ঢাকার কারওয়ান বাজার। নানা রকম মানুষের পদচারণয় দিনে রাতে চব্বিশ ঘণ্টায়ই সরব। বিভিন্ন কারণে বিচিত্র সব মানুষের আনগোনা এখানে কারওয়ান বাজারের তারকা বিহীন একটি আবাসিক হোটেলের সামনে নানা বয়সী মানুষের আনগোনা। একটু ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে অনেকের মধ্যেই চাপা উত্তেজনা; কি সের উত্তেজনা? চলুন আমারা একটু হোটেলের ভিতরে ঘুরে আসি। ভিতরে ঢুকতেই একটা দম বন্ধ করা গুমোট বাতাসের হলকা এসে লাগে। একটু সামনে এগোলেই দেখা যাবে একটা বড় ঘরে নানা বয়সী মেয়ে ঠোটে মুখে রং মেখে নিজেকে আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। আর স্কুলের ব্যাগ কাঁধে কিশোর, অফিসের ফাইল বগলদাবা করে তরুণ পণ্য বাছাই করছে। লুঙ্গির গিট বাঁধতে বাঁধতে রিক্সাওয়ালা, সজ্বীওয়ালা মাজায় ঠেস দিয়ে সোজা হয়ে বৃদ্ধ তার ভিজের জল সামলাতে ব্যস্ত। এই হোটেলের ম্যাচ বক্সের মত ছোট একটা ঘর।ভ জানালা বিহীন ঘরটায় আসবাব বলতে শুধু একটা খাট ও একটা বেড সাইড টেবিল। ঘরে ইতস্তত ছড়িয়ে আছে নারী পুরুষের জামা অন্তর্বাস। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছেঁড়া খোঁড়া কিছু প্যাকেট।ষাট পাওয়ারের বাল্বের ম্লান আলোয় ঘরের পরিবেশ হয়ে উঠেছে আরও অস্বস্তিকর। পরিবেশটাকে আরও ভয়ঙ্কর করে মেঝেতে কিলবিল করছে কিছু সাপ। যখন তখন ফোঁস করে ফণা তুলবে। বেরিয়ে পড়বে গ্রামে, নগরে, বন্দরে দেশে দেশে। পৃথিবী নীল হয়ে যাবে তার ভয়ঙ্কর ছোবলে। হারিয়ে যাবে প্রেম-ভালোবাসা গিলে ফেলবে সমাজ-সভ্যতা। একটানা একটা কাতরানির শব্দ প্রায় হারিয়ে গেছে একটা পশুর গোঙানির শব্দে। উন্মুক্ত নারীর বুকের উপর অস্থিরভাবে আচল কাটছে দুটি থাবা। মাংস পিণ্ড দুটি যেন বুক থেকে খুবলে তুলে ফেলবে, এটা নারীদেহ নিষ্প্রাণ পড়ে আছে, আর একটা পশু শিকার করছে। নিথর পড়ে থাকা দেহটা মাঝে মাঝে আর্তনাদ করে প্রাণের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। মেয়েটির গলায় একটা তাবিজ ফাঁসের মত জড়িয়ে আছে। অসাড় সেই দেহটি শিউলীর। শিউলী এক জন বেশ্যা। সূর্যের সাথে সাথে জাগতে শুরু করেছে কারওয়ান বাজারের রেল বস্তি, খুপরিগুলো থেকে মানুষ বেরোতে শুরু করেছে, ট্রেনের অবিরাম হুইসিলে কেঁপে উঠছে ছাপরাগুলো। ঘুম ভাঙা মানুষের গুঞ্জন আর ট্রেনের ঝক ঝকা ঝক শব্দে এ কাকার। দরজার বদলে একটা ছেঁড়া শাড়ীর টুকরো দিয়ে আব্রু দেয়া হয়েছে ছাপরার, ট্রেনের মাতাল হাওয়ায় উড়ছে সেই চৌকির উপর একটি ছেঁড়া কাঁথা বিছানো, তেল চিটচিটে বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে একটা মেয়ে। তার ঠোটের কোনায় মৃদু হাসির রেখা মেয়েটি কোন মধুর স্বপ্ন দেখছে। ছোট সেই ঘরে প্রথম সকালে রোদ এসে পড়েছে। মেয়েটির বুকে শুয়ে আছে একটি শিশু। স্তনে মুখ গুঁজে স্তন্য পান করছে। সাধু যেন অমৃতের সন্ধানে ব্রতী। উন্মুক্ত দুই স্তনের মাঝে ঝুলছে একটা তাবিজ। সকালের নরম রোদ ঝলমল করছে তাবিজটি। নরম রোদ ঝলমল করছে তাবিজটি। বস্তির নোংরা আবর্জনার গন্ধ ছাপিয়ে একটা মিষ্টি সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। মেয়েটির মুখের হাসি বিস্তৃত হতে থাকে। মেয়েটির নাম শিউলী। শিউলী একজন মা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান.
আমি আর প্রতিকার চাই বলেই আমার রঙের বাজার গল্পটি লিখেছিলাম. আপনিও চেষ্টা করছেন প্রতিকারের লক্ষ্যে তা তুলে ধরতে. সে জন্য আপনাকে ধন্যবাদ. সামনে অরূপ গল্প আরো লিখবেন , যে গল্প পড়ে মানুষ ভুল সঙ্গ ত্যাগ করবে . সমাজ তাকে সুন্দর করে সাজাবে. তবেই সোনার বাংলায় সোনালী দিন ফিরে আসবে. চালিয়ে যান. শুভ কামনা রইল.
সূর্য
গল্পটা পড়তে শুরু করলাম যতই এগুচ্ছি মনে হলো কতবড় না জানি লেখাটা, কারন মা বিষয়ক লেখা কিন্তু পড়ছিতো অন্য গল্প। তার পর হঠাৎ করেই গল্পের মাকে আবিস্কার করলাম। চরিতের ভিন্নতা বুঝাতে লেখার এই রূপটা ব্যবহার করতে আমিও পছন্দ করি। খুব ভালো লিখেছ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।