গর্বের সন্তান

নতুন (এপ্রিল ২০১২)

আশিক বিন রহিম
  • ১১
  • 0
দেশের প্রায় সক'টি জেলা-ই শক্রমুক্ত। বাংলার সিংহপুরুষ ওই গর্বিত বীর সেনাদের মুখে আজ বিজয় হাসি। খালেদ বাড়ি ফিরছে। কাঁধে বন্দুক। একটা বুলেট বন্দুক এখনো জমা আছে। রোদের মাখামাখি-পাতাঝরা গাছ থেকে দমকা হাওয়া তেড়ে আসছে। আধমরা একটা কৃষ্ণচুড়া ধুলোয় ধূসর। খালেদ তাকিয়ে দেখছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলার অবয়ব। হতাশ মন-স্বাধীন এই মেঠো পথে আজ ওর একা হাঁটার কথা ছিল না। ওর কাঁধে হাত রেখে হাঁটার কথা ছিলো প্রিয় বন্ধু জামালের। জামাল-ই খালেদকে যুদ্ধে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়।

ওরা যখন জামালের মায়ের পা ছুঁয়ে বিদায় নিলো, জামালের মা দু'জনের মাথায় দুটি হাত রেখে বলেছিলো যা-বাজান তোরা যুদ্ধে যা। ঐ পাকিস্তানি গো হাত থেইকা এই দেশ-দেশের নিরীহ মানুষ গুলারে রক্ষা কর। শুনেছি ছোট ছোট নাবালক মাইয়ারা ও অগো লালসার শিকার হইছে তোরা এর বদলা-ল এই দেশের মাটিতেই অগরে কবর দিবে। যাতে অরা জান লইযা ফিরতে না পারে। যুদ্ধে শেষে দুই ভাইয়ে আবার একসাথে ফিরিস। তয় বাজানেরা একখান কথা খালি হাতে ফিরিস না। আমার জন্য একখানা লাল সবুজের নতুন পতাকা নিয়া ফিরিস যেই পতাকাটি নতুন বাংলার মুক্ত বাতাসে উড়বো।
একথাগুলো ভাবতেই খালেদ অশ্রুসিক্ত, হাতের উল্টোপিঠে চোখ মুছে নিলো। খালেদ ফিরছে স্বাধীন পতাকা হাতে, জামাল সাথে নেই। সম্মুখযুদ্ধে জামাল শহীদ হয়। খালেদ ভাবছে কী করে জামালের মায়ের সামনে যাবে। যে মা গর্ভের সন্তানের গর্বিত মুখ দেখার অপেক্ষার পথ চেয়ে আছে।
একদল কিশোর স্বাধীন পতাকা হাতে 'জয় বাংলা' শ্লোগান দিয়ে-ছাগলছানা পায়ে লাফাতে লাফাতে চলে যাচ্ছে। অদূরে একটা মোটা-তাজা কড়ই গাছ। গাছটার নিচে সাদা কাপড় পরে কে যেনো বসে আছে। কাছে যেতেই খালেদ থমকে গেলো- 'মা' বলে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। মাথাটা বৃদ্ধা মায়ের কাছে নিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠলো। আর কাঁদোস্বরে বললো 'মা' আমায় মাপ করে দাও। আমি কথা রাখতে পারিনি। দেশ স্বাধীন করেছি, তোমার জন্য একটা লাল-সবুজ পতাকাও আনছি মা। কিন্তু তোমার ছেলেকে আনতে পারি নাই। জামাল শহীদ হইছে মা জামাল শহীদ হইছে।
দু'টি শীতল হাত খালেদের মাথায় পড়লো। স্নেহের পরশ অনুভব করলো খালেদ। মাথা উঁচিয়ে দেখলো, বীর বাঙালির এক গর্বিত মা, পাথর চোখ, মুখে অকৃত্রিম হাসি হেসে বললো, 'ওঠ বাপ একটা স্বাধীন দেশ, দেখার লাইগা আমি আমার গর্ভের ধন হারাইছি, তাতে কী? আমি তো একটা স্বাধীন পতাকা পাইছি। জামাল আমার গর্ভের সন্তান ঠিক, কিন্তু তোরা যারা দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করছস, সবাই তো আমার গর্বের-ই সন্তান। আমার গর্বের সন্তা নগো মুখ দেইখা আমার গর্ভের সন্তানের কথা ভূইলা যামু।
