অপার্থিব কাশি

ভয়াল রাত (সেপ্টেম্বর ২০২৩)

T H Mahir
  • ১২
  • ৫৩

রাত বারোটা।গ্রামে এই সময়ে গভীর রাত।আজ‌ও ঠিক ঘুম আসছে না।তাই খুব পুরোনো একটা ডাইরি নিয়ে বসলাম। লিখতে নয় পড়তে। বাড়ির পুরোনো ট্রাঙ্ক ঘেঁটে ডাইরিটা পেয়েছি। অনেকদিন লেখা হয়নি।তাছাড়া রাত জাগার আরও একটা কারণ রয়েছে। গ্রামে নাকি ডাকাত হানা দিয়েছে।ডাকাতের উৎপাতে অতিষ্ট গ্রামবাসী।থানার ওসি ও পরিবর্তন করা হয়েছে।নতুন ওসি এসেছে।নতুন ওসি ইতিমধ্যেই নজরদারি শুরু করেছে।

বাড়িতে আমি একা। গ্রামে আমি‌ শুধু একা একলা বাড়িতে বসবাস করি। শহরে ব্যাপারটা সাধারণ হলেও গ্রামের লোকজনের কাছে তা দৃষ্টিকটু।টিনের বাড়ির উঠানে গাছ লতা পাতার জঞ্ঝআলে বাড়িটা লোকজনের তেমন চোখে পড়ে না। রাস্তা দিয়ে গেলে লোকজন প্রথম দেখাতে জঙ্গল‌ই মনে করবে।

যাইহোক ডাইরির পাতা ঘাঁটতে ঘাঁটতে কখন যে চোখ দুটো লেগে আসলো খেয়ালই করিনি। উঠানে একাধিক বুট জুতার শব্দে চেতনায় ফিরে এলাম। উঠানে জমে যাওয়া গাছের পাতার উপর বুট জুতার সন্তর্পণে এগুনোর শব্দ স্পষ্ট‌ই শুনতে পাচ্ছি। চোখের চশমা গেঞ্জিতে মুছে চোখে দিলাম।সদর দরজার ফাঁকে চোখ রেখে উঠানে দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু এই আঁধারে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না।বুট জুতার শব্দ শুনে মনে হচ্ছে পাঁচ সাতজন লোকের পায়চারি চলছে। ফিসফিস শব্দ শুনে মনে হচ্ছে ডাকাতের দল বাড়িতে ঢোকার পরিকল্পনা করছে।

ট্রাঙ্ক ঘেঁটে শাবলটা নিলাম।ঘরে সতর্ক অবস্থান নিলাম।শাবলে ধাতব শব্দে মনে হলো ওরা সতর্ক হয়ে গেছে।দরজা খুলে ওদের মুখোমুখি হবো নাকি?যদি আবার গুলি চালায়। তাছাড়া ওরা আমার বাড়িতে তেমন কিছুই পাবে না। পুরোনো কয়েকটা ব‌ই,একটা খাট আর আলমারি।যদিও বাড়িটা বিশাল।বাড়িটা বিশাল দেখেই হয়তো ওরা এখানে হানা দিয়েছে।

বুট জুতোর শব্দ যখন বন্ধ হলো তখন‌ই ঠিক করলাম। দরজা খুলে বাইরে বেরুবো।

দরজা খুলে যেই বাইরে পা রাখবো অমনি দুজন দু পাশ থেকে আমাকে সামরিক কায়দায় ঝাপটে ধরল। পড়ে গেলাম মাটিতে। ছিটকে পড়লো হাতের শাবলটা।এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। তারপর লাইটের আলোয় যা দেখলাম তা আমার সব জল্পনা কল্পনার ধূলিসাৎ করে দিলো।

ওরা ডাকাত নয়,পুলিশ।থানার নতুন ওসি খবর পেয়েছেন আমার বাড়িতে ডাকাতের দল লুকিয়ে আছে।তাই তাদের ধরতে এসেছেন।

—আচ্ছা তাহলে আপনি এই বাড়ির মালিক?
—জী, বললাম আমি।
—আপনার জামা কাপড় গুলো মনে হচ্ছে খুব পুরোনো দিনের। আগেকার দিনে লোকজন এইরকম জামা পড়তো, দাদার কাছে শুনেছি।
—তা বটে।এইসব এখন আর কেউ পড়ে না।
বলেই খুক খুক করে একটা কাশি দিলাম। ইদানিং হাসি পেলেই কেমন জানি কাশিও আসে।

ওসির সাথে আর‌ও মিনিট পাঁচেক কথা হলো।মা বুঝলাম উনি এখানের পথ ঘাট খুব একটা চেনেন না।কেউ হয়তো তাকে খবর দিয়েছে ডাকাত এই দিকে কোথায় লুকিয়ে আছে। আসলে বাড়িটা জঙ্গলমতো তাই ওহিও এক‌ই ধারণা করেছেন।

ওসি সহ আসা পাঁচ সাতজন পুলিশ ফিরে গেলো। আমি আবার পুরোনো ডাইরির “শ্রীংহল দ্বীপের ঝড়” অধ্যায়টা পড়তে লাগলাম।


একটা রাত নিস্ফল অভিযান চালিয়ে থানায় ফিরে এসেছে মাহফুজ।ফিরেই চেয়ারম্যানকে কল দিলো।কারণ ওনিই বলেছিলেন পুরোনো সিকদার বাড়িতে ডাকাতের দল লুকিয়ে আছে।

— হ্যালো...চেয়ারম্যান সাহেব বলছেন..?
— জী। মাহফুজ তুমি ওদের ধরতে পেরেছো?
— স্যার আপনার দেয়া ঠিকানায় তো কোনো ডাকাতের আস্তানা নেই।ওই সিকদার বাড়িতে একজন যুবককে দেখলাম।ওনার‌ই বাড়ি।বললো উনার বাড়ির দিকে কোনো ডাকাত আসেনি।
— কী বলো!ওই বাড়িতে মানুষ থাকে কোনো দিন শুনিনি। আমার দাদার মুখে শুনেছিলাম এই বাড়িতে একজন পর্যটক থাকতো। কাজী আকরাম সিকদার। একবার শ্রীলংকায় সমুদ্র ঝড়ে উনি হারিয়ে যান। তারপর অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি।তুমি আমাদের উপজেলার ওয়েবসাইট ইতিহাস দেখো।উনার ছবি আছে।

একটানা কথা গুলো বলে শেষ করলেন চেয়ারম্যান।শুনে মাহফুজের মাথা কাজ করছে না।দ্রুত উপজেলার ওয়েবসাইটে ঢুকলো।

একি! সিকদার বাড়িতে যাকে দেখেছে তাঁর চেহারার সাথে পুরোপুরি মিল! কাজী আকরাম সিকদার।দুইশ বছর আগের মানুষের সাথে কী করে দেখা হলো তার।সত্যি নাকি হেঁয়ালি?
ভাবতে ভাবতে‌ই ধপ করে বসে পড়লো মাহফুজ। জানালার পাশে কে যেন খুক খুক করে কাশি দিল।কাশিটা মনে হলো খুব চেনা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Hasan Mahfuj সুন্দর হরর গল্প।শেষটা ভয়ংকর ছিল।
ভালো লাগেনি ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
রুমানা নাসরীন গল্পটা যথেষ্ট রোমহষর্ক। বানানের ব্যাপারে সচেতন থাকবেন প্লিজ।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
হাফিজ ভাই প্রথমেই ক্ষমা চাচ্ছি। গল্পের বিষয়বস্তু দারুন হয়েছে সেটা ঠিক কিন্তু গল্পের শুরুটা হয়েছে উত্তম পুরুষে শেষ হয়েছে নাম পুরুষে এই বিষয়টা আপনার গল্পকে অনেক পিছিয়ে দেবে। সম্ভবতো আপনি গল্পটা লেখার পর পরে দেখননি ভাই। তাই উত্তম পুরুষ এবং নাম পুরুষের প্রবেশ গল্পে করেছে। এবং গল্পের মাঝে টাইপিং মিস্টেকে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছে
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা
ভালো লাগেনি ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ফয়জুল মহী সুন্দর প্রানোচ্ছল ভাবনায় পরিপাটি লেখা।
ভালো লাগেনি ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
বিষণ্ন সুমন আপনি গল্প লিখায় খুব পটু। অসাধারণ হয়েছে ভাই। আরো চাই।
ভালো লাগেনি ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
Muhammadullah Bin Mostofa অসাধারণ হয়েছে। ভোট দিলাম।
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

গল্পটি উক্ত বিষয়ের সাথে সমঞ্জস্যপূর্ণ।কারণ,এটি রাতের ভয়াল পরিবেশ নিয়ে লেখা।

০৪ ফেব্রুয়ারী - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