বাড়ীর সামনে জেলা পরিষদের দশ ফুট চওড়া মেঠো পথ (গোপাট)। কোথাও উচু কোথাও নিচু এবড়োথেবড়ো । বর্ষার পানি সবে নেমে গেছে । সড়কের নরম মাটি ভেদ করে নতুন ঘাস গজিয়ে উঠছে । কোথাও কোথাও লেগে থাকা কচুরী পানার কচি পাতা ভেদ করে বেগুনী আর সাদার মিশেলে মেজেন্ডা রং এর ফুল ফুটে উঠছে । সড়কের অপরপারের নিচু জমিতে আমনের চাড়া রোপন করা হয়েছে । বাবা আর মেজো দু’ভাই মিলে চাড়ার ফাঁকেফাঁকে গজিয়ে উঠা আগাছা সাফ করছে । জমিতে ছোপছোপ পানি আর কাঁদামাটিতে একাকার । আমি সড়কে দাড়িয়ে দাড়িয়ে বাবা ভাইদের কাজ দেখছি আর ছাগল ছানার মত তিড়িংবিড়িং লাফাচ্ছি । একটু দুরে একদল সাদা বক কাদা পানিতে ধ্যান ধরে বসে আছে শিকারের অপেক্ষায় । একটা ছোট মাছ নড়েচড়ে উঠলেই খপ করে তুলে তা মুখে পুড়ে নিচ্ছে। এক জোড়া ফিঙে জমিতে পোতা একটি কঞ্চির উপর বসে খুনসুটি করে চলেছে । কখনো সখনো দু একটি পোকামাকড় উড়তে দেখলেই উড়ে গিয়ে তা ধরে এনে গিলে খাচ্ছে । দুটো চিল শিমুল গাছের মগ ডালে বসে আছে । শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে খোলা মাঠের দিকে । মাঝে মাঝে ছো’মেরে তুলে আনছে ছোট বড় মাছ । বাড়ীর পাচশত গজ উত্তরেই রেল লাইন পুব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলেছে সমান্তরাল । সামনে দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠ । মাঠের মাঝ বরাবর দিয়ে দুটোগ্রাম এফোড়ওফোড় করে রেললাইন বয়ে চলেছে । ফসলী জমির উপর দিয়ে দেখা যাচ্ছে একটি ট্রেন পুবথেকে পশ্চিমে ছুটে যাচ্ছে । অজগর সাপের মত ফুসফুস করতে করতে এগিয়ে আসছে ।
জেলা পরিষদ সড়কটি রেললাইনের কাছ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিন দিকে গ্রামের শেষ মাথায় গিয়ে ঠেকেছে ।আমাদের বাড়ীর সীমানার উত্তর পাশ থেকে মেঠোসড়কের একটি শাখা মাঠ পেরিয়ে সামনের গ্রামে গিয়ে বড় সড়কের সাথে মিশেছে । যার একটি অংশ দক্ষিনমুখী থানা সদরের দিকে ও অন্য অংশটি পুবদিকে রেল ষ্টেশনের দিকে চলে গেছে ।মাঠের মাঝ বরাবর একটি খাল।খালের উপর নড়বড়ে একটি কাঠের সাঁকো। খালটি একবেকে কয়েকটি গ্রাম পেরিয়ে মেঘনায় গিয়ে পড়েছে । গ্রামের কৃষান কৃষানীরা জমির জো থাকতে থাকতে আমন চাড়া রোপনে ব্যস্ত । যেভাবে পানি টান দিয়েছে আজ কালের মাঝে চারা রোপন করতে না পাড়লে এ বছর আর জমিতে ধান ফলানো সম্ভব হবে না । কেউ ক্ষেতে হাল দিচ্ছে কেউ জমির আইল বাধছে। নাওয়া খাওয়া ভুলে সবাই কর্মব্যস্ত । চারি দিকে হাকডাক, চিৎকার চেচামেচি দ্রুত কাজ সাড়তে হবে । সাড়া গ্রাম জুড়ে কর্মচাঞ্চল্য কারো দিকে কারো নজর দেয়ার একদন্ড ফুরসত নেই ।
