সানু কোথায়!

২১শে ফেব্রুয়ারী (ফেব্রুয়ারী ২০১২)

মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
  • 0
আজকে আবার ঘুম ভেঙ্গে গেল সেই একই স্বপ্ন দেখে, যদিও বেশ কিছুটা দূর থেকে আসা হট্টগোলের শব্দ জাতীয় স্বপ্নটা এত বেশি আতঙ্কজনক নয়, যাতে করে এত সকাল সকাল তারমত দশ বছরের একটা ছেলের ঘুম ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু তার ঘুম বেশ পাতলা, তার উপরে ব্যাপারটা তার মাথায় পুরোপুরি না ঢুকলেও এটা নিয়ে কয়েক দিন ধরে সে বেশ উত্তেজনায় আছে। তাদের স্কুলে এটা নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কথা হচ্ছে।
মা কখন উঠেছে সে বলতে পারবেনা। তার আনেক কাজ, তাদের একটা গরু আর কয়েকটা মুরগি আছে, সেগুলোকে খেতে দিতে হবে। তাদেরকে, আর তাদের থাকবার জায়গাগুলোকে পরিষ্কার করতে হবে। তাদের সকালের নাস্তা তৈরী করতে হবে। বাড়ির সামনের দিকে প্রায় আধাবিঘা জমি জুড়ে তাদের সবজি বাগান। যদিও সেটার পুরো দায়িত্ব তার বাবার, যে আপাতত কয়েক দিনের জন্য বাইরে গেছে, কিন্তু তারা তিন জনও- তার সাথে একই বিছানায় দুই বছরের যে মেয়েটা নিজের সৃষ্টি তরলে ভিজে শুয়ে এখনো ঘুমাচ্ছে, তার বোন- নিজেদের ইচ্ছা আর সামর্থ অনুসারে বাগানের ‘উপকার’ করে থাকে। সে পাশ ফিরে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।
কিন্তু সেটা বেশিক্ষণের জন্য নয়, একটু পরেই তার মা আঁচলে হাত মুছতে মুছতে ডেকে তুলল সনুকে, ‘বাবা, উঠে একটু পানি এনে দিতে পারবিনা আমাকে? কাল বিকালে তুই ছিলিনা, গাছগুলোতে ভাল করে পানি দিতে পারিনি-।’
সাথেসাথেই উঠে বসল সানু। সে কখনই মা-বাবার অবাধ্য নয়, আর এমনও নয় যে কাল বিকালে তার অনুপস্থিতির জন্য কোন অনুযোগ করা হচ্ছে, মা শুধু তার নিজের আসহায়তার কথা জানাচ্ছে। সে সাধারণত দুই মাইল দূরে তার স্কুলে যাওয়া, আর আধামাইল দুরের নদীতে পাড়ার ছেলেদের সাথে মাঝমধ্যে শখের মাছ ধরতে যাওয়া ছাড়া বাড়ি ছেড়ে কোথাও যায়না। কিন্তু কিছুদিন ধরে একটা জিনিস তাকে নেশারমত পেয়ে বসেছে, স্কুল ছুটির পরে তার সাথি দুজনের সাথে কিছুটা আসার পর সরাসরি বাড়ির পথে না এসে আরো কিছুটা এগিয়ে যায়। এই পথটা বেশ কিছুটা ঘুরে আবার তাদের গ্রামের পথেই এসে মিশেছে। আর সেটার জন্যই গতকাল তার সময়মত বাড়ি ফেরা হয়নি। তার ‘ভালছেলে’ সুনামের বদৌলতে কৈফিয়ত দেওয়ার হাত থেকে সে রক্ষা পেয়ে থাকে।
সে একটা সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ক্লাস ফোরে পড়ে। তার স্কুল থেকে মাত্র পনের-বিশ মিনিট হাটা পথের দুরত্বে যে অঞ্চলটা পড়ে, সেটা তার কাছে একটা রূপকথার রাজ্যেরমত মনে হয়। তার সেই ‘বিপথে’র এই অঞ্চলটার প্রায় পুরোটুকুই গাছপালায় ছাওয়া, কিন্তু বামদিকে সামান্য কিছু ফসলের ক্ষেত আর খানাখন্দের পরেই যেটা তার চোখে পড়ে, সেটাকে তার একটা অজানা রাজ্যের মতই মনে হয়। বড়বড় গাছের রাজ্য সেটা। গাছের ফাঁক দিয়ে কংক্রিটে বাধানো পথের কিছুকিছু দেখা যায়, যাতে যানবাহন চলে না বললেই চলে। কিন্তু এই সমস্ত গাছপালা তার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু নয়, এগুলোর কেন্দ্রে যে বিশাল প্রাসাদের কালচে লাল মাথাটা উঁকি দিচ্ছে, সেটাতেই তার আগ্রহ। যেন এটার ঠিক কেন্দ্রে বিশাল একটা রাজপ্রাসাদ। সেটা এতই বড় যেন, সেটার চারিদিকটা একবার ঘুরে আসতে সারাজীবন লেগে যাবে তার ।
