ছোট রানির কষ্ট

কষ্ট (জুন ২০১১)

হোসেন মোশাররফ
  • ২৩
  • 0
  • ৬৭
এক রাজার দুই রানি। কিন্তু ছেলেপুলে একটাও নেই। রাজার বয়সও একেবারে কম হয়নি; বুড়ো না হলেও মেঘে মেঘে বেলা কেটে গেছে তার অনেকটা। দেশে অফুরনত্দ সুখ থাকলেও রাজার মনে কোন সুখ নেই। দেশের প্রজা সাধারণেরও চিনত্দায় চিনত্দায় ঘুম হারাম হওয়ার দশা। রাজা দেশ বিদেশের হেকিম-কবিরাজ-গণক কোনকিছুই বাদ রাখেনি। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হয়নি। শেষে একদিন এক ভিনদেশী বৃদ্ধ লোক এসে হাজির হলো রাজদরবারে। সে রাজাকে বলল আমার পরামর্শ তুমি যদি শোন তাহলেই সব বিপদ কেটে যাবে। তারপর সে রাজার কানে কানে বলল, 'তোমার বড় রানির কাছে আছে এক ডাইনি বুড়ি। সে যাদু করার ফলেই দেশের ভবিষ্যৎ রাজা জন্ম নিচ্ছে না। তুমি কালই তোমার ছোট রানিকে নিয়ে বনে চলে যাও। তবে একটা শর্ত সেখানে তোমাকে রাজার বেশবাস ছেড়ে গরিব কাঠুরিয়া হয়ে থাকতে হবে। তাহলেই ছোট রানির গর্ভে আসবে দেশের ভবিষ্যৎ রাজা। তবে রাজপুত্রের বয়স তিন বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যনত্দ তুমি সেখান থেকে ফিরতে পারবে না।'
বৃদ্ধ এই দরবেশের কথা রাজার মনে বেশ রেখাপাত করল। পরদিনই রাজা তার রাজ্যভার ছোট ভাইয়ের হাতে ন্যসত্দ করে মনের দুঃখে ছোট রানিকে নিয়ে বনে চলে গেল। আর যাওয়ার আগে বড় রানি কে কারাগারে বন্দি করে রেখে যেতেও ভুল করল না।
রাজ্যময় হাহাকার পড়ে গেল। দেশের সাধারণ মানুষের চিনত্দার শেষ নেই। রাজা বনে নির্বাসনে গেলে দেশের কী হবে ভেবে পায় না কেউ।

খোদার পরীৰা বুঝি একেই বলে। কেননা রাজা রাজ্য আর তার সিংহাসন ছেড়ে মাটিতে নামতেই ছোট রানির কোল জুড়ে এল ফুট ফুটে এক ছেলে। ভারি সুন্দর দেখতে হল ছেলেটি। রাজপুত্র জন্ম নিয়েছে শুনলে দেশে কত আনন্দের ফোয়ারা ছুটতো। কিন্তু বনের এই নির্জন প্রানত্দরে তাদের কেউ দেখতেও এল না। অভিবাদন জানানো দুরে থাক কেউ একটা ফুলের পাপড়িও রাজার জন্য উপহার হিসাবে নিয়ে এল না। এতেও রাজার কোন দুঃখ নেই; রাজা তার প্রতিজ্ঞায় অটল। দরবেশের নির্দেশ মতো একজন সাধারণ কাঠুরিয়া বেশে রাজা বনে দিন কাটাতে লাগল।
দেখতে দেখতে দু'বছর কেটে গেল। এরমধ্যে রাজপুত্রও বেশ নাদুস নুদুস দেখতে হয়েছে। যেমন সে দেখতে হয়েছে তেমনি চঞ্চলও হয়েছে। তাকে সামলাতে যেয়ে ছোটরানি হিমশিম খেয়ে যায়। কে বলবে দেশের রাজা হয়েছে কাঠুরিয়া আর তারই ঘরে মানুষ হচ্ছে সে দেশের রাজপুত্র। তবে ছোট রানির ভারি ভয়। নির্জন এই বনে কখন না জানি কার অশুভ দৃষ্টি তার সনত্দানের উপর পড়ে। অহেতুক ভয় অনেক সময় সত্যে পরিণত হয়। হলোও তাই।


