বীণার তারে বাজে মুক্তির গান

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

রীতা রায় মিঠু
  • ২৮
  • ১১
অনেকেই পাখী হয়ে জন্মাতে চায়, মুক্তডানা মেলে আকাশে উড়বে বলে।
অনেকে নদী হয়ে জন্মাতে চায়, আপনমনে সাগরের পানে ছুটে যাবে বলে।
কেউ চায় পাহাড়ের মত হতে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে।
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!

কেনো কেবলই মনে হয়, আমি পাখী হতে চাইনা
কারন পাখী শুধু উড়তেই জানে, মুক্তির মানে জানেনা
কলকাকলীতে অপরের ঘুম ভাঙ্গায় অথচ নিজে স্বপন দেখার ক্ষমতা রাখেনা।
নিজেকে কেবলই অহঙ্কারী মনে হয়, কেবলই মনে হয় নাইবা থাকলো আমার ডানা
আছেতো ইচ্ছেডানা, আমি ইচ্ছেডানায় ভর করে উড়ে যেতে পারি, নেই কোন মানা।
উড়ে যেতে পারি দেশ থেকে দেশান্তরে, নদী না হয়েও চলে যেতে পারি
সাত-সমুদ্দুর পার হয়ে ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমীর দেশে!
পাহাড়তো শুধু বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েই থাকে, পারে কি ঠেকাতে আমাকে
যখন আমি পাহাড়কে ডিংগিয়ে চলে যাই অচিনপুরের দিকে!
তবুও কেনো কেউ কেউ পাখী হতে চায়, কেনোই বা চায় প্রজাপতি হতে!
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!

আচ্ছা! সত্যি সত্যি যদি পাখীই হতাম, কখনও কি
অন্যায়ের বিরূদ্ধে জ্বলে উঠতে পারতাম!
পারতাম কি মেশিনগান, কামানের গোলার বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়াতে!
কি লাভ হতো স্থবির পাহাড়ের মতো শুধুই মাথাটিকে উঁচু করে দাঁড়িয়ে থেকে!
পাহাড় কি পেরেছে কখনও তর্জনী উঁচিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিতে
পেরেছে কি তর্জনী উঁচিয়ে অন্যায়-জুলুম-অত্যাচারের বিরূদ্ধে হুঁশিয়ারী জানাতে!
নদীতো কেবল বয়েই চলেনা, যখন প্রমত্তা হয়, হুঁশ জ্ঞান কিছুই থাকেনা।
সর্বগ্রাসী শক্তির জোরে গরীব কৃষকের একটুকরো জমিকেও
নিজের অতল গহীনে টেনে নিতে কৃষকের সুখ-দুঃখের হিসেব রাখেনা।

পাখীও হইনি, নদী বা পাহাড়ও হইনি, জন্মেছি মানুষ হয়ে
মান ও হুঁশ দুইই আছে চেতনায় ও হৃদয়ে,
আছে রক্ত কণিকার প্রবাহে।
মান অপমান বোধ আছে বলেই হতে পেরেছি একজন ক্ষুদিরাম অথবা নেতাজী সুভাষ
মান হুঁশ আছে বলেই না পেয়েছি বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল থেকে শুরু করে
জাহানারা ইমাম বা হালের তসলিমার চেতনায় মুক্তির আভাস!
তবুও কেউ কেউ চায় পাখী্র মত শুধুই ডানা মেলে উড়তে, চায় নদীর মত
কলকল রবে বয়ে যেতে, অথবা চায় বিশাল পাহাড়ের ধ্যানমগ্নতা
মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর নামে আসলে স্থবি্রতা।
আমার কেনো এমন ইচ্ছে জাগেনা!

