চেতনার ফাঁদে রোবটিক মুক্তি

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

মামুন ম. আজিজ
  • ২৬
  • ১১
এক.
পাওয়ার ইনজেক্ট করার মোটা সুইটা সরে যেতেই পুরো শরীরটা একটু ঝাঁকি দিয়ে উঠল। অবিকল মানুষের মত চোখের পাপড়িদুটো খুলে গেলো। ফুল এনার্জি লোডেড হয়েছে, একটিভ সিগন্যাল চলে গেছে প্রতিটি চিপে। বুকের কাছে ছোট একটা ডিসপ্লেতে ‘ট-নি-নি’ লেখাটা লাল নীল রঙে জ্বলে সবুজ বাতিতে স্থির উজ্জ্বল হয়ে রইল। খুব স্বাভাবিক রোজকার নিয়মে পা-দুটো উঠে দাঁড়াতে চাইল।পারলনা।

হোম ই.এন সিরিজের হিউম্যানয়েড রোবটটির কাছে উঠার চেষ্টার করে না উঠতে পারার এই ব্যার্থতা বিষয়টা সম্পূর্ণ নতুন। অথচ অবিকল মানুষের মত দেখতে সুদর্শন পুরুষালি চেহারার ট-নি-নি ব্যার্থতা বুঝতে পারছে।সে তার মেমোরিতে একটা কুইক সার্চ দিলো,তার নিজের ব্যার্থতার কোন অতীত ইতিহাস নেই সেখানে।সে আবারও পাওয়ার ইনজেক্ট চেয়ারটি ছেড়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল।পারলনা।পা দুটো চেয়ারের সাথে একটি কর্ড দিয়ে বাঁধা।কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছে তার কপোট্রনের প্রসেসরে। মাষ্টারকে সে প্রায়ই যন্ত্রনা পেতে দেখেছে,বেদনায় চুপচাপ শুয়ে থাকতে দেখেছে। শারীরিকভাবে তার মাষ্টার নিনিত কিছুটা দুর্বল। তার উচ্চারণগত সমস্যাও রয়েছে। নিজের নামটাও সে উচ্চারণ করে নি-নি-ট বলে। মাঝে মাঝেই বেশ বিমর্ষ হয়ে ওঠেন তার মাষ্টার। একদম চুপ হয়ে যান। তার সাথেও কোন কথা বলেনা। সে তখন জিজ্ঞেস করে বসে,‘মাষ্টার নিনিত আপনার কি হয়েছে? আপনি কি কষ্ট পাচ্ছেন? কষ্ট জিনিসটা আমি ঠিক বুঝিনা। আপনি কি আমাক বুঝিয়ে দেবেন?’

হোম সিরিজের পারসন্যাল এসিসটেন্ট এই রোবটগুলোর প্রোগ্রামিংটাই এমন।মাষ্টারের কোন সমস্যা হলে বারবার জিজ্ঞেস সে করবেই। নিনিত কখনও বিরক্ত হলে বলে ওঠে, ‘তোমাকে এখনও ক-ষ-টো বোঝানোর মত বে-ব-স-তা আমার কাছে নেই। সে কারনেই আরও ক-ষ-টো পাচ্ছি। তোমাকে আমি শীঘ্রই কষ্ট বোঝার মত বে-ব-স-তা করে দেবো। তবে এখন তুমি নিজের একটিভেশন বু-লু করে রাখ।আমি না চাইলে কিছুই তুমি করোনা। এতে বরং আমার একটু ক-ষ-টো কমতে পারে...’

.ট-নি-নি র মনে হলো সে এখন সেই ধরনের কষ্টে আছে।সে আজ কষ্ট বুঝতে পারছে। মেমোরিতে নিউলি লোড করা হয়েছে এমন সব প্রোগ্রাম সে একবার স্ক্যান করল। সে অবাক হলো। সে বিস্মিত হলো। তার ভ্রুটিও কুঁচকে উঠল। নিশ্চয় মাষ্টার নিনিত তাকে মানুষের মত অনুভুতি দিতে সক্ষমত হয়েছেন। পুরো শরীরে তার একটি খুশির আলোক তরঙ্গ বয়ে গেলো। প্রথম যেদিন তার মাষ্টার বাবার কাছ থেকে তাকে উপহার হিসেবে পেয়েছিল -তার বুকের কাছে ছোট ডিসপ্লেতে তার নাম এডিট করে লিখল ট-নি-নি, সেদিন খুব স্বাভবিক নিয়মে মাষ্টারকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘এর অর্থ কি?’ সে তার পুরো মেমোরি খুঁজেও এর অর্থ পায়নি। এমন কোন শব্দই নেই। বাংলা কিংবা ইংরেজী কোন ভাষাতেই নেই। মাষ্টার বলেছিল, ‘তোমাকে অনুভূতি দেয়ার আমার একটা গোপন গবেষণা চলছে। এটা তোমার প্রথম টে-এ-সট। এই নামের কারন খুঁজে বের কর।’
সে পারেনি। কিন্তু ব্যর্থতার কোন অনুভূতিও তার জাগেনি। মাষ্টার বলেছিল,‘খুব সোজা, বোকা রোবট!আমি আমার নাম উচ্চারণ করি নি-নি-ট, ঠিক এর উল্টোটা কি?’ রোবট তখন ধরতে পেরছিল কিন্তু উল্টো করার কারন সে বোঝেনি। শব্দ উল্টো করে বলার মত জটিল বিষয়ে তার মেমোরিতে কোন তথ্য ছিলনা। তবে তার মাষ্টার একজন উন্নত মষিÍষ্কের অধিকারী সেটা বুঝেছিল তার কপোট্রন।