তার কাছে মনে হয়েছে সেটাই যেন আফুরন্ত নিরবতা আর একই সাথে কোলহলের উৎস। কিন্তু সে কখনই সেদিকে পা বাড়ানোর সাহস করে উঠতে পারেনি।
সে মায়ের পিছনপিছন ঘর থেকে বের হয়ে এল, তারপর ডান হাত দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে বাড়ির পিছন দিকের পুকুর ঘাটের কাছে গেল। কয়েকটা গাছের গুঁড়ি ফেলে ছোটখাট একটা ঘাট বানানো হয়েছে। ঘাটের সাথেই বাঁশের চটা দিয়ে ছয় ফুট লম্বা একটা বেঞ্চির মত কিছু একটা বানিয়ে রাখা হয়েছে, সেটার নিচে দুটো মাঝারি সাইজের বালতি কাত হয়ে পড়ে আছে। সানু প্রথমে হাত মুখ ধুয়ে নিল, তারপর বালতিদুটো টেনে বের করল। সে মনে মনে গত কয়েক দিনের কথা ভাবছিল। গত কয়েকটা দিন যেটা তার মাথায় ভূতেরমত চেপে আছে, তার মনে সেটার সূচনা বছর দুয়েক আগে . . .।
সে বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিল।
‘ওটা ইউনিভার্সিটি, বিশ্ববিদ্যালয়,’ বাবা তাকে বলেছিল। ‘ভাল করে লেখাপড়া কর, তুইও একদিন ওখানে ভর্তি হবি।’ বাবা কখনো মিথ্যা বলেনা, কিন্তু তার মনে হয়েছিল, বাবা হয়তো জায়গাটা চিনতে পারেনি অথবা সে এটার ব্যাপারে কিছুই জানেনা। এত বিশাল একটা রাজপ্রাসাদ কীভাবে তারমত এত সাধারণ একজন কাওকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দিতে পারে?
কিছুদিন পরে একবার স্কুল ছুটি হওয়ার পরে সে সেটার কাছাকাছি চলেগেছিল, দুরুদুরু বুকে একটু দূর থেকে খুলে রাখা গেটের ভিতর দিয়ে ভিতরটা দেখতে পাচ্ছিল, সেখনে কোন প্রহরী ছিলনা। তার বুকের কাঁপুনি আরো বেড়ে গেল, যখন সে দেখল চারজন ‘রাজপুত্র’ বারান্দার সিঁড়ি দিয়ে নেমে সোজা খোলা গেটের দিকে, তার দিকে এগিয়ে আসছে। তারা তার ডান দিক দিয়ে তাকে অতিক্রম করে ঘোড়াদৌড়ের মাঠের ওদিকে হাটতে হাটতে চলে গেল। তাদের কারুর পোশাক ছবিতে দেখা রাজপুত্রের পোশাকেরমত নয়, সাধারণ ভদ্রঘরের ছেলেদের ফুল হাতা শার্ট আর প্যান্ট পরনে। কিন্তু তাদের বুদ্ধিদিপ্ত ঝকঝকে মুখে এমন কিছু একটা আছে, যা সাধারণ ঘরের এই বয়সের ছেলেদের মুখে দেখতে পাওয়া যাবেনা। সেদিন সে সন্ধ্যার পরে হারিকেনের আলোর সামনে বই খুলে বসেও আনেকক্ষণ পড়ায় মন বসাতে পারেনি। কিন্তু তারপর মাস খানেকের ভিতরে সেদিকে আর পা বাড়ানোর সুযোগ পায়নি।