বাড়ীর ভেতর থেকে বড় ভাইজান এসে হঠাৎ আমার পেছনে দাড়িয়েছে । তিনি ঢাকায় থাকেন সরকারী চাকরি করেন । তিনি আমায় বললেন- এই তুই ফুলবাবুর মত দাড়িয়ে আছিস কেন ? বলেই ভাইজান কাপড় গুটিয়ে বাবা ভাইদের সাথে কাদাপানিতে নেমে পড়লেন । বাবা বললেন আরে আরে করছিস কি ? তোর নামার দরকার নেই । আজিজ ছোট মানুষ দাড়িয়ে থাকবেনা তো কি করবে । আমি চাই আজিজও তোর মত লেখাপড়া শিখে চাকরি বাকরি করুক শহরে থাকুক নিজের জীবন নিজে গড়ুক । আমার কাছে সব সন্তান একই সমান । এরা দুজন লেখা পড়া শিখলো না । নিজের কপাল নিজেরাই পুড়িয়েছে, এতে আমার কি করার আছে । তাদের তো কৃষি কাজ করেই খেতে হবে তাই তারা কৃষি কাজ করছে ।যার যা কর্মের ফল তাকে তা ভোগ করতেই হবে । আজিজ যদি লেখা পড়া না করে একদিন সেও বাধ্য হবে কৃষিকাজ করতে । বাচার তাগিদে সংসারের হাল ধরতে ।
পাশের বাড়ীর তোতলা ছালামত হাটু পানিতে বাঁশ বেধে পাটের আশ ছাড়াচ্ছে । আমি এগিয়ে গেলাম তার দিকে । কিরে ছালামত কি করছিস ? পাট তো এখনো ভাল মত পচেনি । কাঁচা পাট ছাড়াচ্ছিস কেন ? পাট ভাল মত পচতে তো মনে হয় আরও দু চারদিন লাগবে । কি-কি করমো ক’ বা-বানের পানি যে-যে ভাবে টান দি-দিছে কাইল তো পা-পানিই পামুনা পাট ধো-ধোয়নের । তাই বইলা কাঁচা পাট ছিল্লা পাটগুলি নষ্ট করবি । এই পাট বাজারে কেউ কিনবো ? এক কাম কর এই গার্তটার চার দিকে বান্দ (বাধ) দে । যাতে পানি সরতে না পারে । পানি সরতে না পারলে পাটের জাক ও ঠিক থাকবে পাট ছিলে ধুইতেও পারবি । পাট গুলিও ভাল হবে বাজারে দামও পাবি । হ ক-কথাটাতো ঠিকই ক-কইছস । বলেই সে পানি থেকে উঠে বাড়ী গিয়ে কোদাল নিয়ে এসে বান্দ দিতে শুরু করলো ।
পাশের বাড়ীর চামেলী বড় আম গাছটার আড়াল থেকে হাতের ইশারায় আমায় কাছে ডাকছে । আমি তার কাছে যেতেই সে আমায় হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল তারসাথে বউ জামাই খেলায় সামিল করতে । ছোট ছোট হাড়িতে সে ভাত ও নানান রকম তরকারী রান্না করে বসে আছে আমায় খাওয়াবে বলে । এই যে শুনেন আমার রান্না শেষ খেতে আসেন । আমি যে এখনো নাহাইনি । দাও আমার গামছা আর লুঙ্গীটা দাও দেখিনি । এই নেন, যান তারাতারি নদী থেকে ডুব দিয়ে আইসেন । ততক্ষনে আমি আপনার খাবার বাড়ি । আমি উঠুনে ডুব দিয়ে আসতেই সে বালুর ভাত, বিভিন্ন প্রকার পাতার তরকারী সহকারে আমায় খেতে দিয়ে পাখার বাতাস করতে ব্যস্ত হয়ে গেল । কচুপাতার শাকটা মুখে দিয়ে বললাম- এসব কি রানছিস ? এসব খাওয়া যায় ? বলেই ভাতের থালাটা ছুড়ে ফেললাম । চামেলী পাখা রেখে কাদতে বসে পড়লো । হঠাৎ কান্না রেখে বললো এই চল আমরা এক্কাদোক্কা খেলি । উঠানে দাগ টেনে ঘর করা হলো । চামেলী বললো আমি আগে চালবো । আমি বললাম না আমি আগে চাল বো বেধে গেল ঝগড়া খেলা পন্ড । চামেলী আমায় জোড়ে খামচি কেটে দিল ভোদৌড় । চামেলী মেয়েটা সারাক্ষন আমার পিছপিছ ঘুরে । আমি যখন যেখানে যাই সে সেখানে গিয়ে হজির । আমি স্কুলে গেলে সে স্কুলে না গেলেও স্কুল মাঠে গিয়ে লাফালাফি করে । চামেলীর সাথে মাঝে মাঝে খুনসুটি না করলে আমারও শান্তি লাগে না । চামেলীকে খেপিয়ে আমি বেশ মজা পাই ।
