দেবীর খোঁজে

প্রিয়ার চাহনি (মে ২০১২)

আশিক বিন রহিম
  • ২৫
  • ৩২
দ্রুত ট্রেনটা ছুটে চলছে। জানালায় বাঁ-হাতটা রেখে ক্লান্ত দেহটা ট্রেনের সিটে এলিয়ে দিয়ে নিদ্রাদেবীর স্পর্শ পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছি। দখিনা বাতাসে শরীরে শীত অনুভব করলাম। এই বুঝি নিদ্রাদেবীর স্পর্শ পাবো। চোখের পাতা এক করতেই কারো চিৎকারে আঁতকে উঠলাম। ''এই যে লন, গাজী বাম লাগাইলেই কাম, না লাগাইলেই আকাম।'' হকারকে থামিয়ে কেউ একজন বলে উঠলো, ''আরে ভাই চিল্লান ক্যান? সামনে যান।'' হকার হাসিমুখে বললো, ''আরে ভাই, পেটের দায়ে চিল্লাই, এই ব্যবসাটাই এমন। যতো বেশি চিল্লামু, ততো বেশি বিক্রি''
লোকটা অন্য কামরায় চলে গেলো। এবার মন্তব্য করার পালা। মন্তব্যে কে কতটা পারদর্শী সে প্রতিযোগিতাই যেনো শুরু হলো। ক্ষানিকপর কোলাহল থেমে গেলো, অথচ ট্রেনটা যে থামতে চাইছে না। না শব্দ, না তার গতি। যেনো সে অন্তহীন পথে ছুটছে। আবার ও চোখের পাতা দুটো এক করলাম। এবার নিদ্রাদেবীর পরশ পাওয়ার আশায় নয়, আমার দেবীকে নিয়ে ভাববার আশায়। এ দেবী স্বর্গদেবী নয়, আমার হৃদয়দেবী, ভালোবাসার দেবী। যাকে অনেক ভালোবাসি, যতোটা ভালোবাসি আমি নিজেকে বোধহয় তারচেয়ে ও বেশী। দেবী স্বর্গ মানবী না হলে ও সৌর মানবী তাকে বলা যায়। কারণ আমাদের মাঝে দূরত্ব আছে অনেক । আমি দেবীকে যেদিন প্রথম দেখেছি, দেবী সেদিন কালো বোরকা পরা ছিলো। একজোড়া সাদা হাত আর একজোড়া চোখের চাহনি আমার ভেতরটা নাড়িয়ে দিলো। কাছে পাওয়ার ব্যাকুলতায় আমি অস্থির হয়ে গেলাম। যখন শুনলাম, ওরা এখানে ভাড়া বাড়িতে থাকে, ওদের বাড়ি গ্রামে, তখন দেবীকে মনের কথা জানালাম। দেবী সাড়া দিলো। আমরা ভালোবাসার অতল গভীরে পৌছে গেলাম। হঠাৎ জানতে পারলাম, দেবীরা অনেক বড়লোক। বড়লোকের সংজ্ঞা অন্য হলে ও বর্তমানে বড়লোক বলতে ধনীদেরকেই বুঝানো হয়। ওর বাবার বিদেশে ব্যবসা আছে। ওরা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বহুতল ভবন গড়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে উঠবে। মাথায় আকাশ ভাঙল। চোখ কপালে ওঠার উপক্রম।
দেবীকে ভুলে যেতে যুদ্ধে নেমে পড়লাম। সে যুদ্ধে আমার বিবেকের পরাজয় হলো। দেবী ভালোবাসাকে ঊর্ধ্বের রেখে আমার যুক্তিকে থামিয়ে দিলো। দেবী যুক্তি দেখালো, সময় আছে প্রতিষ্ঠিত হবার। আমি যুক্তিযুদ্ধে পরাজিত সৈনিক হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার যুদ্ধে নেমে পড়লাম। জানি, প্রতিষ্ঠিত হওয়া কতোটা কঠিন, আর আলাদীনের চেরাগ সে এখন কল্পকথা!