এরপরে সেদিন হঠাৎ করেই দুই পিরিয়ড পরেই ছুটি হয়েগেল। তাদেরকে বাড়ি চলে যেতে বলা হল, কিন্তু অসময়ের ছুটির কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হল না। কিছু একটা আন্দাজ করে নিতে পারল সানু। প্রায় প্রতিদিনই তাদের স্কুল থেকে কোনভাবে শুনতে পাওয়া যেতে পারে এমন দূরত্বে সকালের প্রায় একটা সমান সময়ে বিশেষ করে রাজবাড়ির ওদিক থেকে কিছু শ্লোগানের শব্দ ভেসে আসে, যেগুলোর একটা যেন তার নিজের বুকের ভিতর থেকে উঠে আসা, ‘ . . . মাতৃভাষা বাংলা . . .’। এই ধরণের সময়ে এমনকি তাদের পড়াতে থাকা শিক্ষকরাও পড়ানোর খেই হারিয়ে আনমনা হয়ে ওঠে। সেদিনের শব্দগুলো আরো যেন উত্তাল হয়ে উঠেছিল, কিন্তু শেষ হয়েছিল হৈচৈ আর হট্টগোলের জড়াপটির ভিতর দিয়ে। বইগুলো গুছিয়ে নিতে নিতে সে মনেমনে প্রতিজ্ঞা করল, পরদিন সে রাজবাড়ির সামনে যাবেই।
পরেরদিন তাদের কোন ক্লাসই হল না, বেশিরভাগ শিক্ষকই অনুপস্থিত, তাদেরকে বাড়ি চলে যেতে বলা হল। তাদের গ্রামের আরো দুটো ছেলে তার সাথে আসে, সে তাদের সাথে কিছুটা পথ গিয়ে বলল,‘তোরা যা, আমি পরে আসছি।’ তারা কোন কিছু না বলেই নিজেদের পথে হাটতে লাগল। সানু কিছুটা আশাহত হল, তার আশাছিল, এদের একজন, মোমিন- যাকে সে নিজের একজন বন্ধু হিসাবে ধরে থাকে- অন্তত তার সাথে আসতে চাইবে। সেও আর কিছু না বলে ঘুরে তার রাজবাড়ির পথ ধরল।

সে সেদিনকার মতই গেটের সামনের পথের বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে খোলা গেট দিয়ে ভিতরটা যতটা দেখা যায়, দেখতে লাগল। আজকে তারকাছে মনে হল, মানুষের চলাচল যেন একেবারেই কম, তার একটু ভয়ভয় করতে লাগল, মনে হতে লাগল, এখানে আজ না এলেই বোধ হয় ভাল হত। তারপর সে যখন চলে যাওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করে একটু নড়ে উঠেছে, ঠিক তখনি তার চোখে পড়ল, মাত্র একজন রাজপুত্র বারান্দার সিঁড়িবেয়ে নেমে আসছে। সে দম বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকল।
ধীর পায়ে এগিয়ে এল সে। তার পরনে একটা সাদা পায়জামা আর সাধারণ পাঞ্জাবি, দুটো হাতাই কনুই পর্যন্ত গুটিয়ে রাখা। পায়ে বাদামি চামড়ার একজোড়া সাধারণ স্যান্ডেল। একটু বড় হয়ে যাওয়া কাল চুল এলোমেলোভাবে মাথায় আটকে আছে। পাঞ্জাবির ডান পকেটে একটা ঝর্ণা কলমের ক্লিপে আটকানো মাথা উঁকি দিচ্ছে।
সে গেটের বাইরে এসে থমকে দাড়াল, মুখ উঁচু করে সোজাসুজি সানুর দিকে তাকাল, কিন্তু সে যে একটা ছেলে এক হাতে বুকের সাথে বই চেপে ধরে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেটা যেন তার মনে বিন্দুমাত্র প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হল। তারপর রাজপুত্র ডানে বামে কয়েকবার তাকিয়ে একপাশে সরে মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল, যেন কেউ তার সাথে দেখা করতে আসবে।
সানুর এবার সত্যিই ভয় করতে লাগল, তার মনে হল, এখানে আর দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক হবেনা। সে চলে যাওয়ার জন্য ডান পা উঁচু করল, আর এতটুকু নড়াচড়াই যেন গেটের কাছের মানুষটাকে কোন এক কল্পনার রাজ্য থেকে বাস্তবে টেনে নামিয়ে আনল, সে মুখ উচু করে এক মুহূর্ত দেখল, তারপরে হাতের ইশারায় ডাকল।
‘এই, শোন,’ সে বলল। ‘এদিকে এসো।’ সানু আড়ষ্ঠভাবে রাস্তা পার হয়ে তার কাছে এগিয়ে গেল। ‘তোমার নাম কী?’ সে সানুর কাঁধে হাত রেখে বলল। ‘এখানে দাঁড়িয়ে কী করছ? কারো সাথে দেখা করতে চাও?’
