কার দোষ

শাড়ী (সেপ্টেম্বর ২০১২)

মো. ইকবাল হোসেন
  • ২৭
  • ৪৯
রোজ রোজ অফিস আসা যাওয়া রিতীমত একটা বিরক্তিকর ব্যাপার।বিশেষত আমার জন্য, নটা পাঁচটা মেইনটেন করা আমার কাছে হিমালয় জয় করার মতই দুঃসাধ্য। মোবাইল ফোন কোম্পানীতে চাকুরির সুবাদে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ায়। ঢকার বাইরে থাকলে নটা পাঁচটা মেইনটেনের কোন বালাই নেই। কিন্তু ঢাকায় থাকলে আফিসের কাজ থাকুক বা না থাকুক সময়মত অফিসে হাজিরা দিতেই হবে। আমার অফিস গুলশানে। মস দুয়েক ঢাকার বাইরে কোন কাজ নেই। তাই এই দু'মাস ঢাকাতে থাকতে হবে।যেহেতু ঢাকায় খুব বেশি থাকতে পারিনা তাই ফুপাতো ভাই-ভাবীর সাথে নারায়নগঞ্জের রুপসীতে আপাতত আছি। যাত্রাবাড়ীতে বাস চেঞ্জ করে এবং জ্যাম ঠেলে অফিস যেতে প্রায় আড়াই ঘন্টা লাগে। সিটিং বাসে কখনও বা লোকাল বাসে বাদুড় ঝোলা হয়ে সপ্তাহ খানেক যাতায়াত করে হাপিয়ে উঠলাম। তাছাড়া জানালার কাচ সামনে পিছনে ঠেলাকে কেন্দ্র করে, পায়ে পাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে, রাজনৈতিক আলাপন নিয়ে পাশের যাত্রীদের সাথে বচসা ইত্যাদিতো নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার।যাত্রাবড়ীতে ফ্লাইওভার তৈরির কাজ চলছে।তাইতো একদিকে বর্ণনাহীন জ্যাম অন্যদিকে কাদা জলে রাস্তাঘাট যেন কোন বস্তির নোংরা গলি।রাস্তাঘাট যাইই হোক এর উপর দিয়ে আমাকে যাতায়াত করতেই হবে।তাইতো জ্যামে যখন গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে তখন মনে মনে সরকার আর প্রশাসন কে গালি দিয়ে সান্তনা পাওয়ার চেষ্ঠা করতাম।অফিস যাতায়াতের এই দীর্ঘ সময়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য পত্রিকায় ছিল আমার একমাত্র ভরসা।আর যখন খুবই বিরক্ত লাগত তখন এয়ারফোন কানে গুজে রাখতাম যাতে আশেপাশে ঘটে যাওয়া কোন কিছু কানে না আসে।মাঝে মাঝে পত্রিকা পড়তে পড়তে খুব উত্তেজিত হয়ে উঠতাম যখন দেখতাম খুন-রাহাজানি আর দুর্নিতীর খবরে পত্রিকার অধিকাংশ পাতা ভরা। ।সেদিন পত্রিকা পড়তে পড়তে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাইনি।হাতে পত্রিকা ছিল হঠাৎ মনে হল কে যেন পত্রিকা ধরে টান দিল।দেখলাম আমার পাশের যাত্রী তাও আবার একজন তরুনী। যাত্রাপথে আনেক মেয়েই পাসে বসে কিন্তু কাউকে কখনও চোখ তুলে দেখেছি বলে মনে হয় না।কিন্তু একে দেখতে হল। কারণ মুখটা পরিচিত। রুপসি হতে যখন বাসে উঠতাম তখন প্রায় দিনই মেয়েটিকে দেখতাম।সুন্দর এবং সুশ্রী নারী বলতে যা বোঝায় তার সব গুনাবলী এই মেয়েটির মাঝে আছে।কখনও সালোয়ার কামিজ পরে,কখনও বা জিনস-শার্ট,হাই হিল পরে,মাঝে মাঝে চোখে সানগ্লাস থাকত।আর কাঁধে ভ্যানিটি ব্যাগ এবং হাতে একটা স্মার্ট ফোন সবসময় নিত্যসঙ্গী। মোট কথা আধুনিক রমণী বলতে যা বোঝায় তার সব গুনাবলী এই মেয়েটির মাঝে আছে। মেয়েটি মিনিট পাঁচেক পত্রিকার পাতায় চোখ বুলাল তারপর পত্রিকাটি ফিরিয়ে দিল। একটা পত্রিকা পড়তে আমার প্রায় এক দেড় ঘন্টা লাগে অথচ এই মেয়েটি পাঁচ মিনিটে কি যে পড়ল তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।