শীতের সকাল। খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে ডেকে উঠানো হল ধ্রুবকে। ধ্রুব, মাত্র ৮ বছর বয়স, খুব কষ্ট পায় যখন শীতের সকালে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তোলে ওকে। সেদিনও ব্যাতিক্রম হয়নি। এই সাতসকালে ওকে বাজারে যেতে হবে দুধ বিক্রি করতে। তাও আবার দুধে পানি মেশানো ভেজাল দুধ। ধ্রুব নিজেই বুঝে এটা ঠিকনা, তবু কিছুই করার নেই ওর । ৯ সদস্যের পরিবার সাত্তার আলীর। দরিদ্র পরিবার । কাজকর্ম বলতে বাজারে দুধ বিক্রি করে যা আয় হয় তাই। এ দিয়েই সংসার চালাতে হয়। কি করবে মাঝে মধ্যে বুঝে উঠতে পারেনা। ঠিক যেমনটি আজ হয়েছে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে গ্রামের এক মক্তবে কুরআন শিখতে গেছে। আসতে আসতে অনেক দেরি হওয়াতে ছেলের উপর খুব রাগ করেছেন সাত্তার আলী। তাইতো ধাওয়া করেছেন ছেলেকে। দুরন্ত ছেলেও সুযোগ বুঝে ঝাপ দিয়েছে ছোট্ট নদীতে। তারপর দুপুরবেলা আবার ঠিকই ধ্রুবর জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে এসেছে। এই না হলে বাবা...। তারপর কাছে এনে বুঝিয়ে বলেছে, “দেখ বাবা তুই যদি আমার কামে সাহায্য না কর তাইলে আমাগো পরিবারডা কেমনে চলবে?” ধ্রুব ও বুঝে যায় খুব দ্রুত। পরদিন থেকে আর মক্তবে যায়না। শুধু বাবার কাজে সাহায্য করে, আর স্কুলে যায়। বাবার স্বপ্ন ধ্রুবকে পড়াশুনা করিয়ে বড় মানুষ করবে। সবাই একনামে তাকে চিনবে। একদিন এক মোটরসাইকেলে সাত্তার আলীকে পিছন থেকে ধাক্কা দিল। বাবা পড়ে রইল বাজারের নলকূপের কাছে, রাস্তার উপরে। ধ্রুব স্কুলে ক্লাস করছে। দৌড়ে এসে বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিলো। ডাক্তার ওষুধ দিল । বাবা কিছুটা সুস্থ কিন্তু এখন থেকে তাকে হাঁটতে হবে ক্র্যাচে ভর দিয়ে। সে যে কি কষ্ট... এরপর অনেকদিন চলে গেছে। বাবাও আর বিছানা থেকে উঠতে পারেনি। ধ্রুবর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল দিল। ধ্রুব A+ পেয়ে উত্তীর্ন হল। বাসায় এসে বাবাকে বলল, বাবা আনন্দে কেঁডে ফেললেন। সে যে কি বেদনার্ত সুখ তা শুধুমাত্র স্রষ্টাই জানেন।ব এরপর অনেক মুহুর্ত এসেছে। এইচএসসি’র ফলাফলের আগেই মারা গেলেন ধ্রবর বাবা। কিন্তু সেই আনন্দাশ্রু আর কখনো দেখেনি ধ্রুব। এখনো রেজাল্ট দেয় আর অবিরাম অশ্রুধারা ঝরে। বাবার সেই হাসিমাখা মুখ, ভালবাসাময় শাসন, পিতৃময় স্নেহ থেকে আজ আজীবনের জন্য বঞ্চিত ধ্রুব। আজ খুব ইচ্ছা করে, আরেকবার বাবা বলে ডাকতে। ইচ্ছা করে খুব ভোরবেলা নিজেই ঘুম থেকে উঠে বাবার হাতটি ধরে বলে, বাবা চলো, আমরা দুধ বিক্রি করতে যাই। বাবা আর কখনো তোমার কথার অবাধ্য হবনা। বাবা...।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
প্রজ্ঞা মৌসুমী
লেখনী বেশ ভালো; এইটুকুতে অনেককিছু তুলে ধরেছেন। তবে গল্প খানিকটা নড়বড়ে রয়ে গেল মনে হলো. সাবের ভাইয়ে মত আমিও ভাবছিলাম এরকম পরিবারে ধ্রুব নাম মানায় না; সেই সাথে ভাবছিলাম বাকি সাতজন সদস্যের কথা। কিছু কিছু কথা আদর্শগত দিক থেকে ভালো শুনালো না. " বাবা আর কখনো তোমার কথার অবাধ্য হব না" তার মানে বাবা যা শিখিয়েছে দুধে পানি মেশানো ভেজাল দুধ বিক্রি চলতেই থাকবে? তারপর "পরদিন থেকে মক্তব্যে যায় না"। ছেলেকে কুরআন শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে বাবার অবহেলা করা কি ঠিক হলো? চাইলে ধর্ম থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়। তারপরো গল্পের ভালোটা ভালো লেগেছে। আপনি চেষ্টা করলে ভালো করবেন- অনেক শুভকামনা
বাবার অবাধ্য হবনা তখনি বলা হয়েছে যখন সে বুঝেছে বাবার সাথে দুধ বিক্রি করতে না গেলে হয়ত পরিবারটাকেই অনাহারে থাকতে হত. মক্তবে গেলে তো পরিবার অনাহারে থাকবে তাই যায়নি. যখন পেটে ক্ষুধা থাকে তখন মানুষ অনেক কিছুই চাইলেও করতে পারেনা. গঠনমূলক পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ. খুব কম লিখি তো তাই. এরপর লিখলে যত্নবান হওয়ার চেস্টা করব.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।