সাদা

কষ্ট (জুন ২০১১)

তন্ময় আহমেদ
  • ২৩
  • 0
শুভ আনমনে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিল।
একটা গাড়ি তাকে অতিক্রম করে একটু সামনে যেয়ে থমিল। কিন্তু তা শুভ লক্ষ করল না। হাঁটতে হাঁটতে গাড়ির সামনে দিয়ে যেতে থাকলে গাড়ির ভেতর থেকে একটা মাথা বের হয়ে তাকে জিজ্ঞাস করল , শুভ না-কি ?
শুভ থামল। মানুষটার দিকে তাকাতেই বিস্মিত হল। আসিফ তুই ?
আসিফ গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে বলল , ভেতরে আয়।
না-রে গাড়িতে উঠবো না।
কেন ?
এমনি । হাঁটতেই ভাল লাগে।
আস্তে আয় , একটু কথাবার্তা বলি। অনেক দিন পর দেখা।
শুভ আসিফকে না করতে পারল না। অনেকদিন পর কোন বন্ধুর সাথে দেখা , তাই বেশি কথা না বাড়িয়ে শুভ গাড়িতে উঠল। গাড়ির ভেতরের পরিবেশের সাথে শুভ তেমন সম্পৃক্ত না। গাড়ির ভেতরে এসি চলছে। শুভ তেমনটা স্বস্তি বোধ করছে না। তবুও সে এ সম্পর্কে কোন ভাব প্রকাশ করছে না।
তুই কি এখনও আগের বাসায় থাকিস ?
হ্যাঁ।
আসিফ ড্রাইভারকে ঠিকানা বলল। ড্রাইভার সেই অনুসারে গাড়ি চালাচ্ছে।
শুভ চুপ করে আছে। তার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। দূরের কোন মসজিদে মাগরিবের আজান হচ্ছে।
গাড়ি শুভর বাড়ির দিকে যাচ্ছে।
তোর খবর বল। কোথায় চাকরি করিস ? আসিফের জিঞ্জাসায় শুভ কোন উত্তর দিল না। চুপ করে রইল।
আসিফ ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পারল। একটু বিস্ময়ের সাথে জিঞ্জাস করল , চাকরি পাসনি ?!
শুভ নিচু স্বতঃতে উত্তর দিল , না।
আসিফ একটু সময়ের জন্য চুপ হয়ে গেল।
শুভ আসিফকে তার চাকরি সম্পর্কে জিঞ্জাস করার প্রয়োজন মনে করল না , কারণ শুভ জানে আসিফ তার বাবার কোম্পানিতেই চাকরি করে।
আসিফ বলল , তোর মোবাইল নাম্বার দে তো।
আমার মোবাইল নেই। শুনে আসিফ একটু বিস্মিত হল।
তোর বাসার নাম্বার দে।
বাসায়ও কোন টেলিফোন নেই।
এমন কোন নাম্বার কি নাই যে আমি তোর সাথে করতে পারব?
আমাদের পাশের বাসার ফোন নাম্বার দিলে কি হবে?
আপাতত তাই দে।
শুভ নাম্বার বলল , সাথে সাথে আসিফ নাম্বারটা মোবাইলে শেভ করে নিলো।
মোবাইল সম্পর্কে শুভর কোন ধারণা নেই , তাই সে বুঝতে পারছেনা আসিফের হাতে কোন মোবাইল। তবে এতটুকু বুঝতে পারছে আসিফের হাতের মোবাইলটা খুব দামী।
আসিফ শুভকে তার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।
শুভ আকাশের দিকে তাকাল।সন্ধ্যার আকাশের আবছা নীল আভা এখনও রয়ে গেছে।
বাসার ভেতর ঢুকতে শুভর ইচ্ছা ;করছে না। তবুও সে ঢুকল।
প্রায়;সন্ধ্যায় বাসায় এসে শুভ একটা দৃশ্য প্রায়ই দেখে ; তার মা তার ছোট বোনকে মারছে।
শুভ প্রত্যেক দিনের মতই চুপচাপ তার ঘরে চলে গেল। কখনও সে কারণ জানতে চায় না। যেন অভ্যাস হয়ে গেছে।
হাত-মুখ ধুয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে শুভ আবার বাহিরে চলে গেল।



