অসংলগ্ন কথন

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

মারুফ মুস্তাফা আযাদ
  • ১৪
  • 0
  • ৪৫
হায়রে দ্যাশ! হায়রে সভ্যতা! স্বয়ংসম্পুর্ন একটা জাতির সংস্কৃতি ক্যামনে জানি পুরাই ক্রেডিটে চইলা গেল। আইজকাল আর ঘরে ঘরে বাচ্চা পোলাপানের তারস্বরে সা-রে-গা-মা শোনা যায় না। কোন কূলবধুর দুপুরবেলা গোসলের পর চুল ঝাড়তে ঝাড়তে গুন গুন স্বরের রবীন্দ্রসংগীতও কানে ভাইসা আসে না। তার জায়গায় কানের পর্দায় বাড়ি মারে পাশের ঘরের ফাযিল পোলাডার লাউডস্পিকারে “ধিংকাচিকা ধিংকাচিকা শীলা কি জওয়ানি…”। পাবলিক লাইব্রেরীর অডিটোরিয়ামে উচ্চাঙ্গের অনুষ্ঠানে গিয়া দেখি দর্শক শ্রোতা হইল আমি, আয়োজক কমিটি আর ক্যামেরাম্যান। আর একটু সামনে হাইটা রূপসী বাংলায় গিয়া দেখি, ডিজে পার্টির ড্যান্স ফ্লোরে পাও ফেলানের জায়গা নাই। আর এইডা কি নাচ!? জোয়ান বুইড়া সব ব্যাডা বেডি লাজশরমের মাথা খাইয়া ধেই ধেই কইরা ফাল পারতাছে, আর বড় বড় কয়ডা বাক্স থেইকা “মুন্নি বদনাম হুয়ি” বাইর হইতাছে। পাশেই কিন্তু গযলের আসর আছে, কিন্তু ওইখানে গায়কের গানে মাছিতে হাততালি দেয়। কি লাভ হইল এত কষ্ট কইরা সারাজীবন গলা সাইধা? মাইনষের থিকা তো এখন যন্ত্রেরই দাম বেশী। সারাদিন ধইরা কত্থক আর ভরতনাট্যমের চর্চা কইরা কইরা মাইয়া গুলার কোমর ত্যারা হইয়া গেল। অনুষ্ঠান শ্যাষ কইরা বেচারীরা ছুটিতে গেছে কোমর সিধা করার লাইগা। কেউ খোঁজ নিছে? নেয় নাই। আধানাঙ্গা ছেমড়িগুলারে দ্যাখতে তো ঠিকই সবাই ভীড় জমান। পোলাপাইনও এর লাইগা এখন আর আসল চিনি চিনেনা। সাধক শালারা মরো এখন না খাইয়া! তোমাগো এখন কেউ চিনেনা। ওই দূরে চাইয়া দেখো। ট্যাকার বৃষ্টি হইতাছে, দ্যাশে ডিজে আইছে। নকলবাজ মাকালফলগুলা মেশিনে আর স্পীকারে দামামা বাজাইতাছে আর কতগুলা মাইয়া বেলেল্লাপনা করতাছে। ট্যাকার বৃষ্টি দ্যাখতে চাইলে কাপড় খোল শালারা! এর লাইগাই রক আর পপ কম্পিটিশানে পোলাপাইনের ভীড়ে মাইষের মাথা মাইনষে খায় আর উচ্চাঙ্গের প্রতিযোগিতায় মশাও উড়ে না। যেই ভাষার লাইগা এতগুলা পোলাপাইন গুলি খাইয়া মরল, সেই ভাষার কি মান আছে? ফেব্রুয়ারী মাসে জাতীয় অনুষ্ঠানে ব্রেক ড্যান্স আর বাবারে (ক্যাবারে)! ছোডকালে উপরের তলার খালাম্মা যখন শাড়ী শুকাইতে দিত তখন শাড়ী ঝুইলা নিচে আমাগো বারিন্দায় আইয়া পড়ত। শুকাইয়া গেলে পরে মাঝে মাঝে নিচে পইড়া যাইত। তখন তুইলা নিয়া মায়ের হাতে দিতাম। এখন শাড়ী কই? ব্যাবাকেই এখন জিন্স আর টি শার্ট পড়ে। আপনেরা যেগো থিকা এইগুলান শিখছেন হেরা তো কাউয়া, আর আপনেরা ময়ুর। আর আপনেরাই পেখম ছুটাইয়া কাউয়ার বেশ লইছেন। গেরামের কথা আর কি কমু! নদীর পাড়ে এখন আর রাখালের বাঁশীর আওয়াজ পাইনা। পামু ক্যামনে? রাখাল বালকের তো বিড়ি খাইতে খাইতেই আর দম নাই। আর বাঁশীতে সুর উঠানের সময় কই তার? তার কাছে এখন আছে চাইনিজ মোবাইল আর মোবাইল ভর্তি ন্যাংটা ছবি। তাই দেইখাই তো তার রস পইড়া যায়! বাজারে যাত্রাপালা আইলে দৌড়াইয়া গেছি গান শুনতে। এখন যাত্রাপালার কোম্পানি বাজারে দ্যাখলে উল্টাদিকে দৌড় দেই। কারন এখন আর দ্যাখনের কিছু নাই। কোন ফইটকা মাইয়া সাইজা সখীর পার্টে “প্রাননাথ” কইয়া চিক্কুর দেয়না, আর তা শুইনা কোন জমিদারের পোলাও পাগল হয়না। এখন মাইয়ারাই আধান্যাংটা হইয়া দাপাদাপি করে আর সামনের দর্শকরূপি কুত্তাগুলা চোখ ফাইড়া দ্যাখে হা কইরা লোল ফালায়। এইসব ছাগলামি কইরা জাতিরে ডুবানের লাইগাই কি বাপ চাচারা নিজেগো জান কোরবান কইরা দ্যাশ স্বাধীন করছিলো? মাডি যদি কথা কইতে পারত তাইলে এইসব কাজ কারবার দেইখা চিক্কুর পাইরা বিলাপ করত। যাউকগা, এইগুলান আর কইয়া কি হইব? কেউ তো কোন কথা শোনেননা আপনেরা। এইসব কথা কইতে গেলেই কন যে পাগল ছাগল কই থিকা আইছে? দুইদিনের বৈরাগী ভাতেরে কয় অন্ন। এই শ্যাষ বারের মত কইলাম। এরপরে আর মুখে কমু না। হাতে কমু। তখন মাগো বাবাগো