হরিলুট

স্থিতিশীলতা (ডিসেম্বর ২০২৪)

মাহাবুব হাসান
  • ৩৮
উপক্রমণিকা
‘দুর্জয় এখন কেমন আছে কাকা?’
সুজয় কাকা অনেকক্ষণ আমার দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে রইলেন। আমি একটু অস্বস্তি বোধ করছি। আমরা ওনাকে একটু এড়িয়েই চলি। কারণ আছে। আজ সামনে পড়ে গেছি বলে সৌজন্যবশত কথা বলছি। দুর্জয় আমাদেরই বন্ধু। কিন্তু ওর সাথে আমাদের যোগাযোগ নেই। কারণ আছে।
কাকার ভাবগতিক বুঝতে পারছি না। উনি কি প্রশ্নের জবাব দেবেন না? অবশেষে তিনি মুখ খুললেন।
‘একটা গল্প শুনবা?’
আমরা এ ওর মুখ চাওয়াচাউই করি। প্রশ্নের জবাবে গল্প! ইদানিং ওনার মানসিক স্থিতি ঠিক নেই বলে শুনেছিলাম। কথা তাহলে সত্য! কাকা আমাদের মনোভাব উপেক্ষা করে শুরু করলেন গল্প

১. গতি ও স্থিতির গল্প…
এক রাজার ছিল দুই পুত্র। গতি আর স্থিতি।
নাহ, রাজার গল্প থাক! এখন তো আধুনিক যুগ। যুগোপযোগী একটা গল্প বলি। শোনো…
এক ছিল এক কেরানী। তার দুই পুত্র- গতি আর স্থিতি। যমজ ভাই, কিন্তু চেহারা ছাড়া বাকি সব উল্টো। স্থিতি ছোটবেলা থেকে শান্ত চুপচাপ। লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী। কিন্তু গতিটা বদের বদ। পড়ালেখায় মন নেই। সারাদিন ছুটে বেড়ায়। প্রায়দিনই অভিযোগ আসে।
বাবা গতিকে রোখার চেষ্টা করে ব্যর্থ। ঝর্নাকে কি রোখা যায়? সে তো নিজের মতো পথ করে করে চলে। বাধা দিলে ঘুরপথে যায়। তবু থামে না। গতিকেও রোখা গেল না। বাবা রাতদিন বলে- পারিস না স্থিতির মতো হতে?
গতি কারো মতো হতে চায় না।
দুজন বড় হলো। গতি বল্গাহীন হরিণের মতো শক্তসোমত্ত, গতিবান। তার দুনিয়াটা অনেক বড়। সবার সাথে তাল মেলাতে পারে। কিন্তু স্থিতির দুনিয়াটা বইয়ের মধ্যে সীমিত। ছোট্ট পৃথিবীতে তাল মেলাতে ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে গেল। একদিন হুট করে দড়িতে ঝুলে পড়ল।
বাবা ততদিনে অক্ষম। ভলান্টারি রিটায়ারমেন্টে চলে গেছে।
যে গতিকে বাবা সারাজীবন শাপশাপান্ত করেছে, সে-ই হাল ধরল সংসারের।

সুজয় কাকা থামলেন। আমরা ততক্ষণে বুঝে গেছি গল্পটা কাকে নিয়ে। এটা তার নিজের গল্প!
পাঁচ বছর আগে কাকার জমজ দুই সন্তানের একজন অজয় আত্মহত্যা করে। মাতৃহীন সন্তানদের বড় করতে গিয়ে কাকা জীবনযৌবন ক্ষয় করেছেন। পুত্রশোকে তিনি মাইল্ড স্ট্রোক করলেন। এরপর সংসারের হাল ধরে দুর্জয়।
‘গতি গতিহীন হয়ে গেছে বাবা। সারাজীবন বাবা তাকে স্থিতির মতো হতে বলেছিল। সে এখন বড্ড স্থিতিশীল!’
সুজয় কাকা গল্পে গল্পে আমার প্রশ্নের উত্তর দিলেন! চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া চিকচিকে জলটুকু আড়াল করে নিজের পথ ধরলেন তিনি। আমার মনটা বিষাদে ভরে গেল।
দুর্জয় মানসিক ভারসাম্যহীন। বাবা এই শরীরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছেলেমেয়ে পড়ান। যা পান তা দিয়ে টেনে চলেন সংসারের ঘানি। এভাবেই চলছে দুটো বছর ধরে। জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত যোদ্ধার মতো আমাদের সুজয় কাকা পথে পথে ঘোরেন, মানুষ তাকে মানসিক স্থিতিহীন ভাবে। ভেতরের খবর কেউ নিতে আসে না। আমরাও না। কেন?
কারণ আছে!

২. সব চরিত্র কাল্পনিক
‘Sir, I have a question!’
‘Yes?’
‘কপোতাক্ষ ব্যাংক স্ক্যাম নিয়ে যে ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে, ব্যাংক চেয়ারম্যান হিসেবে ওটার ব্যাপারে আপনার কী অভিমত?’
জোয়ার্দার চৌধুরী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মেয়েটিকে দেখলেন। জার্নালিস্ট।
‘স্যার! ইনি নাইলা নূর, নিউ হরাইজনের জাঁদরেল সাংবাদিক। একটু সাবধানে ডিল কইরেন’
পাশ থেকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর কানে কানে বলল। জোয়ার্দার চৌধুরী বিরক্ত হলেন। স্কলারশীপ প্রোগ্রাম কাভার করতে যারা এসেছে তাদের সবাইকেই তো পয়সা খাওয়ানো হয়েছে, উল্টাপাল্টা কিছু বলার কথা না। এই বেটি এসব কী জিজ্ঞেস করে?
‘কোন ফেসবুক পোস্ট?’
‘এই যে, গত ১৮ই জুলাই পোস্ট করা হয়েছে। কপোতাক্ষ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লোপাট করা হচ্ছে। ভল্ট খালি করে ফেলছে মালিকপক্ষ…’
‘এইসব গুজব, ফেইক নিউজ। কপোতাক্ষ ব্যাংক দেশের সবচেয়ে স্ট্যাবল ব্যাংক। এস অ্যান্ড পি’র ডাবল এ রেটিং। আর এবছর আমরা রেকর্ড সোয়া দুই হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছি…’
‘স্যার, টাকায় বাঘের দুধ মেলে, রেটিং মিলবে না? আর মুনাফা তো যতটা করা হয় দেখানো হয় তারচেয়ে বেশি। যত বেশি মুনাফা তত বেশি ডিভিডেন্ড, শেয়ারহোল্ডারদের তত পোয়াবারো। এসব ওপেন সিক্রেট! সবাই জানে…’
‘আই সি! তা টাকা লোপাটের নিউজ কোত্থেকে পেলেন?’
‘নিউজ কোথা থেকে পেলাম সেটা বড় কথা না। নিউজটা সত্যি কিনা সেটাই আসল। এটা ছাড়াও আরো পোস্ট আছে; আপনার আর অন্যান্য ডিরেক্টরদের নামে-বেনামে থাকা কোম্পানিগুলোকে অনিয়ম করে কবে কত কোটি টাকা লোন স্যাংকশন করা হয়েছে; হিউজ ওভার ড্রাফট, লার্জ চেক উইথড্রয়াল, কোয়ার্দ ইস্যু, ব্যালেন্স শীট- সব আছে। সিঙ্গল বরোয়ার রুল মানা হয় নি, ডিরেক্টররা ক্যাপাসিটির অন্তত একশ’ গুন লোন…’
‘পোস্টগুলো কে দিয়েছে?’
‘সত্যের সৈনিক নামে একাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছে’
‘দেখেন এইসব ব্যালেন্স শীট হাবিজাবি সব বানানো যায়। যদি নিউজে সত্যতা থাকত তাহলে বেনামে দিত?’ জোয়ার্দার চৌধুরী বোর্ড মেম্বারদের দিকে ফিরে হাসতে হাসতে বললেন, ‘এইজন্যে জানেন আমি ফেসবুকরে বলি ফেকবুক! যতসব ফেক নিউজের ছড়াছড়ি…’
জোয়ার্দার সাহেব বিষয়টাকে হাসিঠাট্টার পর্যায়ে নামিতে আনতে চাইলেন। কিন্তু সাংবাদিক কচ্ছপের কামড় দিয়ে বসে আছে
‘পোস্টটা ফেক একাউন্ট থেকে করা হয়েছে, কারণ ক্ষমতাবান ব্যাংক মালিকদের রোষানলে পড়তে চায় না। স্যার আপনি এখনো বললেন না পোস্টটার ব্যাপারে। সাধারণ ডিপোজিটররা কিন্তু আস্থাহীনতায় ভুগছে। আপনাদের বহদ্দারহাট ব্রাঞ্চ গতকাল একজন গ্রাহকের মাত্র পঁচিশ হাজার টাকার চেক অনার করে নি’
‘জানেন নিশ্চয়ই, চেক ডিজ-অনারের অসংখ্য কারণ থাকতে পারে। টাকা না থাকায় চেক অনার করা হয় নি এমন না। আমি নিজে কথা বলেছি। আর এই ফেসবুক পোস্টের ব্যাপারেও আমরা ব্যবস্থা নেব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কপোতাক্ষ ব্যাংকের রেপুটেশন নষ্টের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। ব্যাংক খাতকে আনস্ট্যাবল করার সকল চেষ্টা প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে আমরা আইনের আশ্রয় নেব। আপনাদের আপডেট জানানো হবে। থ্যাংক ইয়্যু!’

৩. দ্য কালপ্রিট
কপোতাক্ষ ব্যাংক থেকে পরদিনই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হলো। সিআইডির তথ্য প্রযুক্তি সেল এক দিনের মধ্যে ফেক একাউন্টধারীকে ট্র্যাক করে ফেলল। লোকটা ব্যাংকেরই স্টাফ
সংবাদ সম্মেলন করে কালপ্রিটের নাম প্রকাশ করা হলো- সিনিয়র অফিসার প্রদ্যুত কুমার
‘কিন্তু তিনি নিজের প্রতিষ্ঠানের এগেইনিস্টে কেন লিখলেন?’ জিগজ্যাগ টিভির নিউজ রিপোর্টারের প্রশ্নের উত্তর দিলো ব্যাংকের চীফ ইনফরমেশন রাইট অফিসার সুরঞ্জিত চৌধুরী
‘পারসোনাল গ্রিভেন্স! তিনি প্রমোশন ক্যান্ডিডেট ছিলেন। এক্সামে ফেল করার কারণে প্রমোশন হয় নি। সেই ক্ষোভেই অর্গানাইজেশনের ক্ষতি করতে মিসচিভাস পোস্ট দিয়েছিলেন। দ্যাটস ইট!’
‘ওনার বিরুদ্ধে কি আপনারা কোনো অ্যাকশন নেবেন?’
‘অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। তিনি ডিসমিস হয়েছেন’
‘জাস্ট একটা পোস্টের কারণে ডিসমিস!’
‘কে বলল ফেসবুক পোস্টের কারণে ডিসমিস করা হয়েছে? ওনাকে ডিসমিস করা হয়েছে ফান্ড এমবেজলমেন্টের জন্যে!’
সুরঞ্জিত চৌধুরী যেন বোমা ফাটালেন। কিছুক্ষণের জন্যে সবাই বাকহারা
‘দুটো ঘটনা কি নিছক কো-ইনসিডেন্স? নাকি কোনো কানেকশন আছে?’
‘ব্যাংকের রুলস অনুসারে কারো নামে গুরুতর অভিযোগ এলে শুরুতেই একটা ইনটারনাল অডিট করা হয়। সেটাতেই ধরা পড়েছে’
‘এজন্যে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?’
‘মামলা করা হয়েছে। তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিটা কোর্টের এখতিয়ার’
প্রদ্যুত ভাইরাল হয়ে গেল। নিউজ চ্যানেলগুলোতে সচিত্র প্রতিবেদন, পত্রিকার ফ্রন্ট পেইজে তার কলঙ্কিত মুখ।
ছবিটা দেখে আমরা শকড। ওর কেতাবি নাম কবেই ভুলে গেছি! ডাক নামেই আমরা অভ্যস্ত- দুর্জয়! প্রদ্যুত কুমার দুর্জয়।
আমাদের সামনেই পুলিশ ওকে পিছমোড়া করে বেঁধে নিয়ে গেল। এলাকায় আমাদের মুখ দেখাবার জো রইল না। ‘ও! তোমরা দুর্জয়ের বন্ধু!’ এই কথার পিঠে আমাদের রা থাকত না। দুর্জয়টা আমাদের এভাবে লজ্জায় ফেলে দিলো! ছোটবেলা থেকেই ও একটু লোভী প্রকৃতির। তাই বলে কোটি টাকা আত্মসাৎ?
দুর্জয় আমাদের কাছে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হলো। এলাকায় ছি ছি পড়ে গেল। রাত-বিরাতে বাড়িতে ঢিল পড়ত। বাধ্য হয়ে ওরা এলাকা ছেড়ে চলে গেল। শুনেছি মামলা চলাকালেই দুর্জয় লজ্জায় অপমানে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল।

৪. দুই বছর পর…
‘Kapotakkho Bank PLC. is on the verge of insolvency’
চা খেতে খেতে নিউজ পোর্টালে চোখ বুলাচ্ছিলাম। খবরটার শিরোনামে চোখ আটকে গেল। নাইলা নূরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ব্যাংকের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মীদের বরাতে। যারা এতদিন ভয়ে মুখ বন্ধ করে রেখেছিল তারা এখন ভোকাল হচ্ছে। লাইফ থ্রেট পেয়ে দু’বছর আগে চুপসে গেলেও নাইলা নূর এখন নেমেছেন কোমর বেঁধে।
ইতিহাস নির্মাতা ‘আগস্ট, ২০২৪’ পুরো দেশের সিস্টেম ধরে জোরেশোরে নাড়া দিয়েছে। ব্যাংক বাদ যাবে কেন? ব্যাংকিং সেক্টরে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে নতুন গভর্নর মহোদয় ঝামেলাপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে ছাই দিয়ে ধরছেন।
কেঁচো খুঁড়তে সাপ না, বেরিয়ে আসছে ডাইনোসর! আস্ত একেকটা ব্যাংক গিলে ফেলেছে ওরা। এখন পর্যন্ত সোয়া দুই লক্ষ কোটি টাকা লোপাটের তথ্য মিলেছে। তার মধ্যে ইস্পাহানী জোয়ার্দার অ্যান্ড গংই প্রায় লক্ষ কোটি! ঘুণপোকা যেমন পলিশড একটা ফার্নিচারকে ফাঁপা খোলে পরিণত করে, বাইরে থেকে বিন্দুমাত্র বোঝা যায় না, সেই অবস্থা করেছে ব্যাংকগুলোর। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কপোতাক্ষ ব্যাংকের।
জোয়ার্দার চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ৭ দিনের জন্যে ওনাকে ‘জামাই আদর’ করার অনুমতি পেয়েছে। ভাগ্যের কী পরিহাস! সেই সেলেই তার জায়গা হলো যেখানে দু’বছর আগে রিমান্ডে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল দুর্জয়।

৫. বিহাইন্ড দ্য সিন
‘পলাশ দা! আর তো চুপ থাকা যায় না! কিছু একটা করা দরকার’
‘কী করতে চাস?’
‘আর কিছু না পারি, অন্তত জিনিসগুলো বাইরে আনি। নীতিনির্ধারকদের চোখে পড়লে যদি কিছু…’
‘নীতিনির্ধারক! বুঝিস না ওদের কারা চালায়? সাবধান! এসব নিয়ে লিখলেটিখলে চাকরি তো চাকরি, জীবন থাকবে না’
ট্রু! আসলে ডিপোজিটরদের ঝুঁকিতে ফেলে ব্যাংকিং করা নিয়ে রিগ্রেট কম-বেশি সবারই ছিল। কিন্তু ভয়ে মুখ বন্ধ করে রাখত। দুর্জয় যে এসব বোঝে না তা না। কিন্তু বিবেকের তাড়না ওকে ঘুমাতে দেয় না। ও আর চুপ থাকতে পারে নি। নিজের একাউন্ট থেকে লেখা সেইফ না বলে ফেক একাউন্ট থেকে একের পর এক ভেতরের খবর সামনে আনতে থাকে। কিন্তু ধরা পড়ে গেল অল্প দিনের মধ্যে। দুর্জয়ের প্রিয় পলাশ দা-ই ওকে এক্সপোজ করেছিল সামান্য একটা প্রমোশনের লোভে।
ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট চাচ্ছিল না এসব বাইরে আসুক। দুর্জয়কে টার্মিনেট করে ঝামেলা বিদায় করতে চেয়েছিল। কিন্তু নাইলা নূর বিষয়টা প্রকাশ্যে আনায় লোক দেখানো মামলা, ডিসমিস এসব করতে হলো।
ভুলটা দুর্জয়ের। ভালোয় ভালোয় কেটে পড়তি! তা না, গিয়ে নাইলা নূরকে এভিডেন্সসুদ্ধ দিয়ে আসলি! নাইলা বাঘা সাংবাদিক, এক তুড়িতে উড়িয়ে দেয়া অসম্ভব। কিন্তু তুই তো ম্যাঙ্গো পিপল! ব্যাংকের বেইজ্জতি হবে, আর জোয়ার্দার বসে থাকবে?

৬. আজব দেশ!
‘বুঝলা বাবা, এই দেশটা বড়ই আজব! বাজারটারে যারা হরদম অস্থিতিশীল করে, দেশটারে যারা অস্থিতিশীল করে তারা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়ায়, পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না। আর আমার ছেলেটা ফেক একাউন্ট থেকে পোস্ট দেয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ওকে খুঁজে বের করে ফেলল!
যেই পুলিশ বাবু দুর্জয়রে টর্চার করছিল, তার কুড়ি লক্ষ টাকা কপোতাক্ষ ব্যাংকে। পুরোটাই জলে। ওনার মনে অনুশোচনা জাগছে! সেইদিন আসছিল ছেলেটারে দেখতে। আমার হাত জড়ায়ে ধরে মাফ চাইছিল। আমি বলছি, মাফ করব, আমার ছেলেটারে আগে ঠিক করে দেন’
সুজয় কাকার কথা শুনতে শুনতে অজান্তেই বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। আমরাও কি কম অপরাধী? পাগল দুর্জয় না। পাগলে আসলে আমরা, যারা নিজেদের মানসিক স্থিতিশীল দাবি করি, অথচ হুজুগে মাতি ভাইরাল সংবাদে। কাউকে অতি ভালো কিংবা অতি খারাপের তকমা দিয়ে ফেলি সত্যাসত্য যাচাই ছাড়াই।
ভাবনার গভীর ডুবে গেছিলাম, চমক ভাঙল এসএমএসের টোনে। ক্ষুদে বার্তা- ‘কপোতাক্ষ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। গুজবে কান দেবেন না। অপ্রয়োজনে অর্থ উত্তলোন না করে আস্থা রাখুন আমাদের ওপর’
আস্থা তো দুর্জয়ও রেখেছিল, হাতে থাকা তিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারের মধ্যে বেঁছে নিয়েছিল কপোতাক্ষ ব্যাংককে। তখনকার সবচেয়ে স্থিতিশীল ব্যাংক। রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ারদের কবলে পড়ে সবচেয়ে স্থিতিহীন এখন এটাই।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Sunil Akash সমসাময়িক গল্প। সুন্দর!
মোঃ মাইদুল সরকার ভাল লিখেছেন গল্পটা।
মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা। এমনিতে এখন গল্প একটু বড় হলে অনেকেই হয়ত পড়তে চায় না। sms আর status এর যুগ কিনা! কিন্তু গল্পে গভীরতা দিতে গিয়ে বড় না করে তো পারি না। যারা ছোট গল্পেও গভীরতা দিতে পারে তাদের কথা আলাদা। সত্যিকার সৃজনশীল তারা। আবারো ধন্যবাদ গল্পটি সময় করে পড়ার জন্য
ফয়জুল মহী সুন্দর ও সাবলীল প্রকাশ ভালো লিখেছেন
ধন্যবাদ মহী ভাই। অনুপ্রাণিত হলাম। দোয়া রাখবেন।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

‘দুর্জয় এখন কেমন আছে কাকা?’

৩০ সেপ্টেম্বর - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