বৃদ্ধাশ্রমের করিডোর

মা (মে ২০১১)

রিমন
  • ৫৫
  • 0
  • ৮১
(বৃদ্ধাশ্রমের সকল বাবা-মার জন্য)

বৃদ্ধাশ্রমের করিডোর আজ কাঁনায় কাঁনায় ভরপুর,
দুঃসহ যাতনা, ঘৃণা, ভালবাসার ফাঁসি-চারদিকে শুধু কর্পূর,
যত্নে লালিত স্বপ্নের মানুষগুলির অযত্নে বিদায়ের শেষ ঠিকানা- এই করিডোর;
শুধু প্রয়োজন এক চিলতে স্নেহমাখা রোদ্দুর।

সামাদ স্যার- এক নামে চিনত তাকে,
মানুষ গড়ার এক কারিগর;
বড় বড় পদে ছাত্ররা আসীন,দেশের মুখ করে উজ্জ্বল,
অথচ স্যারের মুখখানা আজ ধূসর-মলিন-অনুজ্জ্বল।

দুই ছেলে আর এক মেয়ের ছোট্ট এক সংসার,
বিলাসিতার অভাব থাকলেও, ছিলনা কোনো হাহাকার;
ছেলে-মেয়ে আজ মানুষ (!) হয়ে যে যার গন্তব্যে বাসর সাজায়,
সময় যে নেই স্ত্রী-হারা বাবার দিকে ফিরে তাকায়।

যে বাবার ভয়ে সন্ধ্যা হলেই বসত পড়ার টেবিলে,
সে বাবা আজ সন্তানভয়ে নেমেছেন ভৃত্যের লেভেলে।
পুত্রবধূর অমানবিকতা আর অমানুষিকতার রোষানলে পড়ে,
বিচারপ্রার্থী বাবা তাকিয়ে ছেলের দিকে "হা" করে।

বউয়ের আগ্নেয় দৃষ্টি চিতায় ছেলের শুধু নির্বাক মুখ,
বাবার যে বুকে লালিত ছোট্ট "বাবু", অশ্রুতে ভাসে আজ সেই বুক।
নির্বাক বাবা, নিয়ে ছোট ঝোলা, করেননা কোনো মন্তব্য,
বৃদ্ধাশ্রমের করিডোর আজ সামাদ স্যারের শেষ গন্তব্য।

দীননাথ বাবু- অফিসের এক, মস্ত অফিসার;
একটায় ছেলে প্রকাশ আর স্ত্রী মাহামায়াকে নিয়ে তার সংসার,
৬৫ বছর অবধি তারা সুখগাহনে মত্ত,
বজ্রপাতে মহামায়া মৃত, বজ্রাহত দীননাথ ছেলেকে দিলেন স্বত্ব।

বজ্রপাতে স্ত্রী-চিতাগ্নি সম্পাদিত-দীননাথ বজ্রাহত,
তখনও দীননাথ ভাবতে পারেনি তারও দিন সমাগত!
স্ত্রী-চিতার আগুন নিভে যায়-জ্বলে উঠে দুঃখ দাবানল,
একেলা দীনু-নিজেকে গুটিয়ে-এককোণে ঢালে অশ্রুজল।
যে দীননাথের এক হুংকারে বাঘ আর হরিণ জল খেত এক ঘাটে,
সেই দীননাথ অশ্রুকুটিরে চোখ করে ঘোলাটে।

প্রকাশের অপ্রকাশিত রূপ, ক্ষণে ক্ষণে চমকায়,
প্রতিবাদ করা হয়না যে দীনুর, সে যে বড় অসহায়।
ভেবে ভেবে দীনু রাত্রি কাটায়, হয়ে যায় বিষণ্ণ ভোর;
দ্বোর খোলে দীনু, অপেক্ষায় তার- বৃদ্ধাশ্রমের করিডোর।

বৃদ্ধাশ্রমের করিডোরে আজ তীল ধারণের ঠাঁয় নাই,
হাজার হাজার সামাদ আর দীননাথ আজ সেখানে আশ্রয় চায়।
বৃদ্ধাশ্রমের একপাশেতে সাড়ে তিন হাত জায়গা আছে যে রাখা,
সবারই এক চাওয়া- করিডরে না হোক, ওখানে জায়গা পাকা!

বৃদ্ধাশ্রমে বাবাদের মত আছেন অনেক মা,
ছোটবেলা যারা স্কুলে পাঠাতেন আমাকে-তোমাকে পরিয়ে জামা;
আজ তাদের ভালবাসা আর আবেগের হয়েছে দাফন,
পায়ে ধরি-একবার গিয়ে দেখ-"মা" নয় যেন কাফন।

প্রতিটাক্ষণ অপেক্ষায় তারা, যদি আসে খোকা-খুকী ;
একটিবার আয়রে কোলে-সারাদিন উঁকি-ঝুঁকি।
দূর হতে আমার অবয়ব দেখে ভাবছে এসেছে খোকা,
আহারে সরল বাবা-মা! আজও কেন এত বোকা!!

আমার নেত্রদ্বয় বেয়ে অশ্রু নামছে আবেগে অবিরত,
হে খোদা! তোমার কাছে স্নেহশীল পিতা-মাতার হৃদয়ের দাম কত?
আমি আজ ছেলে-আমি কাল বাবা-আমারও কি কালো ভোর?
আমিও কি তবে অগ্রিম দিয়ে কিনব করিডোর?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রওশন জাহান আমিও কি তবে অগ্রিম দিয়ে কিনব করিডোর? নির্মম এক বাস্তবতা .লেখার বিষয়বস্তু অসাধারণ .তবে আমার মতে , নির্মানের দুর্বলতার কারণে ঠিক কবিতা হয়ে উঠেনি অনেকটা গল্প হয়ে গেছে. সামনে আরো ভালো লিখবেন এরকম ব্যতিক্রম বিষয় নিয়ে আশা করছি .
মামুন ম. আজিজ বিষণ্ন সুমনের কথা বেশ লেগেছে। অন্ত্যমিল এত সুন্দর কবিতটার জন্য একমাত্র দূর্বলতা এখানে। তবুও প্রচষ্টো বেশ ভালো।
Akther Hossain (আকাশ) বৃদ্ধাশ্রমে বাবাদের মত আছেন অনেক মা, ছোটবেলা যারা স্কুলে পাঠাতেন আমাকে-তোমাকে পরিয়ে জামা; আজ তাদের ভালবাসা আর আবেগের হয়েছে দাফন, পায়ে ধরি-একবার গিয়ে দেখ-"মা" নয় যেন কাফন।/// অনেক ভালো লাগলো ///
সূর্যসেন রায় থুব ভাল লিখেছেন ।আশা করি কষ্ট সংখ্যায় আপনার একটা ছবি দেখতে পাব ।
রিমন দেহলভি ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
রিমন কৃতজ্ঞতা ap আপনার প্রতি @ সূর্য
রিমন আপনাকে অনেক ধন্যবাদ Khondaker Nahid হোসাইন@ নাহিদ হোসাইন
রিমন পাশা ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
উপকুল দেহলভি আমি আজ ছেলে-আমি কাল বাবা-আমারও কি কালো ভোর? আমিও কি তবে অগ্রিম দিয়ে কিনব করিডোর? অসাধারণ।

২৫ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