তার নরম কন্ঠস্বর সানুর সমস্ত আড়ষ্ঠতা এক মুহূর্তে দূরে সরিয়ে দিল। তার কাঁধে স্পর্শ করে থাকা শীর্ণ শুভ্র আঙ্গুলগুলো তার ভিতরে যেন অজানা কোন শক্তি ভরে দিতে লাগল।
‘আমার নাম সানু,’ সে সরাসরি মুখ উঁচু করে তার দিকে তাকিয়ে বলল। ‘আমি ঐ রাজবাড়িটা দেখছিলাম।’
‘আমার নাম কলিম,’ মৃদু হাসি ফুটে উঠল রাজপুত্রের মুখে। ‘এটা কোন রাজার বাড়ি না,’ সে বলল। ‘এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এখানে আমারমত একজন সাধারণ ছেলেও ঢোকার সুযোগ পেতে পারে, যদি সে লেখাপড়ায় একটু ভাল হয়।’ তারপর সে নিজের হাত ফিরিয়ে এনে সানুর হাতের বইগুলো দেখল। ‘তুমি কোন ক্লাসে পড়?’ সে বলল।
‘ক্লাস ফোরে।’ সানুর মনে হল, সে যদি ‘আমারমত’ না বলে ‘তোমারমত’ বলত!
‘ওহ!’ সে বলল। ‘তাহলে তোমার তো এখন এখানে থাকার কথা না, তোমার এখন থাকার কথা ক্লাসে?’
‘স্যাররা আনেকে আসেননি, আমাদের বলা হল বাড়ি চলে যেতে।’ একটু ইতস্তত করে যোগ করল, ‘হেড স্যার বলল, তোমরা বাড়ি যাও, গণ্ডগোল হতে পারে। গতকাল আমাদের মাত্র দুই পিরিয়ড পরেই ছুটি হয়েগেছিল, গতকাল নাকি গণ্ডগোল হয়েছিল, আমরা ক্লাসে বসেই শুনেছিলাম।’
‘গণ্ডগোল?’ সে কিছুটা উত্তেজিত ভাবে বলে উঠল। ‘আমরা আমাদের আধীকারের কথা বলব, আর তারা আমাদেরকে পেটাবে আমরা গণ্ডগোল করছি এই অজুহাত দেখিয়ে?’ তারপর মনে হল সে যেন নিজেকে কিছুটা সংযত করে নিল। ‘আমরা আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলতে চাই, সেটা আমাদের অপরাধ? তুমি তোমার মায়ের ভাষায় কথা বলতে চাওনা? তারা তাদের মায়ের ভাষায় কথা বলতে চায়না?’ সে আবার সনুর কাঁধে হাত রেখে হাল্কাভাবে ঝাঁকি দিল।
সানু কিছুই বুঝতে পারলনা, সে বোকারমত কলিমের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল।
‘এসো, আমরা ভিতরে ঐখানে ঘাসের উপরে বসি, আমার কয়েকজন বন্ধুর আসার কথা আছে, ততক্ষণ তোমার সাথে গল্প করা যাক। নাকি তুমি এখন চলে যেতে চাচ্ছ?’ সানু মাথা নাড়াল। সে সানুর কাঁধ ছেড়ে ঘুরে আবার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকল, সানু তাকে আনুসরণ করল।
গেটের ভিতরে ঢুকতেই তার শরীরের ভিতর দিয়ে একটা অদ্ভুত শিহরন বয়েগেল, সে যেন কোন এক আজানা আর নিষিদ্ধ আঞ্চলে এসে পড়েছে, যেখান থেকে সে আর কখনো বের হতে পারবেনা। সে চারিদিকে তাকাতে তাকাতে কলিমের পাশে ঘাসের উপরে বসে পড়ল।
বিশাল একটা অঞ্চলকে মাত্র কয়েক ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। পাঁচিলের উপরে ফাঁকফাঁক করে লোহার পাত বসিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। পাঁচিলের পাশ ঘেসে মৌসুমি ফুলের চাষ করা হয়েছে, সেগুলোর কয়েকটাতে কয়েকজন মালি কাজ করছে। সেখনে বেশকিছু ছোটবড় গাছও আছে, যেগুলোর বেশিরভাগই সানুর অচেনা। আর বেশিরভাগ অংশ জুড়েই আছে সেই প্রাসাদ। এই বিশাল আর সম্ভ্রম জাগাতে থাকা প্রাসাদের ভিতের কত ঘর বা কী আছে সে বিষয়ে তার কোন ধারণাই নেই। ছাদের সীমানা প্রাচিরে কয়েকটা ছোট গম্বুজেরমত কিছু উঁচু হয়ে আছে, যেগুলোকে মনে হচ্ছে যেন প্রহরীরা মূর্তির মত স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে।
