রোবট কণ্যা অনন্যা

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
  • ৪০
  • ১৭৪
আজ ‘অনন্যা’র জন্মদিন। শহরের অদুরে নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে গড়া অত্যান্ত মনোমুগ্ধকর বাগান বাড়ি। দেশী বিদেশী হরেক রকমের বাহারি ফুল, রুপান্তরিত মুসান্ডা, পাতাবাহার, আর কয়েক প্রকার ডালিয়ার মন মাতানো সব রং মিলিয়ে সাজানো গোছানো বাগানটি। খটমটে যান্ত্রিক জীবনের পরিসরে পরিশুদ্ধ বাতাস সেবনে মাঝে মধ্যে তাই বাগান বাড়িতে চলে আসেন ‘অনন্যা’কে সাথে নিয়ে উপ মহাদেশের প্রখ্যাত রোবট বিজ্ঞানী ডক্টর রজত রায়হান।

অনন্যা’র জন্মের পর থেকে অ্দ্যবোধি ওর নিরলস সাহচর্য পেয়ে এসেছেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় কুড়িটি বছর ধরে একটানা ঘরসংসার করেছেন নিজের হাতে গড়া এই রোবট মেয়েটির সাথে। তাঁর আবিস্কারের প্রথম মডেল কন্যা ‘অনন্যা রায়হান'' । স্মৃতির কপালে লক্ষ্মীর তিলক পড়িয়ে তাই নিজের ঘরেই স্বযত্নে রেখে দিয়েছিলেন হৃদয়ের সব গুলো ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালিয়ে।


বাগানের লনে বসে বৈকালিক চায়ের কাপে পরিতৃপ্তির একটা চুমুক দিয়ে ধ্যানমগ্ন হয়ে ‘অনন্যা’র মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন অনেকক্ষণ । মনটা কেমন যেন আজ অস্থির হয়ে উঠে তাঁর। উদাসী মনের স্রোতে ভাসতে ভাসতে এক সময় চলে যান ফেলে আসা স্মৃতির সাগরে........



দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বিশ্বের একমাত্র মহিলা রোবট বিজ্ঞানী হিসেবে প্রখ্যাত হতে খুব বেশী সময় লাগেনি তাঁর।‘’করপোরাল রোবোটিক হিউম্যানস প্রাইভেট লিমিটেড’’এর তৈরী স্পেশাল প্রডাক্ট ‘অনন্যা’ বিশ্ব বাজারে সেরা মহিলা রোবট হিসেবে স্বিকৃত এখন।
‘অনন্যা’র জন্ম দিনের প্রাক্কালে আজ তাই সেই দিন গুলোর কথাই খুব বেশী করে যেন মনে পড়ছে। গরম চায়ের কাপে আর একবার ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিয়ে সুপারসনিক গতিতে প্রথম থেকে শেষোব্দি পর্যন্ত ‘অনন্যা’ আবিস্কারের সেই ব্যাকআপ মেমোরি গুলো রিয়োন্ড করতে করতে ফিরে যান তিনি আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর পেছনের দিন গুলোতে........................................................................

কিছু একটা আবিস্কার করার ঝোক ছোট বেলা থেকেই ছিল। পদার্থ বিজ্ঞানের এক সময়কার তুখড় ছাত্র তিনি। লেখা পড়া শেষ করে কিছুদিন হয় বিলেত থেকে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরেই সবার আগে গবেষণার কাজে মন নিবেশ করেন ।

এক মাথা ঝাকড়া চুল, লম্বাটে গড়ন। স্বল্প ভাষী, উদাসী মনের মানুষ। ত্রিশের উপর বয়স হবে, বিয়ে'থা করেননি তখনো। আর কর্মটি আদোও তিনি করবেন কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সন্ধিহান সবাই। বাবা মা অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে বিয়ে করাতে পারেনি। তাঁর গবেষণা বিষয়ী মহিলা রোবটাই নাকি মানষী হয়ে আগে থেকেই হৃদয়ে আসন পেতে বসেছে।

ধনী বাবার একমাত্র সন্তান, কোন কিছুর অভাব নেই। সঙ্গত কারনে আবিস্কারের পাগলা গোড়াটা মাথার মধ্যে লাগামহীন চরে বেড়ায় অনেকটা ফাকা ময়দানে ঘাস খাওয়ার মতো করে।

জাপানের প্রখ্যাত রোবট বিজ্ঞানী ডক্টর তেজুকাসান, এর সাথে বিলেতে রোবট দেহের ‘’মেটেরিয়াল অরিজিন’’ নিয়ে গবেষণা করেছেন দীর্ঘ ১০ বছর। পূ্র্ব গবেষণার জের ধরে সাফল্যের আশায় তাই বিষয়টি নিয়ে আরো এগিয়ে যেতে চান তিনি।


ডক্টর তেজুকাসানও রায়হান সাহেবের গবেষণার বিষয়ে খুবই আশাবাদী। তাঁর সাথে ঢাকার ল্যাবে বসে ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে নিয়মিত কাজের আপডেট সেয়ার করে নেন ডক্টর রায়হান।
এভাবে বহাল তবিয়তে এগিয়ে চলে তাঁর গবেষণার কাজ। গুলশানে অত্যাধুনিক ‘‘করপোরাল রোবোটিক হিউম্যানস প্রাইভেট লিমিটেড’’ নামের ল্যাবটি বাংলাদেশের একমাত্র মনুষ্যদেহী নারীরোবট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের চাইতে বিজ্ঞানী ডক্টর রজত রায়হানের গবেষণাকৃত রোবটের গুনগত পার্থক্য থাকবে অনেক। মনের আকাশে কল্পনার তুলি দিয়ে তিনি রোবট কণ্যাটির ব্লুপ্রিন্ট করেছেন অনেকটা বাঙ্গালী ঘরানার একজন গৃহিনীর আদলে।

কেননা রোবটকে চিরদিন তিনি হাটু ভাঙ্গা ‘ দ ’ এর মতো দেখতে চান না । তাঁর রোবটটি হবে স্বাভাবিক একজন মনুষ্যদেহী সুন্দরী মহিলার মতোই দেখতে। বিশ্বের অন্যান্য রোবটের -হায়া লজ্জ্যা, সুখ আনন্দ, হাসি, মান অভিমান, ঠাট্টা মশকরা, এ সবের কোন বালাই না থাকলেও। ডক্টর রজত রায়হানের এই নারী রোবটির সফটওয়ার কনফিগারেশনে এর সব গুলো অপশনই এ্যাকটিভ থাকবে।

এছাড়া ঘর গৃহস্থালীর কাজ -ঝার ঝাটা, রান্না বান্না, ঘর গোছানো, কাপড় কাচা, সন্তান দেখা শোনা সহ হেন কাজ নেই যে তাঁর এই নারী রোবটটি করতে পারবে না। এমন কি পুরুষের সাথে যৌন মিলনের আবেগ অনুভূতি জনিত শারীরিক সক্ষমতা পর্যন্ত তার রোবটে বোনাস অপশন হিসেবে চমক থাকবে।

রোবটকে দিয়ে মানুষ এযাবৎ শুধু অর্থ আর প্রাচুর্য্যের পাহাড় গড়েছে। কিন্তু মানুষের মতো ভোগ বিলাস আনন্দ উপভোগের ক্ষেত্রে রোবটেরও যে মন বলে কিছু থাকা উচিত এ নিয়ে কেউ কখনো ভাবতে চায়নি। তাই মেটেরিয়াল,হিউম্যানাস এর কম্বিনেশনে তৈরী পৃথিবীতে এটিই প্রথম এবং একমাত্র মহিলা ম্যাকাটনিক্স।
যাই হোক দিন যায় মাস যায়, বছর ঘুরে আবার বছর ফিরে আসে, কিন্তু সাফল্যের দেখা তবু মেলে না। অথচ যথারিতি গবেষণার কাজ কিন্তু তাঁর কচ্ছপ গতিতেই এগুতে থাকে। বিফলতার সূত্র ধরে সাফল্যের নতুন নতুন দুয়ার খুলে একের পর এক কল্পনার সিড়ি ভেঙ্গে এগিয়ে যান তিনি নির্দিষ্ট সাফল্যের লক্ষ্যে।
এভাবে জীবন থেকে পেরিয়ে যায় তাঁর আরো কয়েকটি মুল্যবান সময়ের পরিসর। তবুও আশাহত হন না বিজ্ঞানী রজত রায়হান। এযেন তাঁর মনের সিংহাসনে বসে থাকা সেই মানষ কণ্যারই প্রেম ভালোবাসার অদৈম্য প্রেরণাশক্তি। যাকে তিনি এত কাল হৃদয়ে লালন করে এসেছেন তাকে আবিস্কার করাই যেন তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।

যাই হোক দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। অবশেষে কল্পনার তুলিতে আঁকা সেই নারী রোবটের মডেলটি তিনি আবিস্কার করতে সক্ষম হন ।
হতাশার বালু চরে কাঁশ ফুলের শ্বেতশুভ্র সফেদ হাঁসিতে ভরে উঠে তাঁর সৃজনশীল মনের আঙ্গিনা। সখ করে রোবট কণ্যাটির নাম রাখেন ‘অনন্যা রায়হান’।

রোবট মুলত খন্ড খন্ড যান্ত্রিক ডিভাইসের অটোমোশন, তাই বাইরে থেকে এটিকে দেখতে যন্ত্র মানবের মতো মনে হয়। সুতরাং ডক্টর রজত রায়হানের করপোরাল রোবটি যেহেতু মনুষ্যদেহী সেহেতু এটিকে নিয়ে রোবট বিশ্বে বড় ধরনের একটা হৈ চৈ পড়ে যায়।
দেশ বিদেশের আই,টি মহলে ডঃ রজত রায়হান চলে আসেন একেবারে আলোচনার শীর্ষে। রাতারাতি হয়ে উঠেন তিনি রোবট দুনিয়ার অভূতপূর্ব সাফল্যের একমাত্র দাবিদার।

সোনার বাংলার সোনালী আঁশ আর বান্দরবনের পাহাড়ী লিকুইড রাবারের সাথে এক ধরনের জৈব রাসায়নিক যৌগ মিশিয়ে তৈরী করা হয়েছে ‘অনন্যা রায়হান’এর দুধে আলতা বরণ শারিরীক পেশীবহুল মেয়েলী মাংসল গঠন। গায়ে হাত রাখলেই যেন তুলতুলে অনুভূতি বলে দেয় এটি আকর্ষনীয় সুন্দরী মেয়ে মানুষের নমনীয় দেহ।

