ।কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে ।
রাশেদ ফ্যালফ্যাল করে তাকাতে থাকে । তার চোখ সরু হয়ে আসে । সে কিছুই বুঝতে পারেনা । এক ধরণের ভয় তার মধ্যে জেগে উঠে । কয়েকজন লোক এসে রাশেদ কে রশি দিয়ে বেধে ফেলে ।

রজব বলে যায় ,
আমি আপনার নামে থানায় জিডি করে রেখেছিলাম । পুলিশে খবর দিয়ে রেখেছি । জায়গা মতো টাকা খাইয়ে রেখেছি । পুলিশ এসে বশির চেয়ারমানের খুনি হিসেবে আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে । বশির মোল্লার সময় ইউনিয়নের কাজকর্ম আমি দেখেছি, মানুষের আমার উপর আস্থা জন্মেছে । বশির মোল্লার মৃত্যুর সিম্পাথি কাজে লাগিয়ে আমি সহজে চেয়ারম্যান হয়ে যাব । আমি চিত্রনাট্য লিখেছি । আপনারা শুধুমাত্র অভিনয় করেছেন ।

রজব আর জোরে জোরে হেসে উঠে । বশির মোল্লার মাথাটা ঝিমঝিম করছে । তিনি অনেক কথা বলতে চাচ্ছেন । তার মায়ের কথা মনে পরেছে । তার মা সাদা কাপড় পড়ে দাঁড়িয়ে আছেন । তিনি তার মাকে স্পর্শ করার জন্য হাত বাড়িয়েছেন । তিনি উঠতে পারছেন না । তিনি তার ধাধার উত্তর খুজে পেয়েছেন ।প্রথমে ছাগলকে ওপাড়ে রেখে এসে খালি নৌকা এপারে আনতে হবে । পরের বার পান পাতা ঐপারে নিয়ে ছাগলকে ফেরত আনতে হবে । এবার বাঘকে ওপারে নিয়ে এসে ফিরে গিয়ে ছাগলকে ফেরত আনতে হবে । তার রেশমির কথা মনে পড়ছে । তাঁর মনুয়ারা বেগমের খুলে মাথা রাখতে ইচ্ছে হচ্ছে । কাছে থাকলে তিনি তাঁকে মৈমনসিং গীতিকা থেকে আবৃত্তি করে শুনাতেন,

শয্যায় পাইলে ব্যাথা শুইবা আমার বুকে।
বানাইয়া পানের খিলী তুইল্লা দিবাম মুখে।।
আমি খাইবাম তুমি খাইবা কন্যা থাকবাম দুইজনে।

