প্রহরী

শীত (জানুয়ারী ২০২০)

MD. MOHIDUR RAHMAN
  • ৫৬৪
শীতের আয়োজন চলছে চারে দিকে। রাস্তার মোরে ছোট চুলা নিয়ে ভাপা পিঠার দোকান বসেছে। বাজারে খেজুরের গুড় আসতে শুরু করেছে, খেজুর গুড়ের পিঠার নানান রেসিপি অনলাইনে, সাথে ভেজাল খেজুরের গুড়ের খবরও আছে । খেজুরের গাছ নাই, রস নাই, কিন্তু বাজারে গুড়ের অভাব নাই।

অথিতি পাখির আগমন, গাছির খেজুর গাছ কাটার ছবি, কৃষকের সবজি ক্ষেতের ছবি, দিন মজুরদের মোটা জ্যাকেট পরে ডালি কোদাল হাতে কুয়াসার মধ্যে হেটে চলার কুয়াশাচ্ছন্ন ছবি খুব সহজে শিতের জানান দিচ্ছে। বর্ষা, শরৎ, হেমন্তের আসা যাওয়ার খবর যাদের কাছে হিসাব থাকেনা তাদেরও নজর এরায় না শীতের হিসেবটা। ওয়াটার হিটার, লেপ কম্বেলের সাথে কিশোর যুবক ছেলেদের খেলাধুলার আয়োজন চলছে, শীতের অর্থনীতি ভালই জমেছে। তবে সবাই ভালো নাই।

৪ বছরের রাকিবুল মাথায় তেল , ক্রিম, লোসন মাখা চকচকে মুখ, বাম হাতে অর্ধেক ভাপা পিঠা নিয়ে জানালার শিক ধরে তাকিয়ে বৃদ্ধ জয়নাল কে দেখছে। লোকটা পুরনো জ্যাকেট পরে জড়সরো হয়ে একটা পাটিতে বসে আছে এর একটু পরপর খুকখুক করে কাশছে। এলাকার মেম্বার এসেছে বয়স্কভাতা দিতে। জয়নালের বউ মরিয়ম বয়স্কভাতার ৫০০ টাকা কমপেয়ে মনক্ষুন্ন হলেও তর্ক করলেন না। কয়েকজন ছেলে শীতের কাপড় বিতরন করছে। জয়নালকে একটা কাপড় দিয়ে ৪ টা সেলফি নিল। ভালো কাজ করছে, ফেসবুকে আপলোড দিয়ে দেখাতে হবে। পত্রিকায় খবর আসতে শুরু করেছে শীত বস্ত্র বিতরনের। দশ জন মিলে ত্রিশ চল্লিশটারমতো কম্বল কিনে বিতরন করলেই স্থানীয় পত্রিকায় ছবি সহ খবর করা হচ্ছে। খুব ভালো ব্যাবস্থা। হাড় কাঁপান শীতে হৃদয় কাঁপান মানবতা। এতো মানবতা তার পরেও কেউ দেশে থাকতে চাচ্ছে না সুজোগ পেলেই বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। যারা পারছেনা তারা দেশ প্রেমের মাঝে শান্তনা খুজছে। তাদের দলের একজন রাকিবুলের বাবা মিজানুর।
মিজানুর রহমান পুলিশে চাকরি করে। নতুন এসেছে এ জেলায়। পরিবার পরিজন নিজজেলায় আছে। বদলি হলে বার বার অন্য জায়গায় শিফট করা সমস্যা। তাই পরিবার নিজ জেলাতেই রেখেছে। আজ নাইট ডিউটি। শীত টাও বেশ শক্তি দেখাচ্ছে, রাত ৯টার খবরের শিরনাম হয়েছে। রাত ১১ টা বাজে। শীতের রাত, সারা শহর নিশ্চুপ। মাঝে মাঝে ট্রাক, বাসের আসা যাওয়ার শব্দ। নিশ্চুপ শহরটাকে ঘুরে ঘুরে দেখছে মিজানুর। কয়েক জায়গায় দুই একজন কম্বল মুরি দিয়ে শুয়ে আছে। একটু দুর থেকে কিছু শব্দ আসলো তার কানে
"ভাই টাকাটা আমার খুব দরকার। আপনার পায়ে ধরি ভাই"
কুয়াশায় কিছু দেখা য়াযনা। কৌতুহল নিয়ে সামনে আগায়। কয়েকটা লোক হাতাহাতি করছে। কাছে গিয়ে এক ধমক দিতেই ২ জন দৌরে চলে গেল, আর মধ্য বয়সের একজন লোক অসহায়ের মতো তার দিকে তাকিয়ে আছে।
মিজানুর প্রশ্ন করে এতো রাতে বাইরে কেন?
-ভাই ট্রাকে মাল আসছে, গোডাউনে মাল তুললাম তো দেরি হয়ে গেছে।
-ও, টাকা পয়সা ঠিক আছে?
- জি আছে।
যান। বলে টর্চ লাইট টা তার পথের দিকে ধরে থাকে। লোকটা মিজানুরের মুখের দিকে একবার তাকিয়ে হাটতে শুরু করে। কিছুদুর হেটে বামে মোর নিলে মিজানুর লাইট বন্ধ করে আবার নতুন শহরের নিস্তব্ধ পরিবেশ দেখার দিকে মন দেয়।
সেলিম নিজের কাছে রাখা চাবি দিয়ে গেট খুলে বাড়িতে ঢুকে। রুম হিটারের পাশে বশে একটু গরম হয়। ওয়াটার হিটারে পানি গরম করে হাত মুখ ধুয়ে বিছানায় আসে। টাকাটা ছিনতাইয়ের হাত থেকে বেচে গেছে ভাবতেই রাস্তার পুলিশটার কথা মনে পরে। পুলিশটা শীতের মধ্যে এখনও রাস্তায় আছে। শুধু লাঠি হাতে এক ধমক দিতেই কেমন দৌরে পালাল ছিনতাই কারিরা! একটা ধমক!
তবে সেই ধমকে একটা তেজ ছিল, আলাদা সাহস ছিল, অন্য রকম শক্তি ছিল, এটা আসলে আছে ঐ পোশাকটার ভিতরে। যেই এ পোশাকটা পরে সেই এ তেজ, সাহস, শক্তিটা পায় আর সেটা ব্যাবহার করে কেউ দায়ত্ব পালন করে , কেউ পোসাকটাকে সুইফট বানিয়ে অন্যের টাকা নিজের পকটে নেয়।
সেলুট তাদের যারা এই শীতের রাতে লেপ বিছানা ছেরে ড্রেস টা পড়ে দাড়িয়ে আছে নিরাপত্তার জন্য। ব্যাক্তির অপরাধের দায় ব্যাক্তির কাঁধেই থাক ড্রেসটার সোল্ডারে না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সাইদ খোকন নাজিরী অনেক ভাল লেখেন ।ভাল লাগল। শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১৪ জানুয়ারী, ২০২০
আব্দুর কাদির এককথায় অসাধারণ। ভোট রইল প্রিয়। আরও লেখার প্রতিক্ষায় রইলাম। আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০২০
ফয়জুল মহী অনবদ্য পরিপাটি লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০২০

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

শীতে একটি পেশার মানুষের রাস্তায় দাড়িয়ে দায়িত্ব পালন, শীতে তাদের নির্ঘুম রাতের কথা, শীতের প্রকৃতি, অর্থনীতির আলাদা বৈশিষ্ট উঠে এসেছে।

২৪ নভেম্বর - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