লজ্জ্যা জনক স্থান গুলোতে অতি সুক্ষ ভাবে এক্সট্রা ডিভাইস বসানো হয়েছে । বাটন টিপে সে গুলোকে সহজেই খোলা, বন্ধ করা এবং পরিস্কার করা যায়।
এ ছাড়া ফ্যাশন বা পোশাকী সৌন্দর্য্যের জন্য ইচ্ছে মতো যে কোন পোশাক বেছে নিলেই হলো। স্থান কাল পাত্র ভেদে নির্ঘাৎ তা মানিয়ে যাবে।
তবে প্রাথমিক ভাবে ‘অনন্যা রায়হান’কে শাড়ীতেই বেশী মানায় বলে ইতোমধ্যে মত দিয়েছেন অনেকে। অবশ্য রোবট হিসেবে অনন্যা রায়হানের যে নিজস্ব কোন পছন্দ থাকতে নেই তা কিন্তু নয়। সেও শাড়ী পরতেই বেশী আগ্রহী বলে জানিয়েছে। তাই ‘অনন্যা’ রায়হান তার পছন্দের শাড়ী পরেই স্বাচ্ছন্দে সাংসারিক কাজ কর্ম করে বেড়ায় যত্রতত্র ইচ্ছে মতো সারা বাড়ির আঙ্গিনায়।

খাবার তৈরী ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে ব্রেকফাষ্ট, ডিনার, লান্স এগুলোর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আলাদা আলাদা সাপ্তাহিক মেনু প্রোগ্রাম করা আছে। সেগুলো আবার রিকল হয়ে পরবর্তি সপ্তাহের জন্য অটো সিসটেমের মাধ্যমে এ্যাকটিভ হয়ে যায়। এরকম প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় সাংসারিক কাজের জন্যও আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম করা আছে । সেগুলো স্বয়ংক্রিয় ভাবে যথাযথ নিয়মে চলতে থাকে।

আবেগ অনুভূতির মতো স্পর্শকাতর বিষয় গুলোতে মেয়েলী ঢং লজ্জ্যা রাগ অনুরাগ মান অভিমান ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে, ভোক্তার ইচ্ছা এবং আঁচরণের উপর এমন ভাবে প্রোগ্রাম করা হয়েছে যে, জলজ্যান্ত একজন মহিলার মতোই যথারিতি ওগুলো যথা সময়ে ভাবাবেগে সারা দিয়ে চিত্তকে দারুন উপভোগ্য করে তুলবে।

এক কথায় বলা যায়‘অনন্যা’কে একটি আদর্শ গৃহ পরিচায়িকা বা গৃহিনীর মতোই কর্যকরী করে বানানো হয়েছে। অর্থাৎ ঘরে একটি ‘অনন্যা’ থাকলে কারো সংসারিক কাজের জন্য কোন চিন্তা ভাবনা করার কোন প্রয়োজন তো হবেই না..... উপোরন্তু চিত্তোবিনোদনের জন্য তার বারতি সুবিধা থাকবে।



ওয়ার্কসপ থেকে প্রথম যে দিন ‘অনন্যা’কে প্রথম বাড়ী আনা হলো, সেই অভিষেকের ক্ষণটিতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন নামি দামি বিজ্ঞানী, ব্যাবসায়ী, গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ, এবং সাংবাদিকদের একটি পার্টিতে আমন্ত্রন জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ডক্টর রজত রায়হান তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়া বিশ্বের একমাত্র মনুষ্যদেহী নারী রোবট ‘অনন্যা রায়হান’ এর সাথে ঘটাকরে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
পার্টিতে আমন্ত্রিত মেহমানদের সাথে ‘অনন্যা রায়হান’ও হাসি খুশি মুখে মিষ্টি মিষ্টি কথায় অভ্যার্থনা জানিয়ে একজন রক্তে মাংসে গড়া সুন্দরী মহিলার মতই অল্প সময়ের মধ্যে উপস্থিত সবার মন জয় করে নেয়।

‘অনন্যা’র কথা বার্তা পোষাক আসাক এবং চাল চলন একজন ভাব গাম্ভিয্যপূর্ণ সুন্দরী মহিলার মতোই ছিল স্বাভাবিক। আকাশী রং শাড়ীর জমিনে সোনালী জরির জামদানী কারুকাজ আর ভারী অর্নামেন্টের কম্বিনেশন ম্যাচিং দেখলে মনে হবে এটি যেন রোবট নয় সত্যিকারের ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন একজন ভদ্র মহিলা। বাঙ্গালী ঘরানার সব গুলো মেয়েলী অনুভূতি এবং আচার আঁচরণ দিয়েই তার সফটওয়ার কনফিগারেশন করা হয়েছে।

