এটি কোন গল্প নয়

সবুজ (জুলাই ২০১২)

আনিসুর রহমান মানিক
  • ১৪
হ্যালো,হ্যালো ২১০০৩।
পিছন ঘুরে দাঁড়ায় ২১০০৩।
দেখে সামনে দাঁড়িয়ে আছে ২৫০০৮।
-৫নং বেডের মানুষটির অবস্থা খুব খারাপ। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
-অক্সিজেন চলছে না!
-হ্যা চলছে।
-চলো দেখি ।
পাশের ঘরে চলে আসে দুজনে।
সবার চেষ্টা বিফল করে দিয়ে মানুষটি মরে যায়।হতাশ হয়ে পড়ে তারা।

এভাবে একটা প্রজাতি পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।কল্পনাই করতে পারেনা তারা।
কল্পনা ? অবাক হয়ে যায় তারা। তাদের কল্পনাশক্তি আছে ? হ্যা অবশ্যই আছে।
অনেক অনেক দিন আগে পৃথিবী নামক গ্রহটিতে অনেক ধরনের প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল।তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব বলে দাবীদার ছিল মানুষ নামের প্রাণীগুলো।তাদের বিদ্যা ছিল, বুদ্ধি ছিল। ছিল আবিস্কারের নেশা। মহাকাশকে জয় করার অদম্য বাসনা। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের সৃষ্টি করে পাঠিয়েছিলেন পৃথিবীতে। তারা হাজার হাজার বছর দাপটের সাথে পৃথিবী নামক গ্রহটাকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করে বেরিয়েছে। তাদেরই আবিস্কারের ফসল এই রোবটগুলো। সেই মানুষগুলো একদিন স্বপ্ন দেখতো রোবটরা নিয়ন্ত্রন করবে পৃথিবীটাকে। কি আশ্চর্য মানুষের সেই স্বপ্নই আজ স্বার্থক হয়েছে।
কয়েকশ বছর ধরে লক্ষ লক্ষ রোবট পৃথিবীটায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারাই এখন সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সদা সচেষ্ট রয়েছে। মানুষের বংশ বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হলরুমে বসে আছে ২৮১০০। তার চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই সে চিন্তিত কিনা!শুধু সে কেন কোন রোবটেরই প্রকাশ ভঙ্গি নেই।
তারা মানুষকে ধন্যবাদ জানায়, মানুষের বুদ্ধির প্রশংসা করে। মানুষ তাদের বুদ্ধি প্রয়োগ করতে পেরেছে বলেই বছরের পর বছর ধরে তারা অর্থাৎ রোবটেরা টিকে আছে। এমনকি তারা এখন নিজেরাই রোবট তৈরী করছে। নম্বর দিচ্ছে। ইঞ্জিন বদলাচ্ছে।ব্যাটারি তৈরী করছে।
তাদের আফসোস হয়। কি অপরিনামদর্শীই না ছিল মানুষগুলো।সৃষ্টিকর্তা পরিবেশের ভারসাম্য করে প্রাণীগুলোকে পাঠিয়েছিলেন পৃথিবীতে অথচ সেই পরিবেশই ধ্বংস করেছে মানুষ নামের প্রানীগুলো। নিজেদের অস্তিত্ব নিজেদের প্রজাতি টিকিয়ে রাখার জন্য তারা কোন চেষ্টাই করেনি।
-আচ্ছা, মঙ্গলগ্রহে মানুষ গিয়েছিল যে ওখানে কি তারা বাস কবেছে ?৩৫০০৯ এর প্রশ্নে রোবটিয় ভঙ্গিতে জবাব দেয় ৮০০৯
জা---নি-----না,জা----নি-----না ।ম---নে হ---য় পা--রে--নি।যা--রা নি--জে--দে--র গ্র--হে--ই ঠি--ক থা---ক--তে পা--রে--নি তা--রা অন্য--গ্রহে কি করে থাক---বে।
-কি হল তুমি যে রোবটিয় ভঙ্গিতে কথা বলছ।১০০৯০৭ প্রশ্ন করে।
-কেন আমরাতো রোবটই।
-তা ঠিক।তবে দেখ মানুষগুলোর প্রশংসা করতেই হয়।ওরা আমাদের তৈরী করেছিল বলেই আমরা এই গ্রহে টিকে আছি।
-তা ঠিক, তা ঠিক।
-আচ্ছা তুমিতো অনেক অনেক আগে তৈরি হয়েছো। তুমি কি ওদের বোঝাওনি।
-মানুষকে বোঝানো আমাদের কম্য নয়।আর মানুষ সহজে বুঝতে চায়না।
-ঠিকই বলেছো। একসময় গ্রীনহাউজ ইফেক্ট নিয়ে অনেক কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ সেরকম কিছূই হয়নি।
-আচ্ছা তুমি কি এই গ্রহের একটা দেশের নাম শুনেছো।
-এখানেতো অনেক দেশ ছিল। দুইশোর মত। কোন দেশের কথা বলছ?
-সুজলা,সুফলা,শষ্য শ্যামলা-----
-ও বুঝেছি তুমি বাংলাদেশের কথা বলছ।ষড় রৃতুর দেশের কথা বলছ।
-হ্যা ঠিক ঠিক। এই দেশে ছয়টি ঋতু ছিল। এক এক ঋতু এক এক রকম সুন্দর ছিল। কোন ঋতুতে ঝড় হতো কোন সময় বৃষ্টি। কোন সময় শীত আবার কোন কোন সময় ফুলে ফুলে ছেয়ে যেতো দেশটি।
-তুমি কি বাংলাদেশে গিয়েছিলে ? কিংবা ওখানে তৈরী হয়েছিলে ? নাকি ওখানকার কেউ তৈরী করেছিল তোমাকে।
-হ্যা ওখানকার বিঞ্জানীরা তৈরী করেছিল।তবে সে দেশে তৈরী হইনি, হয়েছি আমেরিকায়।সেই বিজ্ঞানী আমার সাথে অনেক গল্প করত। তার দেশের কথা আমাকে শোনাত।ছবি দেখাত।
বিশ্ব জলবায়ুর উঞ্চতা বৃদ্ধিতে তাদের দেশ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটা বলত। শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলো গরীব দেশগুলোর কথা শুনত না।
-বাংলাদেশের নিজেদের মানুষদের কোন দোষ ছিলনা।
-হ্যা বিজ্ঞানীকে সে প্রশ্ন করেছিলাম।
-কি জবাব দিয়েছিল?
-হ্যা তাদের দোষ ছিল। তারা সমানে গাছ কেটে ফেলত। নদী নালা ভরাট করে ফেলত। কলকারখানার বর্জ্য নদীতে খোলা জায়গায় ফেলে রাখত। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে আবাদী জমির পরিমান কমে বাড়ি, প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে লাগল।
-বুঝতে পেরেছি। তারা তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে একটুও ভাবেনি।
-ঠিক তাই।আফসোস হয়।এত সুন্দর একটা দেশ পানির গভীরে তলিয়ে গেছে।
-কিভাবে?
-কিভাবে মানে ! উঞ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বরফ গলে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ে পানির উঞ্চতা বৃদ্ধি করেছে। দেশটি তলিয়ে গেছে।
-আর অন্য দেশগুলোর কি অবস্থা----
-মানুষগুলোই আজ নিঃশ্বেষ হতে চলেছে আর দেশের খবর নিয়ে কি হবে!
-তুমি দেখি মানুষের মত দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কথাগুলো বললে।
-না না সেটা বলোনা।শ্বাস নেয়ার কথা শুনলেই ভয় লাগে বাতাসে অক্সিজেন নাই বললেই চলে।
-এই দেখো দেখো বৃষ্টি পড়ছে------
-ওদিকে যেয়ো না।
-কেন ?তুমি না বলতে মানুষগুলো বৃষ্টিতে ভিজতো, মজা করতো।
-এখনতো এসিড বৃষ্টি হচ্ছে। তখনতো বৃষ্টি ছিল আশীর্বাদ। গাছ সজীব হতো। প্রকৃতিতে সজীবতা আসতো।
-একটা গান দাও। বৃষ্টির গান। মন ভালো হয়ে যাবে।
-রোবটের আবার মন।
-কেন রোবটের মন থাকতে নেই\
-মন থাকলেতো কখনই রোবট ৯০০৮ কে ভালবাসতে। ওযে তোমার পিছু পিছু এত ঘোরে।
-এই তুমি কিন্তু মানুষের মত কথা বলছো। তার চেয়ে এসো আমরা গান শুনি।হ্যা গানটা কিন্তু মানুষের গাওয়া সম্ভবত শেষ দিককার গান।------বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গিয়েছে তোমার চুল,সেদিক পানে চেয়ে আমি করেছি অনেক ভুল..
এসিডবৃষ্টি পড়া তাকিয়ে দেখতে দেখতে তারা মানুষের গাওয়া বৃষ্টির রোমান্টিক গান শুনতে থাকে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া আপনার কল্পনাশক্তির প্রশংসা করছি , গল্প খুব ভালো লাগলো , এই গল্পের একটা সুন্দর নাম হলে আরো ভালো হতো // শুভকামনা রইলো //
Sisir kumar gain সুন্দর কল্প কাহিনী। আমাদের এখনই সচেতন হওয়া প্রয়জন।শুভ কামনা আপনার জন্য।
আহমেদ সাবের আপনার কাছে থেকে একটা বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনী পেলাম এবার। গল্পের অন্য ধারার মত এখানেও সমান দক্ষতা দেখালেন। বেশ ভাল লাগল গল্পটা।
সিয়াম সোহানূর কল্পনা যে কত শক্তিশালী, আপনার লেখাটা না পড়লে অনুমান করা কঠিন হত। আপ্লুত হলাম। অভিনন্দন মানিক ভাই।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ......................আমাদের জন্য একটা সাবধান বাণী। চমতকার। শুভেচ্ছা রইল।
মিলন বনিক খুব সুন্দর সাই ফাই-এর সাথে অসাধারণ একটা মেসেজ আমাদের সমাজের জন্য দিয়ে গেলেন...আমি অভিভূত...শুভ কামনা...
সূর্য আস্তে আস্তে কিন্তু এমন সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ভাল লাগা থাকল
sakil odur vhobishote emonti houk ta amra chaina . Kintu emon attobishas niye amra ki bolte parbo amader deshta dhongso hoye jabena . Amader oporinam dorshita amader khotir karon hoye dekha dibe.sundor scince fiction. Tobe golpoti hoyto aro barano jeto. Aro tothoo deoya jeto.
স্বাধীন এক সময় বিলুপ্ত ডাইনোসোরের মতোই কেউ হয়ত মানব প্রজাতিকে খুজেব ফসিলে.. চমৎকার লাগল রোবটিয় কথোপোকথন।

২০ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