বড় পরিবার

পরিবার (এপ্রিল ২০১৩)

নিরব নিশাচর
  • ২১
-তোমার দয়া মায়া বলতে কি কিছুই নেই ? আজকে খাব কি ? রান্না হবে কখন ?

-তোমার যেখানে ইচ্ছে খাও গিয়ে। ঘড়ে আজ হরতাল। চুলায় আগুন জ্বলবে না, থালা বাসন নড়বে না।

-আরে শুনো প্লিজ, সরকার গঠনের আগেই হরতাল তো অসাংবিধানিক! একি রাম রাজ্য পেলে তুমি?

কে শুনে কার কথা! অগত্যা কোন উপায় না দেখে রানা ফোন দিল পাশের বিল্ডিঙে থাকা ছোট বোনের বাসায়। শোন, তোর ভাবী আজ নির্বাচনী শোক পালন করছেন, আজ তোর এখানে দুটো খাব। আমি আসছি।

-তাই নাকি ভাইয়া, ভাবী কি খুব কাঁদছে ?

-আরে গুটলি, তোর ভাইয়া খিদেয় মরছে। সেটা নিয়ে আগে ভাব।

-ভাইয়া শোন, তুমি বরং এসো না। আজকে একটু কষ্ট কর প্লি......জ। তোমারও অনশন করা উচিত। আমি এখন ভাবছি আমার ঘরেও ধর্মঘট হবে। অতি সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে আমাদের দলকে আজ হারানো হয়েছে ভাইয়া আমি এর তীব্র থেকে তীব্রতর নিন্দা জানাই।

তীব্র অপমানের আঘাতে এমনিতেই ফোন কেটে গেল রানা'র। দেশের নির্বাচনের প্রভাব ঘড়ের চুলোয় এসে পরবে এমনটা বুঝেনি সে আগে! বসে বসে কিছুক্ষন ভাবল নিজে উপোষ ছিলাম ভালো এখন বোনজামাইটাও উপোষ গেল। যাই হোক, রাত বাড়ার আগেই একটা কিছু করতে হবে। নিচ তলার ভাবির বাসায় গিয়ে নির্বাচনী আলাপ জুড়ে দিলে কেমন হয়? একবার হলেও তো খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করবে যদি কোন কর্মসূচী না থাকে আরকি। আজকাল কোথায় যে কি চলে বুঝা বড় মুশকিল!

পরদিন সকালে সরকারী ছুটির আমেজ চোখে নিয়েই ঘুম ভাঙ্গল রানা'র। যদিও তার অনেক আগেই ঘুম ভেঙ্গেছে রিমি'র, ফেসবুকে পরে আছে সে। বেড টি দেখতে পেয়ে নিশ্চিত হল রান্না ঘড়ের তালা খুলেছেন বেগম। প্রতিক্রিয়াশীল সহধর্মিণীর প্রতি রানা'র আবেগ অফুরন্ত কিন্তু প্রকাশ খুবই কম। স্বভাবগত ভাবে রানা অন্তর্মুখী ও ভীষণ আবেগী। আর রিমি পরিবারহীন এক মেয়ে, বিয়ের পর মা মারা যাওয়ায় মামা চাচা ছাড়া কেও নেই পৃথিবীতে।

-আচ্ছা বলতো সারাদিন ফেইসবুকে কত পারো তুমি? নতুন করে ডাঃ রিনা রায়কে কি কি খোঁচা দিলে একটু বল, হেসে হেসে মর্নিংটাকে গুড করি।

-সাত সকালে তোমার এর চেয়ে ভালো কিছু কি মুখে আসলো না? নাস্তা তৈরি আছে টেবিলে খেয়ে নাও। আর শুনো দুপুরে আজ বাহিরে খাবো, আজ তোমার জন্মদিন।

-ওমা, এই কি অত্যাচার! বছরে কয়বার জন্মদিন আসে আমার? তাও আবার তোমার মনমত সময়ে...?

-এবছর কমবারই এসেছে। আগামী বছর পুষিয়ে নিবো তুমি টেনশন নিও না সোনা।

-জনমশত্রু ডাঃ রিনা রায়ের ঝাল ইদানিং আমার উপর দিয়ে খুব মিটাচ্ছ। তোমার এই ফেবু বান্ধুবীকে কোনদিন পেলে এক হাত দেখে নিব আমি। চেনা নেই জানা নেই সারাদিন খুচাখুচি।

যাই হোক, বেশী কথা বাড়িয়ে লাভ নেই রানা জানে। চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানা ছাড়ে সে। মনে মনে ভাবতে থাকে রান্না ঘড়ের একটা ডুপ্লিকেট চাবি এবার না বানালেই নয়। তবে এর জন্য দরকার সুগভীর পরিকল্পনা। নারী নেতৃত্বের সংসার, সবকিছুতেই থাকতে হয় বেশ সতর্ক!