....জমাল বাড়ি ফিরছে ভাবীসাব? আল-বদর মতিন খাঁ পানের পিক ফেলতে ফেলতে বললো।
মুহুর্তেই সিংহের গর্জন করতে করতে বলে ওঠলো জামালের মা, গুলি চালা খালেদ ওই রাজাকারের বাচ্চা তোর বইনের ধর্ষণ করছে। অয় তোর খালুরেও মারছে। স্বাধীন দেশে অর বাঁচানোর কোন অধিকার নাই।
খিললিখ করে বলদ হাসি হেসে ওঠলো মতিন খাঁ। আরও পানের টিক ফেলে বলে 'ওঠলো ভাবীসাব যুদ্ধ তো শেষ। অহন আমরা ভাই-ভাই-দেশে কোন রাজাকার নাই। ''ঠাস" করে একটা গুলির শব্দ হলো। একদল কাক 'কা কা' করে গেয়ে ওঠলো বিজয় সংগীত। মাটিতে লুটিয়ে পড়লো মতিন-দেশমাতার এ ক্লান্তিলগ্নে গর্বিত সন্তান না হওয়ার অতৃপ্ততা প্রকাশ পেলো মতিন খাঁ'র পাথর দুটি চোখ। কপাল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত সবুজ ঘাসে হামাগুড়ি খঅচ্ছে। দেখে মনে হলো তার রক্তগুলো স্বদেশ-মাতার পা জাড়িয়ে বলছে 'মা আমি এক কপালপোড়া। তোমার খেয়ে, তোমার বুকে মানুষ হয়ে তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। আমায় ক্ষমা করো। আমি তোমার গর্বিত সন্তান হতে পারিনি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি 'ঠাস" করে একটা গুলির শব্দ হলো। একদল কাক 'কা কা' করে গেয়ে ওঠলো বিজয় সংগীত। // Kanta Jeno Onek Din Por Valo Kichhu Sunte Peye Dhonno Holo.....Rohim Vai Apnake Osesh Dhonnobad...5
donnobad vaiya...※ amar nam Asik, Rahim amar babar nam...
ঝরা ভালো
amar lakhati porar jonno sobar proti kitoggota prokas korci.. asa rakhi sobar lakhai porben.. lakhok der ussho diben
আরমান হায়দার লেখাটি ভাল লাগল। শুভকামনা লেখকের প্রতি।
piash শেষের দিকে এসে ভালো লাগলো আপনার গল্পটা ।
রফিকুজ্জামান রণি ৫ দিলাম ভাই !
roni vai sunlam kono aggato karone apnar kobita prokas payni.. kosto tai amra o pelam
বশির আহমেদ মতিন খাঁ দের মত লোকদের এমনই ঠাস করে গুলি করে হত্যা করা উচিত ছিল । দেশদ্রোহীদের বাচিয়ে রাখাই মারাত্বক ভুল ছিল ।
donnobad vaiya ……………………※
Lutful Bari Panna পরিণতিটা খুবই ভাল লাগল। এরকম হলে বোধ হয় আমাদের এ দায় আজো বয়ে বেড়াতে হত না।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না। বেইমান বিশ্বাসঘাতকদের কখনো ক্ষমা করতে নেই। চমৎকার বাক্যবিণ্যাস ও ক্রম। ভাল লেগেছে খুব। অভিনন্দন ও শুভকামনা রইলো।
পাঁচ হাজার এমন হলে ভালই হতো বোধহয়, কোন বেজর্মা কখনো চরিত্র সংশোধন করেছে এমন কথা শোনা যায়নি। ওদের মাফ না করে ঠাস ঠাস গুলি খাইয়ে দেয়া উচিত ছিল। ভাল লাগা রইল।
vaiya apnader motamot paye amio kusi holam

১৬ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