//এক//
তিনি চেয়েছিলেন নিঃশব্দে বাইরে বেরিয়ে আসবেন। কিন্তু পারলেন না।
সটাং শব্দে দরজাটা মুর্ছা গেল।
নিস্তব্ধ নিশিথের নৈসর্গিক শব্দ্যযাত্রায় কর্কশ পাখিদের একরোখা উল্লাস, ছন্দ হারানো আহত রজনী পড়ে রইল ভাগাড়ে। মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময়। বেজন্মা শব্দগুলো মিইয়ে গেল। শুধু রাত বাড়ছে নিমগ্ন গভীরতায়। বেদনার আড়ালে লুকিয়ে থাকা বাস্তুহারা গোপন সুখগুলো একে একে উঁকি দিতে থাকে স্মৃতির মানসপটে। আহ! কি সুখ। পাথরচাপা নোনা কষ্টগুলোরও ঘুম ভাঙ্গে। ওরা মিছিল করছে। তাদের আর্তনাদে চোখ ভিজে যায়, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। মন থেকে মুছে ফেলা যায়না ওদের। বরঞ্ছ ম্যাক লরিনের সূত্র মেনে চলে অবিরাম বংশ বিস্তার। অথচ সুখগুলো শুকপাখির মত। চাইলেও বেঁধে রাখা যায়না।
তিনি বসে রইলেন অন্ধকারে। নিস্তব্ধ চারপাশ। সবকিছুই শব্দহীন; তবে কোনকিছুই ভাষাহীন নয়। তিনি কথা বলে যাচ্ছেন নিজের সাথে নিজে। চলছে জবাবদিহিতা, অতীত বিশ্লেষণ আর মনের সাথে মনের যুদ্ধ। তিনি ঘামছেন। পরাজিত মনে হয় তিনিই হলেন। হঠাৎ করে বাতাস বইছে ঝড়ের বেগে। সেদিকে কোন খেয়াল নেই। স্পষ্ট মনে পড়ে এখানে একটা লিচু গাছ ছিল। সুধার তখন সাত বছর। লিচুর লোভে কিভাবে যেন গাছে চড়েছিল মেয়েটি। পরে আর নামতে পারেনা। সে কি কান্নাকাটি। তিনি এখানে আসতেই দিশেহারা হয়ে ঝাপ দিল মেয়েটি, সেই সাথে জোরালো চিৎকার-
বাবা.....আ......আ...........
তুমি কি পাগল হয়ে গেলে বাবা! এত রাতে বাইরে কেন তুমি? দেখছোনা আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে?
চমকে উঠলেন ইসহাক। সুভা এসেছে। তার ছোট মেয়ে।
বাবা কি হয়েছে তোমার?
কিছু হয়নি রে মা। ইসহাকের কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। কন্ঠে বিস্বাদ।
বাবা তুমি কি কাঁদছ?
ইসহাক চোখ মুছলেন। কই না তো। হয়েছি কি- তোর মাকে আজ আবার স্বপ্নে দেখলাম। পরে আর ঘুম আসছিলোনা। দেখলাম......
থাক বাবা। তোমার আর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলতে হবেনা। চল ঘরে চল।
//দুই//
সুভা ঘরে ঢুকল এক কাপ চা নিয়ে।
কিরে চা এক কাপ কেন? তুই খাবিনা?