সবার সাথে হাসি খুসি মুডে যখন যেমন তখন তেমন ভাবে চলা ফেরা করতে করতে হঠাৎ অডিও সিসটেমে কিছু একটা গন্ডগোল হওয়ার কারনে ‘অনন্যা’কে মাঝে মধ্যে কেমন যেন খক খক করে কাশির মতো একটা শব্দ করতে দেখা যায়। তা দেখে আমন্ত্রিতরাও যার পর নেই আশ্চর্য হয়ে পড়েন। সর্দ্দি কাশির মত ব্যাক্টেরিয়া জনিত শারিরীক অসুস্থ্যতা যে রোবটেরও হোতে পারে বিষয়টা সবার মনেই যেন সন্দেহের কারন হয়ে দাড়ায়।

আবারও খক খক করে কেশে ওঠে‘অনন্যা’। একজন কৌতুক করে এবার বলেই উঠলেন....‘বেডিরে মনে কয় ঠান্ডায় ধরছে....দ্যাহেন না কেমুন খক খক কইরা কাশতাছে’.......................................

যাইহোক বিষয়টা জাপানী রোবট বিজ্ঞানী ডক্টর তেজুকাসান আঁচ করতে পেরে ডক্টর রায়হানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ডঃ রায়হান চট করে ‘অনন্যা’কে ভেতরে নিয়ে গিয়ে অডিও সিসটেমটা ঠিক করে এনে সবার সন্দেহ দুর করেন।

এরপর শুরু হয় আপ্যায়ন পর্ব। সবাই যখন নিজ নিজ আসনে লাঞ্চের টেবিলে খেতে ব্যস্ত, ‘অনন্যা’ রায়হান’কে তখন একটি অরেঞ্জ জুসের গ্লাসে লস্বা স্ট্র ঢুকিয়ে বসে বসে জুস পান করতে দেখে, সবাই হতবাক হয়ে যান।
সন্দেহ বাতিক গ্রস্তদের চোখের অবতলে সপ্তর্ষিমন্ডল তারার মত রেখায়িত স্বাভাবিক চিহ্ণটি জলজল করে জলে উঠে.....অতি উৎসাহী একজন ফের আগের মতোই বলে বসলেন...”বেডি দেহি জুসও খাইতাছে? হালায় তেলেসমাতি কারবার দেকবার লাগছি.....বেডি জুস তো খাইতাছে মাগার জুস গুলান যাইতাছে কই? রোবট বেডির প্যাডও আছে নাহি ? দেহেন দেহি কারবারডা ইত্যাদি ইত্যাদি...........

বিষয়টি নিয়ে একজন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ডঃ রজত রায়হান’কে এবার সরাসরি প্রশ্ন করে বসলেন.....জবাবে ডক্টর রায়হান সবার উদ্দেশ্যে বলেন.....হ্যা পেট অর্থে সেই পেট নয়...তবে তার আবিস্কৃত রোবটে একটা আলাদা ওয়াটার রেজিষ্টিভ ডিভাইস সবানো আছে, যেখানে খাবার গুলো গিয়ে জমা হচ্ছে। জমাকৃত খাবার গুলো পরে ওয়াস করে ফেলে দেয়া হবে। সঙ্গে সঙ্গে আবারো প্রশ্ন উঠে....ফেলেই যখন দেয়া হবে তখন খাবার খাচ্ছে কেন সে ? ...শুধু শুধু খাবার গুলো নষ্ট করে কি লাভ..... এ বিষয়ে কিছু বলবেন কি ?

জবাবে রজত রায়হান এবার একটা মুচকী হাসি দিয়ে বলেন.....হ্যা যথার্থই বলেছেন....খাবার গুলো নষ্ট করার কোন অর্থ হয়না। আর সেই জন্যই হালকা একটি খাবার বা পানীয় পান করে আপনাদের সাথে শুধু মাত্র সঙ্গ দেয়ার জন্যই অনন্যা’ এ কর্মটি এখন করছে। কাজটি সে নিজের জীবন ধারনের জন্য মোটেও করছেনা। উত্তর শুনে সবাইকে বোকার মতো হা করে থাকতে দেখে............................


একটা ঢোক গিলে ডক্টর রায়হান বিষয়টিকে আরো পরিস্কার করার চেষ্টা করেন এভাবে......যেমন ধরুন যারা একাকী জীবন যাপন করেন অর্থাৎ কিনা ব্যাচেলর। তারা যদি ‘অনন্যা’এর মতো একটা মহিলা রোবটকে কালেকশনে রাখেন, তবে তার জীবন যাপনের ধরনটা সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে।

অর্থাৎ কিনা পরিপূর্ণ একজন গৃহবধুর মতোই সব ধরনের সার্ভিস সে তাকে দিতে সক্ষম হবে। খাবার তৈরী, গল্প করা, চা খাওয়া, ডিনার বা লান্সে সঙ্গ দেওয়া, বেড়াতে যাওয়া, সপিং করা, এমনকি চিত্তবিনোদন পর্যন্ত...। আপনার চাহিদার মুল্যায়ন করে আপনার সাথে সে যথাযথ ভাবে সঙ্গ দিয়ে যাবে এটাই হল অনন্যা’র বিশেষত্ব।

ডক্টর রায়হানের কথা শুনে অবাক বিস্ময়ে উপস্থিত সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে পড়েন। রোবট কণ্যার গুনের কথা শুনে শুনে সবাই যখন আশ্চর্যের চরম শিখরে পৌছে গেছে ঠিক তখন প্রশ্নোত্তরের এক পর্যায়ে জুসের গ্লাসটা খালি করে ‘অনন্য রায়হান’ এবার সবার উদ্দেশ্যে মিষ্টি করে বলে উঠে...........