বিকাল চারটা চারদিক অন্ধকারে চেয়ে গেল । ঈশান কোন থেকে ঝড়ো বাতাশ বইতে শুরু হয়েছে । বাড়ীর সামনে গোপাটের পাড়ে সবার বড় বড় আমগাছ । প্রতিটি বাড়ীর পোলাপান আমতলায় জড়ো হয়েছে । ঝড়ের গতি যত বাড়ছে গাছ থেকে টুপটুপ করে আম পড়ছে । পাশের বাড়ীর চামেল তাদের নিজের গাছতলায় না গিয়ে আমার পাশে আমাদের গাছতলায় এসে দাড়িয়েছে । যেই আমি একটা আম ধরতে যাই সেও সেই আমটা ধরতে হাত বাড়ায় । কোন কোনটা সে আমার আগে ধরে ফেলে । এই চামেলী তুই আমাদের গাছ তলায় এলি কেন ? তুই তোদের গাছ তলায় যা । না আমি যাব না । আমি এখানেই থাকবো । দেখ ভাল হবে না কিন্তু ? তোর সব আম আমি কেড়ে নেবো । তখন বুঝবি মজা । সাহস থাকলে রাখ । আমি তোদের গাছের আমই টুকাবো তাতে তোর কি ? কেন আমাদের গাছের আম টুকাবি কেন ? অমনি । আমার ইচ্ছা । ঐ দেখ তর কুঁচের সব আম আমি রেখে দেবো কিন্তু । ফকিরনি কোন খানকার । নিজেদের গাছ থাকতে অন্যের গাছতলায় আসে । বলেই আমি তার কুঁচের আম কেড়ে নেবার জন্য তার কুঁচে হাত লাগালাম । দেখ আজিজ ভাল হবে না বলে দিচ্ছি । আমার হাত ছাড় । ছাড়ুম না তুই কি করবি ? কি করবো দেখ- বলেই চামেলী আমার হাতে জোড়ে এক কামর দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে দেৌড়ে পালাল । ঝড়ের গতি আরও বেড়ে গেল । মড়মড় করে কয়েকটি গাছ ভেঙ্গে পড়লো । গাছতলায় থাকা আর ঠিক হবেনা । তাই একেএকে সবাই বাড়ী মুখো রওয়ানা হয়ে ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলাম ।
বাড়ীর সামনের সড়কে দাড়িয়ে আছি । আমার পাশে দাড়ানো পাশের বাড়ীর ছেলেটাকে বললাম- এই যা তো আমাদের বাড়ী থেকে আশিককে ডেকে নিয়ে আয় । সে একদিন আমার কাছে পাট কাটা, পাট পচানো, পাটের আশ ছাড়ানোর গল্প শুনে বলেছিল বাবা পাটকাঠি থেকে পাট কি ভাবে ছাড়ায় । আর পাট এমন সুন্দরই বা হয় কেমন করে । আজ তাই তাকে দেখাবো বলেই ডেকে পাঠালাম ।
মনে হয় হেমন্তকাল চলছে । সামনে বিস্তৃর্ণ আধ পাকা ধান ক্ষেত । এখানে দাড়ালেই আমার বাবার কথা মনে পড়ে । মনে হয় বাবা যেন প্রতিটি ধানের শীষে স্নেহের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছেন । বাবা গত হয়েছেন আজ অনেক বছর হলো । শহর থেকে গ্রামের বাড়ী এসে এখানে দাড়াই শুধু বাবার স্মৃতি গুলোকে হাতরাবার জন্যে । এখানে এলেই আমি যেন আমার বাবাকে খুজে পাই । বাবা ধান ক্ষেতের মাঝ খানে দাড়িয়ে আগাছা সাফ করছে । দক্ষিন পাড়ার হাকিম কাকা সড়ক ধরে বাড়ী ফিরছেন । কাকার বয়স হয়েছে অনেকটা কুজো হয়ে পড়েছেন । চোখেও বোধ হয় একটু কমই দেখেন । তবুও আমায় দেখে চিনতে পেরে বললো- কিও সাব বেডা কহন আইলা ? আমি বললাম এইতো কাকা কাল সন্ধ্যায় । কাকা কেমন আছেন ? কোত্থেকে আসলেন ? আমি ভাল আছি বাবা । তয় তোমার কাহির শরীলডা বেশী ভালা না । গেছিলাম পরেশ ডাক্তরের কাছে । বাবা তোমার পোলাপাইন রা কেমুন আছে ? কয়দিন আছতো নাকি আইজ ই আবার চইলা যাইবা । না কাকা কাল যাবো আজ আছি । তয় চল আমার লগে । তোমার কাহি সবসময় তোমার কতা কয় তোমারে দেখতে চায় । বলেই উনি আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে চললেন । বাড়ী