কইয়া চিক্কুর পাইরা কোন লাভ হইব না। এখনো সময় আছে, এইসব ভোগলামি ছাড়ান দ্যান। লাইনে আহেন। দ্যাশটার তো আর কিছু নাই, সবই খাইছেন। ’৭১ এ রাজাকাররূপী শুয়োরগুলা ৮ আনা খাইছে, আর এই ৪০ বছরে আপনেরা ১২ আনাই খাইয়া ফালাইছেন। আর আগে বাইড়েন না। এইবার দ্যাশটারে কিছু দ্যান, জাতিডারে বাঁচান। আর তা নাইলে, পাকিস্তনীরা তো জানে মাইরা ফালাইত- আমি আপনেগো বংশবৃদ্ধির ব্যবস্থা বন্ধ কইরা দিমু। এইরকম কুলাঙ্গার সন্তানের বংশ নির্বংশ হইলে দ্যাশের মাডি হাঁপ ছাইড়া বাঁচবো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক গেদু চাচার স্টাইল মনে হলো তবে সত্য কথন.. এবং মানুষকে জাগিয়ে তোলার যে দহন...তা যেন সফল হয়..আমিও আছি আপনার সাথে.
ভাই লেখার সময় গেদু চাচার কথা মনে ছিল না। তবে এখন মনে করিয়ে দেয়ার পর আসলেই মিল খুঁজে পাচ্ছি...
শাহ আকরাম রিয়াদ ভালো লাগলো...... আরো চাই.....
ধন্যবাদ ভাইয়া, ভালো থাকো।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি ৭১ এ রাজাকাররূপী শুয়োরগুলা ৮ আনা খাইছে, আর এই ৪০ বছরে আপনেরা ১২ আনাই খাইয়া ফালাইছেন। আর আগে বাইড়েন না। এইবার দ্যাশটারে কিছু দ্যান, জাতিডারে বাঁচান। // khub Valo laglo Maruf vai apnake osesh dhonnobad.............5
এতেও যদি মানুষের একটু বোধদয় আসে তবেই লেখা সার্থক জ্যোতি ভাই। আপনার প্রসংশার জন্য আপনাকে অকৃত্রিম ধন্যবাদ।
রোদের ছায়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সবার মাঝেই হতাশা আছে , আছে যন্ত্রণা সেটা বুঝা যায় ........লেখাটি বেশ ভালো লাগলো /
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ ক্ষুরধার লেখনি। কথার খোঁচা আতে ঘা দেয়। লেখায় আরেকটু সময় ও যত্ন নিলে আপনি আকাশ ছোঁবেন একদিন। অনেক ভালোলাগা আর শুভকামনা রইলো।
অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে লিখি। চেষ্টা করব এবার বাড়িতে বসে লেখার এবং আরো উৎকর্ষ সাধনের। দোয়া করবেন জালাল ভাই। ধন্যবাদ।
আযাদ ভাই , সময় পেলে আমার লেখা পড়বেন আশা করি। ধন্যবাদ।
মাহবুব খান অনেক ভালো /গঠনমূলক
sakil কেননা আমাদের মায়েরাতো এখন তার মেয়েকে ঔশ্বরিয়া বা কারিনা বা শাকিরা বানাতে চাইছে । ছেলেক বানাতে চাইছৈ শাহরুখ খান । সহমত প্রকাশ করলাম
কেউ আর এখন মেয়েদের রোকেয়া বা সুফিয়া কামালের মত করতে চায়না, ছেলেদের কেউ নজরুলা বা শের-এ-বাংলার দৃষ্টান্ত অনুসরন করেনা... এইগুলা দেখলে আসলেই কষ্ট লাগে ভাই।
আহমেদ সাবের জব্বর একখান লেখা। আহমাদ মুকুল 'এর সাথে কন্ঠ মিলাই - "মারুফ বলেন তো আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন? আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম। কি গতি আপনার লেখায়, ধারনা আছে? পরামর্শের ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি, আরেকটু গুছিয়ে প্যারা করে লিখবেন। আমার মনে হয় না, আপনার আর পেছনে তাকাতে হবে। "
আমারও তাহলে নজরুলের মত করে বলতে হচ্ছে, "আপনারা যে সওগাত আমার হাতে তুলে দিলেন, তা আমি মাথায় তুলে নিলাম"।
আহমাদ মুকুল মারুফ বলেন তো আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন? আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম। কি গতি আপনার লেখায়, ধারনা আছে? পরামর্শের ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি, আরেকটু গুছিয়ে প্যারা করে লিখবেন। আমার মনে হয় না, আপনার আর পেছনে তাকাতে হবে।
মুকুল ভাই, কি যে বলেন! আমি তো নতুন শুরু করলাম। আপনারা যারা অভিজ্ঞ লেখক, তাদের কাছ থেকেই তো আমি শিখবো। আপনার পরামর্শের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Lutful Bari Panna আরেব্বাহ জটিল লিখছেন...
পান্না ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ।

১৪ জানুয়ারী - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