আমার কিশোরী অঙ্গে নতুন কুঁড়ির আভা। স্বপ্ন-আকুল মুগ্ধ কিশোলয়ের সবুজ হাসিতে প্রভাত রবির মিষ্টি চুম্বন। চারিদিকে সূর নিয়ে মৌমাছিদের অপেক্ষায় মৌন ব্যাকুলতা। হেমন্তের ঝরাপাতার কান্নায় নিভু নিভু কষ্টের শেষ অস্তিত্বে আনান্দ্ অশ্রু। মাটির ধরা-ধামে স্বর্গীয় রূপমাধুরীর অবাধ বর্ষণ । যেদিন ভরা য়ৌবনের উদাত্ত্ আহবানে সাড়া দেয়ার প্রথম অপরাধবোধে ইভ-আদম পরস্পরর বিচ্ছিন্ন হয়েছিল সেদিন কান্নার জলে নেমেছিল বর্ষা। আবার যখন বিরহ বেদনায় আর অনুসোচনার অশ্রুধারায় ঝরে গেল অজ্ঞানতার মেঘরাশী, তখন আত্মদর্শনের চমতকার আকাঙ্ক্ষা দৃষ্ট হলো পরষ্পরের আনন্দোজ্জ্বল কামনাশিক্ত অস্তিত্বলাভের নতুন চেতনার মর্মতলায়। তারা খুঁজে পেল চেতনার ভাঁজে পরস্পর-বিছিন্ন আমিত্বের অসম্পূর্ণতার সাথে জগতের প্রত্যেকটি পৃথক স্বত্ত্বার সম্পূর্ণতা প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা। তখনই নিজ দেহের পুষ্পিত অঙ্গসৌষ্ঠব দেখে তাদের দৈহিক মিলনে পাপবোধ দুরভিত হলো। কামনার জলে আত্মগরিমা দর্শনে আবার অসম্পূর্ণ থেকে সম্পূর্ণ হওয়ার বাসনায় আমিত্ব জাগ্রত হলো। মনে পড়ল, তারা সৃষ্টির প্রভাত বেলায় যে দৈব আহবান শুনতে পেত- সেই আহবান তাদেরই হৃদয়ের কোন্দরে সৃষ্ট হয়ে আবার প্রতিধ্বনিত হতো চেতনার মর্মে। তারা অনুভব করল, এ আহবান তাদের প্রত্যাশারই প্রতিধ্বনি, কামনারই অনুশাসন মাত্র এবং তাদের কল্পলোকের শৃঙ্খলার জন্য, আমিত্বকে শাসনের জন্য প্রকৃতির বিধানের উদ্ভূত শাশ্বত চেতনা। তারা এবার আমিত্বের নবচেতনায় নব জাগরণে উল্লসিত হলো। সকল পরিতাপ ঝেড়ে ফেলে দেখতে পেল, যৌবনের প্রলয়-বাসনার মধ্যেই সৃষ্টি-বিভাজনের মহা আয়োজন। এখানে নিজ চেতনার বাইরে কোন বিধি নেই, বিধান নেই; কেবল প্রমত্ত-ভোগে সৃষ্টির উপযোগ অন্বেষণ। এখানে পাপ কোথায়? সর্বাঙ্গে নিষিদ্ধ ফলের মাদকতা। প্রাণের পরতে পরতে প্রাণের বিকাশ বাসনা। শরীরে শরীরে শরীর স্পর্শে নতুন শরীরের জন্ম; নতুন প্রাণের উদয়। আমি বসন্ত। আমিই প্রকৃতির রাজ্যে ইভের ছায়া। আর ঐ যে বৈশাখ; সে আদমের ছায়া। প্রকৃতির বিষণ্ন অঙ্গে আমি আনন্দ-উতসব। জেগে উঠার সূরলহরীতে মিলনের আহবান। ভোগের আমন্ত্রণে উপভোগের বিন্যাস। আমি সাঁজবো। নানা রঙ্গে সবুজ অঙ্গে সুশোভিত হবো। আমার দিকে যখন আদমের মত বৈশাখ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকাবে তখনই হাজার সূরে প্রমত্ত-অনুরাগে গাইব প্রাণের গান। সলাজ অপেক্ষায় বাঁকা চোখের ইশারায় তাকে আহবান করব। সে আমার পুষ্পশোভিত সৌরভে উন্মাতাল হয়ে ছুটে আসবে, লুটে পড়বে বসনহারা বুকে। খণ্ডের অখন্ড মিলন প্রত্যাশায় সুখের প্রস্তুতিকালে যখন প্রকৃতির ইশারায় হেমন্তের রুক্ষ বাতাসে আমাকে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে জন্ম নিতে হয়- তখন আমি নিমগ্ন থাকি রূপের মাধূর্য ভেলায় বালিকা বধূর কল্প খেলায়। তারপর একটু একটু করে যখন আমার কিশোরী অঙ্গে সবুজের আগমন হয়, আমার আনন্দরাজী আমার শিরিনঠোঁটে রঙ ধরিয়ে দেয়, ফুটে ওঠে কোমল বুকে নতুন কুঁড়ি, ফুটে ওঠে সৌরভে, দ্যুতিতে, স্বর্গীয় আবেশে প্রাণে প্রাণে উতসবের মুগ্ধ আমেজ, আমি আবার হারানো স্বপ্ন কুড়িয়ে পেয়ে তার বুকে মুখ লুকাই। তখন আমার কত আনন্দ, কত আহলাদ, কত স্বপ্ন ফাগুনের মিষ্টি-রোদে উদ্বেলিত হয়- তাতো বৈশাখের জন্যই । প্রশান্ত জেোছনা, মধুর শিতল বাতাস, স্নিগ্ধ-সৌরভ আমাতে কি নেই। তবু আমি অপূর্ণ। আর প্রমত্ত পৌরুষদিপ্ত বৈশাখ সেওতো আমা বিনে অসম্পূর্ণ। তাই সেও আজ আমার মতই পূর্ণতার জন্য অধির। আমি যখন বিকাশের পরিপূর্ণতায় পৌঁছে যাব তখন সে রুদ্রমূর্তীতে হানা দেবে আমার সোনার অঙ্গে। তছনছ করে দেবে স্বপ্নে সাজানো মধুমাস সমগ্র। সমগ্রটাই তার চায়। সে কোথাও কিঞ্চিত রেখে যেতে চায় না। আমার মধুশিক্ত বিকশিত পুষ্পে শেষ চুম্বন দিয়ে সে সবটুকু নিংড়িয়ে নিবে। আমি আবার নিষিক্ত হব। আমার পুষ্পদামে আবার নতুন করে পাপড়ি ঝরার খেলা শুরু হবে। আমার সারা-অঙ্গে বাদলের ছোঁয়ায় শুভ্রতার খেলা হবে। সবুজ পাতার মাঝে তখন ক্ষুদ্র বীজের লালন-আকাঙ্খা আবার আমার রোমাঞ্চকর স্মৃতিগুলো নিয়ে হেঁটে যাবে মহাকালের মাতৃসদনে । আহ! নতুনত্বে কি সুখ!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রিয় টিটু ভাই. সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যদি আপনারা আপনাদের পাশে রাখার চেষ্টা করেন বা সহযোগিতার হাত প্রসাতিরই রাখেন তবে মনে করি আপনাদের বন্ধুত্বের ছায়ায় নিশ্চিন্তে কাটাতে পারব। শুভকামনা আপনার জন্য।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ফেব্রুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।