রানা-রিমি'র সংসারে কোন সন্তান নেই। সমস্যাটা কার জানার আগ্রহও নেই তাদের। ভালবাসার কমতি হয় এমন কোন সংবাদ টাকা দিয়ে কিনতে চায় না তারা। দুজনেই মনে করে দোষটা তাদের নিজের। এভাবেই চলছে।

সন্ধ্যায় রিমিকে ভীষণ ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। রানা সিগারেট হাতে রিমির খুব কাছে এসে দাড়ায়। এক হাতে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে- জানটুস'টা কার কথা ভাবছে? স্বামীর বাহুডোরে রিমি এক অন্য মেয়ে। চুপ করে দাড়িয়ে থাকে সে। আধো আধো অন্ধকারে রিমি'র ছলছল চোখ ঠিকই নজরে পরে যায় রানা'র। বুঝে নিতে বাকি থাকে না এটা গম্ভীর সময়। রিমির ব্রেনের ভিতর একটা টিউমার বাসা বেঁধেছে দীর্ঘদিন। চিকিৎসাও চলছে তবে পর্যাপ্ত না। রানাকে এই বিষয়ে জানাতেও ভীষণ দেরী করেছে রিমি।

রাতে ব্যাথাটা আরও বাড়ল। এক অসহ্যকর ব্যাথায় সারারাত কাটল রিমি'র। সকাল হতেই অফিসে ছুটি নিয়ে রিমি'কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসে রানা। এবার অনেক বড় ডাক্তার অনেক বড় ব্যাপার। আজকাল কেবল চাকুরীতেই নয় ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট পেতেও মন্ত্রী মিনিস্টার লাগে। অসময়ে রোগীর চেয়ে ডাক্তার বেশী দেখা গেলেও প্রয়োজনে আসল মানুষটা খুজে পাওয়া ভার। যাক, দ্রুত সময়ে বায়োপসি করিয়ে ডাক্তার সাহেব গম্ভীরভাবে বললেন- ইট ইজ অ্যা ক্যান্সার টাইপ টিউমার, হসপিটালাইজ হার ইম্মিডিয়েটলি। প্রেসক্রিপশনেও তাই লিখলেন। এমন কিছু শুনার জন্য প্রস্তুত থাকলেও কিছুটা যেন ভেঙ্গেই পরল রানা। রিমি'র দিকে তাকাতে পারলো না সে। খানিক দৃঢ় হয়ে ডাক্তার সাহেবকে বলল- এখন উপায় ? রানা'র দিকে কিছুক্ষন তাকালেন ডাক্তার বাবু। জামা কাপড় দেখে বোধ হয় ভালো কিছু অনুমান করলেন। বললেন সাধারণ সার্জারিতে চান্স নেই বললেই চলে তবে রেডিও-সার্জারি অথবা গামা-নাইফ-সার্জারিতে সুস্থ হওয়ার সুজুগ আছে কিন্তু তা এদেশে সম্ভব নয়। দরকার কম পক্ষে ত্রিশ লাখ টাকা যদিও জমা দেয়ার সময় রুপিতে গুনে গুনে দিতে হবে। অর্থনীতির ছাত্র রানা রেডিও আর আলফা-গামা'র কিছুই বুঝল না, বুঝল কেবল অর্থনৈতিক ব্যাপারটুকুই।

