অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হলাম একাদশ শ্রেণীতে পাঁচবিবির সেই বিখ্যাত কলেজ মহিপুর হাজী মহসীন সরকারী কলেজে। আশা আর স্বপ্ন বলতে মনে মনে আমি ভেবে ছিলাম কলেজে প্রথম আমি পা দিচ্ছি অনেক গল্প শুনেছি কলেজে উঠলে নাকি সবাই লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রেম/ভালোবাসায় সময় কাটায়। আমাদের কলেজের ভিতর ছিল খুব সুন্দর বকুল তলা, বটতলা, সবুজ ঘাসের বিভিন্ন জায়গা, ফুলের বাগান, ছাদ ইত্যাদি ইত্যাদি। মনকে তখন আমি নিজে নিজে সান্ত্বনা দিলাম যে, থাম আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে আমি আমার কলেজ /জীবন সঙ্গীকে খুঁজে বের করবো। এসব কথা বলতে বলতে আমি বাসায় আসছিলাম। পরের দিন কলেজে গিয়ে দেখলাম যে অনেক বান্ধবী একটি করে ছেলেকে নিয়ে বসে গল্প করছে। বুঝতে পারলাম আগে থেকেই অনেক মেয়ে/বান্ধবীদের তাদের ভালোবাসার লোক ঠিক করা ছিল। তাই আমি মনে মনে যাকে প্রপোজ করবো ভেবেছিলাম, কলেজে এসে পর্যায়ক্রমে দেখলাম সেও ব্লক আছে অন্য জনকে নিয়ে। বিধায় আমার কপালে কলেজ প্রেম নাই বলে ভেবে নিলাম। এভাবে আমার নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ২ বছর কলেজ জীবন কেটেছে সঙ্গীহীন। অতঃপর আমি যখন ইনটার পাশ করে পাঁচবিবি ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হলাম (বিএসএস) বিভাগে। প্রথম দিন উদ্বোধনী ক্লাসটি আমার ভাগ্যে হয়নি। পরদিন আমি যখন কলেজে গেলাম তখন আমার সাথে রোমানা নামে একটি নতুন বান্ধবী তৈরী হলো। তার সাথে আমার মেলামেশা বেশী হওয়ার কারণে অনেকে আবার ভেবে নিয়েছে আমি তার সাথেই বর্তমানে লাইন মারছি কিন্তু আসল ব্যাপারটি আসলে কেউ জানেনা। এভাবে ২সপ্তাহের মতো কেটে গেল নানা প্রকার মজার ঘটনার মধ্য দিয়ে। আমি একদিন ক্লাস করার অপেক্ষা করছিলাম আমাদের কলেজের ১৩ নাম্বার কক্ষের বারান্দায় বসে। হঠাৎ দেখি একাদশ শ্রেণীর ক্লাস শেষ হয়ে গেল। ক্লাস শেষে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বের হচ্ছে আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে নতুন ভর্তি কৃত একাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের দেখতে লাগলাম অনেক ভিড়ের মাঝে একটা মনের মানুষের আশায়। মনে মনে আমি একটা কালো রংয়ের বোরকা পরিহিত মেয়েকে চয়েস করলাম। কিন্তু আমার বন্ধুদের মধ্যে কাউকেই বিষয়টি জানতে অথবা বুঝতে দেয়নি কারণ পরে যদি তার সাথে আমার মিলন হয় তাহলে বন্ধুরা আমাকে আবার দেবদাস বলে ডাকতে পারে। তাকে যখন আমার মনে মনে চয়েস হলো তখন আমি ঠিক করলাম আগামীকাল আমি তার নাম শুনবো। পরদিন কথা মতো তার নাম জানতে পারলাম আমার ২টি বান্ধবীর দ্বারা। এভাবে কিছুদিন যাবার পরে একদিন দেখলাম আমার ক্লাসের এক বান্ধবীর সাথে সেই কালো রংয়ের বোরকা পরিহিত মেয়েটি এসে বলছে আন্টি কেমন আছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি তখন মনে মনে বললাম যা, বাবা এবার একটা সুযোগ পাওয়া গেল। সেই বোরকা পড়া মেয়েটি চলে যাবার পর আমিও সেই মেয়েটির মতো আমার বান্ধবীকে আমি আন্টি বলে ডাকতে শুরু করলাম। বান্ধবী তখন বলছে হঠাৎ আন্টি বলে ডাকা ব্যাপারটা কি বলতো! আমি বললাম তেমন কিছুনা আন্টি পরে বুঝতে পারবেন। এভাবে আরো ২০-২৫ দিন অতিবাহিত হলো নানা প্রকার তথ্য আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে আন্টি আমার ঘটনাটা বুঝতে পেরেছে আমি তাকে আন্টি বলার কারন টা আসলে কি। কলেজ বন্ধ দিবে ঈদের ছুটি আর মাত্র ১ দিন পর। তাই আমি আন্টিকে অনেক অনুরোধ করার পর আন্টি রাজি হলো কলেজ বন্ধ ঘোষনার দিন তার সাথে আমার আলাপ করে দেওয়ার। কাঙ্খিত সেই দিনে আমি বাড়ি থেকে অনেক কনফিডেন্স নিয়ে এসেছিলাম আমার সাথে। কলেজে এসে প্রায় ছুটির অন্তিম ক্ষনে আন্টিকে সেই কালো বোরকা পড়া মেয়েটি ডাকতে এসেছে। আমি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছিলাম সেই আলোচনার জন্যই এসেছে সেই বোরকা পড়া মেয়েটি। একটু পর আন্টি আমাকে বললো ফিরোজ চলো! আমি বললাম কোথায় যাবো সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেই বোরকা পড়া মেয়েটি। তখন আমার কনফিডেন্সকে খুঁজিতেছিলাম দেখি সেগুলো কোথায় যেন চলে গেছে। তবুও আমি সাহস নিয়ে বীরবলের মতো চললাম একটি ক্লাস রুমে। একটু পর বোরকা পড়া মেয়েটি এসে বললো কি বলবেন বলেন। আমি তো ইতিমধ্যে অবাক!। কি যে বলি তবুও বলতে হবে তা না হলে ১৫ দিন কলেজ বন্ধ দেখা করতে পারবোনা। তাই আমি তার নাম শুনলাম প্রথমে তারপর তার বাড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি। শেষে বললাম আপনার মোবাইল নাম্বারটা কি আমাকে দেওয়া যাবে এই বলে আমার খাতাটি তাকে দিলাম, সে তার নাম্বারটা লিখে দিলো। আমি তাকে আমাদের পাঁচবিবি স্টেডিয়াম মাঠে ঈদের ৩য় দিন ক্লোজ-আপ ওয়ান এবং চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজদের কনসার্টে আসার জন্য আমন্ত্রন জানালাম এবং ঈদের দাওয়াত দিলাম। ২ দিন পর আমি তাকে কল দিলাম এবং বলালাম ঈদের প্রস্তুতি কেমন হচ্ছে এছাড়াও আরও অনেক কিছু। মনে মনে আমি ভাবলাম আমি কি শুধু অন্ধের মতো মেয়েটিকে ভালো বেসে যাবো তাকে তো আমার একবার দেখা উচিৎ। এই জন্য আমি তাকে বললাম তুমি এবার ঈদে কোথায় কোথায় বেড়াতে যাবে। সে বললো কোথাও যাবো না শুধু একটি জায়গায় ছাড়া। আর তা হলো আন্টির বাসায়। আমি বললাম কোনদিন সে বলল ঈদের ২য় দিন বৈকালে। আমি তাকে বললাম ওকে আজ তাহলে রাখি কেমন। এই বলে ফোনটা কেটে দিয়েই কল দিলাম আমার বান্ধবী মানে আমার আন্টিকে। আন্টি কল রিসিভ করতেই আমি আন্টিকে বললাম আন্টি আমি আপনাদের বাসায় ঈদের ২য় দিন বেড়াতে যাবো। আন্টি শুনে তো আনন্দে আত্বহারা। কিন্তু আন্টি তো বুঝতে পারছে না আমি কি জন্য যাচ্ছি তাদের বাসায়। এভাবে ২ দিন যাওয়ার পর চলে এলো সেই কাঙ্খিত ঈদের ২য় দিন। আমি চললাম দুপুরে আমাদের বাসা থেকে খাবার খেয়ে আন্টিদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। গিয়ে দেখি আন্টি দাঁড়িয়ে আছে। আমি আন্টিকে সালাম দিলাম এবং বললাম আন্টি আর কেউ আপনাদের বাসায় বেড়াতে আসেনি। আন্টি এবার বুঝে গেল আমি কার কথা বলছি। আন্টি বললো আসছে রাস্তায় আছে। আধাঘণ্টা পরে আসলো সেই বোরকা পরা মেয়েটি আবারো সেই বোরকা পরেই। কিন্তু ঘরে এসেই বোরকা টা খুলে থ্রি পিচ পরলো আর আমিও তাকে দেখে নিলাম। আমি, আন্টি, বোরকা আর বোরকার একটা বান্ধবী মিলে তারপর চলে গেলাম আমার বান্ধবী রোমানাদের বাসায়। সেখানে কিছু নাস্তা করার পর আমি আমার বাসায় আসার জন্য মোড় থেকে একটা ইজি পাওয়ার করে আমাদের বাড়িতে আসলাম সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে। আমাদের সেই কাহিনী এখনো ধীরে ধীরে আরো বিস্তার লাভ করছে নানা প্রকার ঘটনা ঘটিয়ে। সকলকে ভালোবাসা দিবসে আমার পক্ষ থেকে বন্ধু হিসাবে জানাই লাল গোলাপের রক্তিম শুভেচ্ছা। এই কামনায়। খোদা হাফেজ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিষণ্ন সুমন
সেই ছেলে বেলা থেকে লিখছি. কিন্তু কি যে ছাইপাশ লিখছি আল্লাই মালুম. যেহেতু আমায় কেও চিনেনা. প্রশ্নটা হলো আমি নিজেও কি আমায় চিনি ? যখন পাঠক হিসেবে নিজের লিখাটা পড়ি, তখন মনে হয় এত পচা লিখা আমার হতেই পারেনা. আবার যখন লিখতে বসি তখন বুঝতে পারি, এর চেয়ে ভালো লিখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়. তবে আমি মানুষকে অসম্ভব ভালবাসি. তাই অন্যের লিখার সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার হবেনা. তাই সকল লেখক-লেখিকা ভাই-বোনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিছি, আমার এই অপরাগতায় কেও যেন আমায় ভুল না বুঝেন. শুভকামনা সবার জন্য.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।