না।
কি বলিস। জানিস না চা খেলে হৃদরোগ হয়না। ক্যান্সার দশ হাত দূরে থাকে। টাই পড়া সাদা চামড়ার মানুষরা দিনে অন্তত তিনকাপ চা খায়। যা তোর জন্য এককাপ চা নিয়ে আয়।
চা পাতি নেই বাবা। আরেকদিন খাব।
ইসহাকের গুড়ুত গুড়ুত শব্দ করে চা খাওয়ার অভ্যেস। সে শব্দ থেমে গেল। মুখ দিয়েও কোন কথা বেরুলনা আর। দীর্ঘ নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো অনিচ্ছায়। বোবা কষ্টগুলো মাঝে মাঝে মুক্তির পথ খোঁজে। তাই মনে হয় নিঃশ্বাস এত দীর্ঘ হয়। নিজের কাছে হেরে গিয়েছেন অনেক আগেই। এখন শুধু নিজের আমিত্বটুকু টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম। বড় বেশি অভিমান হয় নিজের উপর। অক্ষমতা মানুষের আমিত্বকে পঙ্গু করে দেয়, আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়া আবর্জনার মত জীবনকে তখন মনে হয় অর্থহীন। জীবনের কোন সাধ থাকেনা, কোন আহ্লাদ থাকেনা। শুধু একটু একটু করে বেঁচে থাকা। একটু একটু করে বিষাদময় সময় পার করা।
বড় কঠিন সময় ছিল তখন। সরকারী এক অফিসের সামান্য চা পোষা কেরানির আর কতইবা বেতন! পাঁচটা মুখে তিনবেলা খাবার দিতে গেলে অন্যান্য মৌলিক চাহিদাগুলোকে সকাতরে বিসর্জন দিতে হয়। জমানো কিছু টাকা ছিল। সংসারে বাড়তি কিছু অর্থের সমাগম হলে বউ বাচ্চারা আরও একটু ভাল থাকতে পারবে এইভেবে এক বন্ধুর সাথে ব্যবসায় বিনিয়োগ করল। কিছুদিন পর সেই বন্ধুর হাজতবাস হল অবৈধ ঔষধ কারখানা নির্মাণের অভিযোগে। একই অভিযোগে চাকরিটাও তার যায় যায়। তখন থেকেই মালতী অসুস্থ। ডাক্তারি পরিক্ষায় ধরা পড়েছিল হেপাটিক জন্ডিস। শেষ পর্যন্ত তা গড়াল লিভার ক্যান্সারে। ইসহাকের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। গলিত ঠোঁটে গড়াগড়ি খায় সিরামিকের পেয়ালা।
বাবা সিগারেট দিবো একটা?
মনটা বড় হাঁসফাঁস করছে। থাকলে একটা দে না মা। বড় উপকার হয়।
সুভা উঠে গেল বাবার জন্য সিগারেট আনতে। তার উঠে যাওয়ার ধরনটা বড়ই চেনা। একদম মালতীর মত। সামান্য সিগারেটকে তখন এখনকার মত বিলাস পণ্য মনে হতোনা। দিনে কয়েক প্যাকেট গোগ্রাসে চলত। সুবল একবার তার পকেট থেকে এক প্যাকেট মেরে দিয়েছিল। পরে ধরা পড়েছিল স্কুল দপ্তরী রতন মিয়ার হাতে। বরাবর হেডমাস্টারের কাছে ইসহাকের যেতে হয়েছিল সেদিন। অনীল বাবু নাকের ডগায় চশমা দুলিয়ে দুলিয়ে বললেন,
ছেলে একটা বানিয়েছেন মশাই; বড় হলে দেখবেন সিনেমার গুণ্ডা হবে।
মাষ্টারবাবুর ধারণা জগতে একমাত্র গুন্ডা বদমাস মানুষরাই সিগারেট খায়। কী লজ্জা! কী অপমানই না হতে হয়েছিল! এমন অপরাধের মার্জনা হয়না। বাসায় এনে তাই চ্যালা-কাঠ দিয়ে পিটিয়েছিল সুবলকে। পরে টানা সাতদিন ভুগেছিল জ্বরে। ইস কত কষ্টই না পেয়েছিল ছেলেটা। মনে পড়লে বুকের মাঝে চিনচিনে ব্যথা হয়। কতদিন হয়ে গেল সুবলটার কোন খবর নেই। বড় ব্যথা এখানটায়। কেউ দেখেনা।
//তিন//
ক্ষুধার্ত প্যাঁচার তীক্ষ্ণ ডাক দাগ কেটে যায় মনে। খাবার মনে হয় পায়নি কিছুই আজ।
রাত বাড়ছে নিয়মতান্ত্রিক জটিলতায়। সিগারেটের ধোঁয়ায় রুমের যাচ্ছেতাই অবস্থা। এ দৃশ্য সুভার কাছে মাত্রাতিরিক্ত যন্ত্রণাদায়ক। তবে বাবাকে আজ অনেক বেশি আপন মনে হচ্ছে। বাবার সাথে আজ খুনসুটি করা চলেনা। বাবার সবকিছুই যেন আজ ভাল লাগছে। বাবা সিগারেট ফুঁকছেন সেই দৃশ্যও অতি মনোরম হয়ে ধরা দিচ্ছে তার চোখে।
সুবলের কোন খবর কি পেয়েছিস রে সুভা?
