সন্ধ্যা ও তার টুপটাপ শব্দ

বিশ্বকাপ ক্রিকেট / নববর্ষ (এপ্রিল ২০১১)

সোয়াদ আহমেদ
  • ৩৩
  • 0
  • ৬৯


মামাদের বাসা ছিল ইব্রাহিমপুরে। তখন ওখানে এত মানুষ অথবা বাড়িঘর ছিল না। মানুষজন প্রায় থাকতই না। এখানে ওখানে বেশ ঘন জঙ্গল ছিল। শিয়াল, বানর তো ছিলই আরও কিছু থাকত কিনা কে জানে। ঐখানে যে বাজারটা ছিল, ঐটার ডানপাশের গলি ধরে একটু হাঁটলেই মামাদের বাসা। পুরাতন শ্যাওলা ধরা ইটের দেয়াল, একটা মরিচাপড়া গেট। গেট পেরুলেই একটু উঠোন, অতঃপর বড় আমগাছটা তারপর ঘর; এলো শেপড্ টিনের ঘর। যেখানে এলো-এর মতো ঘরটা বেঁকে গেছে ঐখানটায় ছিল বিশাল আমগাছটা, যেটা প্রায় সারাবাড়িটিকেই অন্ধকারে ঢেকে রেখেছিল। স্যাঁতসেঁতে, শ্যাওলারা, ঘাসে ঢাকা ছোট্ট উঠোন। বাম পাশের দিকে একটি লিচু গাছ আর গাছতলায় টিউবওয়েল। বৃষ্টি এলেই উঠোন ডুবে যায়, পানি বেরুতে পারে না। গেট হতে ঘরের দরজা পর্যন্ত তাই কতগুলো ইটের টুকরা বেছানো হয়েছিল, যাতে করে বৃষ্টির দিনে সহজেই ইটগুলোতে পা রেখে ঘরে ঢোকা যায়।
যাক ঘরে ঢোকা গেল। ভেতরে ছোট ছোট অনেকগুলো রুম। লম্বা ঘর। এই মাথা হতে ঐ মাথা। ছোট্ট ছোট্ট জানালা। আলো কম। কেমন রাত্রি-রাত্রি, ভেজা-ভেজা, খালি-খালি, শব্দহীন পরিবেশ। বাড়িতে মানুষজন প্রায় ছিলই না। বড়মামা, আম্মু আর নানু। নানা ছিল। অনেক আগেই আসমানে। কবে গেছে আমি জানিই না, আম্মুর হয়ত মনে আছে।
মামা তখন প্রাপ্তবয়স্ক। আম্মু বেশ ছোট। সাদা বেড়ালটা নিয়ে সারাদিন খেলা করত। মামা কথাবার্তা কম বলত। মন ভালো থাকলেও, গম্ভীর মুখের রাগী মানুষ, মেজাজ খারাপ থাকলেও একই। একদিন মনে হয় মেজাজটা খারাপই ছিল, এক ঢিল দিয়ে বেড়ালটা একদম টিনের চালে। আম্মুর কী কান্না। মামাকে সে ভীষণ ভয় পেত। প্রাণ খুলে তাই কাঁদতেও পারলো না। বাচ্চাটাও ম্যাঁও ম্যাঁও করে কাঁদছিল। তারপর রাত যখন গভীর, যখন সবাই ঘুমালো তখন আম্মু বেরিয়ে এলো, আমগাছটায় মই ফেলে একদম টিনের চালে, বেড়ালটা পেয়ে তবেই স্বস্তি। তারপর বিড়াল আর আম্মুর একসাথে ঘুম।
আমি এসব দেখিনি, মামাদের ঐ বাড়িও দেখিনি। আম্মুর কাছ হতে শুনেছি। আব্বু যখন ছিল তখন মা সারাদিন গল্প করত, রান্নাবান্না করত, হাসাহাসি করত সবার সাথে। একদিন আব্বু চলে গেল। কোথায় গেল ঠিক জানি না। শুনেছি ইনডিয়াতে আছে। সিলং আছে না? হ্যা, মেঘালয়ে। সেখানে উঁচু রাস্তাগুলোতে নাকি মেঘ উড়াউড়ি করে। সাদ সাদা স্বপ্নিল মেঘ। এক ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে ওখানে তার সুখের বসতি। আমি তখন অনেক ছোট, আমার বয়স হয়ত তখন চার বছর হবে। আব্বু চলে গেল, সাথে নিয়ে গেল আম্মুর হাসি। আম্মু আমাকে আর কোনদিন বলেনি, “ঋজু, বাবু ঘুমাও, আমি তোমাকে গল্প শুনাচ্ছি।”
মামাদের বাসার পাশেই ছিল এক হিন্দু ভদ্রলোকের বাড়ি। হরিনাথ চ্যাটার্জি। বৃদ্ধ মানুষ। সে আর তার বউ মিলে সুখের ঘরকন্না করছিল। ছেলেপুলে কিছুই ছিল না, আত্মীয়-স্বজন হয়ত কিছু ছিল, ইনডিয়াতে ।
১৯৭১ সাল। শুরু হল প্রচণ্ড যুদ্ধ। উনাদের দেশ ছাড়তে হল। নিজেদের দেশকে ছাড়তে হল। ইনডিয়া যেতে হবে, এদেশে থাকা নিরাপদ নয়। জীবনের মায়াত সবারই আছে। ওরা নাকি প্রশ্ন করে হিন্দু না মুসলমান? মুসলমান বললেও হবে না। সুর-টান ঠিক রেখে বলতে হবে, লা- ইলাহা....., মাশাআল্লাহ, এখানে থাকার ভাগ্য ওদের আর হলো না।
যাবার আগে বুড়ো-বুড়ি চলে এলো মামাদের বাসায়। মামাকে ডেকে বৃদ্ধ চুপিচুপি বলল, “ বাবা, আমরাত যাইতেছি, ফিরতে পারমু কিনা জানি না। ফিরার অনেক ইচ্ছা, নিজেদের বাড়িঘর, নিজেদের দেশ, কিন্তু কী করি বল? বিধিবাম। যাই হোক তোমারে একটা বক্স দিয়ে যাই, এই যে, এতে কিছু টাকা-পয়সা আর কিছু গয়না-গাটি আছে। তোমার কাছে রাইখো। আমরা এলে নিয়া নিব, না এলে তুমি খরচাপাতি করে ফেইলো। আর আমাদের ঘরটা দেইখো। আর এই নেও বক্সের চাবি।”
মামার হাতে তালা দেয়া বাক্সটা ওরা তুলে দিল। মামা বলল, “চাচা আমি ক্যান? আর কেউ ...”। বুড়ি বলে, “আর কে? আমাদের কেউ আছে? দেখনা মড়ার মতো দুই বুড়া-বুড়ি পইড়া থাকি। হ্যাঁ দুই একজন আছে, দক্ষিণ দিনাজপুরে, সব হারামী, নিমক হারাম, সেলফিস বুঝলা।” বুড়া আবার বলল, “ যাইতাম না বাবা, যাইতাম না, বাপ-দাদার বাড়ি, এই বাড়িতেই জন্ম, এই বাড়িতে বড় হওয়া, যাইতে কষ্ট লাগছে, বুকে অনেক কষ্ট বাপ।”
দুই-এক ফোটা জলও হয়ত পড়ে বুড়া-বুড়ির চোখ হতে, মামা বরাবরের মতই নির্বাক, নিশ্চুপ, যুধিষ্ঠির একজন। মামা কিছুই বলে না, নয় কোন সান্ত্বনা বাণী অথবা আশ্বাস। সে কথা কম বলে, সে চির গম্ভির, সে মৃদুভাষী, তবে তার চোখ দুটো দুই-একবার কাঠের বাক্সটার দিকে চলে যেতে চায়; অজানা আকর্ষণ, নিশিদ্ধ আকাঙ্ক্ষা।
সেই যে গেলো ওরা আর ফিরে আসে নি। এক বছার গেল. দুই বছর গেল, তিন বছর গেল। তারা ফিরে আসেনি, মামাও কোথাও যায়নি। যায়নি যুদ্ধে অথবা পালিয়ে কোথাও। সে ধীর, সে স্থির তবে স্থবির নয়, সে যুধিষ্ঠির, সকল জটিলতার ঊর্ধে। হি নোজ দ্যাট লাইফ ইজ কমপ্লেক্স। সো নো কনফিঊসান, জাস্ট এইম ইঊর গোল এণ্ড গো ফর ইট।
সে ছিল ভীতু, কৃপণ, গম্ভির, ধৈর্য্যশীল, স্বল্পভাষী এবং সুযোগসন্ধানী। সুযোগের সদ্ব্যবহার সে করতে জানে। সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। একদিন সে বক্সটা খুলে ফেলে। সেখানে কিন্তু কিছু টাকা ছিল না, ছিল অনেক টাকা। সেখানে কিছু গহনা ছিল না, ছিল খাঁটি সোনার অনেক ঝলমলে আনন্দ।
তবে মামার চোখে আলো ঝিলিক দেয় না, সে খুশিতে আত্মহারা হয় না। সে আবারও নির্বাক, শান্ত, ধৈর্যশীল, যেন এসব তার প্রাপ্যই ছিল।
তারপর? তারপর গাজীপুরে মামার ৩টি গার্মেন্টস, চারটি ইটের ভাটা, একটি জুতার ফ্যাক্ট্রি আর নারায়ণগঞ্জে আরেকটি সিরামিকস ফ্যাক্ট্রি। দেখে কিছু বোঝা যায় না; ঐত এখন দুই তলা একটি লাল বাড়ি। সামনে একটুখানি বাগান, পেছনের দিকে ছোট্ট একটি ডোবা, ডোবায় ঘন কালো জল, বড় বড় কচুরিপানা। ডোবার দিকটা হল বাড়ির পেছনের অংশ, এ অংশে আছে ঝুলবারান্দা। বারান্দায় সবসময় ঠাণ্ডা হাওয়া। ডোবার উপর ঝোপঝাড়, ঘন-সবুজ গাছ। সমস্ত বাড়ি উঁচু দেয়ালে ঘেরা। লাল ইটের দেয়াল।

বাবা চলে যাবার পর, আমরাও চলে আসি এই বাড়িতে। নিচতলার কোণার একটি রুম দেয়া হয় আমাদের। আমার বয়স তখন পাঁচ বছর। পাঁচ বছরের ছোট্ট ঋজু। ততদিনে নানা-নানু কেউ নেই, দুজনেই উপরে চলে গেছে। বাড়িতে মামা-মামী, সন্ধ্যা আর ছোট্ট বাবু নুপর। সন্ধ্যা আমার চেয়ে সাড়ে ছয় মাসের বড় ছিল। ও অনেক পাজি ছিল। আমার সাথে অযথাই ঝগড়া করত।

যে দিন চলে আসলাম সেদিন ছিল বাংলা বছরের প্রথম দিন। ইংরেজি হ্যাপি নিউ ইয়ারের মত। মামা আম্মা’কে বললেন, ‘তরে এখন একটা থাপ্পর দেয়া উচিৎ। স্বামির বাড়ি এইভাবে ফেইল্যা আসা ঠিক হইল? আজ নববর্ষের প্রথম দিন। তরে ছাড় দিলাম’। আম্মা মাথা নিচু করে কাঁদতে থাকল। আম্মার কান্না আমার চোখেও বৃষ্টি ঝরাতে আগ্রহ করে। মামা আমাকে ডাকলেন, ‘এই এদিকে আয়।’ আমি ভয়ে ভয়ে কাছে যাই। ‘ঋজু, চল বাজারে চল। আজকে তর সমান একটা ইলিশ মাছি কিনে আনব। পহেলা বৈশাখের ইলিশ ভাজা আর পান্তা, __ চল চল।’
মামা প্রায় আমার সমানই একটা ইলিশ মাছ কিনে ফেললেন। খাবার টেবিলে, পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজি। আরও কত রকমের শাঁক, আর হহরেক রকমের ভর্তা। গম্ভীর প্রকৃতির মামা সেদিন অযথাই বক বক করছিলেন। ‘সন্ধ্যা আর ঋঝু শোন, এই শাঁক শুধু একটা শাঁক না, এটাতে ১৪ রকম শাঁক মিক্স করা আছে। নরসিংদী থেকে চাচী নিয়া আসছে। এর মধ্যে কয়েকটা তিতা শাঁকও আছে। এইগুলা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল।’ সন্ধ্যা শাঁক খাওয়ায় ভীষণ আপত্তি তুলল। মামা অতঃপর বিভিন্ন কচু শাঁক, লালা শাঁক, কলমি শাঁক, হেলেঞ্চা শাঁক ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার শাঁকের ঐতিহ্য ও খাদ্যগুন ব্যাখ্যা করলেন। এবার সন্ধ্যা শাঁক খাওয়ায় চূড়ান্ত আগ্রহ দেখাল। আরও একটা জিনিস মামা আমাকে আর সন্ধ্যাকে খুবই আগ্রহ নিয়ে খাওয়ালেন, কচু পাতাঁর খাট্টা। এটি এক ধরনের টক তরকারি। সন্ধ্যার এই জিনিসটা খুব পছন্দ হয়েছিল, আমার টক ভাল লাগে না।
বিকেলে মামা আমাদের তাঁর চাচীর আনা বিভিন্ন প্রকার ছাতু খাওয়ালেন। চালের ছাতু, গমের ছাতু, পায়রার ছাতু, ছোলা বুটের ছাতু ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি আর সন্ধ্যা সাগর কলা দিয়ে ছাতু খেলাম।