পৌছেই তিনি বলতে লাগলেন দেখ টুনির মা কারে নিয়া আইছি । ঘরে গিয়ে দেখি বিছানার মধ্যে নির্জিব একটা লম্বা দেহ মড়া সাপের মত পড়ে আছে । আমাকে দেখতে পেয়ে তার চোখে সে কি অপরূপ আনন্দের ঝিলিক । ময়লা তেল চিট চিটে ছেড়া কাঁথার একটা বিছানায় তিনি শুয়ে আছেন । আমি গিয়ে তার পাশে বসলাম । আলতো করে তার ডান হাতটা আমি হাতে তুলে নিলাম । শিশুকালে কাকী আমায় অনেক কোলেকাখে নিয়ে আমাদের বাড়ী থেকে তাদের বাড়ী নিয়ে এসে নিজ হাতে খাইয়েছেন । উনার কোন ছেলে সন্তান না থাকায় আমাকে তিনি নিজ সন্তানের মত স্নেহ করতেন । আমায় বুকে তুলে নিয়ে আদর সোহাগে ভরিয়ে দিতেন । আমার গায়ের ঘ্রাণ শুকে শুকে তৃপ্তি অনুভব করতেন । তিনি আমার হাতের ছোয়া পেয়ে যেন আগেরই মতন আবার সচল হয়ে উঠলেন । কাকাকে বললেন কইগো টুনির বাপ আমার বাবারে কিছু খাইতে দাও । না কাকি আমি এখন কিছু খাব না এই মাত্র নাস্তা করে এসেছি। আপনি এত অসুস্থ তা তো আমি জানতাম না । রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম কাকা বললো আপনি অসুস্থ তাই শুনে খালি হাতেই চলে এলাম । আমার জন্য কিছু আনুন লাগবো না বাবা আমি কিছুই খাইতে পারি না । তুমি আইছ আমি অনেক খুশি হইছি । এখন মরলেও আমার কোন আফসোস থাকবো না । বাবা তুমি আমার লাইগ্গা খালি দোয়া কইরো । তোমার ছেলেডা কেমুন আছে ? ছেড়াডারে লইয়া আইতা আমি দেখতাম । ছেড়াডা কত বড় হইছে ?
বৈষয়িক তথাকথিত সুখের আশায় আমরা নিজেদের সব সময় ব্যস্ত রাখি । বিচিত্র এই পৃথিবীর রূপরস সব ভোগ করা যায় কিন্তু শেষ দিনে এর একফোঁটা জলও সাথে নেয়া যায় না এ কথাটা আমরা ভুলে যাই । মাটির এই দেহটি নিয়ে আমাদের যত বাহাদুরী কিন্তু শেষ দিনে তা মুল্যহীন । মাটির দেহ মাটিতেই মিশে যাবে পচেগলে শেষ হয়ে যাবে । কাকীকে দেখে কেন জানি আমার কেবল একথা গুলোই মনে এলো । শিশুকালে দেখা কাকীর আদর মাখা মুখ আজ মলিন বিবর্ণ । আর হয়তো কয়টাদিন এই পৃথিবীর রূপরস দেখে যাবেন কিন্তু আগের মত আনন্দ উচ্ছাস ভরা হাসি মাখা মুখটি খোঁজে পাওয়া যাবে না । যে কাকীর হাসি মাখা মুখটা দেখার জন্য আদর সোহাগ পাবার জন্য উন্মুখ থাকতাম সে কাকীকে দেখে আজ আমি স্তব্দ, বাকরুদ্ধ ।
হঠাৎ স্বপ্নটা টুটে গেলো ঘুম ভেঙ্গে গেল । পাতলা কাথার নিচে শরীরটা ঘেমে নেয়ে উঠছে । পানি পিপাসায় বুকটা হাহাকার করছে । বালিশের নিচ থেকে মোবাইলটা বের করে সময় দেখলাম ভোর ছয়টা বেজে গেছে । পাশে রাখা পানির বোতলটা টেনে নিয়ে ঢগঢগ করে পানি খেলাম । উ: কি স্বপ্নটাই না দেখলাম । ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয় । জানালা গলিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি ঘণ কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে চারদিক । ভোরের আলো ফুটলেও তা বুঝার কোন উপায় নেই । এমন দু:স্বপ্ন কেন দেখলাম । এর অর্থ কি সাতপাচ ভাবছি । এক সময় বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম । মনকে প্রবোধ দিলাম স্বপ্ন স্বপ্নই এর কোন অর্থ হয় না । বিছানা থেকে গিন্নিকে ডেকে উঠালাম । লুঙ্গি টাওয়েল নিয়ে বাথ রুমে ঢুকে গেলাম ।