রিমি'কে হসপিটালাইজড করে বাসায় এলো রানা। মধ্যবিত্ত পরিবার কোথায় পাবে এত টাকা! সব কিছু মিলিয়ে দশ বা পনের লাখ জোগাড় হবে হয়তো। কিন্তু বাকিটা কিভাবে? দুশ্চিন্তায় রিমি'র জামা কাপড় ব্যাগে ঢুকাতে ঢুকাতে এক সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল রানা। শূন্য বাসায় ইচ্ছে মত কাঁদা যায়। কান্না অবস্থায় কেমন দেখাচ্ছে সে নিয়ে ভাবতে হয় না, মুখও ঢাকতে হয় না দুহাতে। চোখ মুছে বেড রুম থেকে বেরুতেই চোখে পড়ল রিমি'র ল্যাপটপ। বন্ধ করে যাওয়া দরকার, কে জানে আবার কবে ফিরবে রিমি! স্ক্রিন সেভার সরাতেই দেখা গেল ফেইসবুকের ফেইস। কাল থেকেই লগ ইন আছে। মা বাবা ভাই বোন বিহীন মেয়েটার সময় কাটতো একমাত্র এই ফেইসবুকে। স্কুল কলেজের এই বন্ধুগুলোর সাথেই চলে তার দুনিয়ার যত মান অভিমান সাথে কিছু কবি-সাহিত্যিক বন্ধুও আছে ফ্রেন্ড লিস্টে। রানা-রিমি ক্লাসমেট বিধায় এরা সবাই রানারও বন্ধু। হাতের ব্যাগটা নিচে রেখে একটা সিগারেট ধরালো রানা। অপ্রস্তুত অবস্থা থেকেই কিবোর্ডে হাত চলল কিছুক্ষন। পোস্ট হল নতুন স্ট্যাটাস- "আজ রিমি নয় আমি রানা বলছি। জানিনা ও কবে ফিরবে, তবে খুব সহসায় নয়। ৫০১, অ্যাপোলো হসপিটাল।"

তিন দিন চলে গেলো হসপিটালে। রিমি'র সাথে নার্সদের খাতিরটাই কেবল চোখে পরার মত দেখা গেলো। চিকিৎসার কিছুই চোখে পরার মত পাওয়া গেলো না। ডাক্তার আসে ডাক্তার যায়, বিল আসে পেমেন্ট যায়, সেই এক সুন্দর খেলা-খেলা। টাকা পয়সা কিছু জোগাড় হলেও এখনও অনেক টাকা বাকি। নিজ অংশের সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছে রানা। তবুও প্রায় ১০ লাখ টাকা জোগাড়ের বাকি থেকে যাবে। ভীষণ চিন্তায় চিকিৎসা।

রিমি'র পাশে বসে আছে রানা। দুজনের মাঝে খুনসুটি হয় না অনেকদিন। বিধ্বস্ত রানা, খুব স্বাভাবিক রিমি, অতি গতিশীল ঘড়ির কাটা। রানার হাত ধরে স্ফীত হাসিতে তাকালো রিমি। বলল- এত শত কি ভাবছো? আসছে বছরে তোমার দশটা জন্মদিন না খেয়ে আমি যাব না। রিমির কথা শুনে ঢুকরে কেঁদে উঠে রানা ইদানিং এর চেয়ে বেশি কিছু যে তার হাতে নেই।

ফেসবুক বন্ধুরা প্রতিদিনই ফোন দিচ্ছে। কেও বলছে ইভেন্ট খুলেছি, কেও বলছে বিকাশ নাম্বারটা রাখো কত পাওয়া গেলো জানিও। অন্যদিকে ডাক্তার বলছে দুই দিনের মধ্যে সার্জারি।

সন্ধ্যায় এক সুন্দরী মহিলা এলেন কেবিনে। যথেষ্ট লম্বা এই মহিলার কথা বেশ মার-মার কাট-কাট। রিমি তখন ওয়াশ রুমে, মহিলার আপ্যায়নে ব্যাস্ত হয়ে উঠে রানা। স্যালাইন হাতে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে বেশ অবাক হয় রিমি। কিছু বলে উঠার আগেই আঙ্গুল তুলে মহিলা বলতে থাকেন- আমার শেষ স্ট্যাটাসে তোমার মন্তব্যটা একেবারেই সঠিক ছিল না রিমি। বাঙ্গালী আর বাংলাদেশী কখনই এক কথা নয়, এই ব্যাপারে তোমাকে অনেক ইতিহাস জানতে হবে। মনে রেখো- ইতিহাস বলার কেও নেই বলে ইতিহাস মুছে যাবে না, মানব জিন ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে এবং ফিরিয়ে আনে বারবার। জ্ঞানগর্ভ আলোচনার আগে গর্ভে জ্ঞান থাকা চাই, বুঝলে? রিমি স্ফীত হাসছিল কি বলবে বুঝে উঠতে পারছিল না। এর মধ্যেই মহিলা জিজ্ঞেস করলেন- এখন বল শরীরের খবর কি?

