আজ আমাদের ঊনত্রিশতম বিবাহ বার্ষিকী। আজকে খুব সুন্দর করে একটা খোঁপা বেঁধেছি। বিয়ের প্রথম দিকের সময়ে মিহির আমার খোঁপায় গোলাপ গুঁজে দিত। মুগ্ধ হয়ে বলত- -মিঠি,খোঁপা বাঁধলে তোমাকে নায়িকা কবরীর মত লাগে। সব সময় এভাবে চুল বেঁধে রাখতে পারো না? আমি লজ্জা পেতাম ওর কথা শুনে। অথচ সেই মিহির এখন আর আমার খোঁপার দিকে তাকায় না! অতীতের কথাগুলো মনে করে যে সুখ,তা যেন কর্পূরের মত জ্বলে পুড়ে উড়ে যায় এখনকার দিনগুলোতে। বুকের ভেতরে হাহাকারের ঝড় সবকিছু তছনছ করে দেবার ইচ্ছে জাগায়। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। "মানুষ কী বলবে? ছেলে মেয়ে কী ভাববে? ওদের বন্ধু বান্ধব ওদেরকে কী নজরে দেখবে? সবার জীবনটাই এলোমেলো হয়ে যাবে।" উফঃ এইসব কথা ভেবে অপমান বোধটা যেন হেলেদুলে নিজের দিকেই মাতালের মত তেড়ে আসে! সবার কাছ থেকে আড়াল করি মাঝে মাঝেই পাওয়া আমার কলঙ্কিত ছায়া। আজও মিহির আমার দিকে একবার ফিরেও তাকাল না! প্রতিদিনের মত সন্ধ্যায় বাসায় এসেই ছেলে মেয়েকে নিয়ে আমার সাথে তর্ক শুরু করে দিল। আজকে একটা বিশেষ দিন সেইটাও ওর মনে নেই! আমার মনের ভীতরে জমাট বাঁধা কষ্টগুলো কেন যেন কণ্টকও মুক্ত হতে চায়ছে। আজ আমার ধৈর্যের বাঁধন ছিঁড়ে গেলো। যখন মিহির বলল- -কেমন মা হইছ যে ছেলে মেয়ে ঠিক রাখতে পারো না! -এইটা কেমন কথা বল তুমি! ওরা বড় হয়ছে। ওদেরকে তো একটু স্বাধীনতা দিতে হবে না কী? -স্বাধীনতা? এখন বাজে রাত নয়টা তোমার ছেলে ঘরে আসেনি।আর বল স্বাধীনতা দিতে হবে? -আরে ছেলে তোমার পঁচিশ বছরের হইছে। তার কী বন্ধু বান্ধব থাকবে না? -আর মেয়ে? ধিঙ্গি মেয়ে যাবে কতগুলো ছেলেদের সাথে কক্সবাজার! -মেয়েটার কী দোষ! কলেজ থেকে টিচাররা স্টাডি ট্যুরে নিয়ে যাচ্ছে। কীসব রিসার্চ ফিসার্চ আছে সেজন্য। -রিসার্চ না ছাই। আমরা যেন আর লেখাপড়া করিনি। ছেলে মেয়ে কখনো একসাথে এভাবে ঘুরে বেড়ায়ছে কোন দিন? -যুগ পাল্টে গেছে। শোকর কর তোমাদের সময়ে ছেলে মেয়েতে বন্ধুত্ব ছিল না। আমার এই কথায় মিহির যেন একেবারে জ্বলে গেলো। ও ঠিকই বুঝে নিলো ওর চরিত্র নিয়ে আমি খোঁচা মেরেছি। নিজের বেলায় যা একেবারেই ও সহ্য করতে পারলো না। আগুণের মত জ্বলে উঠলো- -কেন থাকলে কী হত? -কী হত তা আর বলতে? এখন ছেলে মেয়েরা বন্ধুত্ব করে মানুষ ভেবে। ছেলে বা মেয়ে ভেবে না। -হয়ছে,কী আমার সতী সাধ্বী আসছেন। এই তোমার মত মা'দের জন্য এখনকার ছেলে মেয়েরা মানুষ হচ্ছে না। -এমনভাবে বলছ যেন তোমাদের সময়ে তোমরা সবাই সব সময় ঘরেই থাকতে। অনেক মানুষ হয়েছ! -কী বলতে চাচ্ছ? বিছানা গুছাতে গুছাতে কথা বলছিলাম। তাই খেয়াল করিনি মিহির কথা বলতে বলতে কখন আমার পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে। হয়ত খেয়াল করলে দেখতে পেতাম-রাগে ও কেমন হাঁসফাঁস করছে! দেয়ালের কাছে বালিশ দিতে দিতে বললাম- -বলতে চাচ্ছি তুমি ওতো ঐ বয়সে আড্ডা দিতে। বিয়ের পরেও ছুটির দিনে রাত বারোটা পর্যন্ত বন্ধুর বাসায় তাস পিটাইছ! -তো! তোর বাপেরটা খেয়ে কী পিটাইছি? আমি বুঝতে পারলাম মিহির ভীষণ উত্তেজিত হয়ে গেছে। তাই পরিস্থিতি হাল্কা করার জন্য হেসে দিয়ে বললাম- -ইশ শখ কত? আমার বাবারটা খেতে চাও। বিয়ের সময় তো কম খাওনি...! সত্য বোধ হয় সব সময়েই ভীষণ ধারালো হয়! আমার কথা শেষ হয়নি।মিহিরের বলিষ্ঠ দুটো হাত আমার দিকে এগিয়ে এলো। কিছু বুঝার আগেই ওর বাম হাতে আমার খোঁপাটা এলোমেলো করে দিয়ে চুল মুঠো করে ধরল! ধাম দিয়ে কপালটা ঠুকে দিল একেবারে দেয়ালে। উফঃ মাত্র ময়েক সেকেন্ড আমার শরীরের উপর দিয়ে ভূমিকম্প হয়ে গেলো। দরদর করে গরম রক্ত আমার চোখ বেয়ে নামতে শুরু করেছে। মিহির কোন দিকে খেয়াল না করে ঝড়ের বেগে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। যা ও সব সময় করে। আমি মরলাম কিনা তাও তাকিয়ে দেখে না।
আমি বিছানার উপর বসে রইলাম। কী হল? এইটা বুঝতেই বেশ খানিকটা সময় চলে গেলো। এমন সময় মেয়েটা আমার ঘরে ঢুকে প্রথমেই খেয়াল করলো আমার কপাল। ব্যস্ত হয়ে বলল- -মা তোমার কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে! এই অমর্যাদার জন্য নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি অনেক আগেই। মেয়ের কথায় ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কিন্তু আমি যে মা। ব্যথা পেলেও সন্তানের সামনে কাঁদতে নেই। ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে বললাম- -আরে এ কিছু না। -কিছু না মানে? কীভাবে রক্ত ঝরছে! কাটল কীভাবে? কথা বলতে বলতে ফাস্ট এইড বক্সটা এনে আমার কপালে হাত দিল। আমি ভীষণ ব্যথা পেলাম। কিন্তু ঘুরে কপাল সরিয়ে ঝাঁঝালো সূরেই বললাম- -আরে কিছু হয় নি। ঠিক হয়ে যাবে...! -কিন্তু হল কীভাবে? -বিছানা ঠিক করতে করতে কীভাবে যেন দেয়ালে টাক লাগছে। ঠিক বুঝতে পারিনি...! এমন মিথ্যে বলতে আমি অভ্যস্থ। মেয়েও বিশ্বাস করলো। ওর হাত কপাল থেকে সরিয়ে দিয়ে আমি খুব শক্ত করে হাতটা ধরলাম। আগের থেকে একটু নরম স্বরে বললাম- -তুই আবার এ রুমে এলি কেন? তোর গোছগাছ কী শেষ হয়ছে? -হ্যাঁ মা -শোন মশা মারার স্প্রেটা নিস