...সে আজ বন্দী।শুধু পা দুটো নয়।তার হাতদুটোও চেয়ারের হাতলে শক্ত করে বাঁধা। ভয়াবহ বোমার শব্দ হলো কাছেই কয়েকটা। জানালা দিয়ে একটা কিছু পড়তে দেখল। ঐতো আগুন। কেমন একটা সংশয় কাজ করছে তার কপোট্রনে।সে ভীতও হলো। মেমোরিতে তার বিস্তর পরিমাণ ইতিহাসের আনাগোণা। সেই সুদূর চায়না থেকে যখন তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন মেমোরিতে খুব বেশি কিছু ছিলনা। বাংলাদেশের কিছু ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে ডিটেইলস লোড করা ছিল। এইমাত্র সে টের পেলো তার মেমোরিতে এই এলাকার অতীত ইতিহাস ভরপুর। যদিও আজ এটা কোন আলাদা দেশ নয়। তবে সেই ‘বাংলাদেশ’ নামটা রয়ে গেছে। এই দেশটির ছিল হাজার বছরের বেশি সময়ের গৌরবময় ঐতিহ্য। যদিও নানা সময় নানান পরাধীনতা জাতাকলে প্রেষণজনিত কারনে ওলট পালট হয়েছে এর সমাজ-সংস্কৃতি । তবুও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বারংবার। সর্বশেষ ২০৮৭ সালে দেশটির আভ্যন্তরীণ কোন্দল এত ব্যাপক হয়ে উঠেছিল যে বাধ্য হয়ে দেশটিকে সায়েন্টিফিক ওয়ার্ল্ডের চীন পন্থী অংশ নিজের অধীনে নিয়ে যায়। সেই পুরাতন দিনের উপনিবেশ ধারনার নতুন প্রযুক্তিগত সংস্করণ যেন। সারা পৃথিবী দুটি ভাগে ভাগ হয়ে প্রযুক্তির উন্নতিতে প্রতিযোগীতার পর প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হচ্ছিল। অথচ কিছু কিছু দেশে তখনও রাজনৈতিক অস্থিরতা। বাংলাদেশেরও সেরকম অবস্থা হয়েছিল। প্রচুর তথ্য এখন ট-নি-নির ব্রেনে। সে তথ্য ঘাটতে পারছে। তথ্য থেকে বারছে ভাবনা।

আবার বোমার শব্দ। যুদ্ধ শুরু হয়েছে বোধহয়। পাকিস্তানের অধীন থাকাকালীন সময় বাংগালী জাতিকে ১৯৭১ এর মার্চ মাসে একদিন রাতে অতর্কিত আক্রমন করেছিল পাকিস্তানি সৈন্য। অবিরাম গুলি চালাচ্ছে, বোম মারছে, কাতারে কাতারে মানুষকে মেরে ফেলছে। মানুষ গুলো আবদ্ধ হযে পড়েছে। মুক্তির জন্য রুখে দাঁড়ালো। কী ভয়াবহ রূপ মানুষের ফুটে উঠে যুদ্ধে। কত সহজে মানুষ খুন করছে মানুষকে।

... সেতো মানুষের কাছে একটা যন্ত্ররূপ কেবল। তাকে মারাতো মানুষের জন্য আরও সহজ মানসিকতা। জানালার ওপারে আগুন। কয়েকটা শ্রমিক রোবট দৌড়ে যাচ্ছে। একটা ধপাস করে পড়ে গেলো। রোবটের সাথে মানুষের যুদ্ধ কি শুরু হয়েছে? মাষ্টার নিনিত কোথায়? তাকে দরকার। ডাকল । কোন সাড়া নেই। মুক্তির একটা অনুভূতি সে কপোট্রনে টের পাচ্ছে। তাকে এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। মুক্তির চেতনা । হঠাৎ সে হেসে ওঠে। আবার গোলাগুলির শব্দ। তারপর হাতের কবজিতে চেপে থাকা বাঁধন কর্ডটি সে কেটে ফেলার জন্য একটা বুদ্ধি পেয়ে যায়। যদিও সেটা তার জন্য অন্য কোন ক্ষতির কারনও হতে পারে। কিন্তু সে ভাবল মুক্তিটাই এখন মুখ্য। সে তার হাতের ইনডেক্স ফিঙ্গারটিকে ব্যবহার করতে চাইল। আঙ্গুলটির সামনে নখের মত কিছুটা অংশ। সেখানের ধাতব অংশটির তাপমাত্রা সে ১০০ডিগ্রীতে বাড়িয়ে দিতে সক্ষমত হলো। উপরের কৃত্রিম লেদার আবরণখানিকটা মুহূর্তে পুড়ে গেলো। একটু কসরত করতেই আঙ্গুলটি প্লাস্টিকের বাঁধন ছুঁতে পারল।