সন্মানীত সূধী, আজকের এই শরতের স্নিগ্ধ সন্ধ্যায়, আমন্ত্রনে সারা দিয়ে অনুষ্ঠনে উপস্থিত হওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে “করপোরেল রোবটিক হিউম্যানস প্রাইভেট লিমিটেড’’এর পক্ষ থেকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

সন্মানীয় সূধী, লাঞ্চের ফাঁকে ফাঁকে সুরের ভূবনে আপনাদের আরো খানিকটা মনোযোগ আশা করতে চাই...আসুন আমরা গানের ভুবন থেকে খানিকটা সময় ঘুড়ে আসি.... একথা বলেই ‘অনন্য’ মধুর কন্ঠে গেয়ে উঠে রুনালয়লার গাওয়া সেই বিখ্যাত গানটি.....শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শুনাতে চাই.....তোমদেরই মন ভরাতে চাই...শিল্পী আমি শিল্পী।

গানের ক্ষেত্রে যদিও ডক্টর রজত রায়হানের তেমন কোন বাহাদুরী নজরে পড়ার মতো নয়.....কেননা ওরকম হাজারো শিল্পীর গানই তো মেমরী করে রাখা সম্ভব। বাস্তবে হয়তো তেমনটিই করেছেন তিনি...

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, গানটি গাইবার সময় রোবট কণ্যা ‘অনন্যা’ গানের তালে তালে পেশাদার একজন শিল্পীর মতোই মাইক্রোফোন হাতে কখনো চুল, কখনো বা শাড়ীর আঁচল, সরিয়ে অঙ্গভঙ্গি করে সবার টেবিলের পাশে গিয়ে, গোটা ক্যাফেটরিয়ার মানুষদের যে ভাবে মাজিয়ে রাখছিল, সে সময় কিন্তু রুনা লায়লা বা সাবিনা ইয়াসমিন তাঁদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এটা একান্তই রোবট কণ্যা ‘অনন্যা রায়হানে’র অনন্য এক কারিশমারই বহিঃপ্রকাশ বই আর কিছুনা। রোবট বিজ্ঞানী ডক্টর রজত রায়হানের বাহাদুরীটা হলো এইখানে।

যাই হোক খানাপিনা আর গানের সুর মূর্ছনায় গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে । প্রসংশা আর পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলে অবশেষে এক সময় স্বাভাবিক ভাবেই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
পরদিন সকালে দৈনিক কাগজ গুলোতে ফলাও করে ‘অনন্যা রায়হান’ নামের সেই রোবট কণ্যার ছবি সহ দৈনিক কাগজ গুলোতে ফলাও করে লিড নিউজ ছাপা হলো । টিভি চ্যানেল গুলো ডক্টর রজত রায়হানের সাথে একের পর এক টকশো করে গেল।

দেশ বিদেশের মিডিয়ার লোক জন এসে ভির জমাতে শুরু করল ঢাকায়। ওয়েভ সাইট অন লাইনে ফেসবুক , টুইটার, ইউটিউব সহ সকল সাইটে ডঃ রজত রায়হানে’র অনন্যা আবিস্কারের কথা ছড়িয়ে পড়ল নিমেশে।

‘অনন্যা’র প্রোফাইলে কমেন্টস সিনাপসিস করার জন্য বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ‘অনন্যা’ রায়হান সম্পর্কিত মতামত জরিপের রিপোর্ট যাচাই বাছাই করে দেখা গেল বিশ্বের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ ব্যাচেলর এবং ইয়ং জেনারেশন ‘অনন্যা’র প্রতি বেশী আকৃষ্ট ।

রোবট কণ্যা ‘অনন্যা’র বদৌলতে নাম যশ খ্যাতি পতিপত্তি অর্থ বিত্ত সন্মান, এর সব গুলো উপাদান উপমহাদেশের রোবট বিজ্ঞানী রজত রায়হানের হাতের নাগালে এসে গেল।

বাগানে বসে চা খেতে খেতে পুরনো সেই সৃষ্টি সুখের উল্লোসিত দিন গুলোর কথা মনে করে হঠাৎ আঁৎকে উঠেন ডক্টর রায়হান। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে‘অনন্যা’র মুখের দিকে তাকান..... এই সেই ‘অনন্যা’ রায়হান....? যাকে তিনি মনন আর সৃজনশীল মেধা খাটিয়ে আবিস্কার করে কেবলই বাহবা কুড়িয়েছেন।

অথচ নাম যশ খ্যাতি আর প্রতিপত্তির ভীরে সুখী দাম্পত্য জীবন যাপনের পথ পরিহার করে ‘অনন্যা’র কাঠখোট্টা প্রেম ভালোবাসায় কত টুকুই বা সুখি হতে পেরেছেন তিনি?