সোয়া সাতটা বাজে।
বইখাতা খুলে তেষ্টা পড়া রিভিসন দেয়ার জন্য বসেছে। একটু পরেই তার স্যার আসবে।
তেষ্টা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। পড়ালেখার প্রতি তার যথেষ্ঠ মনোযোগ। ফলাফলও ভালো।
দরজার কড়া নাড়ার শব্দের সাথে সাথে তেষ্টা দৌড়ে যেয়ে দরজা খুলল। মৃদু হাসি মাখা মুখে বলল ,আসসালামু আলাইকুম স্যার।
শুভ উত্তর দিতে দিতে ঘরে ঢুকল।
তেষ্টা তার পরিবারের সাথে ছোট দু'টা রুমের বাসায় থাকে। তেষ্টার রুম আর ওর পড়ার রুম একই। অন্য রুমে ওর বাবা_মা থাকে। তেষ্টার সাথে ওর ছোট ভাই থাকে।
শুভ আসন গ্রহণ করল। বলল , বইখাতা বের কর , তাড়াতাড়ি।
তেষ্টা হেসে দিয়ে বলল , স্যার আপনের জন্য একটা জিনিস আনি , একটু বসেন। শুভ কিছু বলার আগেই তেষ্টা অন্য ঘরে দৌড় দিল। একটা পিরিজে করে মিমির দু'টা টুকরা নিয়ে আসল। শুভর সামনে রেখে বলল, স্যার খান। বলে তেষ্টা সেখান থেকে একটা মিমি নিয়ে নিজে খেয়ে ফেলল। এই দুষ্টুমিটা সে প্রায়ই করে। দুইটা এনে একটা সে নিজে খেয়ে ফেলে। শুভ মৃদু হেসে অন্য মিমিটা খেল।
পড়ার এক ফাঁক দিয়ে শুভ তেষ্টাকে জিজ্ঞাস করল , আচ্ছা , এত দামী মিমি কোথায় পেলে ? ওই ঘরের তোমার ওই আঙ্কেরটা আনছে নিশ্চই ?
জী স্যার।
উনি কে ?
আমার বাবার বন্ধু।
উনি তো প্রায়ই আসেন। কেন ?
আঙ্কেল আসলে আমাদের বাসায় থাকেন।
তোমার সাথে ?!
না।
তাহলে ?! শুভ একটু বিস্মিত হল।
ওই ঘরেই থাকেন। আম্মুর সাথে।
আর তোমার আব্বু ?!
আঙ্কেল আসলে আব্বু বাসায় রাতে আসে না। আর আঙ্কেল যে রাতে আসেন সেই দিন আম্মু ওই ঘরের দরজা লাগিয়ে অনেক কাঁন্দে।
তুমি বাংলা বই বের কর।
জি স্যার।
শুভ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল , তুমি বই বের করে পড়া রিভিসন দিতে থাকো , আমি বাহির থেকে দশ মিনিট পর আসতেছি।
জি আচ্ছা স্যার।
শুভ তেষ্টার বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছে। যেন কিছু ভাবছে।
মানুষের জীবন এমনও হতে পারে। কিছু সত্য মন মানতে না চাইলেও যে মানতে হয় , শুভ আজ এমনই এক সত্যের মুখোমুখি হয়েছে।
শুভ কেন যেন নিজেকে কোন একটা দ্বিধার মাঝে বাঁধার মত পাচ্ছে।
শুভ আবার তেষ্টাকে পড়ানোর জন্য বাসায় ঢুকলো।


