হতাশ যুবক

মা (মে ২০১১)

মজনুর রহমান
  • ১৯
  • 0
এই নিয়ে আমি তৃতীয়বার মা'র গায়ে হাত তুললাম। না তুলে উপায় কি। ওরা আমার লেখাপড়ার খরচ দিতে পারে নি বলেই তো আমি হতাশ যুবক হয়েছি। তেমন পড়াশোনা জানি না বলে কেউ আমাকে কোন কাজও দেয় না। হতাশ যুবকদের একটু নেশা-ভাং না করলে কি করে চলবে? সমাজে মুখ দেখাতে পারবো কিভাবে। সবাই বলবে কোন কাজও করে না আবার একটু বখাটেও হতে পারে না। আমি তাই প্রতিদিন এক পুরিয়া গাঁজা আর পয়সার অভাবে ফেন্সিডিলের বদলে দেশি একটা কাশের সিরাপ খাই। কিন্তু আমার মূর্খ মা এটা বোঝে না। সে আমাকে প্রতিদিন পঞ্চাশটা টাকা দিতে পারে না। চাইলেই তার গোস্বা হয়। রাতে যখন বাড়ি ফিরি তখন শুরু হয় ফ্যাঁ ফ্যাঁ কান্না। এই কান্না-কাটি ব্যাপারটা আবার আমার সাথে যায় না। আমি শালা নিজেও কাঁদতে পারি না আমার এসব সহ্যও হয় না। এই মহিলা প্রতিটি দিনই একজন হতাশ যুবকের স্বাধীন আনন্দে বাধা তৈরি করছে।
আজ সকালেও আমি তার কাছে পঞ্চাশ টাকা চাইলাম। আজ কান্না-কাটি না করে সে প্রায় তেড়ে এলো। আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আমাকে বললো, এসব করলে তুই তোর মরা বাপের মাথা খাবি। আমি তো শালা অবাক। আমি খাব গাঁজা, আমি কেন আমার মরা বাপের মাথা খেতে যাব। আর সেটা কি একটা নেশার জিনিস হলো? মা'র বকর বকর যখন কিছুতেই থামছে না তখন আমি তাকে ঘা দুয়েক লাগিয়ে দিলাম। মা দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।
পাশের বাড়ির দু'জন মুরুব্বী এসময় রিল নিলেন। দু'জনে ধরে আমাকে মারতে এলেন। পরে আমার ছোট চাচাও বেরিয়ে এসে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন। অবাক হয়ে দেখলাম মা ওদেরকে আমার গায়ে হাত তুলতে নিষেধ করছে আর হু হু করে কাঁদছে। চাচা মাকে কড়া হুশিয়ারি দিলেন এই বেয়াদব ছেলেকে যেন বাড়িতে ঢুকতে দেয়া না হয়।
আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। ফারুককে দুলাভাই ডেকে ওর কল্কিতে টান দিয়ে, এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে অনেক রাতে চুপি চপি বাড়ি ফিরলাম। মনটা কেমন যেন খচখচ করছে। দরজা চাপিয়ে শুয়ে পড়লাম। ভাবছি মা যদি আর আমার সাথে কথা না বলে, তাহলে কি হবে?
বাবা মারা যাবার পরে যতটুকু জমি সব মায়ের নামে। আমার সাথে কথা না বললে তার কোন ক্ষতি নেই কিন্তু আমার তো সাড়ে সর্বনাশ। মনে হলো কেন এমন করতে গেলাম। মা যদি আমাকে রেখে কাল নানাবাড়ি চলে যায়? অথবা আমাকে যদি ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করে?
হঠাৎ দরজায় অল্প শব্দ হলো। আমার আত্মা কেঁপে উঠলো। মা বুঝি আমাকে বলবে কাল আমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হবে। কয়েকবার ডাকার পর সাড়া দিলাম। মা প্রায় ফিসফিস করে বললো, ভাত খাবি আয় বাবা।
এবার আমি ভেউ ভেউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রনীল চমৎকার... অত্যন্ত বাস্তব সম্মত লেখা... তবে গল্পটা আরো ডাল পালা ছড়াতে পারত...
শিশির সিক্ত পল্লব আমি তো শালা অবাক। আমি খাব গাঁজা, আমি কেন আমার মরা বাপের মাথা খেতে যাব। আর সেটা কি একটা নেশার জিনিস হলো? ...........হা হা হা....চরম দোস্ত....সত্যিই চরম.....আগে ভালো করে পড়লাম.....ভাল লাগল... দয়া করে একটা কিছু করব....কিন্তু কি করব...ভোট ছাড়া আর কি করতে পারি....তবে ডাইলগটা আজকের সেরা নিশ্চয়
মৃন্ময় মিজান বাস্তবতা উঠে এসেছে। সমাজে এমন যুবক আসলেই আছে। তবে আপনার লেখার ধরন আরো ভালো করতে হবে। শুভ কামনা রইল।
মাহমুদা rahman খুব সুন্দর গল্পটা...খুব তবে র একটু বর্ণনামূলক হলে ভালো হত
পল্লব শাহরিয়ার এর আগে আপনার গল্প পড়ার সুযোগ হয়নি আমার, আজ পড়লাম। ভালোই লিখেছেন তবে মা'কে মারার ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলে গল্পটা অসাধারণ হয়ে উঠত। পরেরবার গল্প লেখার সময় অবশ্যই কিছু কিছু ব্যাপারে নজর দিবেন আশা করছি।
মামুন ম. আজিজ ভয়ংকর এক সন্তানের ভয়াবহ প্রকাশ। নিখুঁত ।
এস, এম, ফজলুল হাসান ভালো লাগলো গল্পটি , মায়ের গায়ে হাত তোলা আপনার ঠিক হয়নি
মৌশুমি আক্তার শিমুল অসাধারন আপনার গল্প টা
মা'র চোখে অশ্রু যখন মা যদি না থাকে পৃথিবীতে কেমন হত এই পৃথিবি ...
সূর্য আসলে বলার কি আছে। লেখকের ইচ্ছাইতো গল্পের গতি ও প্রকৃতি। ভালই লিখেছ............................মায়েরা আসলেই এমনই

২৫ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