এদিকে সেই ডাইনী বুড়িও ছোট রানির পিছন পিছন বনে এসে তার আসত্দানা গেড়েছিল। একটা গাছের সাথে মাচা বেঁধে যেখানটায় রাজার কুড়ে ঘরটা ছিল; ঠিক তার উপরেই গাছের মগডালে সে থাকতে শুরম্ন করল। তার ভারি শখ সেও রানি হবে কিন্তু তার সেই শখ এতদিন অপূর্ণই থেকে গেছে। এবার সেটা কড়ায় গণ্ডায় পূরণ করার সুযোগ ষোলআনা জুটে গেল তার। দিনের বেলায় রাজা যখন কাঠ সংগ্রহ করতে বনে গিয়েছিল ঠিক তখনই ডাইনি বুড়ি একদিন রানির সামনে যেয়ে হাজির হল। তার চেহারা দেখে কে বলবে তখন তাকে ডাইনি বুড়ি। একেবারে সুন্দর নিষ্পাপ চেহারার একজন মেয়ে সেজে সে সেখানে হাজির হল। বয়সটাও তার নিতানত্দই অল্প। অথচ দেখে মনে হল বেশ অসহায় আর দরিদ্র ঘরের মেয়ে সে। তাকে দেখে ছোট রানির ভারি দয়া হল। আর ডাইনি বুড়িও এটাই চাচ্ছিল।
সে সেখানে দাঁড়িয়ে বলল, 'রানি মা, তোমার তো ভারি কষ্ট। এখানে তোমার কাজে সাহায্য করার জন্যও কী কেউ নেই?'
বনের নির্জন প্রানত্দে কিশোরী ঐ মেয়েটিকে দেখে রানি একেবারে অবাক হয়ে গেল। বলল, 'তুমি কে, কোথায় বা থাক তুমি? আমার পরিচয় বা কে দিল তোমাকে?'
ডাইনি বুড়ি এমনটাই চাচ্ছিল। আর যারা শয়তান হয় তারা মানুষ কে দুর্বল করার জন্যই নানা কৌশল খোঁজে। ডাইনি বুড়ি যখন দেখল তার প্রথম কৌশলটা বেশ কাজে লেগে গেছে তখন আর পায় কে তাকে। খুশিতে আটখানা হয়ে বলল সে, 'শুনেছি এ দেশের রাজা নাকি ছোটরানিকে নিয়ে বনবাসে আছে। তাই বনের এই নির্জন প্রানত্দরে তোমার মতো সুন্দরী মেয়েকে একাকী দেখে আমার রানির কথা মনে পড়ে গেল। আর আমার পরিচয় হল; দু'কুলে আমার কেউ নেই। একটাই মাত্র ভাই ছিল তাও দিন কয়েক আগে সাপে কেটে মরেছে। এখন কোথায় যাব কে বা আমাকে রাখবে জানিনা ; দু'চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই চলে যেতে বের হয়ে পড়েছি।'
রানির মনটা ছিল খুবই নরম। তাই সে দয়া পরবশ হয়ে বলল, 'এভাবে একা একা কখনো বনের পথে বের হতে নেই। না জানি কখন কী বিপদ এসে পড়ে। তার চে' তুমি যদি থাকতে চাও তাহলে আমাদের সাথে এখানেই থেকে যেতে পার।'
ডাইনি বুড়ি এবার ষোলআনা খুশি হয়ে বলল, 'তাহলে তো বেশ হয়। আমি তোমার চাকরানি হয়ে সারা জীবন থাকব। আর আমার এই বিপদের দিনে তুমি আমাকে আশ্রয় দিলে; একথাও কোনদিন ভুলবো না।'
ছোট রানির মনটা শুধু নরমই ছিল না মনে মনে সে বেশ উদারও ছিল। ডাইনি বুড়ির কথা শুনে সে বলল, 'তা কেন, তুমি আমার কাছে থাকবে আমার আপন বোনের মত।'
রানির কথা শুনে ডাইনি বুড়ি এবার খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। কেননা সুযোগটা বুঝি এবারই তার হাতের মুঠোর মধ্যে চলে এল। আর এভাবে এত সহজে তার কাজ উদ্ধার হয়ে যাবে সে স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। কিন্তু উপরে উপরে সে মোটেও বুঝতে দিল না রানিকে।