আমরা মামার বাড়িতে থাকি অতিথির মত। মামা ছিল চুপচাপ। আগের মতই। একবার মনে হয় বলেছিল আম্মুর জন্য আবার ছেলে দেখা হচ্ছে। ব্যাস, শুরু হল তার কান্না। টানা তিনদিন মা কিছুই খেল না, ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদল। মামা রেগে গিয়ে বলল, “এই মেয়ে, কান্নাকাটি বন্ধ কর, তোর বিয়ে করতে হবে না, তোর যা ইচ্ছা তাই কর। যত্তোসব ফাইজলামী।”
কিন্তু সন্ধ্যা আমার সাথে সবসময়ই ঝগড়াঝাটি করত। যখন-তখন আমার চুল ধরে টানাটানি করত। আমি কিছু বলতাম না, ও আমার চেয়ে বড় ছিল তো তাই. নাকি আমার সাহস একটু কম ছিল বলে ঠিক খেয়াল নাই। আসলে আমি এত ভীতু আর গাধা ছিলাম না, ওর কাছে শুনতে শুনতে ভাবলাম আমি মনে হয় বোকাই, তারপর সাত্যি সত্যিই একসময় গাধা হয়ে গেলাম। বুদ্ধিসুদ্ধি একেবারে কম। ও আমার সাথে এত ঝগড়াঝাটি করত যে তা ছিল প্রায় অসহ্য। আমি মাঝে মাঝে ওকে কিছু বললেও মামা কিছুই বলত না। মামার এই একটা প্রবলেম, ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝতাম না, সে সবার সাথে কেমন গম্ভীর, বদমেজাজি, অথচ এই মেয়ের সাথে কেমন যেন সাদাসিদে ভালমানুষ। এই মেয়েকে দেখলেই তার মুড চেঞ্জ হয়ে যেত, কেমন হাসি হাসি চেহারা করে তার সাথে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা, অসহ্য।
-বাবা, তুমি সেইভ্ করনা কেন?
-এইত করব।
-না পঁচা দেখাচ্ছে, রেজার আনি?
-আন্ত দেখি।
অথবা,
-বাবা, তুমি কি আমাকে বাজার থেকে একটা হাতির বাচ্চা কিনে দিতে পারবা?
-হাতির বাচ্চা? হাতি তো বাজারে বিক্রি হয় না, দাঁড়া দেখি।
দুই দিন পর,
-হাতির বাচ্চা তো পেলাম নারে সন্ধ্যা। আচ্ছা অন্য কিছু হলে চলবে না? এই ধর হরিণের বাচ্চা? হবে না।
সন্ধ্যাত মহা খুশি। ২টা হরিণের বাচ্চা এল। ও আমাকে কাছেও যেতে দেয় না। “শোন্, তুই কিন্তু কখনোই ওদের ধরবি না, তুই হলি রাখাল, ওদের ঘাস এনে দিবি, ঠিক আছে?” আমি বাধ্য ছেলের মত মাথা নাড়াই। আমার মন খারাপ দেখে ও বলে, “ আচ্ছা যা আমার খরগোশ দুইটা এখন থেকে তোর, ওকে?” আমি মাথা নাড়াই। মাথা দুলাতে আমার ভাল লাগে। পরে অবশ্য ও আমাকে হরিণদের ধরতে দিয়েছিল, কিন্তু ওরা কয়েকমাস পরই মরে গিয়েছিল।
এভাবে সন্ধ্যা সবসময়ই আমার সাথে লাগত। আমি কিছু করতে না পারলেই চড়, থাপ্পর দিত। আমি অনেক কিছু পারতাম না। ভালমতো অংক করতে পারতাম না, খালি ভুল হত। ওর একটিও ভুল হত না। ও আমাকে অংক দেখিয়ে দিয়ে বলত “গাধা ঘাস খা।”
ওর আরেকটা প্রবলেম ছিল - “টুপ্টাপ”। ও টুপটাপ শব্দ পছন্দ করত। এই যেমন পানিতে কোন কিছু পড়ল, টুপ করে শব্দ হল, এতেই ওর মজা, ফাজিলের হাড্ডি।
একদিন আমার পেনসিল হারিয়ে গেল, আমি আর পাই না। আম্মুর কাছে বললে আম্মুত পিটুনি দেবে। আমি আর কী করি, কাঁদতে থাকলাম। একটু পর সন্ধ্যা এসে দেখে আমি কাঁদছি। ও বলল, “এই গাধা, কাঁদিস ক্যান?” আমি বলি, “পেনসিল!” ও হি হি করে হাসতে থাকে। “এদিকে আয়।” ওর হাতে চারটা পেনসিল ছিল। ও ঝুলবারান্দা দিয়ে হাত বের করে টুপ করে একটা পেনসিল নিচে ফেলে দিল। ডোবায় পড়ে শব্দ হলো - ‘টুপ’।
“এই গাধা, তোর পেনসিল ঐখানে, যা নিয়ে আয়।” “ কিন্তু আমি তো সাঁতার পারি না।” ও বলে, “তাহলে আর কি, কাঁদতেছিলি, কাঁদতে থাক।” আমি কাঁদতে থাকলাম। ও বিরক্ত হয়ে বলে, “এই মেয়ে মানুষের মত কাঁদবি না, গাধা।” আমি বললাম, “ আম্মু মারবে যে।” “এই নে, তোকে ২টা দিলাম, আমার অনেকগুলো আছে। এখন যা ভাগ।” এই বলে সে বাকি পেনসিলটাও নিচে ফেলে দিল।
ওর টুপটাপ সমস্যা কিন্তু থেকেই গেল। সে প্রতিদিনই কিছু না কিছু ডোবায় ফেলতে থাকে। একদিন সে সিলভার কালারের rado -এর যে ঘড়িটা মামার ছিল, তা আমার সামনে টুপ করে ফেলে দিল। ঘড়িটা অনেক সুন্দর ছিল, আমি মামাকে বলে দিয়েছিলাম; কিন্তু মামা ওকে কিছুই বলল না।
এভাবেই অনেকদিন চলে গেল। একদিন ও আমার স্কুল স্যুটা পানিতে ফেলে দিল, কিন্তু আমি আর কাঁদলাম না। কারণ আমি তখন অনেক বড় হয়েছি। আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। কিন্তু আমি অনেক রাগলাম। ভাবলাম একটা প্রতিশোধ নিতে হবে। ওকে এখনি দুইটা জোরে থাপ্পর দিব; কিন্তু সাহস পেলাম না। পরে ভাবলাম ওরও স্কুল সু জোড়া ফেলে দিব। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। ও কাছাকাছি ছিল না, ওর জুতা জোড়া এনে টুপ করে পানিতে ফেলে দিলাম; কিন্তু টুপ করে শব্দ হল না। থপাস করে শব্দ হল। আমার একটুও মজা লাগল না। মেজাজটা আরও খারাপ হল। ভাবলাম ওকে আরও বড় শাস্তি দিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিলাম ওর সাথে কথাই বলব না। দেখুক কেমন লাগে। পরক্ষণেই মনে হল আমি মোটামোটি একটা ওয়াইস ডিসিশান নিয়েছি। আই সাঊটেড ঋজু, ইঊ আর ব্রিলিয়াণ্ট, ....টেরেফিক, কোনো তুলনা নাই।
ঔষধে যথেষ্ট কাজ দিল। ও আমার সাথে ফাইজলামী করতে আসে আমি কোন কথাই বলি না। আমার চুল ধরে টানলেও কথা বলি না। ও হাল ছেড়ে দিল। ঐদিন সে একেবারে টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিল। আমার অনেক মজা লাগছিল।
পরের দিন সে আবার শয়তানি শুরু করল।
“এই ঋজু, তুই কি আমার সাথে আর কখনোই কথা বলবি না?” আমি বললাম, “না”। “ কোনদিনও বলবি না?” আমি বললাম, “জীবনেও বলব না।” ও খিল খিল করে হাসতে থাকে। “বুঝলি, তুই একটা অরিজিনাল কপি, ‘গাধার’। তুই অলরেডি আমার সাথে কথা বলেই ফেলেছিস। হি হি।”
নিজের উপর আমার প্রচণ্ড রাগ হল, ভাবলাম আমি সত্যিই মনে হয় গাধা, একেবারে বোকা। দিনকে দিন ওর অত্যাচার বেড়েই চলল। ও গায়ে পড়ে আমার সাথে ঝগড়া করতে থাকে। কিন্তু আমার শুধু নিজের উপরই রাগ হচ্ছিল, আমি কেন ওকে একটা সমোচিত শিক্ষা দিতে পারি না। আমি কেন ওকে ভয় পাই। কি লজ্জার কথা!
আমি আরও অনেক বড় হয়ে গেলাম। আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। আমার ঠোটের উপরের অংশ দিয়ে ছোট ছোট লোম উঠছিল। আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লাম। লোমগুলো বেশ বড় হয়ে উঠছিল। মা কোনদিন হাসে না, আব্বু চলে যাবার পর থেকে তো একদমই না। সেই মা একদিন আমাকে দেখে ফ্যাক করে হেসে দিল, লোমগুলোর দিকে তাকিয়ে সে বলল, “এখন তোর কী হবে রে ঋজু?” আমিত শুনেই হা। এটা কোন কথা হল? আমাদের ক্লাসের অনেকেরইত এটা হয়েছে, তাই বলে কারও মা কি এরকম বলেছে? এই মহিলা যে এককালে মহা ফাজিল ছিল তা তো বোঝাই যায়।
আম্মুর কথা ভাবতে ভাবতেই আমার সন্ধ্যার কথা মনে হল। সর্বনাশ! ওতো এখন আমাকে অনেক জ্বালাবে। হঠাৎ আমার একটা ব্যাপার খেয়াল হল, ইদানিং ও আমার কাছাকাছি খুব একটা আসে না। যাক বাবা, বাঁচা গেছে। কিন্তু কেন? আমি কী করছি? হঠাৎ সামনে পড়লে বলে, কিরে চিংড়ি মাছ, কি খবর? ব্যস এইটুকুই। তারপর, ওর সাথে প্রায় দেখাই হয় না। আমার ব্যাপারটা অনেক খারাপ লাগল। আমি কী করেছি? ও আমাকে যেন এভয়েড করছে। করুক, আমার কি? ইদানিং ওর অনেক বন্ধু। ওরা মাঝে মাঝে বাসায় আসে। কতগুলো ছেলে বন্ধুও আছে, ওরা সারাদিন গল্প করে, হাসাহাসি করে? আমার ওদের কথা শুনতে ভাল লাগে; কিন্তু সামনে যেতে ভাল লাগে না। কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে। আর আমার প্রায় বন্ধুই নেই। ইদানিং আমি অনেক পড়াশোনা করি। অনেক অনেক বই। দুই তলার স্টোররুম ভর্তি শুধু বই আর বই। দস্তয়াভস্কি, সেক্সপিয়ার, মার্কস, শরৎ, রবীন্দ্র, নজরুল কত কি। বইগুলো আব্বুর ছিল। আমরা যখন এই বাসায় চলে আসি তখন বইগুলোও আনা হয়। অনেক বই আছে যেগুলো আমি বুঝিই না। আব্বুর মনে হয় অনেক বুদ্ধি ছিল। বই পড়লে বুদ্ধি বাড়ে; কিন্তু আমার মাথার বুদ্ধি মনে হয় বেশী বাড়ছে না। কেমন জানি দিনকে দিন বোকা হয়ে যাচ্ছি। আর সন্ধ্যা, ওর চোখে-মুখে বুদ্ধির ঝিলিক। আরও একটা ব্যাপার, ইদানিং ওকে দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। ওর চেহারা দিনে দিনে সুন্দর হচ্ছে।
আমাদের এইচ, এস. সি পরীক্ষাও শেষ হল। রেজাল্ট বের হল। সন্ধ্যা একেবারে বোর্ড স্ট্যান্ড, ও অবশ্য সব সময়ই আউটস্ট্যান্ডিং। আমিও পাশ করি, বেশ ভালভাবেই করি। মামা অনেক খুশি হয়েছিল, সে আমাদের অনেক অনেক উপহার দিল। তারপর থেকে সন্ধ্যা আবার আমাকে জ্বালাতন শুরু করল। তবে এবার একটু যেন অন্যভাবে।
- এই ঋজু বুঝলি ঐ যে আমার একটা ফ্রেন্ড আছে না, লম্বামত, বকের মত লম্বা? রুমন বুঝলি।
- কী হয়েছে তার?
- না কিছু না, কাউকে বলবি না কিন্তু, ও না, আমাকে অফার করেছে।
- মানে কি? , আমি জিজ্ঞেস করি।
- ওহুঁ গাধা, তুই একটা গরু, বুঝলি না, মানে ও আমার সাথে প্রেম কতে চায়।
আমি থ হয়ে গেলাম। মনে মনে বলি, প্রেম কতে চায়, ভাল কথা প্রেম কর। আমারে বলিস ক্যান। তোর বাপকে বল। বাপ-বেটি দুইজনে মিলে নাচানাচি কর।
- ও আচ্ছা, ভাল তো। তাহলে তুই কি এখন ওর সাথে প্রেম করবি?
- নো ওয়ে, আমি তোর মতো গরু নাকি। তুইত জানিস আমার অনেক বুদ্ধি।
- ‘তাহলে কী করবি?’ আমি জিজ্ঞেস করি।
- হুঁ, বুঝলি না, পেনডিং থাকুক আর কি। নাও বলব না, হ্যাঁও বলব না। বুঝলি ছেলে মানুষরে এই রকম শিক্ষাই দিতে হয়।
আরেকদিন বিকাল।
ইদানিং ও শাড়িও পড়ে। ওকে তখন বুড়ি বুড়ি লাগে। পেত্নিও বলা যায়; কিন্তু ও ভাবে ঐশ্বরিয়া আরকি। একদিন ও শাড়ি পড়েছিল। ওই যে, নীল রঙের, সাদা সাদা ফুল, ঐ শাড়িটা। ও আমাকে বলে, “ এই আমার সাথে একজায়াগায় যাবি?” আমি বলি, “না”।
Ñ“না কেন? আমি কি দেখতে খারাপ নাকি? চল না। আমার খুব দরকার। প্লিজ” আমি আবার বলি, “ না ”। “ ছেলে মানুষ দেখে এমন করলি। অবশ্য দুই যে কোয়ালিটির ছেলে মানুষ। ভেরী পুওর কোয়ালিটি। তুই একটা কাওয়ার্ড, ইডিয়ট, স্টুপিড।” যা ভাগ। “ আচ্ছা ঠিক আছে, চল” আমি রাজি হই। “এই ভাবে যাবি নাকি? তোর ওই গ্রিন টি-শার্ট টা পরে আয়। ইউ নো, আই লাইক গ্রিন, হি.....হি ।”
আমাদের রিকশা তখন জিয়া উদ্যান পাস করছিল।
“এই জানিস তোকে আমি কি জন্য সাথে আনছি?” “ কী জন্য?” । আমি প্রশ্ন করি। “আরে ঐযে, ও তুইত আবার জানিসই না। আমাদের কলেজে এক বড় ভাই আছে.. .. রিফাত ভাই। বুঝলি ব্যাটা খুব জ্বালাতন করতেছে। বলে দিছি আমার বয় ফ্রেন্ড আছে।” “আছে নাকি? আমি জিজ্ঞেস করি। “আরে না, গাধা নাকি। এই জন্যই তো তোকে আনলাম। তুই আজকে প্রক্সি দিবি। ভাল বুদ্ধি না?” “হুঁম, ভাল বুদ্ধি”, কিন্তু আমার অনেক মেজাজ খারাপ হল। তারপর আমি একটা সাহসের কাজ করে ফেলি। আমি রিকশা থামাই এবং নামি। তারপর পেছনের দিকে হাটা শুরু করি। সন্ধ্যা আমাকে ডাকে; কিন্তু আমি শুনি না। ও আমাকে চিৎকার করে ডাকে; কিন্তু আমি তখন বধির। আমি তখন সহসী। আমি পেছনে তাকাই না। শুধুই হাটতে থাকি।
এভাবেই বছর চলে যায়। আমি আর সাহসী হই না। ঐ একদিনই হয়েছিলাম। আমি দিনে দিনে আরও বোকা হই। আর সন্ধ্যা, ও দিনে দিনে সুন্দর হয়। ওর শরীরে আলো ঝিলমিল করে। ওর চোখ হয়ে ওঠে গভীর কালো, চুল হয়ে যায় বর্ষার মেঘ।
আবারও চলে যায় দিন। দিনের পর দিন। বছরের পর বছর। পরিশ্রান্ত সময়।
সন্ধ্যা ঢাকা মেডিকেল হতে বের হবে। ইন্টার্নিটা শেষ করেই। আমি একটুখানি দূরে। কেমিস্ট্রি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমারও বের হবার সময় হয়ে এলো। চোখের সমস্যার কারণে চশমা নিতে হয়েছে। চশমা নেয়ার পর থেকে নিজেকে কেমন জ্ঞানী জ্ঞানী লাগে। আমি আয়না দেখে মনে মনে বলি, “ ঋজু, তোমাকে মাস্টার মশাই, মাস্টার মশাই লাগতেছে। কেমন আছেন মাস্টার সাহেব?”
আরেকদিন বিকালবেলা। এটি নিতান্তই এক বিকেল বেলা নয়। সেই সেদিনের মত আরেকটি পহেলা বৈশাখ, সেদিনের সেই পহেলা বৈশাখের ঠিক ১৮ বছর পরের, আরেকটি নববর্ষের প্রথম দিন। এখন পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরকে চেনা যায় না। ঢাকা শহরের মানুষ খালি আনন্দ করার উপলক্ষ্য খুজে। এদের জীবনের আনন্দের ক্ষণ খুবই কম। আবার উৎসব গুলো আদের জন্য আনন্দের চেয়ে ভুগান্তিই বেশি আনে। এই যে, শাহবাগ, রমনা, টি.এস.সি কথাও পা ফেলার জায়গা নেই। মানুষ আর রঙের ছড়াছড়ি। সন্ধ্যা সেদিন আমাকে শহীদ মিনারের ওখানে আসতে বলে। আমি আসি, সন্ধ্যাও আসে। কিন্তু ও আমাকে এখানে আসতে বলল কেন বুঝলাম না।
“ আজকে আমার বার্থডে, ঋজু।” বলে সন্ধ্যা। “মিথ্যে কথা, আজকে বাংলা বছরে জন্মদিন, শুভ নববর্ষ।” সন্ধ্যা হোসে ফেলে “থ্যাংক য়্যু, ঋজু”;তারপর ও অনেকক্ষন আর কথাই বলেনা, আমিও বলিনা। কাউকে ঊইশ করার পর আর কি বলা উচিৎ কে জানে, আমি মাঝে মাঝেই এরকম সংকটে পড়ে যাই। এই অবস্থাকে বলে কিংকর্তব্যবিমূরতা। হঠাৎ করে ও খিলখিল করে হেসে ফেলে। “এই তোকে একটা কথা বলি রাগ করবি না কিন্তু, দাড়া একটু প্রিপারেশন নিয়ে নেই .. .. .. .. কথাটা হলো যে, তুই কি আমাকে বিয়ে করবি?” আমি চমকে উঠি, এই মেয়ে কখনোই ভাল হবে না। ফাজিলের হাড্ডি। “আমার ফাজলামো পছন্দ না।” “ভেবে দেখ্। এমন সুযোগ আর পাবি না। আমাকে বিয়ে না করলে, এই জীবনে আর তোর বিয়ে-শাদী কিছু হবে না। তোকে কে বিয়ে করবে বল? কেউ না।” এই মেয়ের কোন দিন পরিবর্তন আসবে না, গ্যারাণ্টেড। “আমি কিন্তু চলে যাচ্ছি” , বলে আমি উঠে দাড়াই।
কিন্তু সন্ধ্যা কিছুই বলে না। চলে যেতে নিশেধও করে না। আমি একটু অবাক হই। আমি হাটতে থাকি। আমি একবার পেছনে ফিরে তাকাই। সন্ধ্যা বসে আছে। ও মাথা নিচু করে কাঁদছে। ওর এত কষ্ট কেন? হঠাৎ এই মেয়েটার প্রতি আমার প্রচণ্ড দুঃখ অনুভব হয়। আমার ভীষণ কষ্ট লাগে। আমি ওর কাছে যাই। “তোমার কী হয়েছে, সন্ধ্যা?” সন্ধ্যা কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলে, “ আমি তোকে খুব জ্বালাই না? আমি খুব খারাপ তাই না?” “ না, ঠিক আছে। আমি তাই বলছি নাকি।” সন্ধ্যার চোখ দিয়ে টপটপ জল পড়ে “ঋজু, আমি তোকে ছাড়া বাঁচব নারে। সত্যিই বাঁচব না।” আমি কথা বলতে পারি না। সন্ধ্যার চোখে প্রচণ্ড বৃষ্টি। বৃষ্টি আমার চোখেও জল ঝড়াতে চায়। অযথাই। সন্ধ্যার জন্য।
“এই গাধা, তুই কাঁদিস ক্যান। তুই কি মেয়ে মানুষ? চল, পান্তা-ইলিশ খাবি না?”
যেতে আমাকে হবেই। ওকে অস্বীকার করার শক্তি আমার নেই। আমি ওর দিকে তাকাই, মনে মনে বলি, “কিন্তু তুমি যদি আমাকে কোনদিন, ঝুলবারান্দা দিয়ে টুপ করে ফেলে দাও তখন?”সন্ধ্যার মায়াবী চোখই তার উত্তর দেয় “আমি তোমাকে কোনদিনও ফেলে দিব না, আমিত আর আত্মঘাতী হতে পারি না।”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সোয়াদ আহমেদ ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন @ এস, এম, ফজলুল হাসান
এস, এম, ফজলুল হাসান অনেক ভালো লেখেছেন , ধন্যবাদ আপনাকে
সোয়াদ আহমেদ অনেক ধন্যবাদ, আপনার লেখাতা অবশ্যই পড়ব। ভাল থাকবেন @ সাজিদ খান
সোয়াদ আহমেদ ধন্যবাদ, দোয়া রাখবেন, ভাল থাকুন @যাযাবর ঢাকা
সোয়াদ আহমেদ ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন @ মাহমুদা rahman
সাজিদ খান অনেক ভালো লেগেছে ভোটও দিলাম আমার লেখা (এই বৈশাথেই তার মৃত্যু)কবিতাটি আশা করি দেখবেন,ভালোলাগলে ভোট দিন.শুভকামনা রইলো +৩
যাযাবর ঢাকা চালিয়ে যান ............।
মাহমুদা rahman এই পবের্র একটি গল্প আমার অসাধারণ লেগেছে....ভোট ৫
সোয়াদ আহমেদ কিন্তু মনে হয় এটা ৫০০০ শব্দ অতিক্রম করে নি । বা করলেও খুব বেশি ডিফ্রেন্ট হয় নি। যাই হোক ধন্যবাদ । আপনার লেখা পড়ব ক্ষণ ___ @ মোঃ শামছুল আরেফিন

০৪ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