দীর্ঘ কর্মময় জীবন পেরিয়ে যেটুকু সময় পেয়েছেন রজত রায়হান, সে সময়ের মধ্যে প্রকৃত সুখের নাগাল কি তিনি পেয়েছেন? নিজের মনকে কখনো প্রশ্ন করেননি তিনি, আর হয় তো কোরবেনো না কোন দিন......কারণ তিনি যে সৃষ্টি কর্তা, একমাত্র সৃষ্টিতেই যে তার আনন্দ।

কিন্তু সবচে বড় সৃষ্টির গোড়ায় যে তিনি মস্তবড় ভুল করে বসে আছেন সে কথা আজ ‘অনন্যা’কে দেখে পলে পলে অনূভব করছেন ডক্টর রায়হান।
তাই হাজারো প্রশ্নের উত্তর মেলাতে চান জীবন নাটকের শেষাংঙ্কে এসে। কিন্তু কল্পনার আকাশে জীবন ধর্মী সে কবিতার ছন্দ মিলাতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি................................................

আরো একবার ‘অনন্যা’র দিকে তাকিয়ে দেখলেন...কি নেই ‘অনন্যা’র....সবই তো আছে ওর ? তবু তো সব কিছুর ভিরে ‘অনন্যা’র চোখের কর্নিয়ায় দামী লেন্সের সৌন্দর্য পাথরের মতো নিস্প্রাণ। এক ফোটা অশ্রুও গড়িয়ে পড়বেনা সে চোখের পাড় বেয়ে? ‘অনন্যা’র দেহে যৌবনের ঢেউ থাকলেও সে ঢেউয়ের বুকে উষ্ণতা নেই ?

পোড়খাওয়া চামড়ার অস্বাভাবিক ভাঁজ গুলো পরখ করে ‘অনন্য্যা’র দেহর প্রতি তাকিয়ে আবারও নিজের ক্ষয়ীষ্ণু জীবনের তারতম্যে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি ধুলায় লুটিয়ে পড়ে তাঁর সৃষ্টির অহঙ্কার।

আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগের সেই ‘অনন্যা’ আজো ঠিক তেমনিই রয়ে গ্যাছে। বয়সের ভারে দেহে এতটুকু মলিনতার ছাপ পড়েনি তার। অথচ কি আশ্চর্য ডক্টর রজত রায়হান কেন প্রকৃতির কাছে নুয়ে পড়লেন এভাবে? এ প্রশ্নের কোন উত্তর খুজে পান না রজত রায়হান।


কেননা নিজেকে অনেক দুরে সরিয়ে রেখে তিনি জীবনকে দেখেছেন...কাছ থেকে জীবনের স্বাদ গ্রহনে বরাবরই তিনি উদাস থেকেছেন। জীবনটা নদীর মতো....এক নদী থেকে হাজার শাখা নদীর জন্ম হবে এটাই চিরায়িত সৃষ্টির নিয়ম। জীবন কবিতার শেষের দিকে এসে যেন বোধের বাধন খুলে যায় তার।

আজ ‘অনন্যা’র কৃর্ত্রিম মুখের সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে এক সময় লজ্জায় চোখ নামিয়ে চায়ের কাপের দিকে দৃষ্টি ফেরান রায়হান সাহেব। কিন্তু স্মৃতিচারণের সন্ধিক্ষণে কখন যে তাঁর চায়ের উষ্ণতা উবে গিয়ে হিমাঙ্কের ঘরে পৌছে গেছে মোটেও তা পরখ করতে পারেননি ।

অজানা কষ্ট জড়ানো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অস্ফুট স্বরে আনমনে বিরবির করে বলে উঠেন ....তুমি কি আবিস্কার করলে ডঃ রজত রায়হান....? এ আর এমন কি ? ‘অনন্যা’কে নিয়ে প্রকৃত অর্থে তুমি গর্ব করতে পার ঠিকই ....কিন্তু সে গর্বের পরিমান বা পরিসীমা বড়ই সীমিত.....বড়ই সামান্য।

বাবা মা’র কথা মতো বিয়ে করলে আজ তোমার ঔরসে যে সৃষ্টির অমিয় ধারা প্রবাহিত হোত, হয়তো সে হোতে পারত তোমার উত্তোরসুড়ি... তোমারই মতো কোন এক বিজ্ঞানী অথবা দার্শনিক? সে সৃষ্টির সাথে পারবে কি তোমার ‘অনন্যা’কে মেলাতে? পারবে কি কখনো ‘অনন্যা’কে তোমার সন্তানের মা বানাতে....? জানি তুমি তা পারবেনা কেননা তোমার ‘অনন্যা’ কেবল হাসতে জানে, প্রসব ব্যাথায় সে কাঁদতে জানে না ।
এতসব প্রশ্নের সামনে পড়ে আবারও আঁৎকে উঠেন ডক্টর রজত রায়হান। মানষিক ভাবে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

হকচকিয়ে এবার হাত ঘড়িটার দিকে তাকালেন। রেডিয়াম জড়ানো ঘড়ির কাটাটায় তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্রির নির্দ্দেশ করছে। বাগানের চারপাশটা একবার বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে দেখলেন.... সত্যিই তো অনেক দেরি হয়ে গ্যাছে তাঁর। বাগানে বসে চা খেতে খেতে বিকেল গড়িয়ে কখন যে রাত নেমে এসেছে মোটেও বুঝতে পারেননি। যেমন করে বুঝতে পারেননি তিনি প্রকৃত জীবনের রহস্য।