নিজের কৌতুহল চেপে না রাখতে পেরে অবশেষে জিজ্ঞেস করলাম : পাঁচ মিনিটে পত্রিকার কি পড়লেন? মৃদু হেসে মেয়েটি বলল: জাস্ট হেড লাইন গুলো পড়লাম।আসলে পত্রিকা ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ার কোন মানে হয় না।যত কম ঘটনা জানবেন তত কম আপনার মনের উপর ইফেক্ট পড়বে।আমি বললাম: তা ঠিক,আপু কি চাকুরী করেন? মেয়েটি বলল: না। প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করছি, ফাইনাল ইয়ারে আছি।তারপর আর তাকে জিজ্ঞেস করতে হয়নি তার ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপারে।একে একে বলে গেল সে কি করে না করে, কি ভাল লাগে কি খারাপ লাগে ইত্যাদি ইত্যাদি।আমি মন্ত্রমুগ্ধ স্রোতার ন্যায় শুনে গেলাম। লিংক রোডে যখন নেমে যাব তখন সে বলল:এত কথা বললাম অথচ আপনার নাম জানা হল না।আমি মানিব্যাগ থেকে আমার ভিজিটিং কার্ড বের করে ওর হাতে দিয়ে বললাম:আমি শিশির। একটু হেসে সে বলল: আমি মোহনা। আমি হঁ্যা সূচক মাথা নেড়ে বললাম:ওকে পরে কথা হবে। তারপর বাস থেকে নেমে পড়লাম।
এরপর প্রায় প্রতিদিনই মোহনার সাথে দেখা হত।তবে ওকে যতটা আধুনিক মেয়ে মনে করতাম তার চেয়েও অত্যাধুনিক সে।বাঙ্গালী ললনারা ঘর-দোর সমলায় কিন্তু মোহনা দেশ দুনিয়ার সমস্ত খবর রাখে।ইন্টারনেট হাতের মুঠোয় থাকর সুবাদে ফেসবুক,টুইটার,ইউটিউব এমন কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেই যেখানে তার বিচরণ ছিল না। কারণ একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল: আপনি বোধ হয় নিয়মিত ফেসবুকে বসেন না? আমি বললাম : না কেন?
:দুদিন আগে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠিয়েছিলাম কিন্তু আপনার কোন রিসপঞ্জ দেখলাম না তাই।
:আসলে প্রয়োজন ছাড়া আমি কখনও ইন্টারনেট ইউজ করি না।
:আর আমি একদিন নেটে না বসলে অমার পেটের ভাত হজম হয় না।এ্যানিওয়ে আমরা তো ফ্রেন্ড হতে পারি নাকি? আমি সহাস্যে বলে উঠি: হোয়াই নট? তারপর একদিন দুদিন কথা বলতে বলতে আমরা খুব ঘনিষ্ট বন্ধু হয়ে গেলাম। অবস্থা এমন দাঁড়াল দুজনে একসঙ্গে ছাড়া কখনও রুপসি থেকে বাসে উঠতাম না। আসার সময়টা একসাথে আসা হত না কারণ যখন আমার অফিস ছুটি হত পাঁচটায় আর ওর ক্লাস শেষ হত দুটোয়। যে রাস্তা জ্যাম আর কাদা পানির জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছিল সেই পথঘাট এক মোহনার ছোঁয়ায় এত মধুর হয়ে উঠল যে প্রতিটা মূহুর্ত প্রতীক্ষায় থাকতাম কখন সেই অফিস যাবার সময় হবে। একদিন সে বায়না ধরল ক্লাসে যাবে না আমার সাথে কোথাও ঘুরতে যাবে।ততদিনে আমরা আপনি-আপনির গন্ডি পেরিয়ে তুমি-আমিতে পৌঁছেছি।অফিস থেকে ছুটি পাওয়া সহজ ছিল না।কিন্তু একজন তরুণী যদি কোথাও ঘুরতে যাবে বলে তাহলে আমিতো কি পৃথিবীর যে কোন তরুণ একটা নয় হাজারটা অজুহাত দাঁড় করিয়ে অফিস থেকে ছুটি নেবেই। অমার ক্ষেত্রেও ব্যত্যায় হল না।অবশেষে ছূটি মিলল। কথা ছিল ওর সাথে সোনারগাঁও যাব কিন্তু যাত্রাবাড়ী এসে ও বলল নিউমার্কেট যাব।ভাবলাম হয়ত শপিং করবে তাই আমি দ্বিমত করলাম না। নিউমার্কেটে এসে আমকে অবাক করে দিয়ে মোহনা একটা সুদৃশ্য ঘড়ি কিনে আমার হাতে পরিয়ে দিয়ে বলল: এই ফোন-মোবাইলের যুগে কেউ হয়ত ঘড়ি তেমন পরে না কিন্তু আমি চাই তুমি এটা পরে থাকবে।আর যখন এটা দেখবে তখন আমার কথা তোমার মনে পড়বে। জীবনে কিছু কিছু মূহুর্ত আসে যখন মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে ঐ মূহুর্তে আমিও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না।অবশেষে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম: ঘড়ি না দেখলে বুঝি তোমাকে মনে থাকবে না?তোমাকে আমার আজীবন মনে থাকবে।
:থাকবে ! তবে ততটা প্রাণবন্ত ভাবে মনে থাকবে না।আমি দ্বিমত করি না ।আমার শক্তি বা ইচ্ছা নেই ওর মতের সাথে দ্বিমত পোষন করা।বাইরে বের হওয়ার সময় একটা দোকানের নীল শাড়ীতে আমার চোখ আটকে গেল।শাড়ীটা দোকানদারকে প্যাক করে দিতে বললাম এবং যখন সেটা মোহনার হাতে দিলাম তখন সে বলল:থ্যাংকস বাট আমি শড়ি পরি না তবে তুমি যেহেতু প্রেজেন্ট করছ আমি অবশ্যই শাড়ি পরা শিখব।তবে তোমার চয়েস আছে বলতেই হবে ।শাড়িটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে।বাইরে বেরিয়ে আচমকা ওকে প্রশ্ন করে বসলাম:উড় ুড়ঁ ষড়াব ংড়সবড়হব? প্রশ্নটা শুনে মোহনা একটু হাসল কিন্তু কোন উত্তর দিল না।আমার রাগ ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল।কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল: পরে একদিন বলব।এই পরে একদিন আর কখনও আমার জীবনে আসেনি এবং আর কখনও আসবেও না।কারন ক'দিন পরে একটা জরুরী কাজে বরিশাল যেতে হল। নতুন সাইট শুরু হয়েছে, আগামী কয়েক মাস আমাকে বরিশালে থাকতে হবে।জরুরী কোন কিছু না ঘটলে আমার আর ঢাকা আসা হবে না। মোহনা শোনা মাত্র বেকে বসল,বলল:হয় তুমি আমাকে সাথে নিয়ে যাবে নতুবা এই চাকুরী ছেড়ে দিবে এবং এমন চাকুরী নিবে যেন ঢাকার বাইরে যাওয়া না লাগে।
:আপাতত যেহেতু চাকুরী ছাড়তে পারছিনা সেহেতু তুমি আমার সাথে যেতে পার।সাইটটা শেষ হলে একে বারে ঢাকায় চলে আসব।মোহনা খিলখিল করে হেসে উঠল, বলল: সাহস আছে দেখছি। আমি বললাম:সাহসের প্রশ্ন উঠছে কেন? মোহনা বলল: এমনি বললাম। ওকে ঠিক আছে।ভালভাবে যাবে।ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করবে আর আমার সাথে প্রতিদিন কথা বলবে।আমি হ্যাঁ সুচক মাথা নেড়ে বিদায় নিই।

ঢাকা থেকে যতবারই কোন সাইটে গিয়েছি ততবারই মনে হয়েছে যত দেরিতে ফেরা যায় ততই ভাল। কিন্তু এই প্রথম ঢাকার বাইরে যেতেই মন চাচ্ছে না।দিনকতক খুব ব্যস্ত থাকলাম। কাজের চাপ এতই বেড়ে গেল যে হোটেলে ফিরতে ফিরতে রাত বারোটা একটা বেজে যায়। মাঝে মাঝে মোহনার সাথে ফোনালাপ অথবা ফেসবুকে ক্ষুদে বার্ত আদান-প্রদান হত।হঠাৎ একদিন রাত বারোটার সময় মোহনা ফোন করে বলল: তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। আমি বললাম:আমারও তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।তোমার ওয়েব ক্যাম আছে? মোহনা বলল
: হ্যাঁ।
:ওকে। স্কাইপ অন কর আমি ফোন দিচ্ছি।কিছুক্ষন পরে আমি ফোন দিলাম।ওয়েব ক্যামে যখন ওকে দেখলাম তখন চমকে উঠলাম,কেমন যেন বিধ্বস্ত চেহারা।হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেলে প্রকৃতির যে অবস্থা হয় মোহনার অবস্থাও যেন সে রকম।কিছুক্ষন সে কোন কথা বলল না।আমি বললাম কি হয়েছে তোমার?