****
আমি ছুটে যাচ্ছি অট্টালিকার শহরে জীবনযুদ্ধে অন্তহীন যুদ্ধে। আমি জানি এ চলা অন্তবিহীন পথ চলা। আমি দেবীকে জীবন সঙ্গী করে পাওয়ার দৃঢ় শপথ নিয়েছি। শুনে বন্ধুরা প্রশ্ন ছুড়ে দিল যদি তুই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ওর বিয়ে হয়ে যায়? আমি বললাম হলে হবে তাকে কি? আমি ওকে আবারো বিয়ে করবো। শুনে সবাই মুচকি হাসি হাসলো আবারো প্রশ্ন করলো সমাজ কি তা মেনে নিবে? আমি বললাম সমাজ যদি বিবেক কে গলা টিপে হত্যা করতে পারে তবে আমিও আমার ভালবাসার শক্তি দিয়ে সমাজের গলা টিপে ধরবো। সবাই উচ্চ স্বরে হসালো আমি বুঝতে পারলাম পাগলের পলাপ বকছি। হঠাৎ বিকট শব্দে ট্রেন টা থেমে গেল। হৈ চৈ শুনে ধ্যান ভেঙ্গে গেল। দেখি সাবই উঠা নামায় ব্যস্ত। নামার চেয়ে উঠার সংখ্যা বেশি। নিজকে প্রশ্ন করলাম সবাই কি আমারি মত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঐ অট্টালিকার শহরের ছুটছে? হঠাৎ কানের কাছে কে যেন বললো এই রং চা...আমি বাস্তবে ফিরে এলাম।
ট্রেন আবার ছুটতে লাগলো তার গন্তব্যে। কোলাহল থেমে গেল। ট্রেন একটা সময় তার গন্তব্য স্থল খুঁজে পাবে। আমার চলা কি শেষ হবে? চোখের পাতা এক করলাম নিদ্রা দেবীর স্পর্শ পেলাম। চোখে স্বপ্ন এলো। স্বপ্নের মাঝে দেবীকে স্পর্শ করার জন্য আমি একটা পথে হাঁটা শুরু করলাম। সেই পথ অন্তবিহীন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এ কে এম মাজহারুল আবেদিন নিদ্রাদেবী অমর হোক.... আপনার সপ্নদেবী আপনার হোক.... বোঝাই যাচ্ছে আপনি তার জন্যে ব্যাকুল হয়ে আছেন | শুভ কামনা রইলো |
স্বাধীন অল্প, সল্প, গল্প... অনেক সুন্দর হয়েছে
তানি হক খুবই সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া ..অল্পকথায় প্রচন্ড আবেগ ফুটিয়ে তোলা সহজ কথানয় ..রিদয় ছোয়া বর্ণনা ...দারুন !
donnobad apu..akti gopon kotha..golper debi namer naikar asol nam kintu taniya ( tani ) dowa korben____,
বিন আরফান. হৃদয় উজার করে লিখেছেন. বেশ ভালো লাগলো. লিখতে থাকুন. উর্দ্ধ সীমা ছুতে পারবেন. কামনাও তাই.
রোদের ছায়া ছোট্ট করে বেশ সুন্দর গল্প বলা হোল ............।ভালো লাগলো ।
প্রদীপ আমি সবাই কে একটাই কথা বলে এসেছি সবে মাত্র কলম ধরতে শিখেছি তাই ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা আমার হয়নি। একজন লেখকের কাছে তার লেখা অসার্থক কোন দিন ই হতে পারে না। ছোট গল্প হিসেবে খুবই ভালো লাগলো। সুভকামনা রইল সঙ্গে ভাইয়ের ভালোবাসা টুকু!
সে কি! আপনি আমাকে দাদা বলছেন কেন? আমার তো আপনাকে বলার কথা! আমি আপনার থেকে অনেক ছোট দাদাভাই!
আহমেদ সাবের সুন্দর, ছিমছাম ছোট্ট একটা গল্প - একটু খানি আবেগ। ভাল লাগল।
মিলন বনিক এ কি রে..আর একটু বাড়িয়ে মারলে তো পুরো ছক্কা..অল্প কথন..অথচ গভীর আবেগে পরিপূর্ণ..খুব ভালো লাগলো ভাই..ভালোবাবাসার জয় হোক প্রতিষ্টার মাধ্যমে..

১৬ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