বাথ রুমে গোসল করছি আর ভাবছি এটা কি স্বপ্ন দেখলাম ? প্রথম অংশটা মনে হচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধের আগের ঘটনা । আমার ছেলেকে ডাকার অংশটা থেকে মনে হচ্ছে বর্তমান । কাকা কাকির আন্তরিকতা মনে হচ্ছে গ্রাম বাংলার আদি রূপ । কাকীকে শয্যাশায়ী দেখে মনে হচ্ছে একদিন আমাদের সবাইকে এমনি করে বৃদ্ধ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়তে হবে । কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে গ্রামে কিংবা শহরের স্নেহ, মায়া মমতা, আথিথেয়তা দেখাবার দিন ফুড়িয়ে আসছে দ্রুতই । কৈশোরে দেখা গ্রাম বাংলা আর বর্তমান গ্রাম বাংলার মাঝে যোজন যোজন ফারাক পরিলক্ষিত হয় । বাড়ীর সামনের মেঠো গোপাটটি আজ পিচঢালা পথে রূপান্তরিত হয়েছে । আমবাগান উজার হয়েছে অনেক আগেই । গরু লাঙ্গল জোয়াল এর স্থান দখল করেছে ট্রাক্টর । ঢেকি কাইল শিয়াট এর স্থান নিয়েছে ধান ভাঙ্গানো মেশিণ ।
তবুও স্বপ্ন দেখি নিজ গ্রাম, খালবিল, ফসলের মাঠ । মা মাটি মানুষকে যাদের আদরে সোহাগে ভালবাসায় গড়া এ দেহ মন । শৈশবকৈশোরের সুখদুখের স্মৃতি ভেসে বেড়ায় মনের পর্দায় । ভালবাসায় সিক্ত হয় ভেতর বাহির ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানি হক
চির সবুজ চির দুরন্ত কৈশোর অনেক অনেক ভালোলাগলো বশির ভাই গল্পটি । কৈশোরের উচ্ছল ভরা জীবন কি দারুণ ভাবেইনা বলে দিলেন । শুধু কষ্ট লাগলো ...পাতার সালুনের প্লেট আজিজ ছুড়ে ফেলল বলে । ইশ কত কষ্টই না পেল বেচারি চামেলি ।। আর আমতলায় সাথে আম নেবার জন্য গালি ও কপালে ছিল! সত্যি খুবই কষ্ট লাগলো :) যাইহোক সব মিলিয়ে দারুণ গল্পটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই ভাইয়া ।
এস, এম, ইমদাদুল ইসলাম
আসলে এরকম স্বপ্ন অনেকের জীবনেই ঘুমিয়ে আছে । এটি স্বপ্ন নয়, এ হচ্ছে জীবনের গল্প । আর সে জীবন এভাবেই টেনে নিয়ে যায় আমাদের নাড়ির কাছে । মাটিতে পুতে রাখা কঞ্চির উপরে একজোড়া ফিংগের খুনশুটি যার চোখে একবার ধরা পড়েছে , সে তো এরকম স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত থাকতে পারে না। খুব ভাল লাগল ।
বশির আহমেদ
দুটো জায়গায় ভুল রয়ে গেছে-যেমন ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে এর স্থলে ”শুরু হয়েছে”, চামেলী এর স্থলে “চামেল” লেখা হয়েছে বলে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত । পাঠকদের সবাইকে ‘বইতে শুরু করেছে’ এবং ‘চামেলী’ পড়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ।
মিলন বনিক
দাদা, প্রতিটি বাক্যে মা, মাটির সোঁদা গন্ধ লেগে আছে....আমার ধারনা এভাবে মানুষের জীবন জীবিকার কথা তুলে আনাটায় প্রকৃত সাহিত্য....খুব ভালো লাগলো...শুভকামনা....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।