‘. . . তুমি যদি তোমার মাকে বল, আম্মু, ভুখ লাগি, চাউল দো, তাহলে কেমন হবে?’ কলিম হেসে উঠে বলল। সানু মাথা ঘুরিয়ে তার মুখের দিকে বোকারমত তাকাল। ‘আমরা গ্রামের মানুষ, আমার মা, আম্মু আর চাউল ছাড়া আর কিছুই বুঝবে না, হয়ত মনে করবে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’ সে চুপ করল, সানু বুঝে উঠতে পারলনা যে, কী বলা যেতে পারে। কিন্তু তাকে কিছুই বলতে হল না, কলিম আবার বলতে শুরু করল, ‘মাত্র কয়েকটা বছর হল, ১৯৪৭এ ভারতবর্ষ ভাগ হয়েছে, আমরা একটা স্বাধীন দেশ পেয়েছি, পাকিস্তান। জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত- পাক সার জমিন সাদ বাদ . . .। এখন ১৯৫২ শুরু হয়েছে আর আমরা দেখছি আমাদের, এই বাঙালিদের কোন স্বাধীনতা নেই, নেই নিজের ভাষায় কথা বলার অধীকার। আমাকে আমার অধীকার আদায়ের জন্য রাজপথে গিয়ে চিৎকার করতে হয়, আর সেখানে আমার পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হয় আমারমত আর এক বাংগালিকে। আমাকে পেটানো হয়, আমাকে ভয় দেখাতে গুলি ছোড়া হয়। আমাদের পায়ে গুলি লাগে, কে জানে, কাল হয়তো আমার বুকে গুলি ছুড়তে বলবে। আমাদের অপরাধ, আমি . . . আমরা আমাদের নিজের ভাষায় কথা বলার আধীকার চেয়েছি। আমি এমন একটা ভাষায় কথা বলতে দেওয়ার আধীকার চাচ্ছি, যে ভাষায় কথা না বললে আমার মা হয়ত আমার ক্ষুধার সময় আমাকে খেতেও দেবেনা। যে ভাষাকে অস্বীকার করলে হয়ত আমার নিজেকেই অস্বীকার করা হবে . . .।’ সে থেমে মুখ মুছল। সানু তার কথা পুরোপুরি বুঝতে না পারলেও নরম সুরে বলে যাওয়া কথাগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে যাচ্ছিল।
‘. . . জানো, পাকিস্তানের মোট জন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি হচ্ছে বাংলাভাষী, কাজেই এই ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাওয়ার অধিকার আবশ্যই আমাদের আছে।’ সে আবশ্যই শব্দটার উপরে জোর দিয়ে বলল। ‘চার বছর আগে, ১৯৪৮এর মার্চের দুই তারিখে আমরা বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করি।’ ঐ যে দেখছ, ওখানে. . .,’ সে হাত উঁচু করে দেখাল। ‘ওটা হল ফজলুল হক মুসলিম হল, আমরা সব দল একমত হয়ে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিই। জানইতো, আলাদা দল মানেই আলাদা মত, কিন্তু এই ব্যাপারে আমরা সবাই ছিলাম একমত।’
সানু কিছু বলল না, কলিম বলে যেতে লাগল।
‘১১ই মার্চ আমরা সাধারণ ধর্মঘট ডাকি, মিছিলে গুলি করে আমাদের আহত করা হয়। গুলি ছুড়ে আহত করে আমাদের বোবা করবে? তার চেয়ে আমাদের বুকে গুলি করুক, না হলে আমাদের বোবা করতে পারবেনা। আমরা ১৩ থেকে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দিই। আমরা এতটা ভাবিনি, কিন্তু শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই না, সারা দেশই তাতে সাড়া দিয়েছিল। তোমার মনে পড়ে না?’ সানু লাজুকভাবে মাথা নাড়াল।