-এইতো চিকিৎসা চলছে, মুটামুটি আছি আরকি। দেশেই নরমাল সার্জারি করব ভেবেছি।

-কিন্তু তোমার স্ট্যাটাস কি নরমাল সার্জারির জন্য উপযুক্ত?

-আমি আসলে জানিনা এতকিছু।

-ফেবুতে এত এত স্ট্যাটাস দিতে জানো আর নিজের স্ট্যাটাস জানো না এটা কথা হল?

মহিলার কথা বার্তার ধরন দেখে রানার ভীষণ রাগ হচ্ছে বুঝা যাচ্ছিল, কিন্তু রিমি বোধ হয় অভ্যস্তই ছিল মহিলার এহেন আচরনে।

-ফেবুতে শুনলাম টাকার সংকটে আছো।

-ওসব কথা থাক না এখন। যেটা ভাগ্যে আছে সেটাই হবে। কমলা খাবেন, কমলা দিব ?

-না আমি ফরমালিন খাইনা। তুমি কি বলছ? থাক বললে কিভাবে হবে? এদিকে আমি দিনের পর দিন স্ট্যাটাসহীন ফেইসবুক নিয়ে পরে আছি আর তুমি বলছ থাক ওসব কথা। তুমি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে স্ট্যাটাস দেয়ার মজাটাই যেন হারিয়ে ফেললাম। এভাবে কতদিন সহ্য করা যায় বল?

রিমি আবারো হাসছে যদিও রানার মাথায় কিছুই ধরছে না অনেকটা আলফা-গামা সার্জারির মত।

মহিলা ঝটপট নিজের পার্টস ওপেন করলেন। ভিতর থেকে চেক বই বের করে বলতে লাগলেন কত টাকা আরও লাগবে উন্নত চিকিৎসার জন্য বল।

রিমি-রানা দুজনেই এবার বেশ হতবাক! মহিলা বলে কি?

-দেখো অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতি বছর ১০-১২ লাখ টাকা আমার পরিবার থেকে বিভিন্ন চ্যারিটি ফান্ডে এমনিতেই দেই। এ বছর না হয় সেটা তোমাকেই দিলাম। কত লাগবে ঝটপট বল।

রিমি তখনও হতভম্ব, কিন্তু রানা যেন কোনভাবেই ঘড়ে আসা লক্ষী ফিরিয়ে দিতে চাইলো না। কোমল একটা হাসি মেখে সাথে সাথে বলে উঠল আর ১০ লাখ হলেই হবে ম্যা-ডা-ম।

খস খস করে চেক লিখে ফেললেন ভদ্র মহিলা। এবার তো মহিলাকে 'ভদ্র' বলতেই হয়, টাকার মালিক বলে কথা।

কাজ শেষে বোধ হয় বেশীক্ষণ বসেন না মহিলা। রিমি'র হাতে চেকটা গুজে দিয়েই বললেন আমি আসি আমার তাড়া আছে। রিমি ছলছল চোখে মহিলার হাত ধরে রাখল। কিংকরতব্যবিমুঢ় রিমি'র পক্ষে বোধহয় এই কাজটাই সহজ ছিল। মহিলার দুটো হাত জড়িয়ে ধরে রাখে রিমি। কিছুই বলে না। মহিলা বললেন তোমার ফেইসবুক বন্ধুরা খুব চেষ্টা করে যাচ্ছে। তোমার উচিত তাদের জন্য দ্রুত ফিরে আসা।

মহিলা চলে যাচ্ছেন। পেছন থেকে এবার 'দিদি' বলে ডেকে উঠে রিমি। মহিলাও ফিরে তাকায়।

-উহু! কোন আবেগ নয়। তাছাড়া বন্ধুত্বের কথা তো ভুলেও মাথায় আনবে না ওটা আমাদের মধ্যে একদমই হওয়ার নয়। জলদি ফিরে আসো ফেইসবুকে, তোমাকে মিস করছি প্রতিদিন।

