রাত তিনটা... চারিদিকে নি:স্তব্ধ নিরবতা। আর এই নিরবতা ভেদ করে সোনাতলী গ্রামের মিঞা বাড়ি থেকে কিছুক্ষণ পরপর ভেসে আসছে গোঙানির শব্দ। এই শব্দের উৎসস্থল মিঞা বাড়ির বড় মেয়ে আমিনা। অসহ্য যন্ত্রনায় খানিক পরপরই বেঁকে বেঁকে উঠছে তার শরীর। “মা, ওমা, এত কষ্ট কেনে মা? এর চাইতে তো মোর মইরা যাওনও ভালা আছিল। আমি মরি না কেনে মা?” আমিনার মা তার মাথার কাছে বসে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন- “অমন অলুক্ষুইন্না কথা মুখে আনিস না। আরেকটু সহ্য কর মা”। “আর কত সহ্য করমু আমি। আর তো পারি না। এই কষ্ট শেষ হয় না কেনে?” বলতে বলতে আবারও অসহ্য যন্ত্রনায় চিৎকার দিয়ে ওঠে আমিনা। একটু পরে আমিনার ছোট বোন ফাতেমা এসে বলল-“মা, সকাল থাইকা বুবুর অবস্থাতো কেবল খারাপই হইবার লাগছে। বাজান বুবুরে সদর হাসপাতালে লওনের জোগাড় করতাছে”। আমিনার মা বলে-“হাসপাতালে নেওয়াই মনে কয় ভালা হইব। অর অবস্থাতো কেবল খারাপই হইবার লাগছে”। তারপর আমিনাকে উদ্দেশ্য করে বলে-“আমিনা আর একটু সবুর কর মা, এহনই তোরে হাসপাতাল লইয়া যামু। আর একটু সবুর কর”। যন্ত্রনায় দাঁত চেপে আমিনা কোনরকমে বলে-“হাসপাতালে লওয়া পর্যন্ত আমি মনে হয় আর বাচুঁম না মা”। আমিনার দাদী পায়ের কাছ থেকে বলে উঠেন-“হাসপাতালে লইয়া আর কি হইব? অর যে অবস্থা হাসপাতালে নিতে নিতে পথেই শেষ হইয়া যাইব। হায়াত মউত সব আল্লাহর হাতে। এই বাড়িতেই রাখ ওরে টানাটানির দরকার নাই”। এদিকে সবাই যখন আমিনাকে হাসপাতালে নিবে কি নিবে না এই আলোচনায় ব্যস্ত ওদিকে তখন আমিনার চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। আমিনার সমস্ত অনুভূতিই ভোঁতা হয়ে আসছে তীব্র ব্যথার কাছে। ব্যথার সাথে লড়াই করবার শেষ শক্তিটুকুও ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে তার।
রাত চারটা... এক বুকফাটা চিৎকারের মধ্যে দিয়ে মিঞা বাড়ির বড় মেয়ে আমিনার সকল কষ্টের অবসান হল।
রাত চারটা এক মিনিট... রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে মিঞা বাড়ির অন্দর থেকে ভেসে এল এক নবজাতক শিশুর কান্না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিজানুর রহমান রানা
অদৃশ্য বন্ধু, গল্পটি ছোট হলেও আমার তরফ থেকে পাঁচ নম্বর থাকলো। কারণ মায়েদের প্রসব বেদনার যন্ত্রণা আমি অনুভব করি। আমি দেখেছি খুব কাছ থেকে। সেটাই আপনি অনেক অল্প কথায় তুলে ধরেছেন সুন্দর করে। আমি সাধারণত গল্প পড়ার সময় পাই না, কবিতাই বেশি পড়ি। বলা যায়, কবিতার প্রতি অতি ভক্তি। কিন্তু আপনার গল্পটি আমাকে একটি নতুন ভাবনার মধ্যে ফেলে দিলো। সেটা কি? সেটা হলো একজন মায়ের প্রসব বেদনার কষ্ট। সেজন্যেই পাঁচ দিতে কাপণ্যবোধ হলো না। ধন্যবাদ।
হোসেন মোশাররফ
গল্পের বাস্তবতা টুকু তুলে এনেছেন ঠিকই কিন্তু তার(গল্পের) যে সাজগোজ টুকু দরকার ছিল তা কিন্তু করাননি....ধন্যবাদ নিন গল্পটি উপহার দেয়ার জন্য,,,
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ডিসেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।