ছোটরানি ডাইনি বুড়িকে একটা মরা গাছের গুড়ি দিয়ে তৈরি করা কাঠের টুলে বসতে দিয়ে আপন কাজে মন দিল। তাদের ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে শুয়েছিল রাজকুমার। সেদিকে এক পলক দেখেই ডাইনি বুড়ির মনে একটা ফন্দি জেগে উঠল। আর যায় কোথায়, ডাইনি বুড়ি করল কী; ছোট্ট রাজকুমার কে কোলে নিয়ে তার আসল চেহারায় ফিরে এল। তারপর সে ছোটরানি কে বলল, 'তুমি যদি এখনই এখান থেকে চলে না যাও তাহলে রাজকুমারের মরা মুখ তোমাকে দেখতে হবে।'
ডাইনি বুড়ির কথা শুনে রানি তো রীতিমতো আকাশ থেকে পড়ল। কিন্তু তখন তার আর কিছু করার নেই। রাজকুমার কে বাঁচাতে হলে তাকে এখনই এখান থেকে চলে যেতে হবে। বাধ্য হয়ে নিজের সনত্দানের জীবন বাঁচাতে রানি বনের রাসত্দায় অজানা পথে পাড়ি জমাল। অপর কে বাঁচাতে যেয়ে নিজেই দুর্গম সেই ভয়াল পথে নামতে হল তাকে। কিন্তু পথ যত দুর্গমই হোক না কেন সত্যের কোন পরাজয় নেই। সত্য চিরকালই বিজয়ী হয়ে এসেছে, তা আগে কিংবা পরেই হোক।
ছোট রানি গভীর বনের মধ্যে ঢোকার পর পথ হারিয়ে ফেলল। এদিকে সন্ধ্যা প্রায় হয় হয়। কোন উপায় না দেখে ছোট রানি তখন একটা গুহায় যেয়ে আশ্রয় নিল। কিন্তু কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। সেই গুহায় বাস করত এক হিংস্র বাঘ। বনের সবাই তাকে ভয় করে চলত। ৰমতা আর শক্তির বলে সেই বাঘই ছিল সেই বনের রাজা। প্রতিদিন বেলা থাকতে থাকতেই বনের রাজা তার গুহায় ফিরে আসে; সেদিনই একটু সন্ধ্যা হয়েছিল এই যা-।
পথ অতিক্রমণের ক্লানত্দিতে ছোট রানি যখন ঘুমিয়ে পড়েছিল ঠিক তখনই গুহার বাইরে হালুম শুনে ছোট রানির ঘুম গেল ছুটে। আর অমনি তাকিয়ে দেখে গন্ গনে কয়লার আগুনের মতো বাঘের দু'টি চোখ তারই দিকে চেয়ে আছে। ছোট রানি তো ভয়ে আঁতকে উঠে বলল, 'এই তু-তু-তুমি কে?'
আর ঠিক সেই সময় আশ্চর্য মনে হলেও সত্যি; বাঘটা একেবারে মানুষের গলায় গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠল, 'এঁ্যা হ্যা হ্যা আমি হালুম বাঘ। কিন্তু বাপু বলি, তুমি কে গা? আমার ঘরে ঢুকে আবার আমাকেই বলছো কিনা তুমি কে? ভারি সাহস তো তোমার।'
রানি বলল, 'হঁ্যা, বিপদে পড়লে মানুষ অমনই বলে। কিন্তু তুমি বাঘ অথচ মানুষের গলায় কথা বলছ? সত্যি করে বলতো তুমি মানুষ না বাঘ?'
বাঘ তখন বলল, 'হঁ্যা, তোমরা যারা শুধু চেহারা দেখে বিচার কর তাদের কাছে আমি বাঘ। আর যারা চেহারার বাইরে ভিতরটাও দেখ তাদের কাছে আমি মানুষ।'
রানি বাঘের কথা শুনে বলল, 'ও এই কথা, তাহলে এই গুহাটা যদি তোমার বাড়ি হয়; তো এখানে ঢুকে আমি মোটেও ভুল করিনি। ভুল করেছিলাম ডাইনি বুড়ির সুন্দর চেহারা আর মন ভুলানো কথায় বিশ্বাস করে।'
বাঘ তার কথা শুনে অবাক হল। বলল,'ডাইনি বুড়ি? সে আবার কে?'
'থাক্। তাকে আর চিনতে হবে না; তবে সে এই বনেই কোথাও না কোথাও থাকে।' বলল ছোট রানি।
'যাক্ গে সে কথা, এখন বল তুমি কে? আর এখানেই বা কেন এসেছ?' বলল এবার সেই বাঘটা।
ছোট রানি তখন বলল, 'আমি এ দেশের রানি। কিন্তু কপাল দোষে আজ আমি পরিবার পরিজন হারিয়ে পথের ভিখিরি। এই হল আমার পরিচয়।'
সব শুনে বাঘ বলল, 'বুঝেছি বুঝেছি আর বলতে হবে না। তাহলে ডাইনি বুড়িই তোমার এই সর্বনাশ করেছে। এতে তোমার দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। কেননা সত্য চিরকাল সত্যই আর মিথ্যেও কোনদিন সত্য হয় না।'
তারপর বাঘ তার চিরচারিত অভ্যাস মতো মাথা উঁচু করে অজানা শত্রম্নর উদ্দেশ্যে একবার হুংকার ছেড়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করল। এতে অবশ্য ছোট রানি একটুও ভয় পেল না। কেননা সত্য অসত্য চেনার পর যখন মানুষ বিশ্বাস করে তখন তাকে আর ঠকতে হয় না। এরপর বাঘ তার বাসগৃহ গুহার চারদিকে রাগে গর গর করতে করতে বার কয়েক ঘুরে নিল। যেন সে মনে মনে নিশ্চিত হয়ে নিল শত্রম্ন আশপাশে কোথাও নেই। তারপর সে তার গুহা-মুখের সামনে বসে পড়ল পাহারায়।

আর ওদিকে ডাইনি বুড়ি! ছোট রানি সেজে বসেছিল রাজার ফিরে আসার অপেৰায়। এদিকে আবার এতসব কাণ্ডকারখানা দেখে ছোট্ট রাজপুত্রের বাকরোধ হয়ে কথা বন্ধ হয়ে গেল। রাজা ফিরে এলে ডাইনি বুড়ি বলল, 'তুমি এত দেরি করে ফিরলে আমি তো ভয়েই মরে যাচ্ছিলাম।'
রাজা ছোট রানির গলা শুনে বিষ্মিত হল। মনে মনে রাজা বলল, 'এ-তো ছোট রানির গলা নয়। কিন্তু চেহারা যে অবিকল ছোটরানির মতোই দেখতে।'
ডাইনি বুড়িও চালাক কম না। সে জানতো চেহারা যতই বদলানো যাক গলার শব্দ শুনে রাজা নিশ্চয় তাকে ধরে ফেলবে। তাই সে বুদ্ধি খাটিয়ে বলল, 'এক ডাইনি বুড়ি এসেছিল আমাকে ধরতে, আর তাতেই চিৎকার দিতে গিয়ে আমার গলা গেল ভেঙে; কিন্তু হলে কী হবে ডাইনি বুড়ি তো পালাল। এদিকে দেখনা, কী হয়েছে? সেই থেকে রাজপুত্র আর কথা বলছে না।'
শুনে রাজার চোখ কপালে উঠল। বলল, 'তাহলে তো এ জায়গাটি মোটেও নিরাপদ নয়।'
দুষ্ট লোক সুযোগের অপেৰায় থাকে। ডাইনি বুড়ি রাজার কথা শুনে মুখটা আরও শুকনো করে বলল, 'তাইতো, আমি যে কী ভয়ে ভয়ে থাকি সারাদিন। এখানে একা একা এভাবে থাকতে গিয়ে ক'বে কোথায় ডাইনি বুড়ি তুলে নিয়ে যাবে আমাকে; সেদিন ফিরে আর আমাকে পাবে না তুমি।'
রাজা পড়ে গেল এবার মহা-দুশ্চিনত্দায়। কিন্তু রাজা তো আর জানে না দুশ্চিনত্দার কারণ যা ঘটার তা ইতিমধ্যেই ঘটে গেছে। সহজ সরল লোকেরা যেমন বোকা হয় তেমনি বিপদেও পড়ে। রাজা ছিল সহজ সরল তাই ডাইনি বুড়ির কাছে বিপদে পড়াটা তার জন্য সহজ হল। খানিক ভেবে-চিনত্দে রাজা তখন ডাইনি বুড়িকেই জিজ্ঞেস করল, 'তাহলে এখন উপায় কী হবে?'
আর এটাই তো চাচ্ছিল ডাইনি বুড়ি। রাজা কে এবার হাতের মধ্যে পেয়ে ডাইনি বুড়ি বলল, 'উপায় আছে একটাই; সেটা খুব সহজ। তোমাকে কালই ফিরে যেতে হবে রাজপ্রাসাদে।'
সহজ সরল রাজা ডাইনি বুড়ির কথাই রাখল। কিন্তু বোকা রাজা বৃদ্ধ দরবেশের পরামর্শের কথা বে-মালুম ভুলে গেল। পরদিনই রাজা নকল রানি রূপী ডাইনি বুড়ি আর তার ছেলেকে নিয়ে আবার ফিরে গেল রাজ প্রাসাদে। ছোট রানি ফিরে আসার সংবাদে আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল রাজ্য জুড়ে। তার চে' বেশি আনন্দের ঢেউ বইল রাজপুত্রের সংবাদ শুনে। কিন্তু কেউ জানল না তাদের জন্য কী নিদারম্নণ দুঃখের দিন অপেৰা করে ছিল।
রাজ্য জুড়ে অশানত্দির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল। রাজ্য টা এবার ধরতে গেলে ডাইনি বুড়ির হাতেই পড়ল। কর্ম দোষে বড়রানি কারাগারে ছোটরানি বনে; আর চাই কী, ডাইনি বুড়ির এখন পোয়াবারো। ডাইনি বুড়ির পরামর্শ মতো রাজা দেশের পাঠশালা গুলো সব বন্ধ করে দিল। দেশের যত জ্ঞানী গুণী পণ্ডিত ছিল সব পুরে ফেলল কারাগারে। কেননা ডাইনি বুড়ি ভালই জানে গণ্ডমূর্খরা কেউই তাকে চিনতে পারবে না। সবাই অবাক হলো রাজার এহেন কর্মকাণ্ডে। কিন্তু কারো মুখে 'রা' শব্দটিও বের হলো না। বরং রাজার অত্যাচারের ভয়ে সবাই রাজার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে লাগল। আর এতেই ভীষণ রাগ হলো ডাইনি বুড়ির। সে ভাবল তার বুদ্ধিতেই দেশটা চলছে অথচ যত নাম ডাক সব রাজার হবে এটা মোটেও বরদাসত্দ করা যায় না। হিংসায় জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গেল তার অনত্দরটা। মনে মনে সে আর একটা ফন্দি আঁটল।
ডাইনি বুড়ি ঠিক করল রাজার প্রতিশোধ এবার সে রাজপুত্রের উপর দিয়ে নেবে। যেই কথা সেই কাজ। পরদিন থেকে সে রাতের বেলা ঘুমিয়ে থাকা রাজপুত্রের শরীর থেকে রক্ত চুরি করে খেতে শুরম্ন করল। ফলে রাজপুত্র অল্পদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ল। রাজকুমারের কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার চিকিৎসা শুরম্ন হয়েছিল আগেই কিন্তু এবার তার জীবন মরণের সমস্যা দেখা দিল। ডাকা হল হেকিম, কবিরাজ আর দেশ বিদেশের চিকিৎসকদের। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে রাজা পড়ে গেল মহা-দুশ্চিনত্দায়। রাজা আর তার আর রাজ্যে নেমে এল চরম দুঃসময়। দুঃখের কাল চাদরে ঢেকে গেল সব আনন্দ আর হাসি গান।
এতো গেল রাজা আর ডাইনি বুড়ির কাণ্ডকারখানা-

ওদিকে পরদিন সকালে ছোট রানির ঘুম ভাঙলে সে দেখতে পেল তার গুহার সামনে বাঘের চিহ্ন মাত্রও নেই। সেখানে বসে আছে বাঘের পরিবর্তে এক বৃদ্ধ দরবেশ। তার হাতে তসবি গায়ে সাদা আলখালস্না। তাকে দেখে রানি এবার সত্যিই অবাক হয়ে গেল। এই গভীর বনে মানুষ এল কেমন করে। বাইরে বেরিয়ে রানি তাকে জিজ্ঞেস করল, 'বনের এই নির্জন প্রানত্দে তুমি কে, বাবা?'
বৃদ্ধ দরবেশ তাকে উত্তর দিল, 'আমি তোমার বিপদের দিনে বন্ধু আর দুঃখের দিনের সাথি।'
'কিন্তু ! এই গভীর বনে তোমাকে তো আমি আগে কখনো দেখিনি।' বলল ছোটরানি।
বৃদ্ধ দরবেশ বলল, 'দেখেছ ঠিকই কিন্তু চিনতে পারনি। গত রাতে যে বাঘ তুমি দেখেছিলে, আমি সেই বাঘ।'
বিষ্ময়ে হতবাক ছোটরানির মুখ দিয়ে আর কথা বের হল না। আশ্চর্য হয়ে সে চেয়ে রইল দরবেশের দিকে। তাকে অবাক হতে দেখে দরবেশ কিন্তু মোটেও অবাক হল না। বরং ধীর স্থির ভাবে বলল তাকে, 'তুমি যা দেখে অবাক হচ্ছ তা আমার কাছে অত্যনত্দ সহজ। অবাক হওয়ার মতো কিছু যদি থাকে তবে তা আমি তোমার মধ্যেই দেখতে পাচ্ছি।'
সংবিৎ ফিরে পেয়ে ছোট রানি তখন বলল, 'এ আমার ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ছাড়া আর কিছু নয় দরবেশ বাবা।'
দরবেশ তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, 'তুমি দুঃখ করো না, মা। কেননা,
'এ সংসারে দুঃখ আর সুখ দুই ভাই,
তারা পরস্পর আসে আর যায়;
যারা ধৈর্য ধরে তারাই সুখের দেখা পায়।
কষ্ট দিয়েই দুঃখ কে জয় করা যায়,
এ ছাড়া আর কোন নেই তো উপায়।'

নিরাপদ জায়গা পেয়ে ছোটরানি সেখানেই সেই দরবেশের কাছে থেকে গেল। এভাবেই একে একে তার দিন গুলো কাটতে লাগল। সনত্দান হারানোর দুঃখ ভোলার জন্য ছোটরানি একটা ময়না পাখি পোষ মানাল। ময়না পাখিটা সুন্দর কথা বলতে শিখে গেল অল্প দিনেই। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি ময়না পাখিটা কিছুদিনের মধ্যেই এমন সব কথা বলতে লাগল যা কখনো কেউ তাকে শেখায়নি। সে একদিন নিজে নিজেই বলতে শুরম্ন করল,
ডাইনি বুড়ি করল চুরি
ছোটরানির সুখটা,
মনের দুখে ছোটরানির
কাটছে না রাত-দিনটা।

তারপর সে একদিন রাজপ্রাসাদে উড়ে যেয়ে রাজাকে শুনিয়ে শুনিয়ে ছড়াটি কাটতে লাগল। কিন্তু রাজা ডাইনি বুড়ির মোহজালে এমনই নিমগ্ন ময়না পাখির কথা তার কানেও ঢুকলো না। ছোটরানির সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে তার দুঃখগুলো কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিল।
কিন্তু পৃথিবীর সব দুঃখ এক করলেও মায়ের সনত্দান হারানোর দুঃখের সমান কষ্ট কখনোই হবে না। ছোট রানিও তাই প্রতিরাতে রাজপুত্রকে স্বপ্নে দেখে তার কষ্ট ভুলে থাকল। এক রাতে সে স্বপ্নে দেখল তার আদরের পুত্র সনত্দান কে এক বিরাট অজগর সাপ এসে গিলে ফেলতে চাইছে। ভয়ে ছোট রানি একটা চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ল। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর ছোট রানি দেখল অন্ধকার গুহায় সে একাকী পড়ে আছে। আশ পাশে তার কেউ নেই।
পরদিন সকালে সে দরবেশের কাছে তার এই স্বপ্নের কথা বলতেই দরবেশ তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, 'নিশ্চয়,তোমার ছেলের কোন বিপদ হয়েছে।'
দরবেশের কথা শুনে ছোটরানি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারল না । তার চোখ দিয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে এল মুক্তার মতো স্বচ্ছ পানি। রানির কান্না দেখে দরবেশের মনেও দয়ার উদ্রেক হল। নিজেকে সামলে নিয়ে দরবেশ বলল তাকে, 'তোমার মনের সব দুঃখ আমি বুঝি, কিন্তু কিছুই করার নেই আমার। এই সংসারে দুঃখ জয় করার একটাই পথ খোলা আছে আর তা হল ধৈর্য ধরা। তুমিও ধৈর্য ধরো, হয়তো তোমার কষ্ট হবে কিন্তু হারানো সুখ আবার ফিরে আসতে পারে।'
দরবেশের কথায় রানির মন নরম হল। কিন্তু মনের দুঃখ তো আর দুর হল না। তবে এই নির্জন বনে তার যে একটা আশ্রয় জুটেছে সেটাই বা কম কী। কেননা দেশে এখন ডাইনি বুড়ি কে সবাই ছোট রানি হিসাবে চেনে। সেখানে দীনহীন ছোটরানি কে দেখে যে কেউ বিশ্বাসই করতে চাইবে না সে আসল রানি। বরং জৌলুুশহীন আসলই এখন কারম্নকার্য খচিত নকলের কাছে মেকি। আর তাই রাজপ্রাসাদের চাইতে এই নির্জন বনাঞ্চল তার জন্যে এখন অনেক নিরাপদ।
মনের দুঃখ নিয়ে রানির দিনগুলো একে একে আবার কাটতে লাগল।
আরো দিন কেটে যেত তার সেখানেই। কিন্তু সনত্দানের বিপদের দিনে মায়ের মনে ঠিকই দোলা দেয়। তাই ছোট রানি আর স্থির থাকতে পারল না। সে তার দরবেশ বাবা কে বলল, 'রাজরানির বদলে যদি চাকরানি হয়েও থাকতে হয় তবুও আমি সেখানে চলে যাব, তুমি আমাকে আর বাধা দিও না।'
দরবেশ তাকে বলল, 'তোমার বিপদের কথা আমি প্রথম থেকেই সব জানি মা। রাজা যদি তার শর্তের কথা ভুলে না যেত তাহলে পরদিনই তুমি আবার তোমার সংসার ফিরে পেতে। কিন্তু যা হওয়ার নয় তা শত চেষ্টাতেও হয় না, এটাই বুঝি এ সংসারের নিয়ম। আজ তোমার সনত্দানের ঘোর বিপদের দিন উপস্থিত; মায়ের মন তাই তুমি আমার আগেই সব বুঝে ফেলেছ। চল আমিই তোমাকে সেখানে নিয়ে যাই।'
বন পেরিয়ে, ঘাট পেরিয়ে আর মাঠ পেরিয়ে যখন ছোটরানি আর দরবেশ বাবা পেঁৗছুল রাজপ্রাসাদের দরজায়। ততদিনে রাজপুত্র প্রায় মৃতু্য শয্যায়। এদিকে রাজাও ঘোষণা দিয়েছে, যে কেউ রাজকুমারের অজানা অসুখ ভাল করে দিতে পারবে; সে যা চাইবে তাই পাবে। প্রতিদিন বিভিন্ন দেশ থেকে হেকিম কবিরাজ এসে রাজপুত্রকে দেখে মাথা নিচু করে ফিরে যাচ্ছে।
প্রাসাদে প্রবেশের আগে দরবেশ তার অলৌকিক ৰমতা বলে প্রাপ্ত একটা পাথর ছোটরানির হাতে দিয়ে বলল, 'এই পাথরটা তুমি কাছে রাখবে বিপদের সময় বেশ কাজে লাগবে এটা তোমার।'
তারপর দরবেশ রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করতেই রাজা তাকে চিনে ফেলল। কেননা এই দরবেশই তাকে একদিন ছোট রানিকে নিয়ে বনে যেতে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু রাজা আজ দরবেশের পিছনেই দাঁড়িয়ে থাকা দীনহীন ছোটরানিকে মোটেও লৰ্য করল না। রাজা বরং দরবেশ কে পেয়ে আবেগের আতিশয্যে কেঁদে ফেলে বলল, 'আমাকে বাঁচাও বাবা।'
দরবেশ বলল, 'সব ঠিক হয়ে যাবে। শর্ত মতো রাজকুমারের বয়স তিন বছর পূর্ণ না করেই ফিরে আসাতে আজ তোমার এই বিপত্তি; তবে রাজপুত্রের অসুখ সারানোর ওষুধ আমি সংগে করেই নিয়ে এসেছি।'
রাজা তখন ধৈর্যহারা হয়ে বলল, 'কই এক্ষুণি দাও ওষুধ আমার হাতে। আমার রাজপুত্র যে মৃতু্যশয্যায়।'
দরবেশ তাকে বলল, 'ধৈর্য হারিও না, তবে আমার এ ওষুধ হাতেও দেয়া যাবেনা খাওয়ানোও যাবে না। আমার মেয়েটিকে রাজপ্রাসাদে স্থান দিতে হবে আর এটাই হল তার অসুখ সারার ওষুধ।'
রাজা বলল, 'বড় অদভুত ওষুধ।'
দরবেশ তখন বলল, 'অদভুত রোগের ওষুধও অদভুতই হয়।'


আসল রানি প্রাসাদে প্রবেশ করতেই ডাইনি বুড়ি তাকে চিনে ফেলল। সঙ্গে সঙ্গেই ভীষণ রম্নদ্রমূর্তি ধারণ করে সে বলল, 'তুমি এখানেও এসেছ? জান এর পরিণতি কী হতে পারে? '
কিন্তু ছোটরানি কিছু বলার আগেই এবার দরবেশের দেয়া পাথরই তার হয়ে জবাব দিয়ে দিলঃ

"আমি পাথর তুমি ডাইনি
তোমার এখানে থাকা বে-আইনি।
তুমি এখানে থাক, কেউ তা চায়নি;
তোমার কাছ থেকে কেউ কিছু পায়নি।"

পাথরের কথা শুনে ডাইনির টনক নড়ল। মুহূর্তে তার মুখটা পাংশুটে আকার ধারণ করল। ভয়ে ভয়ে তখন সে বলল, 'তোমাকে এ পাথর কে দিয়েছে?'

ছোটরানির হয়ে পাথর তার জবাব দিয়ে দিল,

"আমাকে কেউ দেইনি,
ভেবেছ তুমি ডাইনি
পার পেয়ে যাবে এমনি?"

পাথরের কথা শুনে ডাইনি বুড়ি বুঝল এখানে তার দিন শেষ। কেননা ছোটরানির হয়ে সামান্য একটা নির্জীব পাথর তার কথার জবাব দিচ্ছে। এদিকে রাজপুত্রও তার আসল মা কে ফিরে পেয়ে তার সব রোগ নিমিষে দুর হয়ে গেল। সে মা চিৎকার দিয়ে ছুটে এল ছোটরানির কাছে। সুতরাং ডাইনি বুড়িরও আর বুঝতে বাকি রইল না, এখানে থাকা এখন আর তার জন্যে বিশেষ নিরাপদ হবে না। তখন সে ভাবল এই সুযোগে পালাতে না পারলে নিশ্চয় সে ধরা পড়ে যাবে রাজার প্রহরীদের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে সে একটা চামচিকা হয়ে জানালা দিয়ে পালাতে গেল। কিন্তু ছোটরানির হাত থেকে পাথর ছুটে বেরিয়ে তার পিছু নিল। সে যেদিকেই যায় পাথরও সেদিকে যেয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে একই কথা বলতে লাগল। শেষে বাধ্য হয়ে চামচিকা ফিরে এসে ছোটরানির পায়ে পড়ল। ছোটরানি কে ডাইনি বুড়ি অনেক কষ্ট দিলেও ছোটরানি কিন্তু তাকে একটুও কষ্ট দিল না। কারণ ছোট রানির মনটা ছিল অনেক বড় আর বড় মনের মানুষরা কখনো প্রতিশোধ পরায়ণ হয় না। ছোটরানি তাকে আলতো করে হাতে তুলে এনে বলল, 'তোমাকে আমি একদিন আশ্রয় দিয়েছিলাম তাই তুমি আমাকে একটু কষ্ট দিলে কিন্তু আমি তোমাকে কোন কষ্ট দেব না। তুমি এখান থেকে এখন চলে যাও আর কোনদিন এসোনা এখানে।'

চামচিকা তাই করল। দুষ্ট লোক একবার সুযোগ পেলে আর দাঁড়ায় না সেখানে। ততৰণে রাত নেমে এসেছিল, চামচিকা রূপী ডাইনি বুড়ি অন্ধকারে তার ডানা মেলে শূন্যে কোথায় হারিয়ে গেল। এতসব ঘটনা রাজপ্রাসাদের অনত্দঃপুরে ঘটে গেলেও রাজা কিন্তু তার কানা কড়ি কিছু্ই জানল না। রাজা জানল শুধু এতটুকুই, দরবেশের রেখে যাওয়া মেয়েটি কোথায় হারিয়ে গেছে; তার ঠিকানাও কেউ আর জানে না।
তারপর যা হওয়ার ছিল তাই হল। রাজপুত্র সুস্থ হল দেশেও আবার সুখের বন্যা বয়ে গেল। ছোটরানিও এই আনন্দের দিনে বড় রানি কে নিজে যেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত করে আবার ফিরিয়ে আনল রাজ প্রাসাদে। কিন্তু ডাইনি বুড়ি সেই যে গেল; বড় রানি দুরে থাক, আর কারো পৰেই কোনদিন সম্ভব হয়নি তাকে আবার রাজপ্রাসাদের ধারে কাছে নিয়ে আসে। বড় রানিও অবশ্য হাড়ে হাড়ে বুঝেছিল দুষ্ট লোককে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার পরিণাম। কেননা সুযোগ পেলে দুষ্ট লোক তার উপকারীর উপকার তো করেই না বরং ৰতি করে। আর যারা সহজ সরল বোকা তাদের জন্য চাই কী, নিজর্ীব পাথরও একসময় কথা বলে।
আর তোমরা আশ্চর্য হও আর নাই হও; সেই বোকা আর সহজ সরল রাজা কিন্তু আজও জানেনা কালও জানল না ডাইনি বুড়ির কথা। বরং সে ভেবেছিল কী জানো? রাজা ভেবেছিল অনেকদিন হয়ে যাওয়াতেই বোধহয় ছোটরানির গলার স্বরটা হঠাৎ ভাল হয়ে গেছে। আর! আর রাজপুত্রের রোগ-বালাই দুর হওয়ার কারণেই ছোটরানির মনটাও আবার ভাল হয়ে গেছে। সেজন্যেই সে বড় রানিকে যেমন কারামুক্ত করল দেশের প্রজাদেরও আবার আগের মতোই ভাল বাসতে শুরম্ন করেছে। দেখো মজা!
ওদিকে আবার, বোকা সোকা আর সহজ সরল ছোট রানি কিন্তু দরবেশের দেয়া পাথর হারিয়ে ফেলল। আর এমন হারানই হারাল, কোনদিন খুঁজেও পেল না সে ওটা। শুনে তোমরা এতে দুঃখ করোনা, বোকারা চিরকাল এমনই হয়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
হোসেন মোশাররফ আবারও বলছি খুব ভাল লাগল / আপনার ভাল লাগার মুল্য আমার কাছে অনেক বেশি / ধন্যবাদ নিন এবং ভাল থাকুন @ আহমেদ সাবের
আহমেদ সাবের আপনাকে কথা দিয়েছিলাম, বন্ধু সংখ্যার সব লেখা পড়বার পর আপনার গল্প গুলো পড়বো। হ্যাঁ, কথা রাখতে এলাম, পড়লাম এবং ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম।
হোসেন মোশাররফ কারিগরী ত্রুটির কারণে এই গল্পে কিছু কিছু শব্দ একেবারেই বোধগম্য হইনি পাঠকের | দেরিতে হলেও তার সমাধান এখানে দিলাম | অফুরন্দ =অফুরন্ত | চিনত্দায় =চিন্তায় | পর্জনদ =পর্যন্ত | পরিলা =পরিক্ষা | নসতদ =ন্যস্ত | প্রানত্দরে =প্রান্তরে | ক্লানত্দিতে =ক্লান্তিতে | শ্ত্রুন্নোর =শত্রুর | কারন্নকার্জ =কারুকার্য | বর্দাসদ= বরদাসত | সনত্দান =সন্তান | ........ইত্যাদি ইত্যাদি
হোসেন মোশাররফ যারা এই গল্পটি পড়ছেন এবং মন্তব্য লিখে যাচ্ছেন তাদের সবাইকে আমার তরফ থেকে জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা / ধন্যবাদ সবাইকে ........
হোসেন মোশাররফ @প্রজ্গা মৌসুমী > মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ / সাধারনত রূপকথায় যে ডাইনি বুর্হী সৃষ্টি করা হয় সে কিন্তু মানুষ না কেননা সে যখন তখন তার রূপ বদলাতে পারে / সুতরাং ভাল হওয়ার সম্ভবনা তার শুন্যের কোঠায় / কিন্তু সামাজিক গল্পে কোনো চরিত্র কে ওই নামে অভিহিত করা হলে সে মানুষ এবং ভালো মন্দ দুটোয় তার চরিত্রে দেখানো উচিত বলেই মনে হয় আমার / সুন্দর মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ জানাই আপনাকে ....
প্রজ্ঞা মৌসুমী বেশি ভাল লেগেছে গল্পের ছোট ছোট ম্যাসেজগুলা। 'বড় মনের মানুষেরা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়না' কিংবা 'সংসারে দুঃখ জয় করার একটাই পথ খোলা আছে আর তা হল ধৈর্য ধরা।' বাচ্চারা এমনকি আমরাও পড়লে, কিছু না কিছু শিখব। আমার অবশ্য কষ্ট লেগেছে বোকা রাজার জন্য এত কষ্ট পেল দুই রাণী, রাজপুত্তুর, আর সে কিছুই বুঝতে পেলনা। মাঝখানে ছোট ছোট কবিতাগুলো ভাল লেগেছে। আর বেচারী ডাইনী বুড়িরা কি সব সময় খারাপই থাকবে? কখনো কি লেখকের গল্পে ভালো হয়ে আসবেনা? ভালো-মন্দ মিলিয়েই তো সৃষ্টি। আপনি সত্যি ভাল লিখেন। আপনার কল্পনা শক্তি খুব ভাল। লেখাও খুব সৃজনশীল। আপনার জন্য শুভ কামনা।
হোসেন মোশাররফ @ ওবায়দুল হক > শুধু দিতীয়বার কেন ইচ্ছা হলে হাজার বারও আসতে পারেন এতে কিছু মনে করার নেই রে ভাই .....এবং আবারও আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি / কারণ ধন্যবাদ টুকু ছাড়া আপনাকে দিয়ার মত আমার কাছে এই মুহুর্তে আর কিছু নেই .....
ওবাইদুল হক আপনার রুপ কথার গল্প আবার আসলাম পড়তে । কারন একবার পড়ে মনে তৃপ্তি মেটিনি । স্যরি দাদা মাইন করবেনা । আর ভোটেরতো জায়না নাই কি করে দিই । ধন্যবাদ । মন চাইলে আমার কাছে আবার ঘুরে আসিও । ধন্যবাদ ।
উপকুল দেহলভি ভিশন ভালো লাগলো, আপনার জন্য অসাধারণ, শুভ কামনা রইলো

২৫ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