মহান সৃষ্টির অধিপতি যিনি ‘আল্লাহ’, তাঁর সৃষ্টির মুলে যে রহস্য নিহিত রয়েছে সেটা ভেবে ‘অনন্যা’র জন্য মনটা আজ হুহু করে কেদে উঠে তাঁর। কারন এই ‘অনন্যা’ চিরদিন ‘অনন্যা’ হয়েই পৃথিবীতে টিকে থাকবে। অথচ ডক্টর রজত রায়হান চিরদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন না। মৃত্যুর পড় ‘অনন্যা’ তাঁর জন্য এক ফোটা চোখের জলও ফেলবে না।

কেননা ‘অনন্যা’র হার্টডিস্কে ডক্টর রজত রায়হান সব দিতে পারলেও জন্ম মৃত্যু বিষয়ক কোন শোক কিম্বা মায়ার বাঁধনে জড়ানো প্রিয়জনের বিয়োগ ব্যাথার প্রতিক্রিয়া ‘অনন্যা’র সফটওয়ার কনফিগারেশনে দিতে পারেননি তিনি ।

‘অনন্যা’ যখন যার হাতে যাবে তখন তার হয়ে কাজ করবে। যাকে পাবে তাকেই ভালবাসবে, তাকে নিয়েই সুখী থাকবে, তারই সাথে সংসার পাতবে। যে সংসারে থাকবেনা কোন জীবনের ধারা বহিকতা। থাকবেনা বংশ বিস্তারের মতো ছড়িয়ে যাওয়া কোন পরম্পরার বিশালতা। সেখানে থাকবে শুধু আনন্দ হাসি গান, ভোগ বিলাস,আর প্রানহীন আপেক্ষিক কাঠখোট্টা জীবনের শধুই কালক্ষেপণ। তারপর...............................? তারপর,.............................? তারপর.............................?
কাব্যময় জীবনের শেষের প্যারায় এসে উপ মহাদেশের প্রখ্যাত রোবট বিজ্ঞানী ডক্টর রজত রায়হান তাঁর কল্পনার তুলিতে লেখা “রোবট কণ্যা অনন্যা” শিরোনামের সেই বিখ্যাত কবিতাটির ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। যার শেষের পংক্তিটি তিনি কিছুতেই মেলাতে পারেননি আর.......................................।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইউশা হামিদ রোবট কণ্যা অনন্যার ------- গল্পটি অনন্য হয়েছে ! সালাম নিবেন ভাইজান ।
- ওয়ালায়কুম আস সালাম....ইউশা হামিদ। মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল.................
সেলিনা ইসলাম গল্পের শেষে এসে ডক্টর রজত রায়হান-এর আবেগ জড়ান বিবেকের জাগরণ বা দংশন খুব সুন্দর করে ফুটিয়েছেন যা হৃদয় ছুয়ে গেল । গল্প ভাল লাগল শুভকামনা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সেলিনা আপা মন্তব্য করার জন্য.................
তানি হক প্রথমেই ভাইয়ার গল্পটি এত দেরিতে পরার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেই ...ভাইয়া অসাধারণ একটি গল্প লিখেছেন ..গল্পের শুরুটা পরে ..চিন্তাও করতে পারিনি যে শেষে এসে হটাত ..এমন মোড় নেবে ..নিজের ভেতরের অনেক ভুল অনেক ভ্রান্তি ভেঙ্গে যাবার মত কিছু ডায়লগ মুগ্ধ করলো ...সবমিলিয়ে দারুন একটি শিক্ষানীয় গল্প ...সুভেচ্ছা আর সালাম রইলো ভাইয়া
গল্প পড়ে যে তানি মন্তব্য করেছে তাতেই আমি খুশি। হোলই না হয় একটু দেরি তাতে কি............যাই হোক তানি অনেক অনেক শুভকামনা রইর...
সূর্য স্রষ্টা যখন সৃষ্টির প্রেমে পড়ে যান সে সৃষ্টি স্বার্থক। সুন্দর একটা অনন্যা সৃষ্টির কৃতিত্বতো আপনারই। ভাল লাগলো বেশ।
সুন্দর কমেন্টের জন্য সূর্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে.................
আহমেদ সাবের "দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বিশ্বের একমাত্র মহিলা রোবট বিজ্ঞানী হিসেবে প্রখ্যাত হতে খুব বেশী সময় লাগেনি তাঁর।" - বাক্যটা মনে হয় ডক্টর রজত রায়হানকে নিয়ে লেখা। সে ক্ষেত্রে "একমাত্র মহিলা" কথাটা মনে হয় খাটে না। "বিশ্বের অন্যান্য রোবটের -হায়া লজ্জ্যা, সুখ আনন্দ, হাসি, মান অভিমান, ঠাট্টা মশকরা, এ সবের কোন বালাই না থাকলেও। ডক্টর রজত রায়হানের এই নারী রোবটির সফটওয়ার কনফিগারেশনে এর সব গুলো অপশনই এ্যাকটিভ থাকবে। " "আবেগ অনুভূতির মতো স্পর্শকাতর বিষয় গুলোতে মেয়েলী ঢং লজ্জ্যা রাগ অনুরাগ মান অভিমান ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে, ভোক্তার ইচ্ছা এবং আঁচরণের উপর এমন ভাবে প্রোগ্রাম করা হয়েছে যে, জলজ্যান্ত একজন মহিলার মতোই যথারিতি ওগুলো যথা সময়ে ভাবাবেগে সারা দিয়ে চিত্তকে দারুন উপভোগ্য করে তুলবে। "- এত কিছু দেবার পরেও "এক ফোটা অশ্রুও গড়িয়ে পড়বেনা সে চোখের পাড় বেয়ে? ‘অনন্যা’র দেহে যৌবনের ঢেউ থাকলেও সে ঢেউয়ের বুকে উষ্ণতা নেই ? " কথাগুলো কন্ট্রাডিক্টরি লাগলো আমার কাছে। অবশ্য একটা সামান্য বাক্যে মানুষের সৃষ্টির সাথে আল্লাহর সৃষ্টির তুলনা হয়ে গেল "পারবে কি কখনো ‘অনন্যা’কে তোমার সন্তানের মা বানাতে....? "। দারুন ভাল লাগলো আপনার গল্পটা। মানুষের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা দারুন ভাবে ফুটে উঠেছে সচ্ছন্দ লেখার গল্পে।
আসলে সাবের ভাই ঠিকই বলেছেন ''মহিলা রোবট'' বিজ্ঞানী হিসেবে প্রখ্যাত হতে খুব বেশী সময় লাগেনি তাঁর। এ ভাবে দিলেও হত হয়ত। আর আবেগ অনুভুতির কথা বলেছেন আমি দিতে পারতাম দু'কলম লিখে, কিন্তু কষ্টের অনুভুতি আর চোখের অশ্রুর বিষয়টা আমি এটাই ভেবেছি যে রসায়ন ছাড়া অশ্রু নির্গত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যাই হোক সাবের ভাই গঠন মুলক সমালোচনার জন্য আপনাকে অসংখ্য সাধুবাদ জানাই..................
আলম ইরানী এরকম রায়হানকে বাংলার ঘরে ঘরে চাই ।এরকম গল্প উপহার দেয়ার জন্য আপনাকেও চাই ।ভোটতো নস্যি !
আলম ভাই আপনি আমাকে চেয়েছেন ...আমি আপনার পাশেই আছি স্মরণ করলেই আমাকে পাবেন। আর আপনাক বিশেষণ যুক্ত মন্তব্য করার জন্য অশেষ মুবারকবাদ.................
লুতফুর বারী মান্না অনন্যার প্রেমে পড়ে গেলাম খন্দকার ভাই। কি যাদু করিলো প্রিতি শিখাইলো.....ভুলিতে পারিনা সজনী ।আমার দিল্,আমার ভোট সব কেড়ে নিলো।
আমিও যে আপনার জন্য মন প্রাণ উজার করে কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে পারছিনা ভাই...........আমার অনেক অনেক শুভেচ্চা আপনার জন্য বরাদ্দ করলাম....................ভাল থাকবেন মান্না ভাই............
জয়নাল হাজারী অনন্যার হার্ডডিস্কে সফল সফটওয়ার ইন্সটল করে গেলাম।
জয়নাল হাজারী ভাই আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন.......
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ অসাধারন হাত আপনার ভাই ! ভাল থাকেন ; অনেক ভাল ।
আপনিও অনেক ভাল থাকুন এই কামনা করি......অসাধারণ মন্তব্যের জন্য জসিম ভাই অনেক অনেক মুবারকবাদ .আপনাকে..............
জাফর পাঠাণ আপনার এখানে দেরিতে আসার কারন হলো পিঠ চুলকানিটা থামছিলোনা।কিন্তু এখানে এসে আপনার গল্পের দক্ষীণা বিজয় বাতাস লেগে আবার চুলকানিটা শুরু হয়েছে ! কি যে করি ! যাই ভাই বাসায় গিয়ে আবার হাতলটি দিয়ে আঁচড় কাটতে হবে পিঠে।আর অনন্যার কাছে পাঁচের পুটলিটি রেখে এসেছি নিয়ে ন... আরও দেখুনআপনার এখানে দেরিতে আসার কারন হলো পিঠ চুলকানিটা থামছিলোনা।কিন্তু এখানে এসে আপনার গল্পের দক্ষীণা বিজয় বাতাস লেগে আবার চুলকানিটা শুরু হয়েছে ! কি যে করি ! যাই ভাই বাসায় গিয়ে আবার হাতলটি দিয়ে আঁচড় কাটতে হবে পিঠে।আর অনন্যার কাছে পাঁচের পুটলিটা দিয়ে এসেছি নিয়ে নিবেন ।পড়ার সময় মোবারকবাদ শব্দটি তিনবার পড়ে নিবেন।সময় নেই লিখার ।
বাবুল ভাই দেরীতে হলেও সমস্যা নাই আপনি এসেছেন এতেই আমার অনেক ভাল লাগছে। যে খামচি দিয়েছেন রে ভাই .... পাঁচের পুটলিটি অনন্যার কাছ থেকে নিয়ে ওটাই পিঠে লাগাচ্ছি দেখি কিছু হয় কিনা.......হাহাহা .....অনেক অনেক মুবারকবাদ ভাল থাকবেন....

১০ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