‘হয়ত সেই কারণেই ১৯ মার্চ গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি হয়ত আমাদের দুঃখ বুঝবেন . . .।’ কলিমের মুখে মলিন হাসি ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। সে হাত উঁচু করে ঘোড়া দৌড়ের মাঠের দিকটা দেখাল, ‘আমাদের সব আশার গুড়ে বালি দিয়ে তিনি ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঘোষণা করলেন, ‘Urdu and only Urdu will be the State Language of Pakistan- উর্দু আর শুধুমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা।’ আবেগে তার চোখদুটো ছলছল করে উঠল। ‘আমাদেরকে আমাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে যেতে হবে? তাহলে তাই হোক। সেই বছরই, ১৯৪৮ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর পরে ১৮ নভেম্বর ঢাকায় আসেন প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলী। তারও সেই এক কথা, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা।’ কলিম মুখ নিচু করে ঘাসের দিকে তাকিয়ে থাকল, হাতদুটো কোলের উপরে ফেলে রাখা, আঙ্গুলগুলো হালকা ভাবে কাঁপছে। এই দিনের বেলাতেও নিরব জায়গাটা যেন তাকে ভয় দেখাতে চাচ্ছে। নিরবতা ভাংল মাথার উপর দিয়ে ডাকতে ডাকতে উড়ে যাওয়া দুটো কাক। সেই শব্দেই যেন কলিমের ঘুম ভাংল।
‘আমাদের সংগ্রাম চলতে লাগল, এর যেন শেষ হবেনা। তিন সপ্তাহ আগেই তো, নাকি? জানুয়ারির ২৬ তারিখে প্রধান মন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দীন এই ঢাকাতেই জনসভা করে শুনিয়ে গেলেন, এক মাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। আহ, এই বাংলার বুকে বসে এই কথা বলতে তার মুখে একটুও বাধল না? আমরা প্রতিবাদ করলাম, শ্লোগান দিতে দিতে চলে এলাম।’ আবার সে চুপ করল।
‘কিছু দালাল আছে,’ সে আবার শুরু করল। ‘বাংগালি, তারাও তাদের কথায় সায় দিয়ে চলেছে। এরা কি সত্যই কি বাংগালি? এদের কি মা নেই? মায়ের ভাষা নেই? আমার ইচ্ছে হয় এদের টুঁটি টিপে ধরি।’ তারপর কলিম সানুর মুখের দিকে এমন ভাবে তাকাল, যেন তাকে এই মুহূর্তের আগে আর কখনো দেখেনি। সানুর একটু ভয় করতে লাগল, সেটা সামান্য একটু ক্ষণের জন্য, কলিমের চোখে আবার সেই পরিচিত চাহুনি ফিরে এল। ‘তুমি বাংগালি, আমি জানি তুমি কখনই বাংলাভাষাকে আপমানিত হতে দিতে পারনা।’ সে মুখ উঁচু করে গেটের দিকে তাকাল, আর প্রায় সাথেসাথেই উঠে দাড়াল।‘আমার বন্ধুরা এসে গেছে, আমাকে এখন ওদের সাথে যেতে হবে।’
সানুও উঠে দাড়াল, পিছন দিকে ঘুরে দেখল, গেটের কাছে পাঁচজন ‘রাজপুত্র’ দাঁড়িয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
‘চল, আমরা যাই,’ সে সানুর কাঁধে হালকা থাপড় দিয়ে বলল। ‘তাদেরকে আমাদের চূড়ান্ত রায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমাদের দাবি মানা না হলে আগামী ২১ তারিখ থেকে আমাদের আন্দোলন শুরু হবে, প্রয়োজন হলে আমরণ। সেইদিন আমরা এই এলাকা থেকে আমাদের মিছিল শুরু করব। সারা দেশ দাবি আদায়ের জন্য মিছিল শুরু করবে। তুমি আমাদের সাথে আছো?’
‘হ্যা।’ সানুর কন্ঠে এতটুকু জড়তার চিহ্ন নেই। যার হাতের শীর্ণ আঙ্গুল তার দেহে শক্তি এনে দিতে পারে, তার কোন কথাতেই ‘না’ বলা সম্ভব নয়।

সানুর বাবা বাড়ি ফিরে এসেছে। কয়েকদিন ধরে সানু বা তাদের গ্রামের কেউই স্কুলে যাচ্ছেনা। সে কলিমকে যে কথা দিয়ে এসেছিল, সেটা সে ভোলেনি, কিন্তু স্কুল না যাওয়ার কারণে দিন তারিখ সম্মন্ধে তার ধারণা তালগোল পাকিয়ে গেছিল। তার ধারণ ছিল এটাই যে, হাতে এখনো সময় আছে। সেদিন সকালে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।
সেদিন সকালে তার বাবা সব্জীর বাগানে কাজ করছিল, রানু সেখানেই খেলছিল মা ছিল রান্নাঘরে আর সানু গাছপাকা টমেটো আর মরিচ পাওয়া যায় কিনা খুঁজে দেখছিল।
মা রান্নাঘর থেকে কলসি হাতে বের হয়ে এলো, পুকুরে যাবে, কিন্তু সোজাসুজি সেদিকে না গিয়ে বাবার কাছে এল। ‘বাজারে গেলে হত না?’ সে জিজ্ঞাসা করল।
‘একটু পরে যাচ্ছি,’ বাবা জবাব দিল। মা ফিরে যাচ্ছিল, ‘শোন,’ বাবা তাকে ফিরতে বাধ্য করল। ‘আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি না? আজকে ভার্সিটির ছেলেরা মিছিল করবে, কিন্তু সেই এলাকায় একশ চুয়াল্লিশ ধারা জারি করেছে . . .।’
আধপাকা একটা টমেটোর দিকে হাত বাড়াচ্ছিল সানু, সে জমে গেল, তার কানে আর কোন শব্দ ঢুকছেনা, মাথার ভিতের শুধু ঝনঝন করছে- আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি . . . আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি . . .। একটু পরে সম্বিত ফিরলে সে উঠে দাড়াল। তার কোঁচড়ে আরো দুটো টমেটো ছিল, সে উঠে দাড়াতেই সেগুলো নিচে পড়ে তার পায়ের কাছে গড়াতে লাগল। তার মা ঘাটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বাবা গাছের গোঁড়া ঠিক করে দিচ্ছে আর তার বোনটা মায়ের পিছুপিছু হাটছে। সানু ধীরেধীরে বাঁশের চটা দিয়ে তৈরী গেটের দিকে এগিয়ে চলল, তার বাবা একবার মুখ উঁচু করে তাকে দেখল কিন্তু কিছু বললনা।

আজ সানু আর স্কুল পর্যন্ত গেলনা। সে চষা ক্ষেত আর খানা খন্দের পাশ কাটিয়ে সামনের গাছে ভরা অঞ্চলটার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। সে মুখ উঁচু করে সেগুলোর দিকে তাকাল। মাঝেমাঝে বাতাশ এসে সেগুলোর ডালপালায় দোল লাগাচ্ছিল আর সেগুলো এমনভাবে দুলে উঠছিল যেন তাদের কোনটা সানুকে আর এগিয়ে যেতে নিষেধ করছে, আবার কোনটা তাকে ডাকছে। সানু সেগুলোর গুঁড়ির পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলল।
একটু পরেই গেটটা তার নজরে পড়ল, সে এক মুহূর্তের জন্য থমকে দাড়াল, গেটটা বন্ধ! তার ভিতর দিয়ে দেখা যাচ্ছে গেটের কাছে আর মাঠটার ভিতরে আজ আনেক রাজপুত্র, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বেশ কয়েকটা জটলার আকারে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের সবার দৃষ্টি বাইরের রাস্তার দিকে। দূরে, ঘোড়াদৌড়ের মাঠের দিকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট কয়েকটা পুলিশের দল, তাদের হাতে রাইফেল। সানুর বুকটা কেঁপে উঠল। তার আর সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস হলনা।
সানু জানেনা কতক্ষণ পার হয়েছে, তার কাছে মনে হচ্ছে অনন্তকাল। হঠাৎ গেটের ভিতের রাজপুত্রদের মধ্যে যেন একটা আলোড়নের সৃষ্টি হল, আর একটু পরেই তারা গেট আর পাঁচিল ডিঙিয়ে পথে এসে নামল। তারপর তারা ছোট একটা দলের আকারে হয়ে শ্লোগান দিতে দিতে ঘোড়াদৌড়ের মাঠের দিকে এগিয়ে চলল- ‘. . . রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই . . . . রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই . . .।’ তাদের হাতের মুঠিগুলো যেন আকাশে খোঁচা মারতে চাচ্ছে। সানুর তাদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস হল না, সে গাছগুলোর আড়ালে আড়ালে তাদের ডান দিকে সমান্তরালে থেকে তাদেরমত একই দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। তাদের সাথে তাল রেখে তার ডান হাতের মুঠি আকাশের দিকে উঠতে আর নামতে লাগল। সে বিড়বিড় করে বলতে লাগল, ‘. . . রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই . . . . রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই . . .।’