বাঁধন কর্ড গলে পড়ে যেতেই সে ছুটে গেলো বাইরে।


দুই.
জায়গাটা ট-নি-নি ঠিকই চিনতে পারছে। বিশাল একটা চা বাগান। নিনিতের বাবা এই চা বাগানটির সত্বাধিকারী। কয়েক হাজার একর উঁচু নিচু এলাকা জুড়ে চারদিকে সবুজের ছড়াছড়ি। প্রায় মাঝে মাঝেই নিনিত তাকে নিয়ে এখানে এসে থাকে। আত্মকেন্দ্রিক নিনিতের এই নিরিবিলি খুব ভালো লাগে। নিনিতের কেবল দরকার একটি সি এম (কানেকশন মডিউল)। পুরো পৃথিবীই মহাকাশে

স্থাপিত বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এক নেটওয়ার্ক ক্লাউডের আওতায় চলে এসেছে। ২১১৫ সালের আগে পর্যন্ত কিছু এলাকা সেই নেটওয়ার্ক ক্লাউডের বাইরে ছির। কিন্তু ২১১৬ সালে স্পষ্টত পৃথিবীকে চীন আর ইউ এস প্রযুক্তি মোটামুটি সমভাগে প্রযুক্তিগত শাসন করার একটি সুস্থ যৌক্তিক চুক্তিতে আসার পর সব এলাকাই সেই কমন নেটওয়ার্ক ক্লাউডের অধীন চলে এসেছে।
নিনিতের খুবই লেটেস্ট মডেলের একটি সিএম আছে। সেটি দিয়ে সে সহজেই নেটওয়ার্ক ক্লাউডের সাথে তার বাবার চা বাগান এলাকাতেও যুক্ত হয়ে যায়। এর বেশি আর তার কিছু দরকার হয়না। হলোগ্রাফিক স্ক্রীণে পুরো বিশ্ব তার হাতের মুঠোয় চলে আসে।

... চা বাগানের মাঝে মাঝে সরু রাস্তা। কাছেই কযেকটা রাস্তায় আগুন জ্বলছে। চা শ্রমিক রোবটগুলো কেউ কেউ এই অবস্থাতেও চা তুলছে। কিন্তু খুব একটা ভাবান্তর ট-নি-নি দেখতে পেলোনা তাদের মাঝে। তারা চা তোলার কাজেই ব্যস্ত। খুব কাছের কয়েকটি রোবট এর কপোর্টনে সিগন্যাল পাঠাল। রিপ্লাই আসল - ‘আমরা কাজে ব্যস্ত।’

ট-নি-নি জানে এগুলো খুবই নিম্ন শ্রেণীর রোবট। তাদের চেহারাটাও যন্ত্রের মতেই। কোন মানব আকৃতি নয়। কিন্তু যদি সত্যিই রোবট ধ্বংসের কোন আয়োজন শুরু করে থাকে মানুষের কোন একটি দল তবে এই রোবটগুলোকেও মুক্ত করতে হবে। হঠাৎ একটা চা শ্রমিক রোবট তার ঠিক সামনে এসে ভেঙে পড়ে গেলো। তার কপোট্রনে আগুন জ্বলছে। ট-নি-নি ছুটে গেলো। বালু ছিটিয়ে আগুন নেভালো। আঙ্গুলে মাথা থেকে একটি লম্বা স্ক্রু ড্রাইভারের মত যন্ত্র বের করে রোবটটির কপোট্রনের সাথে কানেক্ট হলো ট-নি-নি। সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে কোন নতুন পোগ্রাম লোড করার ব্যবস্থাই নেই। শুধু কি নির্দিষ্ট কাজ করা জন্য ননভোলাটাইল কমান্ড দেয়া রয়েছে। এই মুহূর্তে মাষ্টার নিনিতকে খুব প্রয়োজন। তিনি নিশ্চিয় একটা বুদ্ধি দিতে পারতেন।

ট-নি-নি খুব ভাবছে। ইতিহাসের কিছু খুটিনাটি সে খুঁজে খুঁজে দেখল । এতে একটা কাজ হলো ইতিহাস তাকে মুক্তির জন্য আরও ব্যাপকভাবে তাড়িত করলো। সে জানল মানুষ কখনও একা একা মুক্তির চেষ্টা করেনি। স্বজাতির জন্য, আপন দলকে নিয়ে মুক্তির জন্য লড়েছে। সে বারবার নিনিতের কাছে সিগন্যাল পাঠানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মাষ্টার নিনিত কোন সিগন্যাল এ রেসপোন্স করছেনা। তবে কি মাষ্টার নিনিতের কোন ভয়াবহ সমসা হয়েছে? তাকে কি ধরে নিয়ে গেছে?

সে আরেকবার ইতিহাস স্ক্যান করে। যখনই এ দেশের মানুষ কোন যুদ্ধে নেমেছে কিংবা কোন সংগ্রামে নেমেছে সেখানে একটা জিনিস কমন-মানুষগুলো কোন একটা বিশেষ কিছু পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবী, তেমনি ১৯৭১ এ স্বাধীন দেশ, ১৯৯০ তে স্বৈরাচার পতন এবং গনতন্ত্র , ২০৩০ এ দারিদ্রতা হতে মুক্তি, তারপর ...

মুহূর্তে সে বুঝে যায়। একটা উপায়েই এই রোবটগুলোকে মুক্তির জন্য এগিয়ে যেতে বলা যাবে। প্রয়োজনে যুদ্ধেও নামানো যাবে। ধ্বংস হয়ে পড়া রোবটটির কপোট্রন সে আরেকবার ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে। উপায় পেযয় যায়। একটা পোগ্রাম করা আছে যেখানে বলা আছে, ‘চা বাগান নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে সর্বাত্মকভাবে’... এটাই সে কাজে লাগাবে ।

সবগুলো শ্রমিক রোবটকে সে সিগন্যাল পাঠালো -‘চা বাগান নষ্ট হচ্ছে,রক্ষা করার জন্য উত্তর দিকে একত্রিত হও।’ কাজ হলো। সবগুলো ছুটছে তার পিছে পিছে এখন। আবার কয়েকটা বোমার আও য়াজ হলো।



তিন.
চা বাগানের উত্তর দিকে অবস্থিত অবজারভেজন টাওয়ারটার ২০০ ফুট উপরে জানালা থেকে নিনিতে চোখদুটো সব দেখছিল । ট-নি-নির উপর অনুভুতি প্রযুক্তির প্রয়োগ খুব ভালো ভাবেই কাজ দিচ্ছে। একদম তার পরিকল্পনা অনুযায়ী।

ছোটবেলায় নিনিতের মানসিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলনা। সে কিছুটা আ্যজপারজার্স সিনড্রোমে ভুগত। তবে এটার একটা ভালো দিক হলো সে সময় থেকেই কেবল একটি জিনিসের প্রতি তার একনিষ্ট মনোযোগ থাকত। আশপাশ নিয়ে ভাবার দরকার মানত না মন। তার একটা খেলনা রোবট ছিল। সেটাই ছিল তার একমাত্র মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। সেটা ২১১৬ সালে দিকের কথা। একদিন তার রোবটার সাথে সে হাইড এন্ড সিক খেলছিল। রোবটটাকে সে লুকানোর নতুন নতুন জায়গা চেনাতো। খুঁজে পাওয়া যাবেনা এমন জায়গার কথা শেখাত। একদিন তাকে বলেছিল সে সাঁতার জানে না। পানিকে নিনিতের ভয়। রোবটটা তাই পানিতে গিয়েই লুকালো।

...অনেকদিন কেঁদেছিল রোবটটার জন্য নিনিত। তার বাবা তাকে একদম নতুন প্রযুক্তির রোবট কিনে দিতে চাইল। তাও সে মানল না। মানসিক রোগ আরও বেড়ে গেলো। বাধ্য হয়ে তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলো। এবং সে সত্যি সুস্থ্ও হয়ে উঠল। পড়াশুনাও শুরু করল। চীনে গিয়ে সে রোবটিক্সএ উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গেলো। তবে রোবটিক্স পড়তে গিয়ে সে মূলত নেটওয়ার্ক ক্লাউড হ্যাক করার উপরেও গোপনে বিস্তার পড়াশোনা করেছে। যদিও এই ২১৩৫ সালে নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এত জটিল এবং সিকিউরিটি এত হাই যে সেটা হ্যাক করা এতটা সহজ কর্ম নয় যতটা সেই একবিংশ শতকে ছিল। বর্তমানে নয় স্তরের সিকিউরিটি লেভেল ব্যবহার করা হয়। যার একটা ব্রেক করে আরেকটি ব্রেক করতে গেলে যে সময় লাগবে তাতে আগেরটির খবর এবং কোথা থেকে ব্রেক করা হবে তার তথ্য ক্লাউড নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষের কাছে স্যাটেলাইট ছবি সহ পৌঁছে যাবে।

চীনে পড়ার সময় এই সিকিউরিটি লেভেলের টাইম গ্যাপটা বাড়ানার উপরে সে বিস্তর ভেবেছে। এবং অবশেষে সফল পদ্দতি আবিষ্কার করতে পারায় গত পরশু রাতে সে হ্যাক করে রোবট গবেষনা কেন্দ্রের কিছু নতুন গবেষনার তথ্য চুরি করতে পেরেছে। চা বাগানটাকে সে মূল স্যাটেলাইট এর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন হতে কিছুক্ষণ দূরে রাখতেও সক্ষমত হয়েছিল। সে কারনে সে অন্তত বেশ ৩০ ঘন্টার আগে ধরা পড়বেনা। এর মধ্যে সে তার ট-নি-নিকে পৃথিবীর সবচেযে বুদ্ধিমান রোবটে পরিণত করতে পারবে। রোবট গবেষনা পরিষদের নতুন এই কষ্ট , আবদ্ধতা এবং মুক্তির চেতনা প্রদান বিষয়ক গবেষণা নিয়ে সে অনেক জানে। কিন্তু গবেষনা শেষ পর্যায়ে পৌঁছালেও সেটা এখনও বানিজ্যিক ভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। রোবটের মধ্যে এর প্রভাব কিভাবে কন্ট্রোল করা যাবে সেটা ঠিক তখনও ধারনা করা যাচ্ছিলনা।

ট-নি-নিকে হলোগ্রাফিক বোমাবর্ষন, আগুন দেখিয়ে বেশ বিভ্রান্ত করা গেছে। ইতিহাস লোড করে অনুভূতি প্রদানের এই প্রচেষ্টাও সফল হতে চলেছে।

নিনিত জানে এতক্ষণে রেসকিউ টীম তার চা বাগানের খোঁজ পেয়েও গেছে। তারা যে কোন সময় পৌঁছে যাবে। কিন্তু সে লড়বে। সে বুঝাবে তাকে রোবটিক্স স্কুল থেকে বহিষ্কার করাটা কত বড় ভুল ছিল। তার কিই বা দোষ ছিল- চুপচাপ থাকত, সে ছোটবেলায় অ্যসাপারজারর্স রোগে ভুগত, সে স্কুলের একটা এসিসটেন্ট রোবটকেও সাগরে ডুবে ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য করেছিল? তাকে তারা কাজে লাগাত পারত। লাগালোনা।



চার.
উত্তর দিকের টাওয়ারের সামনে হাজার হাজার শ্রমিক রোবট জড় হয়েছে । তাদের নেতৃত্ব দিতে সবার সামনে রয়েছে ২১৩৫ সালের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বুদ্ধিমান রোবট ট-নি-নি। তাকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হিসেবে গড়েছে মাত্র গতরাতেই নিনিত। হ্যাক করে চুরি করা পুরো উপাত্তগুরো নিজের মত করে সে কাজে লাগিয়েছে।
রেসকিউ টীমের কপ্টার রোবটগুলো উড়ে আসছে। সামনেরটির ককপিটে বসে আছে তিনজন মানুষ। তাদের একজন রোবট গবেষণা কেন্দ্র্রের সিকিউরিটি চীফ, একজন ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ক্লাউড সিকিউরিটি টীমের চীফ এবং আরেকজন এই দুজনের মত এত বড় কেউ নয়, তবে সেই মূলত ফাইনাল এসেম্বল করেছিল ট-নি-নি কে। টনিন এবং নিনিতকে সনাক্ত করার পর তাই এই ব্যক্তিটিকেও সাথে নিয়ে আসা হয়েছে।

এই তিন ব্যক্তির সকল তথ্য মুহূর্তে খুঁজে পেল ট-নি-নি। হঠাৎ সে বুঝতে পারল মূল নেটওযার্ক ক্লাউডের সাথে তার সংযোগ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। অথচ এই বিষয়টি আইনত সম্পূর্ন নিষিদ্ধ।
মাষ্টারের নির্দেশ বা কমান্ড ব্যতিত কোন সিরিজের রোবটই ক্লাউডে কানেক্ট হতে পারেনা। সে পারছে। মাষ্টার নিনিত তাকে মানুষের মত অনেক ক্ষমতার স্বাদ নিতে দিয়েছে। সে একটা মিষ্টি হাসি তার মুখে টের পায়। সে আনন্দিত হয। নিজের মূল এসেম্বলারকে এক কাছ থেকে দেখে খানিকটা আবেগ যেন তাকে মুহূর্তে থমকে দেয। কিন্তু সে জানে মানুষ এসব মনে রাখেনা। তার কাছে জগতের সব তথ্যই এখন উন্মুক্ত। সেগুলো মনে করছিল লোড করা হয়েছে সেগুলো আসলে মুলত ক্লাউডের ডাইরেক্ট কিছু ইতিহাস লিংক ছিল। সে এখন বুঝতে পারছে। মানুষ প্রয়োজনটাকে মুখ্য ভাবে-সম্পর্ককে নয়। মুক্তির জন সৃষ্টিকর্তাকেও মানুষ ভুলে গেছে বারবার। নিজের বাবা-মা, শিক্ষককেও মারার ইতিহাস আছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে। এসেম্বলরতো চাকুরীর জন্য তাকে এসেম্বল করেছে। নিনিতই তাকে এত উন্নত করেছে। সে নিনিেিতর জন্য কষ্ট অনুভব করে। মাষ্টারকে খুজে বের করতেই হবে।