বশির মোল্লার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে । পাখিদের ডানা জাপটানো শুরু হয়েছে । রাত পুড়িয়ে আসছে । বড় ক্লান্ত মৃত্যুর রাত।
উৎসর্গ – আমার বর্ষাকে যার বৃষ্টিতে আমি ভিজি
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
হোসেন মোশাররফ গল্প ভাল লেগেছে তবে কিছু কিছু খটকা চোখে পড়েছে যেমন গল্পের প্রথমে `পাচায় লাথি ' শব্দটি কি অন্যভাবে বলা যেত না, সামগ্রিক ভাবে বলা যায় গল্পের ধারা বাহিকতা সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি.....ধন্যবাদ আপনাকে ....
ভালো লাগেনি ৩০ জানুয়ারী, ২০১৩
পন্ডিত মাহী গল্প সুন্দর। বেশ সুন্দর। তবে একজন প্রিয় গল্পকারের ছায়া এতটাই যে মূল গল্পকারকে ভুলে গিয়েছিলাম। প্রভাব থাকা ভালো, তবে এত প্রভাব মনে হয় গল্পকারের ক্ষতিই করে। চেষ্টা থাকা উচিত নিজের মত করে নিজের ধারায় লেখা, তার পরেও অল্প-বিস্তর কারো প্রভাব আসলে সেটাও একদিন চলে যাবে। তবে কারো প্রভাবে লেখা হলে, অন্ধ অনুসরন করে লিখলে, সেই লেখায় বাহবা পাওয়া গেলেও সে লেখা স্থায়ী হয় না। আমার মনে হয় "প্রভাব" কথাটা শুনতেও খারাপ লাগে, লাগা উচিত। শুভকামনা।
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১৩
আসলে এই গল্পটা লিখতে গিয়ে আমি নিজে হুমায়ুনের মতো করে একটা গল্প লিখতে চেয়েছি । এজন্য আপনার এমনটা হয়েছে ।; আসলে আমরা হুমায়ুনের লেখা সবাই এতো পড়েছি , যে তার মতো করে কেউ লিখলে হজমে কষ্ট হয় । তবে প্রতেক লেখকের আলাদা ধারা হওয়া প্রয়োজন । তবে আমি অন্ধ অনুকরন করিনি , শুধু ধারা টা অনুসরন করেছি । আপনার মন্তব্য্য আমাকে ভিন্ন কিছু করতে উথসাহিথ করেছে । ধন্যবাদ প্রিয় । শুভকামনা রইল
ভালো লাগেনি ২৫ জানুয়ারী, ২০১৩
মো. ইকবাল হোসেন খুব ভাল একটা গল্প্ ।বশির মোল্লা এবং রজবের চিরত্রটা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পের জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩
আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয়
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩
জোনাকি খুবই ভাল মানের গল্প । আমার অনেক ভাল লেগেছে ।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩
আপনাকে ধন্যবাদ প্রিয়
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৩
নাজনীন পলি অনেক ভালো লাগলো , মন দিয়ে টাইপ করেননি বোঝা যায় কারণ অনেক শব্দ ভুল দেখাচ্ছে । আর আমি নিজেও খুব ভালো লিখি এমন না কিন্তু পাঠক হিসেবে বলব প্রত্যেক মানুষের একটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত । অনেক শুভ কামনা ।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য , প্রতেক কের সাত্তিক কথা আলাদা বাপার । আমি বরাবর টাইপ করতে অমনযগি
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৩
মিলন বনিক অনেক সুন্দর আর সুখপাঠ্য...হুমায়ুন স্যারের গন্ধ পেলাম...গল্পের ধারাবাহিকতা আর পাঠক ধরে রাখার এক জাদুকরী হাত বার বার গলেপর ভিতর টেনে নিয়ে যাচ্ছিল....অসাধারন মিশকা ভাই...অনেক অনেক শুভেচ্ছা.....প্রিয়তে নিলাম...
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ আপনার অনুপ্রেরণার জন্য , আপনাদের মত প্রিয় মানুষের অনুপ্রেরনার জন্যই মেডিকেল জীবনের ব্যাস্ততা আমাকে লিখতে আটকে রাখে না , আমার আর গল্প পড়তে আপনি ফেসবুকে আমার সাথে থাকুন । আর হুমায়ুনের লেখা এদেশের মানুশ কে দিনের পর দিন মুগ্ধ করে রেখেছে । তাই গল্প লেখায় তার হিউমার টা আমি অনুসরন করি । করে তৃপ্তি পাই
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০১৩
তাপসকিরণ রায় ভাই!গল্পটি দীর্ঘ মনে হোল –কিন্তু শেষ না করে পারলাম কৈ? আপনার নিপুণ সুন্দর চরিত্র নির্মাণ,ভাবনার বর্ণিল ভঙ্গিমা গল্পটির আলাদা রূপ টেনে এনেছে।এর প্রশংসা না করে পারছি না।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৩
আপনাকে ধন্যবাদ প্রিয় , গল্পটিকে একটি সার্থক অবস্থানে আনতে গিয়ে দীর্ঘ হয়েছে , ভাল থাকুন প্রিয়
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৩
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব বর্ণিল কথামালা| গল্প খুব ভালো লাগলো সাথে সাবের ভাইয়ের মন্তব্যটাও| অনেক অনেক শুভ কামনা জানবেন|
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ প্রিয় ,
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৩
আহমেদ সাবের আপনি যেই বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজেন, সেই বর্ষার প্রতি প্রথমেই অন্তরতম শ্রদ্ধা। গত মাসে আপনার গল্পে প্রিয় লেখকের ছায়া পড়া নিয়ে একটু ইঙ্গিত দিয়েছিলাম। এবারের গল্পে সেটা আরো প্রকট। তবে সেটা আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। কিছু শব্দের বানানে আপনার কিছু আঞ্চলিক প্রভাব আছে, যেমন পাচায়, খুঁজ, বুঝতে পেড়েছ, নিছু, মনুয়ারা, উচলে, যাপিয়ে, চোবল, ইত্যাদি এবং বেশ কিছু বানান ভুলও আছে। আশা করি লিখতে লিখতে সেটা কেটে যাবে। একজন মানুষকে তার অতি নিকটের মানুষই চিনতে পারে না (রেশমি , রজব) এবং তার ভিত্তিতেই শাস্তি দেয় (রজব - ঈর্ষার কারণে কিংবা লোভে পড়ে। কারণ সে বশির মোল্লার স্ক্রিপ্ট দেখে নি। )। অসাধারণ গল্প। আপনার আরো গল্পের প্রতীক্ষায় থাকলাম।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৩
সাবের ভাই আপনি অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়ে অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন । অভ্র দিয়ে টাইপ করলে কিছু বানান এমনিতে ভুল হয়ে যায় । দীর্ঘ দিন বাংলা না লেখার অভ্যাস ো আছে । ভালো থাকুন প্রিয় আশা রাখি আর গল্প নিয়ে আসব ।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৩
ফারজানা ইয়াসমিন দোলন খুব ভাল এবং বড় গল্প। ভাল লাগল।শেষ লাইনে "রাত পুড়িয়ে আসছে" সম্ভবত ফুরিয়ে আসছে হবে।ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৩
দীর্ঘ গল্প লিখতে গিয়ে বেশ কিছু বানান ভুল হয়েছে , আপনাকে ধন্যবাদ প্রিয় , ফেসবুকে আমার লেখা পড়ার আমন্ত্রন রইল
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৩

১৬ নভেম্বর - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