গাছপালার ভিতরের আনভ্যস্ত পথ আর ডোবা আর খনাখন্দের কারণে সে আর তাদের সাথে তাল মিলিতে চলতে পারলনা, সে একটু পিছিয়ে পড়ল। সে আরো একটু বামে সরে যাওয়ার কারণে দূরত্বটা একটু বেশি হল। সে প্রাণপণে এগিয়ে যেতে লাগল। হঠাৎ করেই তার সামনের গাছপালা কমে এলো, সে একটা পথের কাছে এসে পড়েছে, সে মুখ উঁচু করে তাকাল।
দলটা একটা জটলার আকার ধারণ করেছে, আর সেটাকে প্রায় অর্ধ বৃত্তাকারে ঘিরে রেখেছে পুলিশের একটা দল, হাতে তাক করে ধরে রাখা রাইফেল। সানু থমকে দাড়াল, আর প্রায় সাথে সাথেই শুরু হল গুড়ুম গুড়ুম, ঝাপ্টা ঝাপ্টি আর আর্তনাদের শব্দ। সানু কোন কিছু চিন্তা করতে পারার আগেই পিছন ফিরে ছুট লাগাল, কিন্তু কয়েক পা এগিয়েই তাকে থমকে দাড়াতে হল একটা ডোবার সামনে। আতঙ্ক তাকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে, কোন দিক দিয়ে সে সেটাকে পার হবে, সেটা ভেবে বের করতে পারলনা। তার মনে হল যেন গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কমেছে, সে মাথা ঘুরিয়ে পিছন দিকটা দেখতে গেল, কিন্তু সেটা আর সম্ভব হল না।
তার মনে হল যেন কেউ একটা জ্বলন্ত লোহার শলাকা তার পিঠের মাঝামাঝি জায়গায় প্রচন্ড জোরে গেঁথে দিয়েছে, আর সেটা তার বুকের একটু নিচে দিয়ে গায়ের জামা ভেদ করে একটা ফুটবলের আকারের রক্তের পিন্ড বের করে নিয়ে সামনের ডোবাটাতে ফেলল। ডোবার কাল পানি সেই আংশটা লালচে হয়ে উঠল। সে এক মুহূর্তের যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠল, আর তারপরে যেন সেই রক্তের দলাটাকে ফিরিয়ে আনার জন্যই দুইহাত ঝুলিয়ে দিয়ে ডোবাটাতে ঝাঁপ দিল। ঝপাৎ করে শব্দ হল, কিন্তু তার আগেই সানু সেই শব্দ শুনতে পাওয়ার দিক দিয়ে আনেক দূরে চলেগেছে।
সমাপ্ত।


ইতিহাসটা আমাদের সবার অন্তরে গাঁথা, কিন্তু এই গল্পের চরিত্রগুলো কাল্পনিক।-ওয়াহিদ হোসেন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি বেশ ভালো লাগলো|
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
sakil itihas nirvor sundor golpo
নিলাঞ্জনা নীল সুন্দর গল্প লিখেছেন.... ইতিহাসটাও আরো একবার জানা হয়ে গেল......
ভালো লাগেনি ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
বিন আরফান. গত কয়েকদিন ধরেই গল্পটি পড়ছি. কি সমালোচনা করব ভেবে পাচ্ছিলামনা. আজও পেলামনা. মনে হলো যেন আমার অন্তরের কথাগু কপি করে পেস্ট করেছেন. বয়সের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম , সেই জন্যই সম্ভব হয়েছে. ৫ দিলাম . ক্ষমতা থাকলে বেশি দিতাম. নতুনদের লেখায় কবে যে পাঠকের ভির লাগবে !
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন শিশির কুমার, আহমেদ ইউসুফ, লুত ফুলবারি পান্না- আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। গতি আর আকর্ষণের ঘাটতি ছিল- আমি নিজেও সেটা অনুভব করতে পেরেছি। আসলে এই ধরণের গল্প আমার আসেনা, গায়ের জোরে কি আর সব কিছু হয়? শুভেচ্ছা।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Lutful Bari Panna আপনার লেখনি সাবলীল। তবে গল্পটিতে গতি আর আকর্ষণের ঘাটতি ছিল। তাছাড়া চমৎকার একটা গল্প।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আহমাদ ইউসুফ আপনার লেখাটা পরে ভালো লাগলো. ধন্যবাদ আপনাকে
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Sisir kumar gain গল্পটি অনেক সুন্দর হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস, ফুটে উঠেছে গল্পের মধ্যে।ধন্যবাদ ও শুভ কামনা জানাই গল্পকারকে।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

০৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী