অমানিশার ভয়াল পথে

ভোর (মে ২০১৩)

মোঃ আক্তারুজ্জামান
  • ২১
  • ৪৭
(১)
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিল আমার খেলা করে দিন কাটানোর বয়স। করতামও তাই। সকাল সন্ধ্যায় বর্ণ পরিচয়ের জন্য আদর্শ লিপি নিয়ে বসতে হত। আমার প্রতি বাবা মায়ের রাগ বলি, আর শাসন বলি যেটুকু ছিল তা যেন ওই আদর্শ লিপি নিয়ে বসাকে কেন্দ্র করে। জীবনের বাকী সবকিছু ঘিরে ছিল আনন্দ আর আনন্দ! এরই মাঝে কোন সময় যে দেশে গন্ডগোল বেঁধে গেলো, কী নিয়ে বেঁধে গেলো তাও জানতাম না, বুঝতাম না।
দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বাবা মাসহ অন্যান্যদের আতংক, উৎকন্ঠা দেখেও খুব ভয় লাগত। যুদ্ধের সময় পরিবারের সাথে, পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেরিয়েছি। এই ব্যাপারটার জন্যেই খুব স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তান বা পাকিস্তানি শব্দ দুটি বলতে প্রকান্ড একটা আতংককেই জানতাম।
১৬ ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয়ের খবরে বাবা, মা পাড়া প্রতিবেশী, এলাকাবাসীকে যখন খুশিতে আত্মহারা হতে দেখেছি তখন নিজেও খুশির বন্যায় ভেসেছি। লাফিয়ে, দৌড়ে, ছুটোছুটি করে মুক্তির আনন্দ প্রকাশ করেছি। প্রকৃত অর্থে মুক্তির অর্থ কী তাও জানার বয়স আমার ছিল না। শুধু বুঝতে পেরেছিলাম আর কোনদিন ভয় পেতে হবে না। ভয়ের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি! ভয়টা সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে দূরে কোথাও চলে গেছে!
ভয়টা গেল না- মাস কয়েকের মাঝেই টের পেলাম ভয়টা প্রায়ই ফিরে আসে। মাঝ রাতে আসে, শেষ রাতে আসে! গভীর ঘুম থেকে জেগে হ্যারিকেনের আলোয়, কুপির আলোয় বাবা মায়ের পাংশু মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। শরীরে কাঁপুনি উঠে। দাঁতে দাঁতে বাড়ি খেয়ে ঠকাঠক্ শব্দ উঠে। সকালে উঠে শুনি দু’তিন বাড়ী ডাকাতি হয়েছে, কখনো আট দশ বাড়ীতে ডাকাতি হওয়ার খবরও শুনতাম। মাঝে মধ্যে ডাকাতের গুলি খেয়ে লোকজন মারা যাওয়ার খবরও শুনতাম। ভয়টা গেল না দেখে সত্যি মন খারাপ হত, আরও ভয় লাগত!
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ নাকি বলেছিল যুদ্ধ থেমে গেলে বাংলাদেশের দুই তৃতীয়াংশ লোক অনাহারে মরবে। সেই দেশে ভয় না থেকে পারে? যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ, চারিদিকে হাহাকার! বিধ্বস্ত দেশের মানুষের লন্ডভন্ড সংসার, ব্যবসা বানিজ্য, সরকারী বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠান তছনছ করা। কারো বাড়ী পুুড়েছে, কারো মানুষ মরেছে, কারো দোকান গেছে, কারো বা সবই গেছে। মানুষের ঘর শুন্য, পকেট শুন্য, পেট শুন্য।
আজ যে জমিতে কৃষক ধান ফলায় ত্রিশ মণ সে জমিতে তখন ধান ফলত দশ মণ। পাকিস্তানিরা বাঙালিরটা লুটে পুটে খেয়েছে। কোন দিন বাঙালির সামান্য উন্নতির কথা ভাবেনি। সেচ সুবিধা, বীজ সুবিধা, কৃষি সরঞ্জামাদির নাম মাত্রও কৃষক জানত না। কৃষক আকাশের দিকে বাতাসের দিকে তাকিয়ে বীজ বুনত। কৃষকের স্বপ্ন খরায় পুড়ত, বানে ভেসে যেত। এমন গরীব দুঃখী মানুষের দেশে যুদ্ধ হলে ভয় ফিরে আসবে না তো কী হবে?
যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র কিছু দুষ্টেরা জমা দেয়নি। ওরা রাতের আধাঁরে মানুষের ঘরে হামলা দিত। লুটেপুটে নিত যা পেত সবই। আমাদের গ্রামে, আশে পাশের গ্রামের লোকেরা রাত জেগে পাহারা দিত। আমার বাবাকেও দেখেছি তাদের সাথে রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিতে। মাঝে মধ্যে ডাকাতের হাতে পাহারাদার মারা যাওয়ার খবরও আসত। পাহারা দিলেও মানুষ একেবারে ভয় শুন্য থাকতে পারত না।
ভয়ে ভয়ে বেড়ে উঠলাম। দায়িত্ব কর্তব্য বোধ থেকেই আমরা অনেকে কিশোর বয়সেই বাবা, ভাই, চাচাদেরকে পাহারা দেয়া থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম। হাতে জুতি, টেঁটা, বল্লম নিয়ে হৈ হৈ করে রাত জাগতাম। ভয়ে ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে কাটাতাম। আনন্দ হৈ হুল্লোড়ও ছিল। শেষ রাতে ুধা ছিল। আমাদের এলাকার প্রতিটা গ্রামই ছিল যেন আস্ত এক একটা ফলের বাগান। রাত জেগে নারকেল, আম, কাঁঠাল, আনারস খাওয়ার মজাই অন্যরকম! মানুষের অঢেল ছিল তাই এসবে কারো অভিযোগ, অনুযোগও ছিল না।
সোনাইর মা নামে আমাদের গ্রামে একজন ভাল মানুষ ছিলেন। স্বামীহারা মানুষ। চার পাঁচ সন্তানকে নিজেই মানুষ করেছেন। গ্রামের সকলের প্রিয় পাত্রী। সব সময় হাসি মুখে থাকতে ভালবাসতেন। মানুষকে খুশি রাখায় তার জুড়ি ছিল না। গ্রামের কারো বিয়েতে পুরুষের পোশাক পরে নেচে গেয়ে আরিক অর্থেই বিয়ের আনন্দকে পূর্ণতা দিতেন।
সোনাইর মায়ের গাছের জাম্বুরার মত স্বাদের জাম্বুরা কারও গাছে ধরত না। এক রাতে আমরা পাহারা দিতে গিয়ে ঠিক করলাম- সোনাইর মায়ের গাছের জাম্বুরা চুরি করে খাব!
তিন চারটা ছোট ছোট দল করে গ্রামের এক এক মাথায় এক এক দল চক্কর দিতাম। সব দলের সাথে আলোচনা করে আমি, পংকজ আর শীতল চললাম জাম্বুরা চুরি করতে। আনারসের বাগান মাঝখান দিয়ে একজন করে যাওয়ার মত সরু পথ। আমি আগে তারপর পংকজ সবার শেষে শীতল। সোনাইর মায়ের বাড়ী কাছে গিয়ে বিপদে পড়লাম। তাদের একটা নেড়ি কুকুর ছিল। আমাদের দেখে ওটা গেল প্রচন্ড েেপ! ভয় দেখালাম, ধমক দিলাম। কিছুতেই কাজ হল না। ওটা আমাদেরকে বাড়ীতে ঢুকতেই দিবে না!
সময় যতই গড়াতে লাগল ওটার তেজও যেন বেড়ে চলল। বেশ কিছুণ পর আমি হতাশ হয়ে পিছনে ঘুরলাম। ঘুরে যা দেখলাম তাতে আমি ভয়ানক আঁতকে উঠলাম। শীতলের গায়ে একটা সুতোও নেই! পরণের লুঙ্গিটা খুলে মাথায় পেঁচিয়ে একটা প্রকান্ড বিড়া পাকিয়েছে। হাতের বল্লমের ফলাখানা আকাশের দিকে তুলে ধরে অন্ধকারের গায়ে সেটিয়ে দেয়া কোন মুর্তির স্থির চিত্রের মত দাঁড়িয়ে আছে।
সোনাইর মায়ের নেড়ি কুত্তা ভয়ে না লজ্জায় ক্ষেপেছে তা না বুঝতে পারলেও শীতল নিজে যে গন্ডগোলখানা পাঁকিয়েছে তা বুঝতে আর কিছু বাকী রইল না। একটু পরেই শীতল কাউকে কোন কিছু বলার বা করার সুযোগ না দিয়েই লাফ মেরে আমাদেরকে ডিঙিয়ে আনারসের বাগান দিয়ে সোনাইর মার জাম্বুরা গাছের দিকে অন্ধকারে হারিয়ে গেল।
শীতলের ঝপাৎ করে আনারসের বাগানে ঝাঁপিয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে আরেক অঘটন ঘটে গেল। কুত্তাটা এইবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে সোনাইর মার বাড়ীর দিকে তীব্র গতিতে পালাতে গিয়ে বারান্দায় শুয়ে থাকা সোনাইর মায়ের মশারিটাকে এফোঁড়ওফোড় করে ফেললো। সারাদিনের পরিশ্রমে শ্রান্ত কান্ত সোনাইর মা তখন ঘুম থেকে জেগে মশারির দশা দেখে হৈচৈ শুরু করল।
নেড়ি কুত্তাটার উপর দোষ চাপাতে আমি আর পংকজ বারান্দায় বসে সোনাইর মায়ের সাথে দুনিয়ার মিথ্যাচার করে চললাম। অনেকটা সময় পর সোনাইর মায়ের রাগটা যখন কিছুটা পড়তে শুরু করেছে তখনই তার ঘরের পিছন থেকে ধপাস্ করে কিছু একটা পড়ার শব্দে সে কান খাড়া করে কিছু ভাবল। তারপরই প্রকৃত ঘটনাটা বুঝতে পেরে বারান্দায় রাখা একটা প্রকান্ড বাঁশের টুকরা হাতে সে তার জাম্বুরা তলার দিকে ছুটে গেল। আমিও পংকজকে একটা ধাক্কা মেরে বিপদ আসন্ন জানিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই সেখান থেকে সরে পড়লাম।
হাতে নাতে ধরা না পড়লেও পরেরদিন অনেকের কাছেই শুনলাম চুরির প্রমাণ সোনাইর মা হাতে করে ঘুরে ঘুরে গ্রামের অনেককেই নাকি দেখিয়েছে। একটা জাম্বুরার এক পাশে বল্লমের খোঁচা এমন প্রকট যে তা চুরির ঘটনাটা অন্য কোন দিকে প্রবাহিত করার সুযোগই রাখল না।
হারামজাদা ফাঁসিয়ে দিলি?- পংকজ তেড়ে গিয়েছিল শীতলকে দু’এক ঘা বসিয়ে দিতে। শীতলের অসহায় মুখের দিকে তাঁকিয়ে আমি ওকে রা করলাম। সব কিছু পরিকল্পনা মতই এগিয়ে যাচ্ছিল। অন্ধকারে ভাল দেখতে না পেয়ে ও যখন একটা জাম্বুরায় বল্লম বিঁধানোর জন্য ঘাই দিয়েছে ওটা ঠিক মত লাগেনি। এক পাশে সামান্য আটকে ছিল মাত্র। পরে তা বোটা থেকে আলাদা করার জন্য মোচড় দিতেই ভারসাম্যহীন হয়ে বল্লমের ফলা থেকে ছুটে ধপাস্ করে মাটিতে আছড়ে পড়েছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিচারের ব্যাপারটাও নিশ্চিত হলাম। বিচার হবেই। মান সম্মানের কথা ভেবে লজ্জায় মরে যাবার জোগাড় হল। খোনকার সাব গ্রামের মাতব্বর। কঠিন বিচার করেন। অপরাধীকে পিটিয়ে আবার ডাক্তার দেখানোর মত রেকর্ডও তার আছে।
দুপুরের পরেই হঠাৎ দেখলাম মাতবর সাব বাড়ীর আঙিনায় হাজির। আমারতো প্রাণ যাবার জোগাড়। সে আমাকে না দেখতেই আমি বেদিশা হয়ে একেবারে ঘরের চৌকির নীচে ঢুকে পড়লাম। বারান্দায় জলচৌকি পেতে দেয়ার শব্দ পেলাম। তারপর বাবার সাথে আলাপ করতে শোনলাম। চৌকির নিচে শুয়ে শুয়েই দেখলাম ঘরে মা পান সাজাচ্ছেন।
লুকিয়ে থাকলেও আমার খুব ভয় করছিল। নিজের বুকের ভিতরকার ঢিব্ ঢিব্ শব্দটা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম। খোনকার সাব বাবার সাথে অনেকণ কথা বললেন কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে জাম্বুরা চুরি নিয়ে কোন কথা বললেন না। অবশেষে উঠে দাঁড়ালেন, আমি জলচৌকি ঠেলে দেয়ার শব্দে তা বুঝতে পারছিলাম। তারপর যেতে যেতে বাবাকে বললেন- সোনাইর মা বলছিল ভাতিজারা নাকি গতরাতে তার গাছের জাম্বুরা খেয়েছে। রাত জেগে থাকাটা কঠিন কাজ। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি এক এক বাড়ী থেকে যেন এক একরাত ওদেরকে চিড়া মুড়ি খেতে দেয়!
চুরির সাজাও এত মধুর হয় আমি কোনদিন জানতাম না! ভয়টা কখন যে মন থেকে উড়ে পালিয়েছিল উত্তেজনায় সেটা টেরই পাইনি।



(২)
এখনতো সারাণ ভয়ে ভয়েই থাকতে হয়। ছেলেটা স্কুলে যায়, পথে ঘাটে অপহরণ, গুম খুন কত ভয়ের কারণ। মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। সন্ধ্যায় কাস রাতে বাড়ী ফিরে। মেয়েদের বিপদ পদে পদে। আমি বাবা হয়ে নির্ভয়, নির্ভার, নিশ্চিন্ত থাকি কী করে? দেশের কোন বাবাই পারেন বলেও আমার মনে হয় না।
ছোট দোকান চালাই তবু ভয় করে। কখন কে আসে, কী চায়, কী করে! নেতা মাস্তানে দেশ ভরা। হুমকি ধামকি ছাড়া তারা কেউ যেন কথাই বলতে পারে না। চেহারায় ভয়ানক কাঠিন্য, তাতে দয়ামায়ার বিন্দু মাত্রও নেই।
একদিন রাতে খেতে বসেছি। গিন্নীর মুখ ভার। কারণ জানতে চাইলাম। জানাল একটা ঘর খালি হয়ে গেল। সামান্য বাড়ী ভাড়া পাই ভাড়াটিয়া না থাকলে আমাদের বেশ সমস্যাই হয়। আমারও মন খারাপ হল। তবু কোন ঘর খালি হল, ওরা কেন গেল তা জানতে চাইলাম।
যা জানলাম তাতে আমার মুখে আর কথা সড়ল না। পাড়ার মাস্তান- কেরামত। ভাড়াটিয়ার মেয়েকে নাকি রাত বারটার পর দেখা করতে বলেছে। তা শুনেই ওরা তাৎক্ষনিক ঘর ছেড়ে চলে গেল।
ভয় পেলাম। তবু ভাবলাম এভাবে চুপ করে বসে থাকা যায় না। এসবের প্রতিকার দরকার। পরের দিন গেলাম আমাদের কাউন্সিলরের কাছে। ভয়ে ভয়ে নীচু গলায় সব বললাম। সে বেশ কিছুণ চুপ করে থেকে ব্যাপারটা দেখবে বলে আমায় বিদায় করে দিল।
আমি বাসায় চলে এলাম। দিন যায়, মাস গিয়ে বছরও ফিরে এল কিন্তু আমাদের কাউন্সিলর কী দেখেছেন, কী করেছেন তা আমার আর দেখা হল না জানা হল না।
এর মাঝে কেরামত আরও কত বড় বড় ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। তা দেখে ভেবেছি কাউন্সিলর সাহেব হয়ত সেসব বড় বড় ঘটনাগুলি দেখছেন বলেই আমারটা আর দেখার সময় পাননি।
বার কয়েক তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিতে দেখেও হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। শত ভাগ নির্ভয় হওয়ার আগেই দু চার দিনের মাথায় দেখেছি সে হাসি মুখে লুঙ্গি উঁচু করে এলাকায় ঘুরছে।
পত্র পত্রিকা পড়তেও ভয় হয়। ভয়ানক সব খবর ছাপে। সভা সেমিনারের খবর বেরোয়। প্রায়ই শুনি বিচারের রায়ও নাকি বেচাকেনা হয়। পাঁড়া মহল্লার মুরুব্বীদের বৈঠকি বিচার যেন দেশ থেকে হারিয়ে গেছে। নেতা, মাস্তান, ম্যানেজ এসব শব্দগুলির সামনে মুরুব্বিদের বৈঠকি বিচারের আর কোন কথাই আজ অবশিষ্ট নেই।
হঠাৎ করেই একদিন মহল্লার মুখে পুলিশের গাড়ি দেখলাম। অবাক হইনি। কিন্তু কারণ জানার জন্য ভিতরে ভিতরে বেশ আগ্রহ জন্মাল। এই সব কারণ জানানোর লোকের অভাব হয় না। বলৎকারের অভিযোগ। পোশাক কারখানায় চাকুরী করা দম্পতি রাতে বাসায় ফিরছিল। স্বামীকে বেঁধে রেখে তিন চার জন মিলে তার সামনেই স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে।
কষ্ট লাগল, তীক্ষ্ণ কষ্ট। একটা মেয়ের সম্ভ্রমহানির কষ্ট বিবেকবান মানুষকে স্পর্শ না করে পারে না। মনকে প্রবোধ দিলাম এবার যদি জানোয়ারটার শিা হয়। এত বড় অন্যায়ের পর তার কঠিন সাজা না হয়ে পারেই না।
মাস খানেকের মধ্যেই আমার ধারণা ভূল প্রমাণিত হল। কেরামতকে দেখলাম তার চিরচেনা রূপে। লুঙ্গি উঁচিয়ে সে চরম অসভ্যের মত মহল্লায় হেঁটে বেড়াচ্ছে।
ঘটনা জানতে ইচ্ছে হল- এত বড় অপরাধ করার পরও সে মুক্ত হয়ে কীভাবে ঘুরে বেড়ায়? যা জানলাম তাতে মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। হতভাগ্য ধর্ষিতার স্বামী তাকে আর ঘরে ঠাঁই দেয়নি। রাগে দুঃখে অপমানে সেও আর থাকল না। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মুক্তি নিল।
ধর্ষিতা নেই, সেই মামলার বাদীও নেই তবে আর কেরামতদেরকে আটকে রাখে কে? ভয়টা পিছু ছাড়ল না। ঘোর অমানিশার মাঝ রাতে থমকে আছি। কবে কখন যে ভোর হবে জানি না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি স্বাধীনতার পরবর্তীতে সামাজিক অবক্ষয় নিয়ে লেখা ..........'অমানিশার মাঝ রাতে থমকে আছি' .........নতুন ভেরের প্রত্যাশা খুব ভাল লেগেছে.......আপনার চিরাচরিত আপনার নিজস্বতা বজায় ছিল ...........অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আক্তারুজ্জামান ভাই..................
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# এই ঘোর অমানিশার অবসান খুব সহসা হবে বলে মনেই হচ্ছে না। বরং তা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে কেবল। আমিও একটি নিপাট ভোরের অপেক্ষায় আছি... ধন্যবাদ আক্তার ভাই। ভালো লিখেছেন অনেক।
তানি হক বিচার হবে ,,অবস্যই হবে ...দুনিয়ার মানুষ নাহয় না করলো ..কিন্তু কেরামতের বিচার ..সৃষ্টি কর্তা ঠিক ই বিচার করবেন ...ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ এই গল্পটির জন্য
মিলন বনিক আকতারুজ্জামান ভাই...আপনার নিখুত গল্পের বুননটা শরীরের প্রতিটা লোমকূপে শিহরণ জাগিয়ে তুলে....তীক্ষ্ণ ফলার মত শরীরে মিশে যায়...আর নিজেকে ধিক্কার দিতে হয় আমরা মানুষরা এমন কেন...এই কেরামতদের জন্য কি কারো কিছু করার নেই????খুব ভালো লাগলো দাদা....
এশরার লতিফ স্বাধীনতার আগের পুরনো ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতার সময়গুলো যেন নতুন করে ফিরে এসেছে. প্রকৃত আইনের শাসন না থাকলে যেমনটি হয়। খুব ভালো লাগলো গল্প
সূর্য আপনার জাদুকরী হাতের ছোঁয়ায় প্রতিদিনের ঘটনাপঞ্জীও হয়ে ওঠে সাবলীল গল্প। আমরা যে ভোরের আশা করে আছি কেন যেন মনে হয় সে আশাটাকে আমরাই গলা টিপে রেখেছি। যাদের আমরা আমাদের শাসন করতে পাঠাই তারাই সে ভোরটা আসতে দিতে রাজি না। প্রকারান্তরে এ দায়টা আমাদেরই। আমরাইতো ওদের নির্বাচিত করি।
নিলাঞ্জনা নীল আপনার লেখা পড়তে খুব ভাল লাগে :)
সুমন ঝরঝরে সাবলীল বর্ণনায় সুন্দর অতীত আর নষ্ট বর্তমানের যোগসূত্র একেছেন। অনেক ভাল লাগল গল্প নামক বাস্তবতা উপস্থাপন।
Lutful Bari Panna ভাইরে এইসব দুঃখ কষ্টের ঘটনা পড়তে ভাল লাগে না, অথচ এসবই আমাদের বাস্তবতা। রাজা যায় রাজা আসে- তবু এইসব রানা কেরামতেরা রাজার হালে থাকে। এদের গায়ে আচড় পড়ে না। দেশের প্রকৃত ছবির একটা ডকুমেন্টারী যেন গল্পটা।

২২ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