বিকেলের শুরু হয়েছে। রোদের আলেতেও মিষ্টি মিষ্টি ভাব এসে গেছে। মজিদ সাহেব বাড়ির ভেতর থেকে উঠানে এসে দেখলেন শুভ সিঁড়িতে বসে বই পড়ছে।
কি-রে , কি বই পড়ছিস ?
এইতো , একটা গল্পের বই পড়ছি। শুভর কণ্ঠে তার বাবার মতই কোমলতা আর মিষ্টি ভাব।
মজিদ সাহেব শুভর পাশে বসলেন। শুভ চুপচাপ বই-এর দিকে তাকিয়ে আছে , কিন্তু পড়ছে না। একটু সময় চুপ থেকে মজিদ সাহেব বললেন, চল , আমরা তিন জন কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
আর কে ? সেতু ?
হ্যাঁ।
সেতু কি যেন একটা কাজ করছিল , দৌড়ে এসে বলল, আমাকে নিয়ে কোথায় যাবা ?
বলব না। চল যাই। মজিদ সাহেব একটু মজা করে বললেন কথাটা।
পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাবা মেয়ে আর ছেলে বের হয়ে গেল। শুভর মা ঘুমচ্ছিলেন , তাই যাওয়াটা হল , উনি জাগনা থাকলে যেতে দিতেন না। সায়েলা জানেন মজিদ সাহেব তাদের নিয়ে কোথায় যাবেন। তিনি পুরোন স্মৃতিকে মজিদ সাহেবের ভিতর আবার জাগতে দিতে চান না।
মজিদ সাহেব মাঝখানে আর দুই পাশে দুইজন। সেই ভাবেই হাঁটছেন যেভাবে তাদের ছোটবেলায় নিয়ে হাঁটতেন। তিনি দু'জনের হাতই ধরে রেখেছেন। হাঁটছেন আর তাঁর ছোটবেলার বিভিন্ন আনন্দের মুহূর্তের কথা বলছেন।
সেতু দেখতে তার মায়ের মতই সুন্দর হয়েছে। বাবার কথায় তার মুখের হাসির ফলে একটা অদ্ভুত লাবণ্যতা ফুটে উঠেছে।
দেখতেও তাকে খুব সুন্দর লাগছে।
মজিদ সাহেব তাদের নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটা ছোট নদীর পাড়ে গেলেন।
বাবা , তুমি আমাদের সবসময় এইখানেই নিয় আসো কেন ? শুভ জিঞ্জাস করল।
এইখানে আমি আমার মায়ের সাথে ছোটবেলায় আসতাম , আমার মা মারা যাওয়ার পরও এখানে আমি প্রায়ই আসতাম।
কেন ? সেতু জিঞ্জাস করল।
মন খারাপ থাকলে আগে চিঠি লিখতাম , মাকে প্রশ্ন করতাম , তারপর চিঠিটা নৌকা বানিয়ে এখানে এসে ভাসিয়ে দিতাম। আর মা আমার স্বপ্নে এসে উত্তর দিতেন।
সত্যি বাবা ? সেতু জিঞ্জাস করল।
হ্যাঁ মা।
বাবা একটা কথা বলি ? জিঞ্জাস করল শুভ।
হ্যাঁ বল।
আমিও এখানে মাঝে মাঝে আসি।
তারপর তোর মায়ের সাথে এখানেই আমার পরিচয় , এখানেই আমাদের ভালোবাসা। তাই , এই জায়গাটা আমার খুব প্রিয়। এখানে আমার সুখ দু:খ সবই আছে।
মজিদ সাহেব সেই আগের মত এক ঠোঙ্গা বাদাম কিনলেন , নিজেই শুভ আর সেতুকে বাদামের খোসা ফেলে দিতে দিতে হাঁটতে লাগলে। তারাও বাবার সাথে হাঁটছে , বাদাম খাচ্ছে , গল্প করছে।


সেতু বারান্দায় বসে পড়ছিল। সামনে তার ইন্টার পরীক্ষা। গভীর মনোযোগ।
তাদের বাসার পাশে একটা একতলা বাসা আছে। সেখানে তাদের বাড়িওয়ালা থাকে। সেতুদের বাসাও পাকা বাড়ি , কিন্তু ছাদ টিনের। দুই রুমের বাসা।
বাড়িওয়ালাদের কাজের মেয়ে এসে সেতুকে বলল, আপা , শুভ ভাইয়ের ফোন আইছে।
ভাইয়া ফোন করছে ? জিঞ্জাস করল সেতু।
না , হ্যাঁর বন্ধু ফোন করছে।
আচ্ছা যাও , মাকে পাঠাচ্ছি।
জি , বলে কাজের মেয়েটা চলে গেল।
মা দেখতো ভাইয়াকে কে যেন ফোন করছে। সেতু বারান্দায় বসেই জোরে জোরে তার মাকে বলল।
আমি নামাজে দাঁড়িয়েছি তুই যা।
আচ্ছা। বলে সেতু বিরক্তি ভাব নিয়ে পড়া রেখে ফোন ধরতে গেল।
প্রায় আধ-ঘণ্টা পর সেতু কথা শেষ করে ফিরল।
এসে দেখল , তার মা বারান্দায় দাঁড়িয়ে তসবি জপছেন।
সেতু এসে পড়া শুরু করল। সায়েলা তসবি জপা শেষ করে সেতুকে জিঞ্জাস করলেন , কি-রে এতক্ষণ কথা বললি ?
আসিফ ভাই ফোন করছেন। তোমার খবর কি ? শুভ কই ? কখন পাওয়া যাবে ওকে ? তোমার বাবা মা কেমন আছেন ? এইরকম আলতু-ফালতু কথা বলতে বলতে আধা ঘণ্টা।
ও।
এখন আর কথা বইলোনা। আমাকে পড়তে দাও।
আচ্ছা পড়। সায়েলা আর কথা না বলে আবার তসবি জপতে শুরু করলেন।
একটু পরই আসরের আজান দিল।

দুই দিন পর ঐ একই সময় আবার বাড়িওয়ালার কাজের মেয়ে এসে বলল যে আসিফের ফোন আসছে। সায়েলা এই সময়টাতেই নামাজ পড়েন , তাই এবারও সেতু ফোন ধরতে গেল।
আধা-ঘণ্টা পর সেতু ফিরল। তার চোখ-মুখ রাগে লাল হয়ে আছে। দেখল তার মা আজ ঘরের ভেতরেই জায়নামাজে বসে তসবি জপছেন। সেতু বারান্দায় চুপচাপ বসে রইল , যেখানে বসে সে পড়ছিল।

মজিদ সাহেবের হার্টের সমস্যা আছে। টাকার জন্য ঠিক মত চিকিৎসা হচ্ছে না। শারীরিক অবস্থা তেমন ভালও না। পেনসনের টাকা নিয়ে স্কুল অফিসে সমস্যা করছে। দুই মাসের বাড়িভাড়া দিতে পারছেনা। দুই তিনটা ছাত্র পড়িয়ে কোন রকমে দিন চালাচ্ছেন। মজিদ সাহেবের কোন আত্মীয় নেই যে তাকে সাহায্য করবে। চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন , পাওনাদাররা টাকার জন্য অনেক বিরক্তও করছে।
এক পাওনাদার এসে তার সাথে অনেক রাগারাগি করে গেছে। মজিদ সাহেবের প্রেশার বেড়ে এখন তিনি বিছানায়। অবস্থা খুবই খারাপ। ঔষধ খেয়ে ঘুমচ্ছেন।
সেতু টিচারের বাসায়। মজিদ সাহেব অসুস্থ ছিলেন তাই সেতু সকালে না যেয়ে বিকালে গেল।
সায়েলা আসরের নামাজ পড়ছিল।
ছাত্র আসার সময় হয়েছে। মজিদ সাহেব তখনও ঘুমচ্ছেন। একজন ছাত্রও এসে গেছে। ছাত্র দু'জনের সাথে মজিদ সাহেব খুব বন্ধু ভাবাপন্ন। স্যারকে ঘুমাতে দেখে ছেলেটা তাঁকে জাগানোর জন্য দুষ্টামি করে কানের কাছে গিয়ে চিৎকার করে বলে উঠেন , স্যার , উঠেন।
মজিদ সাহেব আৎকে উঠেন। সাথে সাথে হার্ট অ্যাটাক করেন। ছেলেটা ভয়ে পালিয়ে যায়। সায়েলা নামায শেষ করে আসতে আসতে দেরি হয়ে যায়।

কয়েকদিন পর।
সেতু টিচারের বাসায় পড়তে গেছে।
আবার বাড়িওয়ালার কাজের মেয়ে এসে সেতুকে না পেয়ে সায়েলাকে বলল , খালাম্মা শুভ ভায়ের বন্ধু আবার ফোন করছে। আপারে চায়।
সায়েলা বিষয়টা বুঝতে পারলেন না। বললেন , তুই যা আমি আসতেছি।
কাজের মেয়ে চলে গেল।
সায়েলা ঘড়িতে দেখলেন , সাড়ে বারটা বাজে। তিনি ফোন ধরতে গেলেন।
সায়েলা দেড় ঘণ্টা পর ফিরলেন। এসে দেখলেন সেতু এসে গেছে।
কোথায় গেছিলা মা ? দেখার সাথে সাথে জিজ্ঞাস করল সেতু।
কিছুক্ষণ উপ থেকে সায়েলা উত্তর দিলেন , আসিফ ফোন করেছিল। তাই কথা বলতে গিয়েছিলাম।
সেতু চুপ হয়ে গেল। একটু সময় পর বলল , ওহ্ , তাই না-কি ? ভাল।
সায়েলা এক নজরে সেতুর দিকে তাকিয়ে আছেন। সেতুও তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর সায়েলা বললেন , আসিফ আমার কণ্ঠ বুঝতে পারেনি , ভাবছে তুই।
সেতুর চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কিছু বললনা। শুধু তাকিয়ে রইল।
আমি ওকে আজ রাত আসতে বলেছি। বলে সায়েলা মুখে কাপড় চেপে অন্য ঘরে চলে গেলেন। তিনি চিৎকার করে কাঁদছেন।
সেতু দাঁড়ানো থেকে মেঝেতে বসে পড়ল। তার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে তো ঝরছেই।

রাত দেড়টা বাজে।
একটা সাদা গাড়ি শুভর বাসার সামনে এসে থামলো।
সেতু বুঝতে পারল যে তার যাওয়ার সময় হয়েছে। সে ভাল কাপড় পড়ে তৈরি ছিল।
সেতু চলে গেল।
সায়েলা সবই দেখলেন। আর মুখে কাপড় চেপে চোখ দিয়ে ঝরাচ্ছেন। কোন শব্দ হতে দিচ্ছেননা , যাতে শুভর ঘুম না ভাঙে।
শুভ কিছুই জানলনা।

পরের দিন সকালে সেই সাদা গাড়িটা আবার শুভর বাসার সামনে এসে থামল।
সেতুকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।
যেন তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। আস্তে আস্তে করে গেটের ভিতরে ঢুকল। সায়েলা যেন সেই অপেক্ষায়ই ছিলেন। দৌড়ে এসে সেতুকে জড়িয়ে ধরলেন।
সেতু শুধু এতটুকুই বলল , মা , তুমি এমন কেন ?
দু'জন দু'জনকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল।

এক সপ্তাহ পর শুভ বাসায় একটি চিঠি আসল।
শুভর জ্বর। তাই বাসায় সে।
চিঠিটা খুলে পড়ে সে এক লাফ দিয়ে সে সোয়া থেকে উঠে বসল।
তার চাকরি হয়েছে। আসিফের কোম্পানি থেকে চাকরির জন্য চিঠি এসেছে।
কিন্তু , এই আনন্দের কথা কাকে শোনাবে ?
মাকে ছয় দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় যেন চলে গেছে। সেতু কেমন যেন চুপচপা হয়ে গেছে। কারও কথা শুনে না , আবার কোন কথাও বলে না। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে।
মায়ের জন্য আর বোনের অবস্থা দেখে চিন্তায় শুভর এই জ্বর।
পরের দিনই শুভ চাকরিতে জয়েন্ট করল। সাথে সাথে কিছু টাকাও পেল।
সন্ধ্যায় বাসায় ফিরল। সেতুর একসেট কাপড় এনেছে। সেতু তখনও চুপ।

আজ শুভ নতুন কাপড় পড়েছে।
এক ব্যাগ চকলেট কিনে তেষ্টার বাসায় গেল।
দরজা খুলেই তেষ্টা অবাক স্বরে চিৎকার দিল , বলল , স্যার , আপনাকে তো খুব সুন্দর লাগতেছে।
শুভ একটু মুচকি হেসে তেষ্টার হাতে চকলেটের ব্যাগ দিতে দিতে ঢুকতে ঢুকতে বলল, নাও, এইটা তোমার জন্য।

শুভ জানে না তার এই হাসি তার কাছ থেকে কি কি নিয়ে গেছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
উপকুল দেহলভি গল্পটি অসাধারণ রকমের ভালো লাগলো; গল্প বলার ধরন অনেক সুন্দর; আপনাকে আমার ঘরে আমন্ত্রণ;
মোঃ আক্তারুজ্জামান অনেক সুন্দর লিখেছেন- আরও লিখুন এই কামনা রইলো|
Samir Majumder This is very trajedic story
আহমেদ সাবের প্রতিটা পর্ব যেন সিনেমা/নাটকের এক একটা দৃশ্য। হৃদয়ে দাগ কাটে। বর্ণনার অনাধিক্যের কারণে গল্পটাকে অনেকটা চিত্রনাট্যের মত মনে হয়েছে। খুব সুন্দর এবং বাস্তবমুখী একটা গল্প।
Muhammad Fazlul Amin Shohag Valo Laglo Tobe r Akto Gocano Hole Valo Hoto
Al Rabby Uuf! God. Amon jano r karo na hoy.
MIsty ONEK valo laglo....... Oshadharon ekta golpo......
ওবাইদুল হক ভাইয়া কষ্টের রং কোন ধরনের হয় তা আপনী আপনার গল্পের মাধ্যমে বুছিয়ে দিয়েছেন । অসাধারন । যদি মন চাই আমার প্রতিদানের কষ্ট দেখে আসিও । ধন্্যবাদ ।
সাজিদ খান দারুন লিখেছেন আমার কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ রইলো
মামুন ম. আজিজ কাহিনী আর মুহু মুহু নাটকীয়তা ভালই। দারিদ্রতার কারনে দেহবিনিময়েরন বিষযটা বারবারনা প্রকাশিত হযেছে। শ্লীল ভঙ্গিটা ভালো। তবে লেখার বর্ননা শৈলীতে কাচা হাতের ছাপ স্পষ্ট। একটু তাড়াহুড়া যেন বাক্য গঠনে। ..আশা করি ভবিষ্যতে আরও সুন্দর বর্ননায় নতন কোন সুন্দর কাহিনী এমন করেই পড়ার সুযোগ দেবেন।

০১ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