অতীত স্মৃতি গুলো যখন চোখের সামনে স্পষ্ট ছায়াছবির মতো ভেসে উঠে তখন হাজারো সুখ-দুঃখের অনুভূতি গুলো ফিরে আসে। হৃদয়ে তোলপার করে উঠে আবেগ। মেঘলা আকাশ দেখলে মন শাষন - বারন কিছুই মানে না। হাজার চেষ্টা করেও কোন কাজে মন বসানো যায় না। শুধু হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে শৈশবে। যখন প্রচন্ড আবেগ ছিল, না পাওয়া ভালবাসার অনুভূতি ছিল। এভাবেই দিন কাটতো অবুঝ পাগল প্রেমিক শ্যমলের। ভালবাসা পাবে না জেনে ও এক ছলনাময়ী স্বপ্নচারিনীর দেখানো স্বপ্নে সে বিভোর থাকতো। প্রখর রোদ, প্রবল বৃষ্টিতে ও সে তাকে এক নজর দেখার জন্য পথে, কখনো বা তার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকতো। প্রেমিকার ছলনার আশ্বাসে শ্যমলের বিশ্বাস বাড়তো। ঘন্টার পর ঘন্টা প্রবল বৃষ্টিতে দাড়িয়ে প্রেমিকাকে দেখতো। প্রেমিকা বারান্দায় দাড়িয়ে শ্যমলকে দেখতো আর হাসতো। এই দৃশ্য আমি ও দেখেছি কয়েকবার। শ্যমল আমার ভালো বন্ধু ছিল। আমার সব কথা সে শুনতো এবং মানতো। শুধু আপওি ছিল তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। আমি ওকে বহুবার নিষেদ করেছি বৃষ্টিতে ভিজে ওর বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকতে। কিন্তু পাগল প্রেমিক বলেই হয়তো আমার কথা সে শুনতো না। যে স্বপ্ন চারিনী বালিকার জন্য শ্যমল অস্থীর হয়ে থাকতো, সেই বালিকা কখনো সহানুভূতি বা ভালবাসার কথা শ্যমলকে বলেনি। তবু শ্যমল তার সমস্ত মন উজার করে তাকে ভালো বাসতে লাগলো। খাওয়া - দাওয়া ঠিক মতো করতো না কখনোই। অনেকটা এলোমেলো ভাবে কাটাতো সারাটা দিন। ওর জন্য কেন জানি না আমার খুব মায়া হতো। আবার প্রচন্ড রাগ হতো যখন ওর বৃষ্টি ভেজা পাগলামী দেখতাম। একদিন আমার মুঠো ফোনে শিকান্তের ''আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম গানটি আমি শ্যমলেকে শুনালাম। সে দিন আকাশ মেঘলা ছিল। বৃষ্টি হবে নিশ্চিত জেনে আমি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলাম। শ্যমলকে ও সাথে নিয়ে আসলাম। কিন্তু যখনই বৃষ্টি প্রবল বেগে শুরু হলো অমনি শ্যমল আমাকে কিছু না বলেই বৃষ্টির ভিতর দিল দৌর। আমি জানতাম ও কোথায় যাবে। কিন্তু পিছু নেই নি। ঘন্টা দুয়েকের মতো অনেক বৃষ্টি হলো। কিন্তু শ্যমল ফিরে না আশায় আমি বাসায় চলে এলাম। সেদিন আর ওর সাথে আমার দেখা হয়নি। ঠিক দু দিন পরে খবর পেলাম শ্যমল হাসপাতালে মারা গেছে। কথাটা আমার জন্য বিশ্বাস করা এতো কষ্টকর ছিল যা আজ আর ভাষায় প্রকাশ করার মতো মানসিকতা আমার নেই। হাসপাতালে ছুটে গিয়ে শ্যমলের নিথর দেহ সাদা কাপড়ে ঢাকা দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না। হঠাৎ করে চোখের জল বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়লো। শ্যমলের ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম সেদিন অনেক ক্ষন বৃষ্টিতে ভিজার পরে রাতে শ্যমলের প্রচন্ড জ্বর আসে। পরদিন সকালে হাসপাতালে ভর্তি করে। এবং তার পরের দিনই সে মারা গেছে। শ্যমলের লাশ যখন বাড়িতে আনা হলো হাজারো মানুষের ভীড় ঠেলে সেই স্বপ্নচারিনী বালিকা ও এসেছিল শেষ দেখা দেখতে। লাশ দেখে তার চোখের কোনে জমে উঠেছিল দু ফোটা অশ্রু বিন্দু। আমার ইচ্ছে ছিল মেয়েটিকে কিছু কড়া কথা শুনাবো। কিন্তু সেদিন আমি ও বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তাই আর বলা হয়নি। শ্যমলকে যখন কবর দিতে যাচ্ছি তখন ও শুরু হলো প্রবল বৃষ্টি। রাত ১১ টা প্রযন্ত সেই প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভিজে নিজের বন্ধুকে চিরদিনের জন্য বিদায় জানালাম। আর মনে মনে ভাবলাম আজ যদি আমার ও মৃতু্য হয়ে যেত ! কিন্তু আমার মৃতু্য হয় নি। আর আজ ও আমি মাঝে মাঝে শিকান্তের সেই গানটা শুনে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে স্বরন করি। - ''আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম''
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Muhammad Fazlul Amin Shohag
হতে পারতো অনেক কিছুই কিছু হবে না তাও জানি, হওয়ার মধো হতে পারে তোমারই হয়রানি। আমি পরকিয়ায় যাবো তোমার প্রেমের নাম ডুবাবো, তুমি জানো চাতরি ছলনার পথেই আমি যাবো। তবু আশায় ও বুক বাধো, কত কাদো কতো শাধো, আমার ঘরে ফেরার আশাতে গাও ঘরে ফেরার গান, আমি পারবো না পারবো না রাখতে প্রেমের মান।
Muhammad Fazlul Amin Shohag
আমি খুব বেশি লিখতে পারি না এখন। যতটুকু লিখি তাতে আমি নিজে সন্তুষ্ট নই।আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, আপনারা সঠিক মন্তব্য করেছেন। অনেক দিন আমি উপস্তিত ছিলাম না গল্প কবিতাতে আজ আবার ফিরে আসলাম।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।