না বাবা পাইনি। মঞ্জু ভাইয়ার সাথে দেখা হয়েছিল রাস্তায় । উনিও কোন খবর দিতে পারলেন না। আমাদের ছেড়ে ভাইয়া মনে হয় ভালোই আছে। গিয়ে দেখ এতদিনে বউ বাচ্ছা গজিয়েছে নিশ্চয়ই।
মঞ্জুর সাথে দেখা হয়েছিল? কি খবর ওর? আমাদের বাসায় আসতে বলিস নি?
ইসহাককে অতিমাত্রায় উৎসাহী মনে হল।
মঞ্জু ভাইয়া গত মাসে বিয়ে করেছেন বাবা। ভাল চাকরিও পেয়েছেন কোথায় যেন। বউ সহ ঢাকায় থাকেন এখন।
ইসহাককে আহত পাখির মত দেখালো। গৌড় বর্ণের মুখ পাংশুটে হয়ে গেল। বেদনায় ছটফট করতে থাকে ওর ভেতরের নিভৃতচারী বোবা সন্ন্যাসীটা। বড় ভালো ছেলে ছিল মঞ্জু। রোজ বিকেলে সুবলের সাথে চলে আসত বাসায়। এসেই গল্প জুড়ে দিত। রাজ্যের গল্প। অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি, দেশের বর্তমান হালচাল কোন কিছুই বাদ যেতনা। মুগ্ধ হয়ে সে গল্প শুনত ইসহাক। সুভাও যোগ দিত তাদের সাথে। তবে আড্ডায় ওর চলে আসার ধরণটা একটু ব্যতিক্রমী ছিল। মঞ্জুর জন্য চা- বিস্কিট নিয়ে ওই আসত সবসময়। তবে যেদিন চুলোয় চায়ের পানি চড়ত না সুভা সেদিন হুট করে এসে বলতো,
বাবা তোমাকে না কতবার বলেছি সবসময় চোখে চশমা পড়ে থাকবে। ডাইনিং টেবিলে চশমা ফেলে এসেছিলে কেন? এই নাও। আবার কোন কোন দিন গাছ থেকে নিজেই একটি লেবু চিড়ে এনে বলতো,
দেখেছো বাবা কে যেন এই কচি লেবুটি চিড়ে রেখে গেছে। মানুষ এমন বদ হয় বল? বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে বাবা। আযান দাও। দেখো তো বাবা ডালে লবণ হয়েছে কিনা। আরও কত কী।
তারপর চোখে মুখে এমন একটা ভাব এনে মুখ বাকিয়ে বলত, তোমরা গল্প কর। আমি গেলাম। যেন জগতের কোন কিছুতেই ওর তেমন কোন আগ্রহ নেই।
ইসহাক তখন মনে মনে হাসে। তবুও খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলতো,
আরে বস বস। রাণী এলিজাবেথের গল্প হচ্ছে। বাকিংহ্যাম প্যালেসে রাণীর বিলাসবহুল দিন যাপনের গল্প।
সুভাও তখন বসে যেত। ইসহাক আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করত সুভা সামনে থাকলে মঞ্জু কেমন যেন অপ্রস্তুত হয়ে যেত। মুখে কথা জড়িয়ে যেত বারবার। আড়চোখে তাকিয়ে থাকত সুভার দিকে। চোখে চোখে কথা বলতে চাইত। সেই বিকেলগুলোকে অনেক ছোট মনে হত তখন। সুভা সেজেগুজে থাকত সবসময়। লম্বা করে বেণী বাঁধত, কপালে টিপ পড়ত। ইসহাক সব দেখেও না দেখার, বুঝেও না বুঝার ভান করত। মনে মনে মঞ্জুকে পরিবারের অতি আপন একজন ভাবতে শুরু করেছিল। কত সুন্দর মানাত ওদের। সেই সুন্দর আর দেখা হলোনা। বড় আফসোস রয়ে গেল ইসহাকের মনে। মানুষের জীবনের সব চাওয়া পূর্ণ হয়না সে বড় কঠিন সত্য, তবে না পাওয়ার বেদনা এত তীব্র হবে কেন?