মোহনা চটপট উত্তর দিল:কই কিছু হয়নি তো।
:তাহলে তোমাকে এমন বিমর্ষ দেখাচ্ছে কেন? মোহনা শুকনো হাসি দিয়ে বলল: হয় তোমার চোখের সমস্যা না হলে ওয়েব ক্যামের সমস্যা। আমি ঠিক আছি।
:চোখ এবং ওয়েব ক্যাম দুটোই ঠিক আছে এবার বল কি হয়েছে? মোহনা আবারও হাসল,বলল: বুঝেছি।আসলে তুমিতো আমাকে কখনও মেক আপ ছাড়া দেখনি তাই হঠাৎ দেখে এরকম মনে হচ্ছে। অবশ্য তুমি চাইলে এখনই আমি মেক আপ করে আসতে পারি।জাস্ট একটু ওয়েট করো।বলেই মোহনা উঠে দাঁড়াল।আমি বললাম:এই রাত বারোটার সময় সত্যই কি তুমি মেক আপ করবে নাকি? হেড ফোনটা ততক্ষণে সে রেখে দিয়েছিল তাইতো ওর কথা শুনতে পেলাম না কিন্তু ইশারাতে যা বোঝাল তাতে বুঝলাম সে সত্যি সত্যি সাজুগুজু করতেই যাচ্ছে।কিছুক্ষন পরে ফিরে এল সে একটা নীল শাড়ী পরে,হেডফোন লাগিয়েই বলল: কেমন দেখাচ্ছে আমাকে তোমার দেওয়া শাড়ীতে? আমি বললাম:ঠিক যেন নীল পরী। সে বলল:তুমি আমাকে বিয়ে করবে? আমি বললাম: হ্যাঁ। হঠাৎ সে হু হু করে কেঁদে উঠল।আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম।আনেক রকম কথা বললাম কিন্তু কিছুতেই তার কান্না থামে না। অবশেষে কন্না থামিয়ে বলল: সে দিন জিজ্ঞেস করেছিলে না আমি কাউকে ভালবাসি কিনা,আজ বলছি-আমি তোমাকে ভালবাসি
:আমি জানি।এবার প্লিজ সত্যি করে বল তুমি এরকম আচরণ করছ কেন?এবার মোহনা হাসল,বলল: এমনি।তুমি তাড়াতাড়ি এস অনেক কথা আছে।তারপর লাইনটা ডিসকানেক্ট করে দিল।হাজারো উল্টোপাল্টা চিন্তাভাবনা মাথায় নিয়ে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টের পাইনি।সাত সকালে বসের ফোন,ভোলা যেতে হবে একটা সাইট ডাউন হয়ে গেছে অথচ ভেবেছিলাম সকালে বসকে বলব ঢাকায় যেতে হবে কিন্তু এ মূহুর্তে বসকে বলা যায় না।অগত্যা ভোলা যেতে হল।সারা দিন শেষে যখন হোটেলে ফিরে মোহনাকে ফোন দিলাম তখন ওর মোবাইল বন্ধ।অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠল।ওর বন্ধু বা বড়ির কোন নাম্বার আমার কাছে নেই তাইতো ভেতরে ভেতরে জ্বলেপুড়ে খাক হওয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই।ভাইয়া-ভাবী ও নেই,গ্রমের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন নইলে কাউকে বলে ওদের বাড়ি হতে কোন খোঁজ নেয়া যেত।ফেসবুকে কোন আপডেট স্ট্যাটাস নেই। মনে হল ইশ যদি পাখির মত ডানা থাকত তাহলে উড়ে গিয়ে মোহনার সাথে দোখা করে আসা যেত।হাজারো উৎকন্ঠা,হাজারো দুশ্চিন্ত নিয়ে দুটো দিন পার করলাম।তৃতীয় দিন ব্যক্তিগত মেইল চেক করতে গিয়ে দেখলাম মোহনার একটা মেইল সেখানে বাংলায় এ্যাটাচ করা একটা চিঠি।
"প্রিয় শিশির,
চিঠিখানা যখন পড়বে তখন আমি পরপারের বাসিন্দা।শখ করে কেউ কি দুনিয়া ছাড়তে চায় বল? আমার কোন উপায় ছিল না।ছোট খাট ব্যাপার নিয়ে প্রয়ই বন্ধু-বান্ধব মিলে হাসি তামাশা করতাম কিন্তু বুঝতে পারিনি নিজেই একদিন হাসি তামাশার পাত্র হব।সেদিন রুপা আমাদের বাড়ি বেড়াতে এসেছিল।বাথরুম থেকে গোসল শেষে যখন রুমে ফিরছিলাম তখন রুপা সেগুলো ওর সেল ফোনে ভিডিও করছিল।আমি বারবার নিষেধ করছিলাম কিন্তু ও শুনছিল না।কিছু নগ্ন আর কিছু অর্ধনগ্ন ভিডিও চিত্র ও ধারন করেছিল।আমি বারবার রিকোয়েস্ট করেছিলাম যেন সেগুলো ডিলেট করে দেয়।কিন্তু সে তা করেনি।