রিমি বিছানা ছেড়ে দৌড়ে রওয়ানা দিল দরজার দিকে। ডাঃ রিনা রায় ও রিমি জড়িয়ে ধরল একে অপরকে। পেছন থেকে স্যালাইনের ব্যাগ হাতে দাড়িয়ে রইলো রানা। বন্ধুত্ব এমনও হয় কখনো জানা ছিল না তার। পরিবার পরিজন ছাড়া মেয়েটার পরিবার যে দিনে দিনে এতো বড় হয়ে গেছে এমনটা কারই বা জানা ছিল আগে?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Lutful Bari Panna একটু দেরীই হল। হোক গল্প পড়ে মন ভরে গেল। শুরুতে ভেবেছিলাম হিউমার দিয়ে শুরু- মজা করে পড়া যাবে। কিন্তু শেষের দিকে এমন কাঁদাবেন ভাবিনি। ক্ষণিক উপস্থিতিতেই দাগ কেটে গেছে ডাঃ রীনা রায়- তার রোল প্লেইংটা তেমনই ছিল। ছোট গল্প সেরকম ছো্টই হয়েছে। তবু মনে হল আর একটু বিস্তৃত হতে পারত গল্পটা। যেমন ডাঃ রিনা রায়ের সাথে খোচাখুচি আর একটু ডিটেলসে আসলে মেষের চমকটা আরো প্রাষ পেত মনে হচ্ছে। কিন্তু তারপরও বলতেই হবে বিন্দুর মধ্যে সিন্ধুর গভীরতা ছিল। ভাষার ব্যবহার সরল স্বচ্ছ।
আলোকবর্তিকা সম্প্রীতি আর ভালবাসাই পারে পৃথিবীকে মধুময় করতে। গল্পটি পড়ে সে কথা আবারও মনে পড়লো। অনন্য এক গল্প। শুভ কামনা রইলো।
সূর্য দলাদলির আগে যে মনুষত্বটাই বেশি বড় সেটা এ গল্পে আবারও প্রমানিত হলো। ডা: রিনা রায়ের সাথে রিমির মতের খোচা খুচি লেগেই থাকে তারপরও রিনা রায় এগিয়ে এসেছে। আবার প্রথম দিকে রিমির পছন্দের দল হেরে যাওয়ায় রাতের খাবার বন্ধ হয়েছে নিজ গৃহে এ দুটো দিকের যে মোরাল তা গল্পে স্পষ্ট। অনেক ভালো গল্প হয়েছে নিরব।
ইয়াসির আরাফাত প্রথম দিকে বেহায়াদের লজ্জা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে জটিল ফান । মাঝ থেকে শেষ পর্যন্ত বন্ধুত্ব , শ্রদ্ধা ভালবাসা বাহ - আবার কিছু চরম সত্য কথা অসময়ে রোগীর চেয়ে ডাক্তার বেশী দেখা গেলেও প্রয়োজনে আসল মানুষটা খুজে পাওয়া ভার।( আরেকটি কথা নকল করে পাশ করা মাথা মোটা দাক্তারে ভরে গেছে দেশ ।ছেলে বেলায় আমার একবার অসুখ হয়েছিলো । চাঁপাই -রাজশাহীর ১০/১৫ জন ডাক্তার অনেক টেস্ট করিয়ে ইনজেকশন দিয়ে সমাধান করতে পারেনি । আব্বা কবিরাজ বিশ্বাস না করলেও যদি ভালো হয় ভেবে ৫/৭ কবিরাজ দেখাল কবিরাজদের কথা মনে পড়লে এখনো হাসিপায় । সে ষে ভালো হলাম একজন পাগল ডাক্তারের কাছে . অপেক্ষায় আছি ডাক্তার একজন রগি দেখলেন টাকা চাইলেন লোকটি ৫০ টাকা দিচ্ছে । ডাক্তার বলল ভাই আমার ভিজিট তো ২৫০ টাকা । রোগী - আমার কাছে আর টাকা নেই স্যার । ডাক্তার তার পকেট থেকে ১০০ টাকা বেড় করে রোগীকে দিয়ে বললেন । নাও ওষুধ কিনবে , তুমি ওষুধ কিনে খেতে না পারলে সুস্ত হবে কি ভাবে ? আমাকে ভিজিট দিয়ে লাভ কি হবে । অসুধ খেয়ে দেখ আল্লা চাইলে ভালো হয়ে যাবে । আমি ভেবে বস্লাম এই তো পাগল ডাক্তার নয় - সেষে আমার রক্ত পরিক্ষা করে মাত্র একটি ওষুধ দিলেন বললেন আল্লাহ চাইলে ভালো হয়ে যাবে যদি না হয় । ঢাকায় কোন বড় ডাক্তার দেখাতে হবে । আর যদি এই ওষুধ কাজ করে তবে প্রতিদিন একটি করে ২ মাস খেতে হবে । মাত্র দুই দিনে ভালো হয়েছিলাম । বিশ্বাস হয়না মাত্র একটি অসুধেই । ( সেই ডাক্তার টির নাম নুরুল ইসলাম হাজী , তিনি তবলিক করে বেড়ান , গরীবদের পকেট থেকে দেন , ধনীদের পকেট থেকে ভালো মত নেন । তিনি মানুষ , মুসলিম , ডাক্তার তিনটি গুনের অধিকারী । তার মত আরও কিছু ডাক্তারের প্রয়োজন পৃথিবীতে । )
