আজ আকাশে ঘনঘটা টা একটু বেশি সময়ের অনেক আগে সনধ্যা নেমেছে। নিলা বাসায় একা রুমে আনমনা হয়ে কি যেন বাহিরে তাকিয়ে ভাবতে ছিল।হঠাৎ ফোনের টিংটং শবদে চমকে ওঠে ফোনটা কানে তুলতে একটা মিষটি আওয়াজ ভেসে এলো হ্যালো,নিলা অনেকক্ষণ পর বলল হ্যালো কাকে চাই ,ওপাশ থেকে ভেসে এলো তোমাকে,আমি অপু বলছি।অপু কে নিলা জানতে এ চাইলো।আজ নয় কাল বলব এ সময় এই বলে ফোনটা অপু রেখে দিল।নিলার কাছে বারবার মধুর আওয়াজ টি ভেসে আসতে লাগল আমি অপু।সারারাত ভালো ঘুম হয়নি নিলার।কিছু ভাল লাগছেনা তার কখণ সনধ্যা হবে এই ভেবে কেটে গেল দিন।আজ তার কলেজ ভালো লাগেনি,ভালো লাগেনি বনধুদের সাথে আডডা দিতে ।মায়ের সাথে তার আজ গলপ করতে ইচেছ করেনা। কি হয়েছে নিলার আজ,সেকি কারো জন্য অপেক্ষায় আছে কাল থেকে একটা মধুর আওয়াজ শুনবে বলে।বিকাল গড়িয়ে সনধ্যা নেমে এল। নিলা বার বার ফোনের দিকে তাকাচেছ কখণ ফোন আসে। হঠাৎ গতকাল যে সময় ফোন এসেছিল আজ ঠিক ওই সময় ফোন এলো। নিলা তরিগড়ি করে ফোন তুললো। ফোনের রিসিভার তুলতেই ওপাশ থেকে ভেষে এলো তোমাকে কখনও শাড়ী পড়তে দেখেনি,তোমাকে নীল শাড়ীতে অনেক ভালো লাগবে.তার সাথে নীল কাছের চুড়ি,নীল টিপ পড়লে। আজ ফোন রাখি বলল অপু,কাল আবার এই সময় ফোন করব। নিলা ওঠে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়াল আর ভাবতে লাগলো সে সুনদরী সবাই বলে কিনত্তু আজ প্রথম কেহ একজন বলেছে তাকে শাড়ীতে ভালো লাগবে।নিলা ভাবে আমি তো কখনও শাড়ি পড়িনি,সব আচার অনুষঠানে স্যালোয়ার কামিজ পড়েছি। হঠাৎ মনে পরে যায় তার একটাও শাড়ী নেই,আজ ই মাকে বলবো নীল একটা শাড়ী কিনে দিতে।এই বলে মায়ের রুমে যায়,মায়ের কাছে বায়না করে কাল ই তাকে একটা শাড়ী কিনে দিতেই হবে।মা অবাক হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে আর বলে কি হয়েছে তুই শাড়ী পড়বি!তুই অন্যদের শাড়ী পড়া দেখলে বলিস কি করে এতবড় একটা জিনিস সামলায় এই বলে মা হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খায় আমার মেয়েটা নিরঘাত পাগল হয়ে গেছে।নিলা কিছুই বুজেনা তার নীল শাড়ী,নীল চুড়ী,নীল টিপ চাই ই চাই কাল এই বলে নিলা নিজের রুমে চলে গেল।আজ নীলা সারারাত ধরে অপুর কথা ভেবেছে কে এই অপু,দেখতে কেমন!সে আবার তার কলপনার মানুসটি নয়তো,যে এতদিন মনে মনে তার রাজ্যে বসবাস করতো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যায়।আজ খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে যায় নিলার।দিন শুরু মানে কলেজ,শিক্ষকের লেকচার,বনধুদের সাথে আডডাবাঝি তার সাথে মায়ের বকুনি।তার পরও নিলা দারুন খুশি মা আজ নীল শাড়ী কিনে দিবে বলেছে।কলেজ থেকে ফিরে দেখে মা তার জন্য নীল শাড়ী ,নীল চুড়ি,নীল টিপ এনেছে।কি সুনদর শাড়ী,আচ৺লে ফুটে ওঠেছে শিলেপর কারুকাজ,চোখ ফেরাতে পারছেনা শাড়ি থেকে,কাচের চুড়ী গুলো ধারুন হয়েছে,নীলা মনেমনে ভাবে মায়ের পছনদ আছে বলতে হবে।আবার সনধ্যা নেমে এলো সেই ফোন করলো অপু।আজ ওরা দুজন অনেক কথা বলেছে কার কি ভলোলাগে,কি মনধলাগে এইসব কিনত্তু অপু কে তা আজ ও নিলাকে বলেনি। অনেকিদন ধরে কথা হচিছল দুজন এর সাথে।কিণত্তু নিলা জানেনা অপু কে ,আজ আর জানতে ইচেছ করেনা কেননা অপু যে হউক যেমন হউক সে যে ওর ভালবাসা হয়ে গেছে কবে থেকে।ওরা দুজন মিলে ঠিক করেছে ওদের যেদিন প্রথম দেখা হবে সেদিন ওরা বিয়ে করবে। ভালভাবে কেটে যাচিছল ওদের দিন।সারাক্ষন নিলার ফোনের জন্য অপেক্ষা করা ,বনধুদের সাথে আডডা দেয়া,ছোট দুই ভাই এর বায়না শোনা ,মায়ের কোলে মাথা রেখে গলপ করা। আজ অপু ফোন ধরেই বলে কাল আমরা বিয়ে করছি। আমি ঠিক দশটায় তোমার বাসার সামনে থাকবো এই বলে ফোন রেখে দেয় অপু। নিলা হতবাক হয়ে যায় পাগল ছেলে একটা সব কিছুতেই ওর পাগলা। এভাবে কি বিয়ে করা যায়! নিলা কি করবে বুজে ওটতে পারেনা ,ঠিক যেন একটা পাগলের পাললায় পরেছে।অপু কে তো ওর আর ফোন করার ওপায় ও নেই।অপু যে প্রতিদিন ল্যাণড ফোনে কথা বলে দোকান থেকে। নিজের ফোন নামবারটাও দেয়নি নিলাকে।রাত একটা বাজে নিলা কি করবে বুজে ওঠতে পারেনা ।হঠাৎ ল্যানড লাইনে ফোন আমি অপু বলছি, নিলাকে জানাই বিয়ের সব ব্যবষতা সে করে ফেলেছে ,নিলা তোমাকে কোন চিনতা করতে হবেনা ।অপু নিলা কে বলে তুমি শুধু সুনদর করে সাজবে আমার জন্য দুচোখ ভরে দেখব।আজ কের রাত নিলার কাছে আলাদা একটা রাত ।কাল সে তার অপু কে দেখতে পাবে যে দিনটার জন্য আজ এক বছর অপেক্ষা করেছে। মায়ের দেয়া নীল শাড়ী টা আজও পরেনি সেটা কাল পড়বে ।কেমনে লাগবে তাকে শাড়ীতে অপু দেখে কি চমকে যেয়ে তাকিয়ে থাকবে নাকি বলবে নিলা তোমাকে ভালো দেখাচেছনা এই নীল শাড়ীতে।আজকের রাত যেন ফুড়াতে চাচেছনা ।নিলা ভাবে কখন সকাল হবে কখন সে অপুকে দেখবে।হঠাৎ নিলা তার মায়ের কথা মনে পরে যায় মা কতো কষ৳ করে তাদের তিন ভাই বোনকে মানুষ করছে আর কেহ না জানলে নিলা তাতো জানে।সে মাকে সে এভাবে কষ৳ দিবে কিনতু অপুকে সে যে কথা দিয়েছে কাল ওরা বিয়ে করবে ,আবার ভাবে অপুতো বলেছে একদিন বাসায় এসে মাকে সব বলে মায়ের কাছ থেকে ওকে চেয়ে নিবে। নিলা তো আর কাল সবাইকে ছেড়ে যাচেছনা শুধু ওরা বিয়েটা করবে।আজ আর নিলা দুচোখ এর পাতা এক করতে পারেনি।পূব আকাশে সূয্যি মামা উকি দিয়েছে।আজ নিলা র সাথে পাখিদের কলরব একটু আগে ভাগে শুরু হয়েছে।সকাল হতেনা হতেই কলিং বেলটা বেজে ওঠলো।নিলা দরজা খুলতেই দেখে তাদের দাড়োয়ান একগুছা বেলি হাতে দিয়ে কিছু না বলে চলে যাচেছ।নিলা রুমে ফিরে দেখে মা তার রুমে ডাকতে এসেছে কলেজ যাবো কিনা এই বলে ।নিলা মাকে জড়িয়ে ধরে এ বলল আজ একটু পরে যাবো তুমি অফিসে চলে যাও ।মা নিলার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন।নিলা ভাবে মাকে একহাতে কতকিছু সামলাতে হয় ভাইদের ইসকুলে পৌছে দেয়া,ওদের আনা,অফিস সামলানো সব কাজ মাকে একাই করতে হয়।সকাল নয়টা বেজে গেল অপুরতো আসার সময় হয়ে এলো।নিলা তড়িগড়ি করে গোসল সেরে সাজতে বসলো ।নিলা শাড়ী পরল খুব সুনদর করে তারপর নিজের মত করে সাজল।ঘড়ির কাটা দশটার কাছাকাছি অপুর আসার সময় হয়ে এসেছে।নিলা আয়নার সামনে দাড়াল একি নিলাতো আজ নিজেই চিনতে পারছেনা নিজেকে।হঠাৎ ফোন বেজে ওটলো ।নিলা রিসিভার ওলতে ওপাশ থেকে কে জেন বললো নিলা।এই তো অপু নয়।নিলা জানতো চাইলো কে,নিলা আমি সোহাগ ,তুই একবার ইবনেসিনা হাসপাতালে আয় যত তাড়াতাড়ি সমভব।নিলা তড়িগড়ি করে হাসপাতালে পৌছে গেল যেয়ে দেখে ওর সব বনদুরা জটলা পাকিয়ে কি যেন দেখছে।নিথর একটা দেহ পরে আছে হাসিবুর রহমান(অপু)যে ওর অপু।অপু ওর ই কলেজে পড়ে ।এই সেই অপু যার সাথে আজ ওর বিয়ে হবার কথা।নিলা আজ সেজেছে যে অপু দেখবে বলে।সেই অপু আজ আর পৃথিবীতে নেই।নিলাকে দেখানো হলনা অপুকে শাড়ী পরে।সমাজ সংসার কেহ জানুক না জানুক নিলাতো জানে অপু তার বর ।অপু আজ নেই,কিনতু অপুর ভালবাসা তার কাছে আছে,থাকবে চিরদিন।নিলা কাউকে কিছু না বলে বাসাই ফিরে এলো।নিলার দুচোখ বেয়ে শুধু জল গড়িয়ে পরতে লাগল।কি হবার ছিল,কি হয়ে গেল।নিলা ঠিক যেন পাথর হয়ে গেছে আজ।বাসাই ফিরে সে তার নীল শাড়ীটা আগুন পুড়িয়ে ফেলল।এই নীল শাড়ী তার অপুকে কেড়ে নিয়েছে,কেড়ে নিয়েছে তার ভালবাসার মানুষটাকে।কেউ আর ফোন করে বলবেনা নিলা আমি তোমাকে ভালবাসি,খুব ভালবাসি।পরের দিন নিলা অপুর সমাধির কাছে এসেছে।“আজ নিলা নীল শাড়ী পরেনি,আজ পড়েছে নীলা সাদা থান কাপড়”।অজোর ধারাই কাদঁতে লাগল নিলা অপুর সমাধির পাশে বসে আর বিরবির করে পাগলের মতো বলতে লাগল অপু তুমি ফিরে এসো আমি আর কোনদিন নীল শাড়ী পড়বনা।
০৮ আগষ্ট - ২০১২
গল্প/কবিতা:
৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