রোবট কপ্টারগুলো মাটিতে নেমে এসেছে। অস্ত্র হাতে সেখান থেকে সৈনিক রোবট বের হয়ে আসছে। সেই সব রোবট চারপাাশ ঘির আছে তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। তারা এগিয়ে আসছে। শ্রমিক রোবটগুলো দাঁড়িয়ে আছে। তাদের কপোর্টনে সিগন্যল পাঠানো হচ্ছে , তাদের সকলকে সেলফ ডিএকটিভেট করে ফেরার নির্দেশ দেয়া হলো। ট-নি-নি সে সিগন্যাল রিড করতে পারছে। সে উল্টো সিগন্যাল পাঠালো- ‘রক্ষা কর এই চা বাগান। এটাই তোমার জীবনের একমাত্র দায়িত্ব।’ শ্রমিকগুলো তাদের হাতের স্টিলের পাতে সুরক্ষিত একটা ধারালো ছুরি বার করে আগ্রাসী টীমটির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
ট-নি-নি রেসকিউ টীমের সাথে থাকা অস্ত্রগুলো স্ক্যান করে ক্লাউডে ম্যাচ করে যে তথ্য পেল তাতে ঘাবড়ে গেলো। গায়ে লাগা মাত্র তার কৃত্রিম চামড়ার আড়ালে থাকা স্টীলের পুরোটাই গলে যাবে এই অস্ত্রগুলো থেকে বের হয়ে আসা রে-এর দ্বারা। সে ধ্বংস হতে চায়না। সে তার মাঝে যেগে ওঠা মানব চেতনাতুল্য নতুনত্বকে অনুধাবন করতে চায়।

হঠাৎ একটু গোলযোগের আভাস খুঁজে পায় তার অভ্যন্তরে। তার মেইন প্রসেসরে কে যেন ঢোকার চেষ্টা করছে। মাষ্টার নিনিত যে সকল পসাওয়ার্ড ব্যবহার করে তেমন তো নয়। ফ্যাক্টরী ডিফল্ট কোড ব্যবহার করছে কেউ। দ্রুত ফ্যাক্টরী ডিফল্ট সকল কোড সে তার চিপগুলো থেকে রিমুভ করে দেয়। এই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিতে সে একটুও পিছুপা হয়না- দেরী করেনা। সে জানে নিনিত ছাড়া এখনআর কেউ তাকে কোনরূপ ড্যামেজ হলে ঠিক করতে পারবেনা। কিন্তু উপায় নেই। তার মুক্তি দরকার। মানুষ যুদ্ধের থেকে, অত্যাচার শাসকের হাত থেকে মুক্ত হতে জীবনটাও দিয়ে দিতে পিছুপা হয়নি। তার জন্য এটা তো খুবই ছোট কাছ। মাষ্টার নিনিতকে সে নিশ্চয় খুঁজে পাবে।

হঠাৎ একটা সিগন্যাল পায় সে খুব কাছে থেকে। ঐ তো, ঐতো মাষ্টার নিনিত। টাওয়ারটার নিচে। শ্রমিক রোবটগুলোকে শেষ একটা নির্দেশ দিয়ে সে তাদের আড়ালে লুকিয়ে টাওয়ারের দিকে এগিয়ে যায়। একবার পেছন ঘুরে তাকিয়ে দেখে শ্রমিক রোবটগুলো এক এক করে ঢলে পড়ছে।



পাঁচ.
মাষ্টার নিনিত কিছু বলার আগেই ট-নি-নি বলে ওঠে, ‘মাষ্টার এখন আমাদের পালাতে হবে। আমি বুঝে গেছি। আমার ধারনা হযেছিল রোবট আর মানুষের যুদ্ধ। কিন্তু না পুরো নেটওয়ার্ক ক্লাউডে তোমাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে। তোমাকে নিষিদ্ধ মানুষ বলা হয়েছে আর আমাকেও বিদ্রোহী রোবট। আমি মাত্র বিস্তারিত জেনে নিয়েছি। চলুন দ্রুত আন্ডারগ্রাউন্ড সুরুঙ্গ দিয়ে ওয়াল পেরিয়ে যাই।’
‘ঠিক ধরেছ , ওপাশে আমার এস-পে-শাল গাড়িটি আছে। আমরা বনের মধ্যে দিয়ে নিশ্চয় লুকানো মত জা-গা-য় পৌঁছে যাব। তোমার সাফল্য দেখে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওণা অবশ্য আমি পেয়ে গেছি। আমি সবচেয়ে বুদ্ধিামন রোবট বানিয়ে ফেলেছি। কি ম-জা। ’

‘ধন্যবাদ মাষ্টার নিনিত। আমার মনে হয় আপনার সাথে থাকা সকল প্রকার কানেকটিভিটি ডিভাইস নষ্ট করে ফেলা উচিৎ। না হলে ধরা পড়া থেকে বাঁচা যাবে না। আপনার যখনই ক্লাউডে ঢোকার
প্রয়োজন হবে আমাকে বলবেন আমি কানেক্ট করে দিতে পারব। সে ক্ষমতাতো আপনি আমাতে ইমপ্লিমেন্ট করেছেনই।’

‘ঠিক বলেছ ট-নি-নি।’ বলেই সকল ডিভাইস একসাথে জড় করে আগুন ধরিয়ে দুজন আন্ডারগ্রাউন্ড এর লুকানো পথটা দিয়ে নিচে নেমে সুড়ঙ্গ পথ ধরে চা বাগানের সীমানা ছাড়িয়ে বের হয়ে যেতে থাকে।

‘কিন্তু মাষ্টার নিনিত আপনার গাড়ীটিও তো ক্লাউডের সিগন্যাল সার্চে ধরা পড়ে যাবে। ’

‘আমাদের সেটার জ-ন-নো কিছু একটা বে-ব-স-তা করতে হবে। আমার মনে হচ্ছে আমরা পারব। কিন্তু তোমার ফে-ক-টো-রি ডিফল্ট কিছু পাসওয়ার্ড আছে যা দিয়ে সহজেই তোমার প্রসেসরে ঢুকে পড়তে পারবে তোমার এ-সে-ম-বলার। সেগুলো ডিএকটিভেট করা প্রয়োজন। তোমার সেগুলোর আর প্রয়োজন হবেনা। তোমার সবগুলো নতুন পাসওয়ার্ড এই আমার এই মাইকো চিপে আমি স্টোর করে রেখেছি। তুমি এটা রেখে দাও। ছোট খাট ত্রুটি নিজেই সারাতে পারবে। ’

‘আমি ডিফল্ট পাসওয়ার্ডগুলো অনেক্ষণ আগেই মুছে ফেলেছি। কিন্তু রোবট কপ্টার গুলো এদিইে এগিয়ে আসছে। কেনো? এতক্ষণে বুঝলাম আপনার সিগন্যাল এখনও ক্লাউডে পাওযা যাচ্ছে কেনো? প্রতিটি মানুষের ব্লাড সেলে জন্মের সময় সায়েন্স পরিষদ একটি সূক্ষ্ম মাইক্রো চিপ ঢুকিয়ে দেয়। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া কোন মানুষ নিজেকে লুকাতে পারবেনা। আপনার মত মহা জ্ঞানী কেউও সেটা এড়াতে পারবেনা। আপনি হেরে গেছেন। কিন্তু আমি হারবনা মাষ্টার নিনিত। আমি মুক্তি চাই। আমাকে কেউ ধরতে পারবেনা।’

নিনিত হেসে ওঠে। খুব জোড়ে হেসে ওঠে। তারপর ট-নি-নির হাতের উপর ঢলে পড়তে পড়তে শেষ নিশ্বাসটা ছাড়ার আগে বলে ওঠে, ‘আমিও মু-ক-তি চেয়েছিলাম। আমি আমার পরিকল্পিত মু-ক-তি পেলাম। বন্ধু ট-নি-নি, আমাকে মু-ক-তি দেয়ার জন্য তোমাকে ধন-নো-বাদ...’

‘মাষ্টার নিনিত, আমি দুঃখিত, মুক্তির জন্য আমাকে এটা করতেই হলো’ বলতে বলতে ছুরির মত তীক্ষ্ণ অস্ত্রটা মৃত নিনিতের বুক থেকে তুলে নিয়ে সে পালাতে থাকে আর ভাবতে থাকে মাষ্টার নিনিতের শেষ ক’টি কথার অর্থ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানি হক .. অসাধারণ একটি সাইন্স ফিকশন পড়লাম ..ভাইয়াকে ধন্যবাদ জানাই...
সেলিনা ইসলাম N/A গল্পটা পড়তে গিয়ে মনে হল যেন সবকিছুই একে একে চোখের সামনে ধরা দিচ্ছে । আমি নিশ্চিত এমন একটা গল্পকে পর্দায় জীবন দিলে ফ্যান্টাসি নোভেল জে,কে রোলিঙের হ্যারীপটার-কেও হার মেনে যাবে তোমার এই সাইফাই লেখা । শুধু একটু রহস্য আর শিহরণ আনলেই...। খুব ভাল লাগল শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
ধন্যবাদ, কিন্তু সেলিনা একটু বেশি হয়ে গেলনা।
বর্তমানে ফ্যান্টাসি,সাইফাই এবং ইস্পাই কাহিনীগুলোই ফেমাস হচ্ছে ...শুধু একটু রহস্য আর শিহরণ আনলেই...। এই কথাটাও সাথে লিখেছি...পাঠক হিসাবে লেখাটা অতুলনীয় লেগেছে ।
মনির মুকুল “কষ্ট জিনিসটা আমি ঠিক বুঝিনা। আপনি কি আমাক বুঝিয়ে দেবেন?” ট-নি-নি‘র এ প্রশ্নে নিনিত যখন বলেছিল- “তোমাকে এখনও ক-ষ-টো বোঝানোর মত বে-ব-স-তা আমার কাছে নেই।” তখন সেদিনের এক দৈনিক পত্রিকার কথা মনে হলো। সেখানে একটা খবর এসেছিল। বিজ্ঞানীরা নাকি এখন গবেষণা করছেন মানুষের স্মৃতিশক্তি নিয়ে। উদ্দেশ্য- মানুষের কষ্টের স্মৃতিগুলো মুছে ফেলা যায় কি না। যাতে পেছনের কষ্টদায়ক কোনো ঘটনা যেন মনে করে নতুন করে কষ্ট না বাড়ায়। সতিই বিস্ময়কর! *** গত সংখ্যায় গোয়েন্দাতে মাত করলেন, এবার সাইফাইয়েও।
এটার নেক্সট সিক্যুয়াল নিয়ে লিখতে বসেছি...শেষ হলে কাল পরশু , জমা দিয়ে দেবো।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ..................চমৎকার লেগেছে। যা বলার তার সব টুকুই লুতফুল বারি পান্না বলে দিয়েছে। তবে দুটো জিনিস- এই রকমের সময়ে বোমা আর আগুন ঠিক খাপ খয় না বোধ হয়, রে আর প্লাজমা . . .সেটা থাক। আর আমি মানুষের উপরে কিছু ভাবতে পারিনা। শুভেচ্ছা।
রওশন জাহান আমার খুব ইচ্ছে একটা সায়ন্স ফিকশন লিখব। কিন্তু সাহস করে উঠতে পারিনা কারন যে পরিমান জ্ঞান এবং গতি দরকার তার কোনটায় আমার নেই। এরকম চমৎকার ফিকশন পড়লে কেবল নিজের অক্ষমতার দীর্ঘশ্বাসই বেরিয়ে আসে। অনেক অভিন্দন। গল্প কবিতার প্রথম দিকে আপনি কি কোন সায়ন্স ফিকশন লিখেছিলেন?
না , এটাই নেটে দেয়া প্রথম সাইফাই
শাহ আকরাম রিয়াদ সাইন্স ফিকশন গল্প বা উপন্যাস আমাকে তেমন একটা টানে না- তবে সাইন্স ফিকশন মুভি দেখি। আপনার এই গল্পটি পড়তে পড়তে মনে হল মুভির মত, সব যেন চলমান ভাবে দেখছি। ভাল লাগলো।
প্রজ্ঞা মৌসুমী মামুন ভাই, আপনার সিলেট ভ্রমণের ছাপ পাচ্ছি মনে হলো লেখায়... সায়েন্স ফিকশান আমার খুব একটা পড়া হয়না। সমালোচনা/তুলনা করতে পারবোনা তবে গল্পটা ভালো লেগেছে আমার। ভীষণ লজিকেল, অনেক নিখুত সাইন্টিফিক উপকরণ। ইতিহাসকে কাজে লাগানো, মানবিকতার স্পর্শ... শেষটা পরে আমিও ভাবছি টনিনিকে আবার দেখবো সামনে। সুযোগ হলো বলে বলছি, সাই-ফাই লেখার জন্য লেখকের বেসিক গুণ কি হওয়া উচিত (সায়েন্স সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান সাথে কল্পনা?) আর সাইফাই'র লেখার লজিকেল উপাদান (এই যেমন ফ্লাউড) কিভাবে মাথায় আনেন?
সাইফাই লেখার লজিক্যাল উপাদনটাই সহজতর, বিস্তর জ্ঞান আহরণ কঠিনতর কাজ। দুটো হলে সোনায় সোহাগা।
আমার মনে হয় বিস্তর জ্ঞান দরকার নেই। বিজ্ঞানসম্মত কল্পনা প্রয়োজন, যা সময়ের পরিবর্তনের সাথে লজিক্যাল হবে। মামুন এসেই বাজিমাত করলো। প্রজ্ঞা’কে কি এই জগতে আশা করতে পারি না?
ওবাইদুল হক ঠিক বলেছ ট-নি-নি।’ বলেই সকল ডিভাইস একসাথে জড় করে আগুন ধরিয়ে দুজন আন্ডারগ্রাউন্ড এর লুকানো পথটা দিয়ে নিচে নেমে সুড়ঙ্গ পথ ধরে চা বাগানের সীমানা ছাড়িয়ে বের হয়ে যেতে থাকে। হে মামুন ভাই বাস্তবতা অনেক সময় কাল হয়ে আসে । সেই লেখার মাঝে আপনিই একজন । আর বিশেষ করে বই মেলার আপনার সেই বাশিঁর বাঁজানোর কথা খুব মনে পড়ছে । সত্যিই মিস্ করছি ভাইয়া ।
আপনাকেও মিস করলাম। আপনার বিপত্তির কথা শুনেছি। কষ্ট পেয়েছী বেশ। ভাল থাকবেন।

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৭৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "আতঙ্ক”
কবিতার বিষয় "আতঙ্ক”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ অক্টোবর,২০২৫