শেষে ভালো হয়েছিলাম মাত্র একটি ওষুধ তিনি দিয়েছিলেন দুই তিনদিনেই ভালো হয়ে গিয়েছিলাম । রোগী দেখে টাকা কামানোর চেয়ে রোগ সনাক্ত করার চেষ্টা করার মান্সিকিওতা বর্তমানের ডাক্তারদের খুব কম ।কোন রোগ যদি ইনি ধরতে না পারেন বলে দেন তোমার সমস্যা ধরতে পারছিনা উমুক ডাক্তার বা এই বিষয়ক ডাক্তার দেখাও । (ইনি হলেন একজন মানুষ মুসলমান ডাক্তার নুরুল ইসলাম হাজী । প্রায় তবলিক করে বেড়ান । ঠিক মত চেম্বারে বসেন না । পথের মানুষদের নিজের টাকায় কেনা অসুধ দেন ।
রনীল মানুষে সম্পর্ক তো এমনই হওয়া উচিৎ। শুরুটা চমৎকার ঝরঝরে... শেষটায় চমক (যদি কমেন্ট দেখে চমকটা আগে থেকে গেস করতে পেরেছিলাম)... কবিতার মত গল্পেও আপনি ন্যাচারাল। নিয়মিত লেখা চাই।
রোদের ছায়া ফেসবুকের খারাপ দিকের কথা শুনতে শুনতে কান যখন ঝালাপাল হবার যোগার ঠিক তখনই আপনার এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো ফেসবুকের কথা চিন্তা করে । আসলে সব কিছুইর ভালো মন্দ দুটো দিকি আছে । আর হা অতাও একটা পরিবারই বটে , বেশ বড় পরিবার । খুব সুন্দর , মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প ।আচ্ছা ঘড় নাকি ঘর ? আর ''আচ্ছা বলতো সারাদিন ফেইসবুকে কত পারো তুমি?'' লাইন এ মনে হল কোন শব্দ মিসিং !! ও আচ্ছা গল্পের সবচেয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়া কথাগুলো উল্লেখ করছি ............''রানা-রিমি'র সংসারে কোন সন্তান নেই। সমস্যাটা কার জানার আগ্রহও নেই তাদের। ভালবাসার কমতি হয় এমন কোন সংবাদ টাকা দিয়ে কিনতে চায় না তারা। দুজনেই মনে করে দোষটা তাদের নিজের। এভাবেই চলছে। '' ......শুভকামনা রইল পুরোপুরি।।
মোঃ আক্তারুজ্জামান শুরুটায় ভেবেছি দারুণ একটা রম্য পেয়েছি। কিন্তু শেষের দিকে যতই এগিয়েছি গল্পে বিষয় ততই গভীরতা পেয়েছে। পরিণত গল্প চোখের পাতা ভিজিয়ে দিয়েছে। আমি মাস তিনেক থেকে একটা গরীব ক্যান্সার আক্রান্ত স্কুল ছাত্রের সামান্য দেখ ভাল করার চেষ্টা করছি তাই বোধ হয় আবেগটা আরও ঘনত্ব পেয়েছে। ভার্চুয়াল রিলেশনশিপ নিয়ে অনেকের মাঝেই নাক সিটকানো ভাব পরিলক্ষিত হয় লেখকের বিশ্বাস সেই ধারনাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে। আমার অনেক অনেক ভাল লাগা রইল। ধন্যবাদ।
মিলন বনিক নিরব ভাই...অসাধারণ...অসাধারণ...একটা সমসাময়িক চিন্তাধারাকে কত সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন....আর অনেক দিন পরে পেলাম আপনাকে....ভালো থাকবেন....
আরমান হায়দার বেশ গল্প। ভাল লাগল।
তানি হক গল্পের প্রথমে আবেগে মনটা ভেসে যাচ্ছিল ...তবে শেষে এসে সত্যি মনটা ভরে গেল ...অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া এই হৃদয় ছোয়া গল্পটি ...আপনাকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা

২১ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী