দিঘীর পাড়ের রাস্তাটা খুব একটা চওড়া নয়, সরু রাস্তা, রাস্তার দুই পাশ ঘেঁসে বড় বড় গাছ এবং সেগুলো বেশ মোটা সোটা। গাছ গুলোর বয়স আনুমানিক শত বছর পুরনো; গাছ গুলো দেখলেই কেমন যেন মনে হয়। দীপা প্রতিদিন সেই রাস্তা দিয়ে বাড়ীতে যায়। দিঘীটার অনেক রহস্য আছে। সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসছে , সন্ধ্যা থেকে রাত হলো কিন্তু দীপা তাদের বড়ী গেলনা, তার খালার বাড়ীতেই রাতের খাবার খেয়ে যাবে বলে মনে করেছিল; যাহোক রাত্রি তখন প্রায় আটটা বাজে সবাই মিলে খাবার খেতে বসল। দীপা তার খালাত বোনের সাথে আলাপ করতে বসল; এটা থেকে সেটা , সেটা থেকে এটা বিভিন্ন ধরনের গল্পে মেতে উঠল। ক্রমে ক্রমে রাত্রি ঘনিয়ে আসছে। দীপার মা ভাবতে লাগল যে, মেয়েটি এখনও আসছেনা কেন? দীপার মা তার বোনের বাড়ীতে গেল। দীপার মা দীপাকে বলল চল বাড়ী চল, দীপা বলল
বাড়িতে একটু পরে যাব। দীপার খালা তার বোনকে বলল যে দীপা রাতের খেয়ে যাবে তুইও বস খেয়ে যাস। দীপার মা বলল না থাক আমি বাড়িতে যেয়ে খাব; দীপাকে খাওয়া-দাওয়ার পর বাড়ীতে পাঠিয়ে দিস, এই বলে দীপার মা তাদের বাড়ীতে চলে গেল। দীপা তার খালাত বোনের সাথে আবার গল্পে মজে গেল। তার পর রাত্রি প্রায় সাড়ে দশটা বাজে , সে সময় দীপা এবং তার খালাত বোন খেতে বসল, খাওয়া দাওয়া শেষ করে দীপা তাদের বাড়ি যাবে বলে তার খালার বাড়ী থেকে প্রস্থান করল। পথে যেতে যেত দীপার শরীর কেমন যেন শিউরে উঠল, তার চলার গতি যেন থেমে যাচ্ছে , তার মনে হতে লাগল, কে যেন তার পেছন পেছন আসছে; সে পিছনদিকে টর্চ দিয়ে দেখল কিন্তু কিছু দেখতে পেলনা, আবার সে হাঁটতে শুরু করল , হঠাৎ করে সে দেখতে পেল এক জোড়া চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে থমকে দাড়িয়ে গেল , তার পা যেন আর চলছেনা। দীপা মনে মনে একটু সাহস করল ; সে মনে করল যে , এটা মনে হয় একটি শৃগাল নয়ত কোন বন বিড়াল কিন্তু দীপা তার দিকে টর্চ জ্বালানোর সাহস করতে পারলনা, তার কিছুক্ষণ পরে আবারো সে সাহস করল তারপর তার হাতে থাকা টর্চটি জ্বালালো। দীপা দেখল একটি কুকুর তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু অদ্ভুত চেহারা এবং তার সামনের দুটি দাঁত খুব বড় বড় এবং সে হিংস্র হয়ে দীপার দিকে এগিয়ে আসছে। দীপা খুব ভয় পেয়ে গেল এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল ধরাতে। সেই গ্রামের একজন ব্যক্তি সেই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল ; সে দীপাকে পড়ে থাকতে দেখতে পেল এবং সঙ্গে সঙ্গে কয়েক জনকে ডাক দিল। গ্রামের সেই লোকগুলে এই দৃশ্য দেখে হতাশ হয়ে পড়ল এবং দ্রুত তাকে দীপাদের বাড়িতে নিয়ে গেল। দীপার মা এই দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল এবং তার চোখে মুখে পানি ছিটালো এবং তাকে ডাকতে থাকল। কিছুক্ষণ পরে দীপার জ্ঞান ফিরল এবং জ্ঞান ফিরার পর দীপা তার মাকে জড়িয়ে ধরল এবং কাঁপতে লাগল। দিপার মা তাকে জিজ্ঞাসা করছিল যে, তার কি হয়েছিল। দীপা তার মাকে সম্পূর্ণ কথা বলল, সে বলল যে, সে একটা ভূত দেখেছে এবং তাকে দেখে ভয় পেয়েছে। দিপার মা বলল ভূত এখন নেই তুই ঘুমিয়ে পড়। গ্রামের লোকজন আস্তে আস্তে দিপাদের বাড়ি থেকে চলে গেল। রাত্রি ক্রমশই ঘনিয়ে আসছে, রাত্রি যখন বারোটা বেজে পঞ্চাশ মিনিট তখন দিপার খুব জ্বর আসল; খুবই বেশি জ্বর, দীপা জ্বরের কারণে ভুল বকতে লাগল। তার মা তার কথা শুনে ঘুম থেকে চেতন পেল এবং গায়ে হাত দিয়ে দেখল যে, খুবই জ্বর এসেছে। দিপার মা একটি বাটিতে পানি নিল এবং এক টুকরো কাপড় নিল তারপর কাপড়টি ভিজিয়ে তার কপালে দিল, এভাবে প্রায় রাত্রি পেরিয়ে সকাল হল। সকালে দিপার বাবা ডাক্তার ডাকতে গেল ; ডাক্তার বাড়িতে এসে তাকে কিছু ঔষধ দিল। তিনদিন ঔষধ সেবন করার পর দিপা সুস্থ হয়ে উঠল কিন্তু তার ভয়টা থেকেই গেল। এই ঘটনা ঘটার পর দিপা কোন কুকুর দেখলেই ভয় পায়।
ইতি
১৫ মার্চ - ২০১২
গল্প/কবিতা:
১৬ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