ঢাকার ব্যস্ত শহরের কোণে বসে সাইফ আজও তাকিয়ে থাকে কুমিল্লার দিকে। না, কোনো জানালা নেই সেখানে। ছিল শুধু একটি মনের জানালা—যার ওপারে ছিল রিমি।
তাদের পরিচয় হয়েছিল অনলাইনে, এক পাঠচক্রের আলোচনায়। খুব সাধারণ কিছু কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে, খুব অসাধারণ কিছু অনুভব জন্ম নিয়েছিল।
রিমি শুরু থেকেই খুব বিনীত, কিন্তু স্পষ্টভাষী। সাইফ তাকে প্রথমে “আপনি” বলেই সম্বোধন করত। ভদ্রতা, দূরত্ব—সব ঠিকঠাক ছিল।
কিন্তু কে জানত, “আপনি”-র ভিতরেই জমতে থাকে এক অচেনা আকর্ষণ, এক নিষিদ্ধ আত্মীয়তা।
রিমি একদিন কথায় কথায় হেসে বলেছিলেন,
— “আপনি সবসময় এত গম্ভীর কেন থাকেন?”
সাইফ একটু থেমে বলেছিল,
— “কারণ আপনি যখন কথা বলেন, আমি বেশি কিছু বলার সাহস পাই না।”
এইভাবেই শুরু হয়েছিল তাদের আলাপ।
ধীরে ধীরে সাইফ “আপনি” বলতে ভুলে গিয়েছিল। “তুমি” যেন আপনাআপনি এসে গিয়েছিল। রিমি কোনো আপত্তি করেনি।
তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না—কোনো প্রেম, কোনো বন্ধুত্বের সনদ নয়।
কিন্তু একটা টান ছিল। এক নিষিদ্ধ আকর্ষণ।
যেখানে দেখা নেই, অথচ অনুভব আছে।
যেখানে মেলে না, কিন্তু হারিয়ে যাওয়া যায়।
তারা বহুবার দেখা করার কথা ভেবেছে।
কখনো সাইফ বলেছে,
— “তুমি এলে কোথায় মিলব আমরা?”
রিমি হাসত,
— “একটা নির্জন জায়গা খুঁজে নেব... শুধু তুমি আর আমি।”
কিন্তু সময় দেয়নি।
কখনো রিমির ব্যস্ততা, কখনো সাইফের অফিস।
কখনো পরিবেশ, কখনো সাহস—সব কিছুর বাঁধা এসে দাঁড়িয়েছে তাদের মাঝে।
তাদের কথা হতো রাতজেগে, হোয়াটসঅ্যাপ বা ফোন কলে।
কিন্তু সব কথার শেষে থেকেই যেত একটা অসম্পূর্ণতা।
— “তুই থাকলে... একটুখানি ছুঁয়ে দেখতাম,” বলত রিমি।
— “তুই থাকলে... আমি তোকে শুধু একবার জড়িয়ে ধরতাম,” বলত সাইফ।
তারা জানত—এই আকর্ষণ, এই স্বপ্ন, এ যেন এক স্বপ্নালোক।
বাস্তবে হয়তো কখনো দেখা হবে না।
হলেও হয়তো আবেগ তাদের অত দূর নিয়ে যাবে—যেখান থেকে আর ফেরা সম্ভব নয়।
তবে, সেই দূরত্বেই তো ছিল সৌন্দর্য।
একটি চোখের দেখা, একটি মৌনতা, একটি চুমু—সব ছিল কল্পনায়।
রিমি বলেছিল একবার,
— “তুই যদি হঠাৎ কুমিল্লায় চলে আসিস, শুধু বলিস, ‘আমি এসেছি।’ আমি ঠিক আসব।”
সাইফ সে বার্তাটি আজও প্রতিদিন লিখে, কিন্তু কখনো পাঠায় না।
“আমি এসেছি।”
শুধু এই দুই শব্দেই তারা দুজন মিশে যায়—একটি অদৃশ্য, অথচ গভীর বন্ধনে।
যেখানে তারা প্রেমিক নয়, তবু প্রেম আছে।
যেখানে তারা দুঃসাহসী নয়, তবু একটা সাহস আছে—ভালোবাসার সাহস।
তাদের দেখা হবে কি না, সেটা সাইফ জানে না।
তবে এটুকু জানে, রিমি তার স্বপ্নের মানুষ।
যাকে দেখা মানেই... হারিয়ে যাওয়া।
শেষ লাইনটি শুধু রিমির জন্য: “তুমি না এলে ঠিক আছে... তবে এই গল্পটা পড়ে যদি মনে হয়, এটা শুধু তোমাকেই উদ্দেশ্য করে লেখা—তাহলে সেটাই আমার দেখা।”
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
রিমির সাথে বাস্তবে কখনো দেখা হয় না। সব সময় স্বপ্নেই চলে কথার আদান প্রদান।
২৮ জুন - ২০২১
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুন,২০২৫