সুভা ইসহাকের কাছে এসে তার হাতটা জড়িয়ে ধরল। ইসহাকের চোখের কোণে বেদনার অশ্রু জমেছিল কয়েক ফোঁটা। অনেক যত্ন করে সে অশ্রু মুখে দিল সুভা।
কাঁদছ কেন বাবা?
বড় কষ্ট রে সুভা, বড় কষ্ট। সুধা আর সুবলের জন্য মনটা অনেক পোড়ে আজকাল।
মনিদের বাসায় সুধা আপু ফোন করেছিল বাবা। তোমাকে একবার দেখতে চায়।
ইসহাকের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। সুভার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল সে।
আসতে বলব বাবা?
না।
রাত করে আসবে বাবা। কাকপক্ষীও টের পাবেনা। শুধু তোমাকে দেখবে একনজর। তোমাকে একটু ছুঁয়ে দেখবে। বলেছে ভোর হবার আগেই চলে যাবে আবার। তোমাকে কারো কথা শুনতে হবেনা। আসতে বলি বাবা?
চড় দিয়ে গালের দাঁত ফেলে দিবো বলছি। না বলেছি না একবার।
সুভা হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাল। চিৎকার করে বলল,
তুমি অনেক নিষ্ঠুর বাবা। অনেক নিষ্ঠুর, অনেক স্বার্থপর তুমি।
ইসহাক চুপ করে রইল। তার ঠোঁট কাপছে। কিছু বলতে চাইছে। কিন্তু পারলোনা।
সুধা আপুর টাকা ছুঁয়ে দেখাও পাপ। কই তোমার যোগ্য ছেলে তো গত দুবছরে একবারও ভুল করে খবর নেয়নি তোমার। ছেলে ব্যবসা করবে বলে পেনশনের সবগুলো টাকা উঠিয়ে দিলে তার হাতে। এখন কোথায় তোমার সেই ছেলে? যত তেল-নুন- চাল- ডাল সবই তো সুধা আপুর টাকায় ঘরে আসে। তিনবেলা ঔষধ না পেলে তোমার বুকের ব্যথা বেড়ে যায়, দম বন্ধ হয়ে আসে। সুধা আপু আজ পাশে না থাকলে আমাদের কি অবস্থা হত চিন্তা করতে পার বাবা?
মূর্তির মত দাঁড়িয়ে রইল ইসহাক। চরম বাস্তবতার মুখোমুখি সে এখন। এই কঠিন সত্যগুলো মেনে নেওয়া ছাড়া প্রায়চিত্ত করার আর কোন পথই যে নেই এখন। তখনো থামেনি সুভা,
কাউকে ভালোবেসে ফেলা তো কোন অপরাধ নয় বাবা। আপু একজনকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন দেখত শুরু করেছিল। প্রচন্ড বিশ্বাস ছিল ছেলেটার উপর। সেই বিশ্বাসে গা ভাসিয়ে ঢাকার কোন এক নামকরা হোটেলের অভিজাত কামরায় সঁপে দিয়েছিল নিজেকে। আপু তো তখনও বুঝতে পারেনি তাকে সেখানে বিক্রি করে দিয়েছে ঐ নরপিশাচটা।
ঢেঁকুরে কেঁদে উঠল ইসহাক। নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলনা আজ। ইসহাক সব সময় কাঁদে। অথচ কাউকে বুঝতে দেয়না কি মমতা পুষে রেখেছে ও মনে। সুধা মেয়েটা ক্লাস টেন পর্যন্ত তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতো। যেদিন থেকে সুধা একা বিছানায় ঘুমাতে গেল কি কষ্টই না লেগেছিল সেদিন। মনে হয়েছিল হঠাৎ করে বুঝি বড় হয়ে গেছে মেয়েটা। এখন আর চাইলেও তাকে কাছে আগলে রাখার অধিকার নেই। একটু আদর করে দেয়া যায়না যখন তখন। তখন থেকে সুধার ছবিগুলো বুকে নিয়ে ঘুমায় ইসহাক। সুধাকে একটু আদর করতে ইচ্ছে হল ছোট্ট সুধার সেই ছবিগুলোতে আলতো করে চুমু দেয়। সুভা কি জানে এতকিছু ? ছোটবেলায় বাবার সাথে একদিন অফিসে গিয়েছিল সুধা। বিকেলবেলা অফিস শেষে বাবার সাথে নিতাইগঞ্জে মেলা দেখতে যাবে বলে। মেলায় গেল, সুধার পছন্দের অনেক কিছু কিনাও হল। ফিরার পথে রঙ্গিন হাওয়াই মিঠাই দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়েছিল মেয়েটি। খুব আবদার করে বলল, বাবা দাওনা একটা হাওয়াই মিঠাই।
ইসহাক মেয়ের জন্য তিনটি হাওয়াই মিঠাই নিল। দাম দিতে গিয়ে দেখল পকেটের মানিব্যাগ নেই। শত অনুরোধেও একটা মিঠাই বাঁকিতে পাওয়া গেলোনা। সুধা তখন মুখ ছোট করে বলেছিল,
থাক বাবা। হাওয়াই মিঠাই ভালোনা। দাঁতে পোকা হবে।
মেয়ের কাছ থেকে এমন শান্তনাবাণী শুনে তখন কেঁদে ফেলেছিল ইসহাক। সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারা যে কত বড় অক্ষমতা তা কেবল বাবারাই জানেন।
সুধা মেয়েটিকে আজ পর্যন্ত একটা মুহূর্ত ভুলে থাকতে পারেনি ইসহাক। রোজ রাতে সুধার পুরানো বই পুস্তক আর জামা-কাপড় বের করে সেগুলো জড়িয়ে ধরে বোবা শিশুর মত কাঁদে সে। সুভা কি তা দেখেছে কখনও?
এখনও ইসহাক কাঁদছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। সুভার খুব ইচ্ছে হচ্ছে বাবাকে জড়িয়েও সেও একটু ডাক ছেড়ে কেঁদে নেয় এখন। বুকটা একটু হালকা হবে তাতে। এতসব ভেবেও সুভা বাবার কাছে গেলনা, জড়িয়ে ধরে কাঁদলোনা।
কাঁদার দিনে যার যার কান্না কেঁদে নিতে হয়। কাউকে সান্তনা দিতে নেই। দূর থেকে চোখের পানি ফেলছে সুভা। এমন বাবাকে ছেড়ে থাকতে খুব কষ্ট হবে তার। কাল থেকে যে প্রাত্যহিক রুটিনগুলো সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে আবার। ব্যাগ গোছানো হয়েছে অনেক আগেই।
জগৎ সংসার রহস্যময়। মায়ার খেলা বড়ই নির্মম। সামান্যতম সুখে থাকার মোহ মানুষকে চেনা কোন বন্ধন তুচ্ছজ্ঞান করার অনুপ্রেরণা জোগায়। জানালার দিকে একবার মুখ তুলে তাকালো সুভা। বাইরে বাতাস নেই। মেঘ কেটে গেছে মনে হয়। আকাশের ছাই পোড়া রঙ। নির্জন রাতের প্রগাঢ় অন্ধকারে আঁচড় কাটছে শুধু কয়েকটি জোনাকি।
৩১ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৯ টি
সমন্বিত স্কোর
৬.৫২
বিচারক স্কোরঃ ৪.১৫ / ৭.০
পাঠক স্কোরঃ ২.৩৭ / ৩.০
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