চাঁদর

বাবা (জুন ২০১২)

খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
  • ২১
  • ২৭
বয়স সাত কি আট এর বেশি নয়। কিন্তু ভীষন বাউন্ডুলে আর জেদী স্বভাবের ছেলেটা। মাঝে মধ্যে ওকিমন ছেলের আচরণের কারনে স্বামীকে শুনিয়ে শুনিয়ে চোদ্দ গুষ্টির পিন্ডি চটকাতে ছাড়েনা। ওকিমনের স্বামী অর্থাৎ ফরজ বাউল অবশ্য মেয়ে মানুষের ওসব ঠ্যাস মারা কথা খুব একটা গায়ে মাখায় না। ওকিমন যখন স্বামীর চোদ্দ গুষ্টির নিকুচি করতে করতে মুখে ফ্যানা তুলে ফ্যালে ফরজ বাউল তখন দাওয়ায় বসে বসে আনমনে একতারা বাজায়। বউয়ের কথা শুনেও না শোনার ভান করে...আর মুচকি মেরে হাঁসে। কিন্তু ওকিমনের এখানেই যত আপত্তি। এক তরফা ঝগড়া করতে ওর ভালো লাগেনা আর।

বাবার বাউন্ডুলে স্বভাব এই বয়সেই পেয়ে বসেছে ছেলেটাকে। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে সারাটা দিন টো টো করে শুধু ঘুড়ে বেড়ায়। ছেলেকে শাসন থাক দুরের কথা কোলে বসিয়ে 'ভাঙ্গা' গানের সুর সেখায়। ফরজ বাউল যে ক'দিন বাড়িতে থাকে ছেলেকে গানের সুরে সুরে ওর সর্বাঙ্গে আদর বুলিয়ে দেয়। হঠাৎ করেই একদিন বলা নেই কওয়া নেই ফরজ বাউল সংসারের মায়া মহব্বত ত্যাগ করে ফকিরানত্দিতে চলে যায়। দশ পনের দিন পর আবার হঠাৎ এক দিন বাড়িতে ফিরে আসে। ওকিমন মিনসের আচরণ নিয়ে মোটেও মাথা ঘামায় না আর। সব গা সহা হয়ে গ্যাছে। হাড় কালা সংসার কালা স্বভাবের মিনসের সংসার করতে এসে অনত্দর জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গ্যাছে ওর।

বাবা মার সংসার ছেড়ে স্বামীর সংসারে একটু খানি সুখের আশায় সেই যে পথ চলা শুরু সে পথের যেন শেষ নেই। অতিশয় গরীব বলে হারাহারি সূত্রে গরীব ঘরেই বিয়ে হয়েছিল ওকিমনের। চালচুলো হীন বাউলের সংসার। ওটাকে বিনি সুতোয় গাঁথতে গিয়ে তাইতো আজও ওকিমন মাঝে মধ্যে খেই হারিয়ে ফ্যালে। জীবনে স্বামী সুখের নাগাল মেলেনি। কখনো মিলবে কিনা এ নিয়ে যথেস্ট আস্থাহীনতায় ভোগে।

বিয়ের প্রথম দিকে ফকিরানত্দিতে যাওয়ার আগে বাজার সদাইয়ের মধ্যে শুধু চালটাই কিনতো ফরজ বাউল। তেল নুন মরিচ ডাল আনাজ পাতি এসব কিছুই কিনে দিয়ে যেতনা। বাধ্য হয়ে ওকিমন মোল্লা বাড়ি থেকে নুন মরিচ চেয়ে আনতো আর গরম ভাতে পানি ঢেলে মজা করে খেতো। কি আর করবে ক্ষুধার তাড়নায় শুধু পানত্দা ভাতই যে ওর কাছে অমৃতের মতো লাগতো তখন। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? দেখে দেখে দশ পনের দিনের মাথায় একতারা হাতে মিনসে বাড়ি ফিরে আসে। একদিন রাতে স্বামী সোহাগের এক পর্যায়ে কতকটা কৌতুহলী হয়েই বাউলের কাছে জানতে চেয়েছিল ওকিমন।

ঃ আচ্ছা তুমি কিংক্যারা মানুষ কনতো....খালি চাউল কিনেন তার তরকারী, নুন, ঝাল কিছুইতো কিনেন না...আচ্চা হামার সাতে তুমি ইঙ্ক্যা করেন কিসোক কনতো ? সেদিন ওকিমনের এই ধরনের কথায় ভীষণ ভাবে বিব্রত বোধ করেছিল ফরজ বাউল। এক পর্যায়ে ক্ষেপে গিয়ে ফরজ বাউল উত্তরে বলেছিল...ঃ ঐ মাগী তাই যদি কবার চাইস তাহলে কাইল থিন কইচ্চি চাউলও কিনব্যা পারমোনা যা...। স্বামীর এহেন উত্তরে সেদিন ওকিমন শুধু অবাক নয় বরং ভয়টাই পেয়েছিল বেশী।...হায় হায় বলে কি লোকটা। স্বামী চাল না কিনলে বউ যে না খেয়ে মরবে এই সাধারণ জ্ঞান টুকুও কি থাকতে নেই ফরজ বাউলের ? তারচে বরং এই ভালো চাউলটা যখন কিনছে কিনুক..তরকারী না কিনলেও চলবে। ওকিমন যে ভাবে পারে একটা ব্যাবস্থা করে নেবে। কিন্তু ঘরে যদি চাল না থাকে তবে তো আর চলে না...না খেয়ে মরতে হবে ! বিয়ের প্রথম দিকে একা একা মিনসের এমনি তর অনেক জ্বালাতন সহ্য করতে হয়েছে ওকে। বাড়ী ফিরে আবার কাছে শুতে আসেনা মিনসে। কেবল মাত্র একটা সনত্দানের আশায় ওকিমনই লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে অনেক চেষ্টা তদবির করে স্বামীর কাছে যেতো। তার পরও বিপত্তির কি শেষ আছে...? থাক ওসব কথা।...ওকিমন ধরেই নিয়েছিল যে বাউলের ঔরসে বুঝি সনত্দানই নেই। তবুও আশায় থেকে থেকে শেষ পর্যনত্দ বিয়ের প্রায় ৮ বছর পর অবশেষে আল্লা মুখ তুলে তাকায়।

স্বামী সুখের আশা ছেড়ে এবার সনত্দানটাকে ঘিরে ওকিমন নতুন করে স্বপ্নের বলয় অাঁকে। দীনহীন গরীব বলে ছেলের সব চাহিদা পূরন করতে না পারলেও চেষ্টার কোন কমতি রাখেনা ওকিমন। আগে ফরজ ফকিরের বউ বলে ডাকত সবাই।এখন কেউ কেউ ওকে কটার মা বলেও ডাকে। হ্যা ওকিমনের আদরের ছেলেটার নাম 'কটা'। ওর বাবার দেয়া নাম। মাথার চুল আর চোখের মণি দুটো কটাসে রংয়ের বলে ওর বাবা সখ করে ছেলের নাম রেখেছে কটা। যাই হোক ছেলের নামের ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই ওকিমনের। গ্রামের আর সব ছেলের চাইতে ও একটু আলাদা।কটা বলতে এক ডাকে সবাই চেনে ওকে।

ক'দিন থেকে শীতের তিব্রতা অতি মাত্রায় বেড়ে গ্যাছে। শীতের কারনে সারাটা দেশ যেন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। কুয়াশায় গত ২/৩ দিন ধরে সূর্যের মুখ পর্যনত্দ দ্যাখেনি মানুষ। ছেলেটা শীতের কষ্টে কম্পিত হাত দুটোকে বুক আর অধরের মাঝে বাতার বাঁধনের মতো শক্ত করে বেধে শীতকে পরাস্থ করার ব্যার্থ চেষ্টা চালায় আর থরথর করে কাপে। ওকিমন ছেলের শীত কষ্টের দৃশ্য গুলো দ্যাখে আর নীরবে অশ্রু ফ্যালে। সেই কবে থেকে একটা লাল চাঁদরের বায়না ধরেছে ছেলেটা। অভাবের কারনে ওর আবদার টুকু পুরণ করতে পারেনি আজো।

ভাল চাঁদর কিম্বা ভালো জামা প্যান্ট নেই বলে পাড়ার সব খেলার সাথী বন্ধুদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হয় ওর। সবাই ওকে ফকিরের ছেলে বলে কটাক্ষ করে। গরীব বলে বাবা মা ওকে চাঁদর কিনে দিতে পারে না এ ধরনের কষ্ট বোধ অবশ্য ওর ভেতরে কাজ করে। তবুও বাবা মার আদরটাকে ও বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সেদিন সবাইকে উচু গলায় বলেও এসেছে কাল বাবা আসবে সাথে ওর জন্য একটা লাল চাঁদর নিয়ে আসবে। কথাটা ওর মা ওকে বলেছে। অথচ আজোব্দি বাবা আসার কোন নাম নিশানা না দেখে কৌতুহলি হয়ে শেষে মায়ের কাছে জানতে চায় কটা...

ঃ ক্যা মা হামাক যে তুই সিদিন কোলু আইজ কাইলের মদ্ধেই তুর বাপজান আসিচ্ছে বাপজান আসার সুম তুর ক্যানে একক্ষান নাল চাঁদ্দর নিয়া আইসপি....কিন্তু বাপজান তো একুনো আসিচ্ছেনা। কাইল হামাক কইচ্চি একক্ষান নাল চাঁদ্দর কিন্যা দেওয়াই লাগবি তুক....হামি সগোলোক কয়া আসিচি কাইল হামার বাপজান এ্যাকনা নাল চাঁদ্দর কিন্যা আনবি।..মায়ের গায়ে মৃদু ঝাকুনি দিয়ে কান্না মাখা সুরে আবার বলতে থাকে কটা ঃ ক্যা মা কতা কইচ্চু ন্যা ক্যা..বাপজান একুনো আসিচ্ছে না ক্যা কতো ? কাইল কিন্তু কইচ্চি হামাক চাঁদ্দর কিন্যা দেওয়াই লাগবি নাহোলে হামার মরা মুক দেকপু তোরাু...কয়া দিচ্চি হ্যা। চাঁদর না হোলে কাইল ছোল পোলোক হ্যামি লজ্জ্যাত মুক দেকাবা পারমো না। কথা গুলো বলে অভিমানে মায়ের মুখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে কতকটা বিমূষ্য হয়ে পড়ে কটা।

ছেলের অভিমান কান্না আর কষ্ট মিশ্রিত আবদারের শেষ সতর্ক বাণী গুলো বুকের গভীরে যেন বড় বেশী আশঙ্কা গ্রস্থ করে তোলে ওকে। অন্ধকারে কলিজার তপ্ত ঘামের নির্যাস টুকু কষ্টের অশ্রু হয়ে অলক্ষ্যে টপটপ করে ঝরে পড়ে। ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করতে করতে আবারও অনুমানের উপর নির্ভর করে বাবা আসার সম্ভাব্য আশ্বাস দেয় ওকিমন ওর জেদী ছেলেটাকে।

ফরজ বাউল সাধু বাবার আশ্রমে সাধুসেবা করে বেড়ায়। ফকিরানত্দি গান গায় আর গাঁজা ভাঙ্গ খায়। সংসার বিবাগী হলেও সংসার ত্যাগী নয় সে। তাই প্রতি মাসেই দুবার বাড়ীতে এসে ঘুরে যায়। কিন্তু এত বিলম্ব সে কখনো করেনা। এবার ফরজ বাউলের বাড়ী ফিরতে বিলম্ব হওয়ার কারনে ওকিমনের মনটা একটু বেশী মাত্রায় বিষিয়ে রয়েছে। ছেলের চাঁদরের আবদারের পাশাপাশি নিজের দুর্দশার কথা মনে করে ক্ষোভে দুঃক্ষে স্বামীর উপর ঘেন্নায় গা রি রি করে ওঠে।

স্বামী কাপড় কিনে দিতে পারেনা বলে প্রতি বছর ওকিমন দু'ঈদে দু'টি জাকাতের কাপড় দিয়েই কোন রকমে নিজের ইজ্জত ঢেকে রাখার চেষ্টা করে। তবুও ছেলের চাঁদরের জন্য মোল্লা বাড়ীর মেজো বউয়ের কাছে কাজের অগ্রিম টাকা চেয়ে রেখেছে। কিন্তু ঐ পর্যনত্দই ...তালি দেয়া ঝিরঝিরে জাকাতের কাপড় পড়তে দেখেও যাদের লজ্জায় চোখ পোড়েনা তাদের কাছে কি আর আশা করা যায়। কাজের সময় টেনেটুনে যৌবনের লজ্জা ঢেকে রাখার চেষ্টা করে কিন্তু না। ওকিমনের ছেঁড়া কাপড়ের ফাঁক দিয়ে উলঙ্গ হাঁসি হাঁসে অভাব। কি আর করবে মোল্লা বাড়ীর বউদের পুরান কাপড় দিয়ে নঙ্কিাঁথা বানায়।বলে কয়েও কাজ হয়নি।তাই রাতে বসে বসে খেজুর বীচির সুপারী দিয়ে পান খায় আর কাপড়ে তালি লাগায়।

সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কর্মক্লানত্দ শরীরটা নিয়ে এক সময় গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় ওকিমন। রাতের শেষ প্রহরের দিকে হঠাৎ ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। কান দুটো সজাগ হয়ে ওঠে ওর...কে যেন একতারা বাজিয়ে গান ধরেছে ''খাঁচার ভেতর অচিন পাখী কেমনে আসে যায়''। আর শুয়ে থাকতে পারেনা ওকিমন, তড়াৎ করে উঠে বসে...ভোরের নির্মল বাতাসে পরিজায়ী পাখীদের সমেবেত কিচির মিচির শব্দের মাঝেও ফরজ বাউলের গলাটা ঠিকই বুঝতে পারে ওকিমন। বিলম্ব না করে দরজার ঝাপিটা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসতেই চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে যায় ওর। ঘুমের ঘোর কাটেনি তখনো ঝাপসা চোখে দ্যাখে ফরজ বাউল দাওয়ায় বসে আনমনে গান গেয়ে চলেছে আর অঝোর ধারায় তার অধর গড়িয়ে অশ্রু ঝরছে।

পা পা করে ফরজ বাউলের সামনে এসে দাড়ায় ওকিমন। একানত্দ আবেগ মাখা কন্ঠে স্বামীর কাছে জানতে চায় ঃ কি হচে তুমার...ইঙ্ক্যা কইর্যা তুমি কান্দিচ্ছিন কিসোক কটার বাপ...কি হচে তুমার ..? গায়ে মাথায় আদর মাখা হাত বুলিয়ে দেয় তবু বাউলের কান্না যেন থামেনা। এক পর্যায়ে আকাশ সমান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফরজ বাউল ওকিমনের গলা জরিয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেতে থাকে....

ঃ হামার সবর্্বনাশ হয়া গ্যাছেরে বউ... হামার সবর্্বনাশ হয়া গ্যাছে...হামাকোর সাধুবাবা আর নাইরে। কাইল বিয়ান রাইত্তে তিনি ইনত্দিকাল করিছেন। তাকি মাটিমুটি দিয়া ফকিরানত্দি শ্যাষ কইর্যা আইজ আসতিছি। হ্যামি যে ইতিম হয়া গেনুরে বউ এক্কে ইতিম হয়া গেনু। একটু ক্ষানি থেমে ঢোক গিলে আবার বলতে থাকে ফরজ বাউল ঃ দেখিছু বউ বাবা যাওয়ার সুমায় হামাক এই নাল শালুক চাঁদ্দর খ্যান গাওত জড়ায়া দিয়া বুকোত ট্যানা লিয়া হামাক খেলাফত দিয়া গ্যাছে। সাধুবাবা হামাক খুব ভালো বাসিচ্ছিলরে বউ... খুবই ভালো বাসিচ্ছিল। আচ্চা কদিনি বউ বাবার এই চাঁদ্দর খ্যানের মর্যাদা হ্যামি কিঙ্ক্যা কইর্যা সামাল দিয়া রাকমো কদিনি...বলে আবারও ডুকরে কেঁদে ওঠে। ভোরের দিকে বাবার গলার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায় কটার। আনন্দে দৌড়ে এসে সরাসরি বাবার কোলে বসে মূহুর্তে দৃশ্যপট পাল্টে দেয়। উচ্ছ্বোসিত কন্ঠে কটা বলে ওঠে ঃ বাপজান আসিছিন ...বাপজান হামার চাঁদ্দর আনিছিন...কোটে দেকি দেকি বলতে বলতে ফরজ বাউলের হাত থেকে সাধুবাবার সেই চাঁদর খানা ছো মেরে হাতে তুলে নিয়ে আনন্দে আবার বলে উঠে কঠা ঃ তুমি হামার চাঁদ্দর আনিছিন...তে হামাক কোবিন ন্যা? হামার কি যে ভালো লাগিচ্ছে বাপজান..এক্কে হামি জিঙ্ক্যা চাছিনু সিঙ্ক্যাই আনিছিন...নাল চাঁদ্দর।

