বাঙালি রাণী

২১শে ফেব্রুয়ারী (ফেব্রুয়ারী ২০১২)

তানজির হোসেন পলাশ
  • ১৩
  • ১২২
বাবা মায়ের দেওয়া নাম পছন্দ না হলেও পরিচিতি ও কর্মজীবনের অধ্যায় সূচনার স্বার্থে বদলাতে পারে না প্রিন্স। ওর সকল পরীক্ষার সনদে রেজাউল করিম প্রিন্স লেখা আছে। কিন্তু সবাই ওকে হাই মিস্টার প্রিন্স বলে ডাকে। যা ওর মোটেও পছন্দ না। প্রিন্সের অপছন্দের কথা সবাই জানে। এমন কি যে সকল প্রতিষ্ঠানে প্রিন্স চাকরীর ইন্টারভিউ দিয়েছে তাঁরাও জানেন। প্রিন্সের সকল দু:খ দূর হয় যে মেয়েটির কাছে গেলে, যাকে প্রিন্স মনের গভীরতা থেকে ভালবাসে, সেই রাণী প্রিন্সকে সব সময় রাজা বলে ডেকে এসেছে। রাণী বলে -
: তুমি আমার রাজা। আমি রাজ্য চাই না। রাজ্যের কোন প্রিন্স চাই না। শুধু আমার রাজাকে চাই। আমার রাজার ভালবাসা পেতে চাই। আমার রাজার রাণী হয়েই আজীবন থাকতে চাই। আমি বাঙালি রাণী হতে চাই।
কালের আবর্তে পেরিয়ে যায় দিন, মাস, বছর। চাকরীর অভাবে ক্লান্ত হয়ে যায় প্রিন্স। জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা আসে। রাণীর মনের মতো নিজেকে আর বাঙালী ভাবতে পারে না। পারবেই বা কিভাবে? শুধুমাত্র বাংলা ভাষার কারণে আজ তার কোন চাকরী হয়নি। স্মার্ট হয়ে ইংরেজি ভাষায় কথা না বললে আজকাল কোন ভাল চাকরী পাওয়া যায় না। ছেলের এই বিমর্ষ অবস্থা দেখে প্রিন্সের বাবা মা ওকে দেশের বাইরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রিন্সও রাজী হয়ে যায়। ইংরেজি যদি বলতেই হয়, তবে দেশের বাইরে গিয়ে বলবে - এই মতবাদে প্রিন্স দেশ ত্যাগ করে।
আজ ফেব্রুয়ারি মাসের একুশ তারিখ। দেশের কথা প্রিন্সের খুব মনে পড়ে। মনে পড়ে রাণীর কথা। রাণীকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে। ফিরে আসে রাণীর টানে দেশে।
রাণীদের বাড়ি। চারিদিকে কলাগাছ দিয়ে সাজানো। মাঝে মাঝে জোনাকির মতো আলোক সজ্জ্বা। প্রিন্স রাণীদের বাড়ির সামনে আসতেই হতবাক হয়ে যায়। বুঝতে পারে না কিছুই। বোঝার চেষ্টাও করে না। ধীর পায়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে। অনেক লোকজনের ভীড়। কানে গ্রাম্য গীত ভেসে আসছে। আস্তে আস্তে সামনে এগোয় প্রিন্স। হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। সামনে তাকায়। লাল বেনারসি শাড়ীতে বধূ বেশে রাণীকে দেখে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না প্রিন্স। জলে চোখ ছল ছল করে। দু'হাতে চোখ মুছে নিয়ে আবার তাকায়। চোখের সামনে একই দৃশ্য। সামনে এগোনোর চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। দু\'চোখ বন্ধ করে। আবার তাকায়। চোখের খুব সামনে বধূ সজ্জিত রাণী। রাণীকে কিছু বলতে যায় প্রিন্স। সে সুযোগ দেয় না রাণী। বলে -
: যে ভাষার জন্য জীবন বিসর্জন দিতে দ্বিধা করেনি বাঙালিরা, সে ভাষার সম্মান রক্ষা করতে একজন শ্রমজীবীকে বেছে নিয়ে নিশ্চয়ই ভুল করিনি আমি। নিজের অস্তিত্বকে বিকিয়ে দিয়ে ইংরেজদের গোলামী করা একজন মানুষের কাছে দেশ কিছুই আশা করতে পারে না। সবুজে ভরা আমাদের এই দেশের উন্নয়নে যারা স্বনির্ভর কৃষিজীবী শ্রমিক তাদের চেয়ে নিশ্চয়ই আর কেউ এই বাংলা মাতৃভাষাকে সম্মানের শিখরে নিয়ে যেতে পারবে না। আশা করি আজকের এই দিনে আমার রাজা হওয়ার সৎ সাহসটুকু দেখাবেন না।
চোখ বন্ধ করে প্রিন্স এই কথাটুকু শুনছিল। এছাড়া তো ওর কিছুই করার নেই। গরুর গাড়ীর চাকার শব্দে প্রিন্স সম্বিত ফিরে পায়। দেখে সামনে কোন লোকজন নেই। বাড়ীর বাইরে আসে। গরুর গাড়ীতে নববধূ রাণী ও নতুন দিনের রাজা চলছে। প্রিন্সের কানে ধ্বনিত হয় রাণী সেই আকুল কণ্ঠ আমি বাঙালি রাণী হতে চাই। প্রিন্সের মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে তুমি পেরেছো রাণী। তুমি বাঙালি রাণী হতে পেরেছো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক গল্পের প্লটটা চমত্কার, কলেবরটা আর একটু বাড়ানো যেত, খুব ভালো লাগলো...শুভ কামনা....
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Thanks Trinoyon for reading my story.
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি বেশ ভালো লাগলো |
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
thanks for your comments.
ভালো লাগেনি ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
তানজির হোসেন পলাশ boi melar golpo porte hafiye uthechhe sobai.
ভালো লাগেনি ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি Abeg dhormi sabolil akti sundor lekha.....valo laglo....tanjir apnake dhonnobad....
তানজির হোসেন পলাশ গল্প পড়া আর বাস্তবতা বোঝা সমান .
মারুফ মুস্তাফা আযাদ গল্পটা আকারে ছোট হলেও আকৃতিতে অনেক বড়......
ধন্যবাদ মারুফ মুস্তাফা ভাই .
তানজির হোসেন পলাশ গল্প পড়ুন কমেন্টস করুন / ভোটে আপনের ইচ্ছা .
Lutful Bari Panna অনেক আবেগময় গল্প লিখেছেন ভাই। বাস্তবতাও যদি এমন হত, কতই না ভাল হত।
জীবনটাই তো আবেগময় / ধন্যবাদ.
আসন্ন আশফাক ভাষার, জাতির প্রতি মমত্ববোধ ফুটে উঠেছে

২২ নভেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্বাধীনতা”
কবিতার বিষয় "স্বাধীনতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারী,২০২৫