ফলে দুদিন পরে আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে গেলাম তখন আমার এক সহপাঠী আমাকে বলল: তোর সাইজটা কিন্ত হেব্বী ময়েরী!তারপর সে যা দেখাল তাতে দেখলাম রুপার ধারন করা সেই আমি। এবার বল এই কলঙ্কিত জীবন নিয়ে কি বেঁচে থাকা যায়?তোমার দেয়া শাড়ী পরে তোমার ঘরে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু হাজারো জন যাকে প্রতিনিয়ত দেখবে তাকে কি তুমি বউ হিসেবে মেনে নিতে পারতে?শাড়ীটা তোমার বাসায় পাঠিয়ে দিলাম তোমার বউকে আমার পক্ষ হতে উপহার দিও।পারলে ক্ষমা করো ।
ইতি তোমার
হতভাগ্য বন্ধু
"মোহনা"
চোখদুটো দিয়ে অনবরত অশ্রু ঝরছে কোন ভাবেই সংবরণ করতে পারছি না।মনে মনে বললাম একবার যদি বলতে তাহলে কখনও তোমাকে যেতে দিতাম না।সেই ঘড়ি,সেই শাড়ি আজও আছে শুধু মোহনা নেই।বুকটা শুধু হাহাকার করে যার দোষে তাকে হারালাম তাকে শাস্তি দিতে না পারায়। কিন্তু কাকে দোষ দেব? ওর বান্ধবী রুপাকে নাকি প্রযুক্তিকে নাকি উপরওয়ালাকে?হয়ত আজীবন এই প্রশ্নের মাঝেই আমাকে ঘুরপাক খেতে হবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জাকিয়া জেসমিন যূথী বর্তমান প্রযুক্তির বিশাল কালো থাবা’র ম্যাসেজ সম্বলিত গল্পটা সুন্দর লিখেছেন। ভালো লেগেছে। রুপা যে সেও তো একটি মেয়ে। এরকম একটা কাজ সে কি করে করতে পারলো!? অদ্ভূত!! কিন্তু এরকম আসলেই ঘটছে বাস্তব জীবনে।
ভালো লাগেনি ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ সময় দিয়েছেন তার জন্য।
ভালো লাগেনি ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ডা. মো. হুসাইন আলী ভাল লাগলো।শুভ কামনা রেইল। বাবুটি কি আপনার ? খুব সুন্দর।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
আমারো ভাল লাগল। বাবুটি আমার ভাতিজি।ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মামুন ম. আজিজ এই ভিডিও চিত্র ধারন নিয়ে আমার একটা গল্প ছিল আমার বিগত বছরের গল্পের বইতে। মেয়ে হয়ে মেয়ের সর্বনাশ খুব বেশী খারাপ .....গল্পের গঠন এ দারুন একটা টান ছিল। শেষে হৃদয় বিদারক হবে বুঝতেই পারিনি। ..ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২
সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব সুন্দর বিষয় নিয়ে লিখেছেন| নৈতিকতা বিবর্জিতদের কুকর্মের মাসুল দিতে হলো একজন নিস্পাপ মানুষকে- খুব সুন্দর লিখেছেন|
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য এবং আমার লেখায় সময় দেওয়ার জন্য।
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মন্তব্য করায় আমারো ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ সুন্দর একটা কাহিনী। বিন্যাসটাও চমৎকার।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
পারভেজ রূপক কাহিনী চমৎকার লাগল
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ফারজানা ইয়াসমিন দোলন ভাল গল্প । বিষয়বস্তু সমসাময়িক। খুব ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
হাফিজুর রহমান অবশেষে এসে পড়লাম। ভালই লিখেছ। শুভ কামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
শেষ পযর্ন্ত তুমিও এসে পড়লে । ভালই হল। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২

০৪ জুন - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