অনেকেই পাখী হয়ে জন্মাতে চায়, মুক্তডানা মেলে আকাশে উড়বে বলে।
অনেকে নদী হয়ে জন্মাতে চায়, আপনমনে সাগরের পানে ছুটে যাবে বলে।
কেউ চায় পাহাড়ের মত হতে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে।
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!
কেনো কেবলই মনে হয়, আমি পাখী হতে চাইনা
কারন পাখী শুধু উড়তেই জানে, মুক্তির মানে জানেনা
কলকাকলীতে অপরের ঘুম ভাঙ্গায় অথচ নিজে স্বপন দেখার ক্ষমতা রাখেনা।
নিজেকে কেবলই অহঙ্কারী মনে হয়, কেবলই মনে হয় নাইবা থাকলো আমার ডানা
আছেতো ইচ্ছেডানা, আমি ইচ্ছেডানায় ভর করে উড়ে যেতে পারি, নেই কোন মানা।
উড়ে যেতে পারি দেশ থেকে দেশান্তরে, নদী না হয়েও চলে যেতে পারি
সাত-সমুদ্দুর পার হয়ে ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমীর দেশে!
পাহাড়তো শুধু বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েই থাকে, পারে কি ঠেকাতে আমাকে
যখন আমি পাহাড়কে ডিংগিয়ে চলে যাই অচিনপুরের দিকে!
তবুও কেনো কেউ কেউ পাখী হতে চায়, কেনোই বা চায় প্রজাপতি হতে!
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!
আচ্ছা! সত্যি সত্যি যদি পাখীই হতাম, কখনও কি
অন্যায়ের বিরূদ্ধে জ্বলে উঠতে পারতাম!
পারতাম কি মেশিনগান, কামানের গোলার বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়াতে!
কি লাভ হতো স্থবির পাহাড়ের মতো শুধুই মাথাটিকে উঁচু করে দাঁড়িয়ে থেকে!
পাহাড় কি পেরেছে কখনও তর্জনী উঁচিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিতে
পেরেছে কি তর্জনী উঁচিয়ে অন্যায়-জুলুম-অত্যাচারের বিরূদ্ধে হুঁশিয়ারী জানাতে!
নদীতো কেবল বয়েই চলেনা, যখন প্রমত্তা হয়, হুঁশ জ্ঞান কিছুই থাকেনা।
সর্বগ্রাসী শক্তির জোরে গরীব কৃষকের একটুকরো জমিকেও
নিজের অতল গহীনে টেনে নিতে কৃষকের সুখ-দুঃখের হিসেব রাখেনা।
পাখীও হইনি, নদী বা পাহাড়ও হইনি, জন্মেছি মানুষ হয়ে
মান ও হুঁশ দুইই আছে চেতনায় ও হৃদয়ে,
আছে রক্ত কণিকার প্রবাহে।
মান অপমান বোধ আছে বলেই হতে পেরেছি একজন ক্ষুদিরাম অথবা নেতাজী সুভাষ
মান হুঁশ আছে বলেই না পেয়েছি বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল থেকে শুরু করে
জাহানারা ইমাম বা হালের তসলিমার চেতনায় মুক্তির আভাস!
তবুও কেউ কেউ চায় পাখী্র মত শুধুই ডানা মেলে উড়তে, চায় নদীর মত
কলকল রবে বয়ে যেতে, অথবা চায় বিশাল পাহাড়ের ধ্যানমগ্নতা
মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর নামে আসলে স্থবি্রতা।
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!
আমি সুখী, আমি উচ্ছসিত, আমি ধন্য! পেয়েছি মানব জন্ম।
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলেই স্বপ্ন দেখতে শিখেছি
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলেই বিবেকানন্দ হতে পেরেছি,
হতে পেরেছি মহাত্মা গান্ধী, হতে পেরেছি ম্যান্ডেলা
হতে পেরেছি মার্টিন লুথার কিং অথবা মাদার তেরেসার চেলা।
শেখ মুজিব হয়ে জন্মেছি বলেই দিয়েছিলাম মুক্তির ডাক,
ছিনিয়ে এনেছিলাম বিজয় সূর্য্য, বিশ্ব হয়েছে হতবাক!
পাখী হইনি, নদী হইনি, হইনি স্থবির পাহাড়, হয়েছি মানুষ তাই
অন্যায়ের বিরূদ্ধে একহাতে গর্জায় মেশিনগান,
আরেকহাতে ধরা বীণার তারে বাজে মুক্তির গান!
১৯ জানুয়ারী - ২০১২
গল্প/কবিতা:
৬৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৫