ক্যনভাসে তোমার ছবি

প্রশ্ন (ডিসেম্বর ২০১৭)

মাইনুল ইসলাম আলিফ
  • ৪৩

আরিয়ান আদ্রিতার রুমে প্রবেশ করেই কি যেন একটা দিয়ে আবার বিদ্যুৎ বেগে বেরিয়ে গেলো। আদ্রিতা পড়ার টেবিলে চুপ করে মাথা নিচু করে বসে ছিল। পড়ার টেবিলে বসে পড়ারই কথা ।কিন্তু সে জানতো আরিয়ান এসেছে তার বুকে কাঁপন ধরাতে, তাই বই খুলে রাখার কোন অর্থই ছিলনা তার কাছে।
আরিয়ান আদ্রিতার সাথে কোন কথাই বললো না, এমনকি মূহুর্তকাল দেরিও করলনা।শুধুমাত্র খামটা রেখে আসতে যতটুকু সময় লেগেছে ততটুকুর ব্যবধানেই আরিয়ান উধাও।নিজেকে একনজর দেখার সুযোগও দেয়নি আদ্রিতাকে।
আদ্রিতা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে খামটি হাতে নিলো।কি হতে পারে প্রশ্ন জাগেনি।ভাল কিছু নয় এ ব্যপারে আদ্রিতা মোটামুটি নিশ্চিত। কারণ যত অবজ্ঞা,যত যন্ত্রণা একজনকে দেয়া যায় তার সবটাই সে আরিয়ানকে দিয়েছে। কি হতে পারে? চিঠি?
না চিঠি নয়, নিজের ছবি দেখে কিছুটা আতকে উঠলো আদ্রিতা।
মূহুর্তের মধ্যে কি যেন হলো,অস্থির হয়ে উঠলো সে ।খুব কান্না পাচ্ছে, অঝরে কাঁদল সে । চোখের
জলে বই ভিজলো। সে এই সম্পর্কে জড়াতে চায়নি এ কথা সত্যি কিন্তু ওর ভালবাসা মিথ্যে নয়। আদ্রিতার অবজ্ঞা সত্যি কিন্তু রহস্যটা লুকায়িত ছিল যা আরিয়ানের জানবার কথা নয়।
রহস্য লুকিয়ে রেখে এখন তুমি কাঁদো কেন? নিজেকে নিজের প্রশ্ন আদ্রিতার, কিন্তু উত্তরটা ওর জানা নেই।

ছবিটা সে দিয়ে এসেছিল দৃঢ় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই এ কথা সত্যি,তবু যে ঝড় বইছিল আরিয়ানের বুকে সেটা সহসাই থামবার মতো নয়।কারণ সে এমন একটা স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে এসেছিল যা কুড়িয়ে পাওয়া নয়,নিজের হাতে গড়া স্বপ্নের সৌধ যার রাণী সেই আদ্রিতা।
আজ দুবছর পর সেই ঝড় থামলো। কারণ আদ্রিতা নিজেই নিজের সেই ছবিটা নিয়ে আরিয়ানের হাতে তুলে দিয়ে বললো, নাও তোমার জন্য।
-কি ?
-খুলে দেখো।
আরিয়ান খামটা খুলে দেখলো সেই ছবি।আবার যেন প্রান ফিরে পেলো সে। কি অস্থিরতায় যে তার সময় কেটেছে তা শুধু সে নিজেই জানে। কিন্তু ছবিটার একপাশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।ছবির মানুষটা অবশ্য অক্ষত আছে।আরিয়ান অবাক হয়ে জানতে চাইলো,পুড়লো কিভাবে ?
-আমি পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম।
-কেন ?
-এমনি।
আরিয়ান আর কথা বাড়ালো না।কারণ সে বুঝে নিয়েছে।

কলেজ ক্যাফেতে মুখোমুখি বসে আছে দুজন। আরিয়ান আর আদ্রিতা দুজনই চুপচাপ।কফিতে চুমুক দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো আরিয়ান। নীরবতা ভাঙলো আদ্রিতা, কিছু বলছো না কেন ?
-কি বলব ?
-কিছু বলার নেই ?চুপ করে বসে থাকার জন্য আমাকে ডেকেছো ?
-না । আর কখনো যদি দেখা না হয়,হতে পারে এই দেখাই শেষ দেখা। তাই শেষ দেখাটা দেখে নিতেই এসেছি।
আদ্রিতা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো, আমি বিয়েটা করব না। বাড়ীতে বলে দিয়েছি, বাড়ীও যাব না।
-কেন ?
-এমনি। জানি না।সবাই অনেক জোড়াজুড়ি করতেছে, অনেক কিছু বুঝাইতেছে কিন্তু আমার ভাল্লাগেনা।
-এটা কোন কথা হলো ?
-হুম এটাই কথা।
-পাগলামি করো না।সবাই যা বলতেছে ঠিকই বলতেছে।
-পাগলামি না, যা করছি ঠিকই করছি, সে চিন্তা আপনাকে করতে হবেনা।
আরিয়ান চুপ হয়ে গেলো। অনেক ক্ষণ চুপ থাকার পর আদ্রিতা বললো, আপনি রাগ করেছেন ?
সেই শুরুর দিঙ্গুলির মতো দরদ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো আদ্রিতা। আরিয়ানের মনটা ভিজে উঠলো। গত পাঁচ বছরে রাত দিন ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলে কাটিয়েছে দুজন। মাঝে দু-তিন বার ছেদ পড়েছিলো সম্পর্কে। আদ্রিতা ইচ্ছে করেই দূরে সরে থাকতো, কিন্তু কেন,সে কথা কেউ জানতো না।

বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো আদ্রিতার।আরিয়ান আদ্রিতার কাছ থেকে কথাটা জানতে পারেনি, জেনেছে তৃতীয় আর একজনের কাছ থেকে।এটাই কি আরিয়ানের পাওনা ছিলো।হয়তো! তারপর হঠাৎ ফোন,
-হ্যালো আরিয়ান
-শুনছি বলো ।
-কেমন আছ?
-আছি আলহামদুলিল্লাহ।আমার আর থাকা।তুমি কেমন আছ ?
-ভাল নেই।
-কেন ? তোমারই তো এখন ভাল থাকার সময়। কি হয়েছে ? কোন সমস্যা ?
একটু চুপ থেকে আদ্রিতা বললো, না মানে বিয়ের কথা হচ্ছে। হয়তো ঠিকও হয়ে যেতে পারে সবাই রাজী, আমি ছাড়া।দয়া করে কিছু করার থাকলে করেন।
আরিয়ান কি উত্তর দেবে ভেবে পেলনা।তবুও বলতে হয় বলেই বলা।চলো বিয়ে করে ফেলি টাইপের কথা হয়তো অসাড় হয়েই থাকবে।তাই বললো, আমি বেকার চাকরি বাকরি নেই, বাপের নেই চার পয়সা আমি কি করে তোমাকে আশ্বাস দেব ?
একটু চুপ থেকে ধীর লয়ে বললো,না হলে আর কি করা।আমার যা বলার দরকার ছিলো বলেছি।
আসলেই কি তাই ?আদ্রিতার আকুতি সত্যি কি তেমন তীব্রতা নিয়ে এসেছিলো ? প্রশ্ন তো থেকেই যায়।
কফির অর্ধেকটা রয়েই গেলো, আরিয়ান খাচ্ছে না।চুপ করে কি যেন ভাবছে। তারপর সেই সাদা খামে সেই ছবিটা আদ্রিতার হাতে দিয়ে বললো, নাও তোমার ছবি, ভাল থেকো।হয়তো জীবনে আর কখনো দেখা নাও হতে পারে।পারো তো ক্ষমা করে দিও।
আদ্রিতা খামটা হাতে নিলোচোখ দুটো ছলছল করে ঊঠলো।
-তুমিও ভাল থেকো।
আরিয়ান ক্যাফের দরজা খুলে বেড়িয়ে গেলো।আদ্রিতা সেদিকেই চেয়ে রইলো অপলক।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সাইয়িদ রফিকুল হক গল্প লেখা কঠিন কাজ। তবুও আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। শুভকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭
ধন্যবাদ বন্ধু।ভাল থাকুন।
ওয়াহিদ মামুন লাভলু গল্পে বাস্তবতা আছে। এরকমই তো হয়। আর্থিক যোগ্যতা দেরীতে আসার কারণে কত ছেলের প্রেমকেই যে কবর দিতে হয় তার হিসাব নেই। আর কত মেয়েই যে তার ভালোবাসার মানুষটিকে কাপুরুষ ভেবে ফিরে যায় তারই কি হিসাব আছে? নেই। আদ্রিতার আকুতি তিব্রতা নিয়ে এসেছিল কিনা এ প্রশ্ন জেগেছিল আরিয়ানের মনে। এটা ভাবা আরিয়ানের নির্বুদ্ধিতা। কিন্তু অপরিণত বয়সে মানুষ এরকমই ভাবে। তখন তো প্রেম, প্রেমাস্পদের মন মানসিকতা এসব বিষয়ে ছেলেরা সামান্যই বোঝার মত জ্ঞান রাখে। আপনার গল্পটা অনেক মানসম্পন্ন। চমৎকার লেখা। আমার শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন। অনেক শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭
এত সুন্দর করে আপনি বিশ্লেষণ করলেন যে আমি মুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম।গল্প কম লেখি তাই এখনো অভ্যস্ততা আসেনি।বিশ্বাস করি লিখতে লিখতেই এসে যাবে।
ভালো লাগেনি ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭
লিখতে লিখতে অভ্যস্ততা আসুক সেই কামনা করি।
ভালো লাগেনি ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী এখানে একটি সামাজিক চরিত্র খুজে পেয়েছি; যেমন- নায়িকা বিয়ে করতে বলছো, কিন্তু নায়কের ইনকাম নেই বলে সে আর বিয়ে করতে পারেনি। এইটুকু বর্তমান সমাজের সাথে অনেক খানি ডিফারেন্স। তবে আরও কিছু চরিত্র যোগাড় করে গল্পের মাঝে ভিন্নতা তৈরি করা যেত। আর বানান গুলোর জন্য আপনাকে বর্তমান বাংলা একাডেমিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে..... শুভকামনা রইল আলিফ ভাই, ভালো থাকুন।
ভালো লাগেনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
নায়িকা বিয়ে করতে বলছো, কিন্তু নায়কের ইনকাম নেই বলে সে আর বিয়ে করতে পারেনি। এইটুকু বর্তমান সমাজের সাথে অনেক খানি ডিফারেন্স।@ডিফারেন্স মনে হলেও বাস্তব ঘটনা থেকে বলি,এটাই সত্যি।#তবে আরও কিছু চরিত্র যোগাড় করে গল্পের মাঝে ভিন্নতা তৈরি করা যেত।@তা যেত বইকি।তবে গল্প লেখায় আমি সিদ্ধহস্ত নই,তবুও গল্প বলার ঢং আশা করি নেহায়েত মন্দ নয়।প্লিজ জানাবেন।#বানান গুলোর জন্য......@ক্যনভাস আর দিঙ্গুলি টাইপিং মিস্টেক।জোড়াজুড়ি বানান ভুল হয়েছে।ধীর লয়ে, নাকি ধীরলয়ে আমার জানা নেই। এছাড়া আর কি কি বানান ভুল আছে যদি ধরিয়ে দিতেন,তাহলে শোধরানোর সুযোগ পেতাম আর কৃতজ্ঞ থাকতাম। পরিশেষে গল্পটি পড়ার জন্য এবং মুল্যবান মতামত প্রকাশ করবার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।ভাল থাকুন সবসময়।
ভালো লাগেনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
আ রে ভাই, অতটা কি আর আমি বলছি...? হা হা। বলছি একাডেমিক নিয়ম, যেমন- বাড়ী→ এটা আগেরকার নিয়ম, আর বর্তমান একাডেমিক নিয়ম→ বাড়ি। আশা করি, বুঝতে পেরেছেন.....
ভালো লাগেনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
কৃতজ্ঞতা রইল।বুঝতে পেরেছি নুরে আলম ভাই।আবারও ধন্যবাদ।ভাল থাকুন সবসময়।
ভালো লাগেনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
Farhana Shormin ভাল লাগল। শুভকামনা রইল
ভালো লাগেনি ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭
গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ।আপনার জন্যও রইল শুভ কামনা।
ভালো লাগেনি ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭
মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বেশ ভালো লাগল...
উৎসাহ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ মামুনুর রশিদ ভাই।ভাল থাকুন।শুভ কামনা।
ভালো লাগেনি ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭
মাইনুল ইসলাম আলিফ (ক্যনভাসে=ক্যানভাসে, দিঙ্গুলির = দিনগুলির ) দুটি ভুল আছে। আমি একদম শেষ মূহুর্তে তাড়াহুড়া করে লেখাটা পোস্ট করেছি।প্রুফ রিডিং এর সময় পাইনি।সো , অনিচ্ছাকৃত ভুল দুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,এই প্রত্যাশায় আমার গল্পে আপনাদের স্বাগতম।
onek word oi bhol..jemon- jora-juri, berie , deer-loye. etc...
ভালো লাগেনি ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭
জোড়াজুড়ি ভুল।কিন্তু বেরিয়ে,ধীর লয়ে ভুল কেন ভাই?প্লিজ শুদ্ধটা বলবেন কি?
ভালো লাগেনি ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭
গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ মুসাফির ভাই।ভাল থাকুন।
ভালো লাগেনি ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭

২৪ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৩৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