আমি সুখী, আমি উচ্ছসিত, আমি ধন্য! পেয়েছি মানব জন্ম।
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলেই স্বপ্ন দেখতে শিখেছি
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলেই বিবেকানন্দ হতে পেরেছি,
হতে পেরেছি মহাত্মা গান্ধী, হতে পেরেছি ম্যান্ডেলা
হতে পেরেছি মার্টিন লুথার কিং অথবা মাদার তেরেসার চেলা।
শেখ মুজিব হয়ে জন্মেছি বলেই দিয়েছিলাম মুক্তির ডাক,
ছিনিয়ে এনেছিলাম বিজয় সূর্য্য, বিশ্ব হয়েছে হতবাক!
পাখী হইনি, নদী হইনি, হইনি স্থবির পাহাড়, হয়েছি মানুষ তাই
অন্যায়ের বিরূদ্ধে একহাতে গর্জায় মেশিনগান,
আরেকহাতে ধরা বীণার তারে বাজে মুক্তির গান!



আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সুমননাহার (সুমি ) অপু অনেক সুন্দর কবিতা লিখেছেন তবে আমার ও এরক্ষম স্বপ্ন জাগে আপনার মত ভেবে দেখিনি সুভকামনা থাকলো অপু.
তোমার জন্যও আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও শুভকামন থাকলো।
মৃন্ময় মিজান ভাল লাগল দারুণ পর্যবেক্ষণ নিয়ে লেখা কবিতা। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব উঠে এসেছে দারুণভাবে। সেই সাথে উঠে এসেছে মুক্তিপিয়াসী মনের আকুতী। সুন্দর।
মৃন্ময়, অনেকেই প্রশ্নগসা শুনতে ভালোবাসে, আমিও সেই অনেকের দলেই পড়ি। নিজের লেখার উপর নিজেরই কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, এমনই লেখক আমি, অথচ সকলের কাছ থেকে এমন সুন্দর সুন্দর কমেন্ট পেয়ে কেমন যেনো এক ধরনের নেশা হয়ে গেছে। ভয় পাচ্ছি, এরপর আর কোন কঠিন সমালোচনা সহ্য করতে পারবোতো! পরেরটা পরে দেখা যাবে, বর্তমানটুকুই আগে এনজয় করি, কি বলো ভাইয়া! অনেক সুন্দর কমেন্ট, আমি খুবই খুশী এমন কমেন্ট পেয়ে।
সে প্রত্যাশাটুকু তো সবারই থাকে। কী লিখেছি এটা জানলে সমালোচনা কখনো নেতিবাচক ভূমিকা রাখবেনা। সব সময়ই ইতিবাচক হবে। সে আপনার লেখার প্রশংসা করুক বা নিন্দা। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনার কাছ থেকে আরো সুন্দর সুন্দর লেখা পাব।
মোহন চৌধুরী অনেক জটিল কবিতা.... অন্যায়ের বিরূদ্ধে একহাতে গর্জায় মেশিনগান, আরেকহাতে ধরা বীণার তারে বাজে মুক্তির গান!....................ভালো লাগলো.....
মোহন, অনেক ধন্যবাদ, জটিল ধন্যবাদ (হা হা হা)। ভালো থেকো।
মামুন ম. আজিজ মানুষ বলেই কবিতা পড়তে পারছি.....সুন্দর অনুভূতি
দারুণতো! সত্যিতো, মানুষ বলেই কবিতা পড়তে পারছি (তবে আমি এখনও কবিতা লিখার নামে কি যে লিখছি, জানিনা)। ধন্যবাদ মামুন।
আহমাদ মুকুল এত বড় কবিতা, অথচ কখনই মনে হয়নি অনেক বড়। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, আরেকটু বড় হলেও ক্ষতি ছিল না কোন। উপমার ফুলঝুরি নেই, ভাষার মারপ্যাচ নেই, তাতেও নান্দনিকতার অভাব তো পেলাম না! অদ্ভূত ভাল লাগলো আপনার কবিতা। নিজের প্রতি ক্ষেদ- আপনার পাতায় এটাই বোধহয় আমার প্রথম পদার্পন।
মুকুল ভাই, আমার নিজেরও একটু আক্ষেপ হচ্ছে বইকি! এতোদিন কোথায় ছিলাম! এখানে গল্প কবিতার এমন সুন্দর আসর, অথচ যান্ত্রিক জীবনের চাপে এতোদিন ধরে ভাজা ভাজা হচ্ছি, জানতেই পারিনি এখানে একটু মুক্তির বাতাস বয়ে বেড়ায়! আপনার মন্তব্য আমাকে আবেগাপ্লুত করেছে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
রোদেলা শিশির (লাইজু মনি ) দারুণ বর্ণনা করেছেন তো আপু ...! এমন করে কখনো তো ভেবে দেখিনি ....! পাহাড়ের , পাখির , নদীর ....... . মানুষকে দমিয়ে রাখার ক্ষমতা নেই ...! কারণ মানুষের আছে ইচ্ছে ডানা ...! আমি ভাবতাম কেবল আমার-ই আছে ইচ্ছে ডানা ...! হা ..হা..হা... !
রোদেলা শিশির, তোমার মত আমারও আছে ইচ্ছেডানা! হুম! ইচ্ছের ডানায় ভর করেই ঘুরে বেড়াই সারা পৃথিবী। ভালো থেকো।
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# অনেক বড় কবিতা হলেও বেশ ঝরঝরে লেখা, বেশ মনোযোগ দিয়ে পরলাম এবং ভালো লাগলো
সালেহ, একুশের কবিতায় প্রথম হওয়ার জন্য য়ামার অভিনন্দন জানাচ্ছি। বয়সে সবার বড় হলেও লেখালেখির পৃথিবীতে আমি সবার ছোট, একেবারেই শিশু। আমি তোমাদের কাছ থেকে শিখছি, কিভাবে অল্প কথায় মূল চেতনা প্রকাশ করা যায়। য়ামার জন্য খুবই কঠিন যদিও। অনেক ধন্যবাদ।
খন্দকার নাহিদ হোসেন আবেগে ভরা সহজ সরল কথামালার সুন্দর একটা কবিতা। তবে চাই কবি তার কল্পনা উপমায় আরো ছড়িয়ে দিক...। ও শব্দের খেলাও কিন্তু কবিতায় চাই। শুভকামনা রইলো।
স্নেহের নাহিদ, আমাকে কবি বলোনা, কবিতা আমার দ্বারা হবেনা। আমি শুধু তোমাদের মাঝে থাকতে চাই বলে কবিতা লেখার ভান করছি। তুমি কবি, তুমি নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছো আমার এই কবিতার নামে ছেলেমানুষী খেলা। আর আমি পেয়েছি তোমাদের সান্নিধ্য, বেঁচে থাকুক আমার এই ছেলেখেলা, এর ভেতর দিয়েই আমি তোমাদের সাথে থাকতে চাই। ভালো থেকো।
কবি নাহিদ, অভিনন্দন!
মোঃ আক্তারুজ্জামান পাখী শুধু উড়তেই জানে, মুক্তির মানে জানেনা- বা: খুব সুন্দর বলেছেন তো|
সত্যিইতো বলেন, আমি যদি না বুঝতে পারলাম, উড়তে পারার আনন্দ, তাহলে শুধু উড়াএ মাঝে কি মুক্তি আছে? হাহাহাহাহ আমার বিশ্বাসটুকুই ছন্দের তালে বলতে চেয়েছি।
আহমেদ সাবের মানব জনমের মাহাত্ম্য, কবিতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকার কথামালায়। মানুষ, পাখী নয়, নদী নয়, পাহাড় নয় বলেই গান্ধী, ম্যান্ডেলা বা মুজিব হতে পারে। অনেকগুলো বরেণ্য নাম পেলাম কবিতায়। চমৎকার কবিতা।
দাদা, আমিতো কবিতার কিছুই বুঝিনা, তাই যা-ই লিখেছি, মনের ভাবনাটাকে লিখে গিয়েছি। আপনার ভালো লেগেছে, এটাই আমার আনন্দ।

১৯ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৬৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী