স্বপ্নের যাত্রী

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

ইয়াসির আরাফাত
  • ২০
  • ৪১
বেশ কদিন থেকেই সময় মত ঘুমাতে পারেনা মিঃ সুমন ।পূর্বের মত আবার ও চাকুরী হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে তার । গেয় ভুতের মত অদ্ভুদ চিন্তা ভাবনা গুলোকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করতে গিয়ে কোম্পানিগুলোকে কোটি কোটি টাকা লসের সম্মুখীন করে চাকুরী হারাতে হয় তাকে ।এবার ও সে DOOSAN নামের একটি কোরিয়ান কোম্পানিতে চাকুরী নিয়েছে ।স্ক্র্যাপ পার্টস গুল দিয়ে সে চেষ্টা করছে । তেল হীন ইঙ্গিন এর গাড়ী বানানোর , দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য থাকবে সেন্সর । গাড়িটি যেন ১৫ ফিট উঁচু দিয়ে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত বিমানের মত উড়ে যেতে পারে ।কোনপ্রকার হাইড্রলিক অয়েল , ইঞ্জিন অয়েল , কুলান্ট , দিফারেনটালয়েল , ট্রান্সমিসন ওয়েল ছাড়াই যেন এই গাড়ী চালানো যায় । শুধু মাত্র পানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি ,অধিক স্পিড এর ক্ষেত্রে ও ১৫০ এ এম পি দুটি সহায়ক হবে । বাতাসের শক্তি কাজে লাগিয়ে ও চম্বুকের আকর্ষণ ও বিকর্ষণ ধর্মকে কাজে লাগিয়ে সেন্সর গুলো কাজ করবে ও প্রায় ১৫ ফিট উঁচু দিয়ে চলতে সক্ষম হবে ।
কিন্তু সমস্যা হল কাজ টি শুনতে যত সহজ মনে হয় করতে নয় । পৃথিবীর যত হেবি ইকুপমেন্ট রয়েছে সবগুলো হাইড্রলিক নির্ভরশীল ,তবু মিঃ সুমন হাল ছাড়ছেনা । সুমনের স্বপ্ন গুগোলের সেন্সর কার এর চেয়ে সহজ লভ্য হবে তার এর গাড়ী ।এই সুখ স্বপ্নে তার নিদ্রা আসছেনা । তা ছাড়া আজ গবেষণা করতে গিয়ে তাদের ম্যানেজার জন বংলির কাছে ধরা পড়েছে মিঃ সুমন । জন বংলি তার প্লান এর কথা শুনে মুচকি হেসে বলল স্ক্রাপ দিয়ে অকারন সময় নষ্ট করছ কেন ? কাল আমার অফিসে আসবে সকাল ৯ টায় । মাঝে মাঝে ভয়ের কালো ছায়া পড়ছে সুমনের মনে সকাল ৯ টায় জন বংলি হয়তবা সুমন কে শেষ বিধায় জানাবে ।সুমন ভালকরে জানে একটি চাকুরী হারালে হাজার চাকুরী পাওয়া যাবে । কিন্তু যতবার চাকুরী হারায় সব কিছু নতুন করে গড়তে হয় ।গবেষণার পরিক্ষা করতে গিয়ে নানা সমস্যার মুখমুখি হতে হয় । একবার ডোঙ্গা কোম্পানিতে সে ২৫ টন এর ক্রেন এ ১০০০ টন ক্ষমতা সম্পন্ন করার প্ল্যন করেছিলো ।সফলও হয়েছিল ক্রেন উল্টে গিয়েছিলো ও ইঙ্গিনে আগুন লেগে গিয়েছিলো । মিঃ সুমন যুক্তি দেখিয়েছিল ক্রেন ০ ডিগ্রিতে ছিলোনা । কিন্তু ইঙ্গিনে আগুন লাগলো কেন ? এই প্রশ্নের উত্তর সে মনে মনে দিয়েছিলো ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট হতে পারে।

সকাল ৯ টার পূর্বেই সুমন জন বংলি এর অফিসে গিয়ে হাজির হলো । জন বংলি কোন এক বায়ারের সাথে কথা বলছে বাধ্য হয়ে সুমন বেড়ালের মত উঁকি দিচ্ছে আর মনে মনে ভাবছে । এক ক্যান যদি বাংলাদেশের স্পীড পান করা যেত হয়তবা জন বংলি কে বোঝা নো সহজ হত । মাঝে মাঝে সরকার কে খুব অসহায় মনে হয় ।আবার মিডিয়ার স্বাধীনতার দাবীর কথা সুনলে রক্ত গরম হয়ে যায় । স্পীডের প্রতারনা মূলক মিথ্যে বিজ্ঞাপন দেখে খুশি হয়ে স্পীড পান করছে । এর চেয়ে বেশী স্বাধীনতা কোন দেশের মিডিয়া পেয়েছে কি ?বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনীর রাজ পুত্র জুলভারন ,ডিটেকটিভ কিং কেনান ডায়েলের হোমস ও পা ধরে ক্ষমা চাইবে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের । ফলস ডিটেকটেড মেশিন তৈরির জন্য ১৭ মাস হাজৎ খাটতে হয়েছিলো সুমন কে ,জরিমানা হয়েছিলো ১৫ লক্ষ টাকা ।সেই সৃতি সুমনের ভালো ভাবে মনে পড়ে বিজ্ঞান মেলায় তার তৈরি ফলস ডিটেকটেড মেশিন নিয়ে অবজ্ঞা করেছিলো তৎকালীন জেলা প্রশাসক ।সুমন দেক্ষাছে কিভাবে এই মেশিনের স্প্রিং ছুটে গিয়ে পুতুলের নাক কেটে ফেলে ।কিন্তু, তৎকালীন জেলা প্রশাসক এই মেশিনের কার্জ ক্ষমতা নিজে যাচায় করতে আগ্রহী হলেন । তিনি নিজে বসে পড়লেন মেশিনের সামনে । সুমন তাকে বলল আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব, দয়া করে মিথ্যে বলবেননা ।আপনাকে যে ক্যাপ পড়তে দেয়া হয়েছে তা আপনার মস্তিষ্কের সকল ডাটা এই মেশিনকে প্রদান করেছে । আপনি মিথ্যে বললে এই মেশিন থেকে স্প্রিং এর হুক ছুটে যাবে ১ ন্যান্য সেকেন্ডের ও কম সময়ে । এবং ধারালো ব্লেড আপনার জিভ কেটে ফেলবে । আপনি রেডি কি ? জেলা প্রশাসক সাহেব বললেন হুম ।
সুমন প্রশ্ন করল আপনার নাম কি ?
জেলা প্রশাসক ঃমোহাম্মদ কায়েশ আলী ।
পরীক্ষায় কখনো নকল করেছেন ?
ছেলেবেলায় অন্যর খাতার পানে দু একবার চেয়ে দেখেছি ।
আপনি কখনো ঘুষ খেয়েছেন ,আপনার দায়িত্বে অবহেলা করেছেন ?
নাহ ... আহ.........।
সাথে সাথে মেশিন তার কাজ শুরু করে দিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জিভ কেটে নিল । মেশিনে লেখা উঠলো মিথ্যে বলা সমাজের অভিশাপ !
জন বংলি সুমনকে প্রশ্ন করল ?
তুমি কতদিন এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছ ?
১৭ বছর ধরে চেষ্টা করছি । কিন্তু ভাঙ্গা গড়ার খেলায় আমাকে হার মানতে হয় ।
তুমি যে পথে চলছ তা ভুল , খেলনা গাড়ি ও হেভী যন্ত্রগুলো কিন্তু তেল হীন চলে । জেট পেট্রোল ছাড়ায় শুধু ব্যটারি বা চার্জে আকাশে উড়ে । ছোট ছোট রবো ট গুলো কে মডিফাই করে তোমাকে বড় রোবট করতে হবে ।
তুমি কতদিন এই প্রজেক্ট এ কি কি পার্টস ব্যবহার করবে ভাবছ ?
গতানুগতিক হেড পিস্টন ,শাফট ,রেডিয়েটর ,লাইনার ,ভাল্ভ পাম্প নজেল স্পার্ক প্লাগ ইত্যাদির সাথে একাধিক এয়ার পাম্প , মটার চম্বুক এর সহায়তা নিব ভাবছি ।
তুমি ভুল করছ , এতে তোমার কষ্ট কমবেনা ,তা ছাড়া তোমার পন্যের খরচ অনেক বেড়ে যাবে ।আমি তোমাকে কিছু রোবট ও ইঞ্জিন সম্পর্কিত ই বুক দেব । সেগুলো পড়ে কিছুটা ধারনা নেবার চেষ্টা করিও । এবং আমার এক বন্ধু গাড়ির কোম্পানি গড়েছে তার ও চিন্তা ভাবনা কিছুটা তোমার মতই তার সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিব । এখন বলো কি পান করবে হুইস্কি নাকি কোক ?
মিঃ সুমন কিছুই না , দুঃখিত !
জন বংলি তুমি ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে কল করো হুইস্কি হলে ৩২ কোক হলে ৯৭ । দেখ আমি কল করছি ।১বি ০০১ প্লিস । দুই সেকেন্ড পড়েই ফ্রিজ থেকে লাইলনের সুতোর মত একটি পাতলা তারের উপর ভর করে ১ বোতল পানি চলে এলো ।সুতো টি নিয়ন্ত্রণ করছে একটি প্লাস্টিক এর কাঠামো ।
মিঃ সুমন মোটেও অবাক হলনা কারন এমন অনেক প্রজেক্ট সে ছেলেবেলায় করতে শিখেছে । তবু মুচকি হেসে অবাক হবার মত ভাব নিয়ে বলল । অসাধারন প্রজেক্ট । আমি তাহলে আসি । আপনার বন্ধুর সাথে পরিচয় অনতিবিলম্বে হবে আশাকরি । ভাল থাকবেন বিদায় ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইয়াসির আরাফাত আপনাদের অনেক ধন্যবাদ সুচিন্তিত মন্তব্য করার জন্য ।
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভালো লাগলো- শেষটা যেন তাড়াহুড়ায় কিছুটা যত্নহীন। অস্থিরতা নিয়ে টেবিলে বসলে আমারও এমনি হয়।
তানি হক অনেক ভালো লাগলো আরাফাত ভাই গল্পটি ..ফ্রিজের ব্যাপারটাতে খুব মজা পেলাম .. সুভেচ্ছা রইলো ...আপনাকে
ম্যারিনা নাসরিন সীমা আমি কল্পকথা কম বুঝি ।আপনার অন্য গল্পের মত পুরোপুরি তৃপ্ত করতে না পারলেও ভাল লেগেছে ।
সূর্য আরাফাত, গল্পকবিতা ও ফেসবুকের মাধ্যমেই আমরা পরিচিত। তোমার ভেতরে সব সময় কিছু একটা জ্বলতে থাকে আর একটা তাড়াহুড়ো। এই য গল্পটা লিখেছ তার একটা ভীষণ কার্যকরী দিক হলো জন বংলি এবং সুমন এর সাক্ষাতের সময়টায় যে কাজটুকু করেছ (লাই ডিটেক্টর সম্পর্কিত) সেটা অনেক সুন্দর মানিয়েছে। আবার জন বংলি যে আবিস্কারটা দেখালো, সুমনের চিন্তায় সেটা বুঝালে তার (সুমনের) মেধার দৌড় আরো বেশি। এমন কিছু ডিটেইলস এর কাজ শেষদিকটায় চাইছিলাম। ভাল লাগলো তবে পুরো তৃপ্ত হইনি।
আহমেদ সাবের একটা সাইফাই 'এর ভূমিকা পড়লাম মনে হলো। লেখার ষ্টাইল বরাবরের মতই আকর্ষণীয়।
মিলন বনিক মিঃ সুমনের প্রজেক্ট সফল হোক মিথ্যার বেসাতি কমুক এই কামনা....অনেক ভালো লাগলো...শুভ কামনা....
আজিম হোসেন আকাশ ভাল লাগল। আমার লেথা বিজ্ঞানের চেতনা কবিতাটি ভাল লাগলে ভোট প্রদান করুন ও পছন্দের তালিকায় নিন, অন্যথায় নয়।
জিয়াউল হক সাইন্স ফিকশনে একটা একটা ছোট গল্প , ছোট গল্প ভাব থাকে , তাতে সন্দেহ নাই , কিন্তু এতটা ছোট , ভাবাই যায়না । তবে যতটা লিখেছেন । জোশ

০৪ আগষ্ট - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