কিন্তু। -নিয়েছি। -আর তোর আব্বার কাছে আর টাকা চাস না। আমার কাছে দুই হাজার আছে। ঐটা দিয়ে ম্যানেজ করে নিস। -মা দুই হা-জা-র টাকা! -মজা করা হচ্ছে না? জানি আজকাল দুই হাজার টাকার কোন দাম নেই। -কিন্তু এতো টাকা কই পেলে তুমি? আব্বা তো তোমাকে একটা টাকাও দেয় না। -এইটা কী বলিস! তাইলে আমি টাকা পাইলাম কই? মেয়েদের একটু এদিক সেদিক করে টাকা জমাতে হয়। যখন মা হবি তখন বুঝবি। ওর সাথে কথা বলছি ঠিকই। কিন্তু আমার মাথা ভীষণ ঘুরছে। মনে হচ্ছে এখুনি জ্ঞান হারাবো। -মা আব্বা কোথায় গেলো? -মনে হয় সিগারেট কিনতে গেছে। তুই এখন যা। ভোরে তোকে উঠতে হবে। -কিন্তু তোমার কপালে ব্যান্ডেজ করে দেই? -না লাগবে না তুই যা। এক রকম জোরই করলাম। ও চলে গেলো। আমি পাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম। প্রধান দরজা খোলার শব্দ পেলাম। ছেলেটাকে নিয়ে মিহির ঘরে এসেছে। দুজন গল্প করতে করতেই এলো। মনে হয় ছেলে ওর রুমে চলে গেছে। মিহির আমার পাশে এসে কপালে হাত রাখল। নিজেই রক্ত মুছে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিল। তারপর চিৎকার দিয়ে মেয়েকে ডাকল- -মিনি! মিনি! -জ্বী আব্বা -কাল তোর বাস কয়টায়? -জ্বী সকাল সাড়ে আঁটটায়। -আচ্ছা আমি তোকে বাসে তুলে দিয়ে আসব। এই নে এখানে তিন হাজার টাকা আছে। -আব্বা লাগবে না। -আরে নে...! মিহির ধমক দিতেই মিনি টাকাটা নিলো। -শোন একটা ঝিনুকের সেট কিনে আনিস তো। -ঝিনুকের সেট! আব্বা ঝিনুকের সেট দিয়ে তুমি কী করবা? -তোর মায়ের জন্য। তোর মায়ের খুব শখ ছিল। বিয়ের পরে কক্সবাজার যাবে। ঝিনুকের সেট পরে সমুদ্রের পানিতে পা ভিজিয়ে সূর্যাস্ত দেখবে। কিন্তু...! মিহির দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ওর দীর্ঘশ্বাস আমার রাগটাকে ঠিক গরম তেলে পানির ছিটা দেবার মত শব্দ করে চিৎকার দিয়ে উঠতে চায়। দোষ আসলে আমার। আজ লেখাপড়াটা শেষ করলে নিজেই একটা চাকুরী নিয়ে একা থাকতে পারতাম। দোষ আমার বাবার। তিনি মিহিরের বাবার সব আবদার মেনে নিয়েছে। অথচ বাবা বিয়ের সময় যৌতুক না দিয়ে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে পারত। এক সময় ঠিকই মিহির সৌরভের কথা জেনে যায়। বিয়ের রাতেই আমার প্রথম সন্তান গর্ভে আসে। বিয়ের আড়াইমাস পরেই ডাক্তার ঘোষণা দেন সন্তানের বয়সও আড়াই মাস। মিহিরের ধারণা এই সন্তান ওর না। প্রথম রাতেই কী কেউ সন্তান গর্ভে ধারণ করতে পারে? ওকে বুঝাতে আমি ব্যর্থ হই। কিন্তু না আমি যেমন ভুল করেছি। বাবাও ভুল করেছে। লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে,সেই ভুলের মাশুল দিচ্ছি একা আমি। ভীষণ জ্বলে যায় মন। মিহির আমাকে জ্বালাতেই নানা স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। সব জ্বালা চেপে রেখে অস্ফুটে বলি- -মিনি,টেবিলে ভাত দেয়া আছে। মিঠুকে বল খেয়ে নিতে। মিনি ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ছেলেটার সামনে এভাবে আমি যেতে চাই না। ওর কাছে কোন মিথ্যেই লুকানো যায় না! ওর মনটা একেবারে ঈগল চক্ষু...। মনের ভীতরে ঢুকে ঠিকই সত্যিটা জেনে যায়। কিন্তু আজ সারাদিনে ছেলেটার মুখ যে দেখিনি। নাহ ও ঘুমিয়ে গেলে একবার গিয়ে দেখে আসব। না হলে যে একটুও ঘুম আসবে না। ও কীসব আন্দোলন ফান্দোলন যেন করছে। মিহির জানতে পারলে অনেক রাগারাগি করবে। ছেলে মেয়ে ওদের বাবা-আমাকেই সবার রাগ হজম করতে হয়। আরে যা বলার সরাসরি ছেলে মেয়েকে বল। আর ছেলেমেয়েও বলিহারি! আরে তোরা তোদের বাবাকে বল। তা না মাঝখানে আমাকে রাখতে হবে। আর নিজেরা পুতুপুতু আদর দিয়ে কথা! অসহ্য লাগে এখন। মিহিরকেও বুঝিয়ে পারি না- এতো বড় ছেলেকে রাগারাগি করা,ধামকানো ঠিক না। ও পড়াশুনা শেষ করে চাকরির খোঁজ করছে। কিন্তু হচ্ছে না। এমনিতেই ছেলেটা অনেক মানসিক চাপে আছে! তার উপর যদি বাবা মা সব সময় রাগারাগি করে। তাহলে কী হয়? যদি অসম্মান করে কিছু বলে ফেলে তখন কী হবে? বুক কাঁপিয়ে একটা নিঃশ্বাস বের হয়ে আসে। মিহির ঘরের লাইট অফ করে দিয়েছে। আমাকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে- -সরি...! খুব করে বলতে ইচ্ছে হয় -'খবরদার আমাকে ছোঁবে না...!' কিন্তু না,কিছুই বলতে পারি না। প্রতিবারের মত নীরবে কেঁদে যাই। ভাব করলাম আমি গভীর ঘুমের সমুদ্রে তলিয়ে গেছি। ফোঁস ফোঁস করে ঘন নিঃশ্বাস ফেলছি। মিহির ক্লান্ত শরীর নিয়ে এক সময় সত্যিই ঘুমিয়ে যায়। আর আমি...! নির্ঘুম রাত কাটাই...জানালা দিয়ে আকাশের চাঁদ দেখে। ভাবনা জুড়ে একটাই অনুভূতি-এটা আমার সংসার। এই সংসারের প্রতিটি কণায় আমার ত্যাগ,তিতিক্ষা আর কষ্ট মাখা স্পর্শের ছোঁয়া। আমার এই সংসারের মানুষগুলো তো আমার কাছেই সব আবদার নিয়ে আসবে। ভুল ত্রুটি হোক,অথবা ফলন্ত স্বপ্ন ভঙ্গ। সব কিছুর জন্য যেন এই আমার দায়ভার। শত অপমান সয়ে,লজ্জাকে বিসর্জন দিয়েও মুক্তি নেই আমার সেই দায়ভার থেকে।
অনেক ভালোবাসি এই সংসার। তাইতো হাজারও বেদনার ঢেউ উঠলেও,এক সময় ঠিকই থেমে যেতে বাধ্য হয়। দিনে দিনে সব বেহায়াপনা বুকের মাঝেই দাফন দিয়েছি! আমাকে ছাড়া যে ওদের কষ্টের পাহাড় ডিঙ্গাতে হবে! এর চেয়ে ভালো আমি একাই জ্বলেপুড়ে এক সময় শান্ত হয়ে যাব। মিহির নিশ্চয় সেইটা বুঝেই দুঃখ প্রকাশ করে! "এই আমার কলমটা কোথায়? মিঠি আমার চশমা দাও। ঘড়িটা ওতো পাচ্ছি না!" মিঠি মিঠি করে সারা বাড়ি মাথায় নেয় যে মানুষ,সেই মানুষটাই আবার,মাঝে মাঝেই তার মিঠিকে আঘাত করে। যেন সে অনুভূতিহীন এক যান্ত্রিক কেউ! সবকিছুতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। মিহির অপমান করে, আর আমি অপমান সয়ে। আমার সন্তানদের কাছে আমি আমার অপমানের আস্তরণ ঠিকই ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ওরা জানতে পারলে,ওদের বাবার প্রতি সম্মান হারাবে! হয়ত শালীনতা ভুলে বাবাকে কিছু বলেই ফেলবে! মা হয়ে আমি তা কোনোভাবেই সহ্য করতে পারব না। মিহির কেন বুঝতে পারে না,ঘরে যে নারীর সম্মান নেই, সেই নারী অন্যের সম্মান নিতেও দ্বিধাগ্রস্ত হয়। অন্যের কাছেও সম্মান পায় না। ওর কথা রাখতে, ওকে খুশি করতে কিনা করেছি জীবনে! ওর সন্দেহের ভীত এতোটাই শক্ত যে,ওর আমার প্রথম সন্তানকে এই পৃথিবীতে আসার আগেই ও হত্যা করেছে। অথচ সৌরভের সাথে আমার কোনদিন কোন শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। ছিল না কোন প্রেমের সম্পর্ক। আমরা দুজন দুজনকে পছন্দ করতাম। খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। এর বাইরে কিছু না। কে যে আমাদের কথা মিহিরকে বলেছে! কীসব বলেছে কিছুই আজও জানিনা! মিহির সৌরভের কথা জানার পর থেকেই বদলে গেছে। আর আমি অপমানিত হবার ভয়ে ভয়ে সারাটা জনম কাঁটিয়ে দিচ্ছি। যা মিহির বুঝেও বুঝে না। সারা মন জুড়ে লজ্জা জড়িয়ে ধরে সারাক্ষণ। এ ভাবে বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে টপটপ করে মিঠির চোখ গড়িয়ে পড়ে,কিছু ব্যথার জল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু
মিহির 'সরি' বললেও বিবাহ বার্ষিকীতে চুল ধরে দেয়ালে কপাল ঠুকে দিয়ে রক্ত বের করে দেওয়াটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন। হাজার বেদনার পরও সংসারটাকে ভালোবাসা অনেক উদার ও বড় মনের পরিচয় দেয়। অনেক ভাল লাগলো। আমার শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন।
জারিফ অয়ন
গল্পের বিষয়- লাজ। যার অর্থ- লজ্জা, অপমান, গ্লানি, কলঙ্ক, শরম,ভদ্রতা,শালীনতা ইত্যাদি।
আপনার এই সংজ্ঞাতে অপমান, গ্লানী এই দুইটা মানতে পারলাম না। লাজ মানে এই দুটা না এতোটুকু জানি। লাজ মানে মান হবে অপমান না। আপনি আপনার মান বাঁচানোর বা লুকানোর চেষ্টা করছেন, আপনি নিজের লাজ বাচাচ্ছেন।
বুঝলেন !
আমার কাছে আসলে কোন বাংলা অভিধান নেই। ইংরেজি থেকে বাংলা অভিধান আছে। সেখানে লেখা আছে shame
লজ্জা, অপমান, গ্লানি, কলঙ্ক, শরম, ত্রপা। আমি সেভাবেই উল্লেখ করেছি। বুঝিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ। তবে অপমান এবং গ্লানির সাথে লজ্জা জড়িত। সেই অর্থে বুঝানো হয়েছে। আরও একটা শব্দ লজ্জা সমার্থক-"মুখচোরা"
দয়া করে, বাঙ্গলায় সাহিত্য রচনার সময় অন্তত বাংলা ভাষা খানা জানার চেষ্টা করুন। লেখা অনেক ভাল হবে আশা করি। যেমন আপনার এই সমার্থক গুলো দেখে আমার গল্প পড়ার ইচ্ছাই চলে গেছে। বুঝতে পারছেন, সমস্যাটা। কোথাকার জিনিস কোথায় গিয়ে কাজ করছে। আমার না পড়ায় হয়তো আপনার কিছু আসে যায় না। । তবে আমি কিন্তু লেখাটা পড়ার জন্যই খুলেছিলাম! একজন পাঠক হারনো এখনক্কার দিকে বড় বিষয়। আমি অন্তত সেটাই মনে করি।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
নির্ঘুম রাত কাটাই...জানালা দিয়ে আকাশের চাঁদ দেখে। ভাবনা জুড়ে একটাই অনুভূতি-এটা আমার সংসার। এই সংসারের প্রতিটি কণায় আমার ত্যাগ,তিতিক্ষা আর কষ্ট মাখা স্পর্শের ছোঁয়া। আমার এই সংসারের মানুষগুলো তো আমার কাছেই সব আবদার নিয়ে আসবে। ভুল ত্রুটি হোক,অথবা ফলন্ত স্বপ্ন ভঙ্গ। সব কিছুর জন্য যেন এই আমার দায়ভার। শত অপমান সয়ে,লজ্জাকে বিসর্জন দিয়েও মুক্তি নেই আমার সেই দায়ভার থেকে।
অনেক ভালোবাসি এই সংসার। তাইতো হাজারও বেদনার ঢেউ উঠলেও,এক সময় ঠিকই থেমে যেতে বাধ্য হয়। দিনে দিনে সব বেহায়াপনা বুকের মাঝেই দাফন দিয়েছি! আমাকে ছাড়া যে ওদের কষ্টের পাহাড় ডিঙ্গাতে হবে! এর চেয়ে ভালো আমি একাই জ্বলেপুড়ে এক সময় শান্ত হয়ে যাব। চমৎকার একটি গল্প। গল্প এতটাই ভালো লেগেছে যে, কিছু বলার মত ভাষা নেই। বরাবরের মতই শুভকামনা রইল আপু।
Shamima Sultana
খুব ভাল লাগল। প্রতিটি নারী কম বেশি এই লজ্জা জড়িয়ে জীবন পার করে। এই চোখের জল শেষ হবার নয়। পৃথিবীর সব নারী সম্মান নিয়ে বেঁচে থাক। ভোট দিয়ে গেলাম, আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
গল্পের বিষয়- লাজ। যার অর্থ- লজ্জা, অপমান, গ্লানি, কলঙ্ক, শরম,ভদ্রতা,শালীনতা ইত্যাদি। আমাদের সমাজে একজন নারী তার নিজের সংসারেই প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হচ্ছে। নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষের দ্বারা অপমানিত হচ্ছে। সংসারে খারাপ কিছু হোক। অথবা পুরুষের ইচ্ছার বাইরে যা কিছুই ঘটুক না কেন,তার সম্পূর্ণ দায়ভার ঐ সংসারের নারীকেই দেয়া হয়। যা ঐ নারীর জন্য লজ্জার,অপমানের। স্বামী স্ত্রীর মাঝে যখন ঝগড়া হয়। তখন নিজেদের সন্তানের কাছে তা খুবই লজ্জাকর একটা ব্যাপার। যা স্বামী বুঝে না। কিন্তু একজন মা তা বুঝে বলেই সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সবকিছু আড়াল করে। একজন স্বামী তার স্ত্রীকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে কলঙ্কিত করা। তাকে সাঁজা দেয়া ঐ স্বামীর নিজের জন্যই অমর্যাদার। অথচ আমাদের সমাজে এই চরিত্রের পুরুষগুলো স্ত্রীকে কোনদিনই আপন ভাবতে পারে না। বাইরের কেউ ভেবে তাকে পদে পদে অপমান এবং লজ্জিত করে। তখন ঐ নারীর মরে যেতে ইচ্ছে হয়। সে নিজেকেই দোষী ভেবে নিজের ভীতরে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। যা তাকে মৃত্যুর স্বাদ এনে দেয়। পুরো গল্প জুড়েই লাজ অর্থাৎ শালীনতা বজায় রেখেছে একজন নারী। যেখানে পুরুষেরও লজ্জা থাকা প্রয়োজন।
২৭ মে - ২০১১
গল্প/কবিতা:
১২০ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ডিসেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।