আর্ত্বনাদ

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

তির্থক আহসান রুবেল
  • ৩৮
  • 0
  • ৮০
আমি আজ আর কোথাও দিতে পারি না আমার পিতৃ পরিচয়।
কোথাও বলতে পারি না, আমার পিতা অমুক।
কারণ আমার পিতাকে সবাই চেনে। সবাই জানে তার কর্ম। যে কর্মের ফল ভোগ করছি আমি।
যখন কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার বাবার নাম কি? কি করেন?
আমি লজ্জায় মুখ লুকাই। শুধু বলি, কেনো এ প্রশ্ন? আমি কি আমার পরিচয়ে পরিচিত হতে পারি না? আয়নায় আমার প্রতিবিম্ব আমাকে নিয়ে হাসে। একই রকম জিজ্ঞাসাবোধক!
আমি বলতে পারি না কাউকে আমার বাবা একজন ধর্ম ব্যবসায়ী। তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী। পারিনা কাউকে বলতে, আমার আদর্শ আমার পিতা। আমার চোখে সেরা মানুষ আমার পিতা। বলতে পারি না, আমিও আমার বাবার মতো হবো!
এমনি করে যখন আমি বিভ্রান্ত! যখন বলি যে, আমার কি কিছুই নেই... পরিচয় দেবার মতো?
তখনই আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হলো দেশের বাইরে। আমার মতো, আমার বোনও কোনদিন কাউকে বলতে পারেনি তার পিতৃ পরিচয়। এমন কি কোনদিন তার কোন বন্ধু কিংবা বান্ধবীকে বাসায় আনেনি। পাছে জেনে যায় সব!
আজ, বিদেশের মাটিতে বসে ইন্টারনেটে আমি দেশের খোঁজ নিই। বাংলাদেশে নাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সামনে দাঁড় করাবে! এদেশে সকল বাঙ্গালী যখন ২১ শে ফেব্রুয়ারী, ২৬ মার্চ কিংবা ১৬ই ডিসেম্বর পালন করে.... সেদিন আমি ভিন্ন কোন শহরে অবকাশে যাই। কখনো কখনো ইচ্ছে হয়, আমিও যোগ দেই। আবার মনে হয়, যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, তোমার বাবা কি মুক্তিযোদ্ধা?
মায়ের ঘরে যে পুরুষটি প্রতি রাতে ঘুমায়, তাকে আমি বাবা বলি। আমার সাথের ছেলে-মেয়েরাও একই ভাবে তাদের বাবাকে চেনে। পরিচয় দেয় বাবা বলে। অথচ আমি বাবার পরিচয় লুকাতে লুকাতে আজ হয়ে গেছি বেজন্মা। আমার দেশ বলে আজ আসলে কিছু নেই। নেই আমার বাবা, আমার মা। আমি বেজন্মা। শ্রেফ একজন বেজন্মা। নতুবা আমি কেন দিতে পারবো না, আমার পিতার পরিচয়। সবার মতো আমার পিতাও তো আমাকে লালন-পালন করেছে। মুখে তুলে খাইয়েছে ভাত!
আচ্ছা! দেশের সব তরুণ যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের মিছিলে শামিল। তখন আমারও কেন সেই মিছিলে যেতে ইচ্ছে করছে? আমি ভাবি! ভাবতে ভাবতে রাত পেরিয়ে সকাল আসে। সকাল শেষে রাত!
আচ্ছা, আসামীরা তো বিচার শেষে স্বাভাবিক জীবনের দরজায় পা রাখার সুযোগ পায়। আমি কি আমার পিতার বিচার শেষে, তার পরিচয় দিতে পারবো পিতা হিসেবে! যদি তার জেল হয়, কিংবা ফাঁসি! মৃত বাবার লাশটিকে কাঁধে নিয়ে আমি কি যেতে পারবো কোন গোরস্থানে? দেশের মানুষ কি বাংলার মাটিতে আমার বাবার লাশ দাফন করতে দেবে? নাকি আমার মতো তাকেও পাঠানো বিদেশের মাটিতে! আমাকে কি ভিক্ষা করতে হবে, সাড়ে তিন হাত মাটির জন্য! নাকি রাজাকার, আলবদর, আলশামসের জন্য আলাদা কবরস্থান হবে? যেমন আছে বুদ্ধিজীবি কবরস্থান। আচ্ছা সে কবরে কি বছরে একদিন বাঙ্গালীরা দেশ প্রেমে জাগ্রত হয়ে জুতা ছুড়বে?
কখনো কখনো ভাবি, আমি কি এ দেশের সন্তান! না কি একজন রাজাকারের? কোনটা আমার পরিচয়?
সারারাত ভেবে ঠিক সূর্য উঠার আগে বুঝতে পারলাম, আমি এদেশের সন্তান। আমি কোন রাজাকারের সন্তান নয়। হয়ত আমার জন্ম যিশুর মতো! তাই তো স্বজাতির পাশে জায়গা নিতে, আমি আজ মিছিলে নামবো। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আমি আমার বোন হত্যার বিচার চাই। আমি যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। আমি আমার মায়ের স্বামীর.... ফাঁসি চাই!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানি হক ভাইয়ার কবিতা আগেই পরেছিলাম ..এখন ভোট দেতে এসেছি ..খুবই রিদয় স্পর্শী কবিতা ..খুবই ভালো লাগলো ..এই ভিন্ন স্বাদের কবিতাটি ..সুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ভাইকে
ধন্যবাদ......... tani......... আড্ডায় আসবেন সুযোগ হলে.......... বকবক করা যাবে..... ভাল থাকবেন....
খন্দকার নাহিদ হোসেন আবেগ নিয়ে কিছু বলবার নেই কারণ সেটা হৃদয়ে হাত রাখলো। তবে এ ধরনের কবিতা লিখতে হলে কবিকে ভাষা নির্মাণে কাব্য নিয়ে আর একটু ভাবতে হবে বৈকি।
হয়ত তোমার কথাই ঠিক ভাই..... আসলে আমি তো ভাবাবেগ কে পাত্তা না দিয়ে আবৃত্তিকে বেশী গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করি .... তাই বেশীর ভাগ সময় ভাব+আবেগ+ভাষা ঠিক কবিতার মতো হয় না.....
মৃন্ময় মিজান ব্যতিক্রমী অনুভূতির চমৎকার প্রকাশ।.....
মৃন্ময় মিজান...... অনুভূতি ধারণ করেছেন..... ধন্যবাদ.....
মামুন ম. আজিজ সুন্দর কথামালা। সময়ের দাবী
সময়ের দাবী কথাটা ঠিক............. ধন্যবাদ মামুন ভাই.....
রনীল আমি ব্যক্তিগত ভাবে একজনকে চিনি- যার বাবা যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। যতদূর জানি- ঐ ব্যক্তিটি ৭১ এ তার বাবার ভুমিকার কারনে কোন রকম অনুতাপ অনুভব করেনা। যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লিখেছেন- সেটা খুবই ব্যতিক্রম। কবিতার প্যাটার্নটাও অপরিচিত। তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে কোন দ্বিধা নেই।
আসলে বাংলাদেশের কোন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান আজ পর্যন্ত প্রকাশ্যে এসে কথা বলেনি........ তাদের সবাই এদেশটাকে হয়ত নিজের ভাবতে পারেনি...... কারণ রক্তদোষ...!!! আবার হয়ত এমন কেউ আছে, যে ভাবে লেখাটির মতো........ আমি আসলে একটা কাল্পনিক চরিত্র বের করতে চেয়েছি...........
ওবাইদুল হক আচ্ছা, আসামীরা তো বিচার শেষে স্বাভাবিক জীবনের দরজায় পা রাখার সুযোগ পায়। আমি কি আমার পিতার বিচার শেষে, তার পরিচয় দিতে পারবো পিতা হিসেবে! যদি তার জেল হয়, কিংবা ফাঁসি আসলে সমাজ আজ তার নিজস্ব গতি হারানো আপন পর কিছুই বুঝেনা । অনেক কথা ফুটেউটেছে আপনার লেখায় । শুবকামনা ভাই । আর আপনি যখন আড্ডায় কিছু বলতে চেয়েছিলেন আর বলেননি তখন ভাবলাম মনের বাঘ । হাহাহা মিস করছি ভাই আপনাকে ।
ভাই আর বলবেন না.... জীবনের নানা জটিলতায় বিপর্যস্ত জীবনযাপন করছি কিছুদিন যাবত........ ভাল থাকবেন..........
বশির আহমেদ প্রতিটি রাজাকার আলবদর এর সন্তান সহ ক্রিমিনালরা যদি পরিবর্তিত হতো কতইনা ভাল হতো ।
ঠিক কইছেন........... বশির ভাই...........
সেলিনা ইসলাম অনেক সুন্দর একটা গদ্য কবিতা --এমন করে যদি শুধু রাজাকারের সন্তান নয় দেশের সকল কুচক্রীর সন্তান সোচ্চার হন তবেই আমার মনে হয় আমাদের দেশে শান্তি আসবে ! শুভকামনা কবি
ধন্যবাদ সেলিনা ইসলাম............ সময় দিয়েছেন, পড়েছেন, মতামত দিলেন..... একদিন বদলাবে সব.............
শাহীন আলম মুটামুটি গল্পের মত লেগেছে কবিতাটি
গল্পের মতো করেই লিখেছি আসলে.... কারণ এটা মূলত আবৃত্তির কথা ভেবে লেখা..... ধন্যবাদ ভাই......
Lutful Bari Panna সব লেখার কবিতা মান বিচার নাই করলাম। এ লেখার বক্তব্যটুকু আমার খুবই ভাল লেগেছে- এটাই বলে গেলাম।
পান্না ভাই, এটাই হচ্ছে লেখক হিসেবে পাওয়া........

২১ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