সুহেলী

রমণী (ফেব্রুয়ারী ২০১৮)

সুমন আফ্রী
ধ্যাত! ভাল্লাগে না আর!
কেনো রে? কি হলো আবার?
কি হয়নি সেটা বল? আচ্ছা মানুষরে বয়স কি ফ্রেমে বেঁধে রাখা যায়?
সেটা কি করে সম্ভব? বিজ্ঞানীরা তো আর কম চেষ্টা করে নি!
ঃ তাহলে এখন আমাকে বল তো একজন মানুষ কত বড় হলে বিয়ের উপযুক্ত হয়?
ঃ দাঁড়া! দাঁড়া! কীসের একটা গন্ধ পাচ্ছি! মানে তুই কি পড়াশোনা শেষ না করেই বিয়ে করতে চাচ্ছিস?
ঃ দেখ আদৃতা তোর এই সব অতিরিক্ত কথা কিন্তু আমার একদম ভালো লাগে না।
ঃ আরে জীবনটা কেবল শুরু । লাইফটা ইনজয় কর। দরকার হলে আমার মতো কয়েকটা প্রমে কর। চাইলে লিটনের ফ্ল্যাটওে যেতে পারিস।
ঃ তোর এই কথা শুনে কি মনে হচ্ছে জানিস? মনে হচ্ছে তোকে খুন করে ফেলি! আচ্ছা তুই কি নিজেকে এতটাই মূল্যহীন ভাবিস যে কেউ চাইলেই তার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে হবে? লিটনের ফ্ল্যাটে যেতে হবে? শোন তুই নিজেকে খোলা বাজারের পণ্য ভাবতে পারিস কিন্তু আমি নই । আমি নিজেকে রানী ক্লওিপট্রোর মতো দামী মনে করি তাই আমি নিজেকে অন্য কোন পুরুষরে সামনে উন্মুক্ত হতে দিতে পারি না । আমার দেহ, আমার সৌন্দর্য শুধুমাত্র আমার বিয়ে করা স্বামীর জন্য হবে, বুঝলি?সুহেলী আর ভাবতে পারছে না। নাহ! এর একটা বিহীত করতেই হবে! সমাজের বুকে আমি লাথি মারি! যে সমাজ শুধু ক্যারিয়ার গড়তেই শেখায়, যে সমাজ জীবন গড়তে শেখাই না- সে সমাজকে আমি ঘৃণা করি! এই সমাজের বিরুদ্ধে একরাশ ঘৃণা ঝরে পড়ে সুহেলীর মন থেকে। কয়েকদিনের জন্য র্ভাসটিরি হল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলো সুহেলী। সুহেলী আজ বাসায় যাবে। বড় বোনের ব্যাপারে একটা কিছু করতেই হবে তাকে! এর জন্য কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত সে মনে মনে ঠিক করে রেখেছে। তাতে যা হওয়ার হবে।
২.
বিকেল বেলা। সুহেলী বড় বোন সোহানার সাথে ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। বিমর্ষ বড় বোন। কোন হিসেবই মিলাতে পারছেনা। মাঝেমধ্যে কান্নাকাটিও করে গোপনে গোপনে। সেটা সুহেলী ছাড়া আর কেউ জানে না। কারণ সুহেলী ওঁর সবচেয়ে কাছের মানুষ। সবকছিুই শেয়ার করে ছোট বোনের কাছে। কিছুদিন আগেই ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছিলো তাকে। সব ঠিক ছিলো। কিন্তু বয়স বেশি। এই বয়সে সন্তান নিতে গেলেও সমস্যা হওয়ার কথা। ছেলের বয়স সোহানার চেয়ে বছর আটেক বড় হবে হয়তো। ছেলে চাকুরী করছে। সোহানাকে দেখে কারোরই অপছন্দ হয়নি। কিন্তু শেষমেশ বয়সটাই বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো। বিয়েটা আর হয়নি সোহানার।
এভাবে মাঝে মাঝে তার মায়ের চেষ্টায় বিয়ের পয়গাম আসে আবার ভেঙেও যায়। যদিও সোহানা একটা স্কুলে শিক্ষকতা করছে তবুও।
সুহেলী সোহানাকে হঠাৎ করেই বলে উঠে-
ঃ আপু! তুমি কি জানো আমি কেনো হঠাৎ করেই বাড়ি এলাম?
ঃ না-তো!
ঃ তোমার ব্যাপারে একটা সিদ্ধাস্ত করে তবেই ফিরবো।
ঃ দেখ সুপু (সুহেলীকে সোহানা সুপু বলে ডাকে)! মা তো চেষ্টা করেই যাচ্ছে। কিন্তু বাবা? তার কোনো কথায় নেই! আমার নাকি বিয়ের বয়সই হয়নি! অথচ ছেলে পক্ষ এসে শুধু বয়সের কারণে ফিরে যাচ্ছে! তুই কি কিছু করতে পারবি?
ঃ দেখ না আপু! শুধু একটু অপেক্ষা!

৩.
কারো মুখে কোনো কথা নেই! আধুনকিমনষ্ক বাবাটা সবচেয়ে বেশি নাড়া খেয়েছে। পুরো বাড়িতে থমথমে অবস্থা! একটু আগে বাড়িতে বড়সড় একটা বোমা ফেলেছে জাফর কবীরের ছোট মেয়ে সুহেলী।
ঃ বাবা! আমি বিয়ে করবো! আমায় বিয়ে দাও!
ঃ !!
ঃ আমি বড় আপার মতো মুখ বুজে এসব সহ্য করতে পারবো না। তোমাদের আধুনকি সমাজ নিয়ে তোমরা থাকো। আমার দরকার নেই। তোমরা শুধু জানো ক্যারিয়ার আর ক্যারিয়ার! মানুষরে জীবনটা তোমাদের কাছে কছিুই না! তোমাদের গিলিয়ে দেওয়া র্ফমুলা খেয়ে আমরা আমাদের সবকিছু বির্সজন দিয়ে শুধু ক্যারিয়ার গড়েই যাবো অথচ আমার জীবনের কোনো চাহিদা আমি পূরণ করতে পারবো না। তোমাদের সমাজ আমাকে দিয়ে লিভ টুগদোর করাতে ব্যস্ত অথচ আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো চন্তিাই নেই! আচ্ছা টাকাই কি জীবনের সব? তাহলে মানুষরুপী যে বুদ্ধজিীবীগুলো এই সকল র্ফমূলা ফেরী করে বেড়াই আর যাদের এই সব দেখে তোমরা ধেই ধেই করে নাচো সেই সকল বুদ্ধিজীবি কতো বছর বয়সে তাদের স্ত্রীদের বিয়ে করেছে জেনে এসো! ক্যারিয়ারের জন্য বিয়ে কোনো বাঁধা নয়। আমার সোজা কথা, আমি এক মাসের মধ্যে আমার বড় আপুর বিয়ে দেখতে চায়। আর যদি না দাও বড় আপুকে আমার কাছে নিয়ে যাবো। তারপর যা করার তাই করবো।

৪.
সুহেলীর হুমকিতে কাজ হয়েছে। এক মাসের মাথায় বড় আপুর বিয়ে হয়েছে। যদিও ছেলেটা একটু বয়স্ক। আর জাফর কবীর সাহেব তার স্ত্রীর সাথে বলেছে, অর্নাসটা শেষ হলেই ভালো ছেলে দেখে সুহেলী বিয়ে দিবে।


আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান শুরুটা ঝরো হাওয়ার মতো,ভাল লাগল যদিও ঝরো হাওয়া ভাল নয়।অবয়বটা সামান্য বাড়ালে বুননটা আর একটু দৃঢ় হতো,যদিও গল্পে নানা মত,তবে সুহেলীর চাতুরতা অনবদ্য।ভাল থাকবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার মতামত ও পরামর্শের জন্য। ভালোবাসা নিবেন। শুভকামনা।
ওয়াহিদ মামুন লাভলু বিয়ের ব্যাপারে সুহেলীর চিন্তা ভাবনাটাই ঠিক। মেয়েদের বিয়ে করতে দেরী হওয়াটা আসলেই বোধহয় একটা সমস্যা। যাহোক, সুহেলীর চিন্তা ভাবনাটাই যে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হলো এটা খুব সুন্দর। অনেক ভাল লাগলো গল্পটি। আমার শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন। অনেক শুভকামনা রইলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালোবাসা নিবেন। শুভকামনা।
সালসাবিলা নকি গল্প ভালো ছিল। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আপনার গল্পটি যেন আঙ্গুল তুলে মানুষেষ ভুল দেখিয়ে দিয়েছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মতামতের জন্য। শুভকামনা।
সাদিক ইসলাম বেশ গোছালো। ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মতামতের জন্য। শুভকামনা।
মনজুরুল ইসলাম bortoman bastobota tule dhorechen.career er chaite jibon onek boro.aktu barate parten.shuvo kamona roilo.
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য। ভালোবাসা ও শুভকামনা রইলো।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পের কাহিনীর সাথে বাস্তব কিছু মিল পেয়েছি। যেমন- ক্যারিয়ার চিন্তা করতে করতে আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ফেলি, পা বাড়াতে হয় নষ্টালজিকের উপর..... সুতরাং গল্প ভালো হয়েছে, কিন্তু অসমাপ্ত।
ধন্যবাদ ও শুভকামনা আপনার মতামতের জন্য। গল্পের সমাপ্তি টেনেছি খুব সংক্ষেপে। হয়তোবা চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। ////// ৪. সুহেলীর হুমকিতে কাজ হয়েছে। এক মাসের মাথায় বড় আপুর বিয়ে হয়েছে। যদিও ছেলেটা একটু বয়স্ক। আর জাফর কবীর সাহেব তার স্ত্রীর সাথে বলেছে, অর্নাসটা শেষ হলেই ভালো ছেলে দেখে সুহেলী বিয়ে দিবে। /////
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত গল্পটা পড়ে ভাল লাগল । ভোট আর শুভকামনা রইল ।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি...
মাহদী হাসান ফরাজী সামগ্রিক বিবেচনায় খুবই সুন্দর হয়েছে।শুভকামনা চিরন্তন।সময় করে আমার পাতায় আসার দাওয়াত রইল।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভকামনা রইলো...
মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া রমণী মনের চিরন্তন ভাবনাগুলো লেখক ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। ভালো লাগল লেখাটি। পছন্দ, ভোট ও শুভকামনা রইল। সময় পেলে আসবেন আমার গল্প ও কবিতার পাতায়। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
মন্তব্যে প্রীত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা আপনার প্রতি।

২৩ জুন - ২০১২ গল্প/কবিতা: ২৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "দাসত্ব”
কবিতার বিষয় "দাসত্ব”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ মার্চ,২০২৫