ফরজ বাউল ঠিক এই ক্ষনটির অপেক্ষায়ই করছিল যেন। ছেলের গায়ে চাঁদর খানা জড়িয়ে অশ্রু সজল চোখে আবেগ মাখা কন্ঠে বলে ওঠে বাউল ঃ হয়রে বাপজান হয়...আয়...আইজ সাধু বাবার দেয়া খেলাফত হ্যামি তুকি পড়ায়া দিনু আয়। আইজ থিন হ্যামি আর কোন্টেও যামোনারে বাপ...কোন্টেও না। আইজ থিন তুইই হোইচ্চু হ্যামার সাধুবাবা..তুইই হামার সাধুবাবা..আইজ থিন হ্যামি খলি তুরই তাবেদারী করমো খালি তুরই। সাধুবাবার ইনত্দেকালের পর হামার চোক খুল্যা গ্যাছেরে বাপজান...মায়া...খালি মায়া...মায়া ছাড়া এই দুণিয়াত আর কিছুই নাইরে বাপ। বলতে বলতে ছেলেকে বুকে টেনে নিয়ে আবেগে ডোলে মুছড়ে যেন নিঃশ্বেষ করে ফেলতে চায় ওর শূন্য বুকটার গভীরে।

পুবের আকাশে তখন লাল সূর্যের নতুন মুখটা ওকিমনের মনের আকাশে আচমকা উকি দিয়ে উঠে। নরম সূর্যের মিষ্টি আলো দিগনত্দে ছড়িয়ে পরেছে ঠিক যেন সাধূ বাবার দেয়া লাল শালু চাঁদরটির মতো। প্রশানত্দি আর পরিতৃপ্তিতে অঙ্গ ঝাড়া দিয়ে ওকিমন বাউলের মুখের দিকে অাঁড় চোখে তাকায়...তারপর মুচকী হেঁসে দলে দলে পরিজায়ী পাখীদের ঝাঁক গুলোর দিকে নির্মল আবেগে তাকিয়ে থাকে। পাখীদের পরিবেশ বদলের সাথে ফরজ বাউলের স্বভাব বদলের অনেকটাই যেন মিল খুজে পায় তাতে। অনেক দিন পর বাউলের মনেও যেন নতুন করে ভাবের উদয় হয়। ওকিমনের শত চেনা সেই মুচকি হাঁসির জবাবে ছেলেকে কোলে বসিয়ে বাউল এবার একতারা হাতে গানে গানে নতুন ভাবের আবহ সৃষ্টি করে চলে "মিলন হবে কত দিনে আমার মনের মানুষের সনে........................আমার মনের মানুষেরও সনে"।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
পারভেজ রূপক সিম্পলি অসাধারণ একটা গল্প। মুগ্ধ হলাম।
Lutful Bari Panna চমৎকার গল্প জ্যোতি ভাই। আঞ্চলিক ভাষাটা গল্পের স্বাদ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। মনে হল বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষা। খুবই চমৎকার।
সূর্য গৃহসুখ ত্যাগী মানুষকে হঠাৎ করে ঘরে ফেরানো কঠিন কাজ, আর আপনি কিনা শেষে এত সুন্দর করে তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনলেন। অনেক সুন্দর গল্প। [ওকিমনের ছেঁড়া কাপড়ের ফাঁক দিয়ে উলঙ্গ হাঁসি হাঁসে অভাব অনেকগুলো ইউনিক বাক্যের মধ্যে এটা কেন যেন বিশেষ মন কাড়লো।]
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব সুন্দর ভাব গাম্ভীর্য্যের সাবলীল গল্প| অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো|
মামুন ম. আজিজ চরম....খুবই ভাল লাগল.....মুন্সিয়ানার পরিচয় পরতে পরতে
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ চমৎকার একটা গল্প। আবেগ, অনুভূতি আর শিল্পগুণ মিলে অনন্য সাহিত্যকর্ম । অনেক ভাললাগা আর মুগ্ধতা রইলো। ধন্যবাদ ।
বশির আহমেদ বাউল, সাই বাবা, সাধুসৈন্যাসিদের জীবন কাহিনী নিযে এমন সুন্দর গল্প আমার খুব একটা পড়া হয়ে উঠেনি । আপনার গল্প পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম । অনেক দরদ দিয়ে লেখা ।

১০ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী