নির্জন বিকালে শাহেদ আলী এক পেয়ালা চা নিয়ে একা নিস্তব্ধ বিকাল বেলা । কয়দিন আগেও তার জীবন টা ছিল অন্য রকম। চারপাশে লোকজনের কোলাহলে ভরপুর। মাঝে মাঝে এই কোলাহল থেকে নির্জনে যেতে ইচ্ছে করত।
কখনো সে সংসারী ছিল না ।নিত্য দিনের চাল ডাল নুন তেলের হিসাব কেনা কাটা শপিং অনেক বছর ধরে করা হয় নাই। এই পৃথিবীর অনর্থক মানুষ মনে হয় তাকে। সব কিছু থেকে নিজেকে আলাদা মনে হয়। আচ্ছা আমি কি তবে অসামাজিক? নিজের করা প্রশ্ন নিজ কানে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।
জীবনের হঠাৎ ছেদ পরায় শাহেদ আলী নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছে না। জীবনকে অনর্থক মনে হচ্ছে। একাকী অফুরন্ত সময় গুলো শুধুই স্মৃতির আলোড়ন ।সিনেমার পঠ দৃশ্যের মত আসে চোখের সামনে। যে স্মৃতি গুলো সামনে আনতে চায় না সেগুলো যেন অধিক হারে সামনে ভাসে।
আজও এই বয়সে এসে মনে হয় ওই তো সেদিনের কথা। হাত বাড়ালেই স্মৃতি গুলো ধরা দিবে অতিতের গন্ধ টা যে এখনও নাকে ভাসে। বকুলের সুবাসের মত ঝরে যায় মরে যায় তবু গন্ধ টা থেকে যায়।
ছয় ভাই বোনের সংসারে পাঁচ নাম্বারে তার অবস্থান। দুই বছর বয়স যখন বাবা মারা যান এত গুলো ভাই বোনের সংসারে বিধবা মা কত অবর্ণনীয় কষ্ট করেছে চোখে ভাসে এখনও।
ধনীর ঘরের আদরের বড় মেয়ে ছিল তার মা। ধুমধাম করে আরেক ধনী বাড়ির ছোট ছেলের সাথে বিয়ে হয়। চোখের সামনে সেই রমণী বাবার বাড়ি স্বামীর বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হতে দেখেছে ধনীর খোলস ছেড়ে কিভাবে গরিবের সারিতে নেমেছে ।দেড় মাসের শিশুর জন্ম দাত্রী আট সন্তান নিয়ে হঠাৎ বিধবা। নদী গর্ভে বিলিন ফসলী জমি । প্রতি দিনের অন্ন চিন্তা মাথায়।কি ভয়ানক কষ্টের দিন পার করতে হয়েছে তাকে।একবেলা আধাবেলা খেয়ে না খেয়ে মা তার সকলের মুখে তুলে দিয়েছে অন্ন। রাতে এক পাতিল ভাত রেঁধে ক্ষুধার্ত সন্তানদের পাতে দিতে দিতে কখনো বা তলানিতেও কিছু থাকে না। কিছু চাল মুখে পুরে শুকনো মুখে চিবোয়। দুই গ্লাস কলের ঠাণ্ডা পানি খেয়ে শুয়ে পড়ে।মা আকাশের দিকে তাকায় চোখের পানি যেন জমিনে না পড়ে কেউ না দেখে। চুপি চুপি সয়ে বেড়ায় মা একা এক হাতে।
পালানের জমিতে ফল সব্জির ক্ষেত দূর চর অঞ্চলের বর্গা চাষিদের দেয়া অল্প বিস্তর ফসল সাতটা পেটের জন্য খুবই সামান্য। আরও আছে কাপড় ,মাথার তেল ,নুন, রান্নার তেল অসুখ বিসুখ কত কিছুই। সবার লজ্জা নিবারণের কাপড় । মায়ের ছেঁড়া কাপড় কত আর তালি দেওয়া যায়। এক আজলা গায়ে দিয়ে আরেক আজলা রোদে শুকায়। তেলের অভাবে মাথার চুল কাকের বাসা জটাধারি ।
বড় চাচার সাহায্যে সিরাজগঞ্জ শহরে সাবানের কারখানায় চাকরী নিল শাহেদের বড় ভাই। তের চৌদ্দ বছরের বালক মাকে ছেড়ে শহরে যায়। একমাস তো আগে খেতে হবে। মায়ের কাছে দুই পয়সা নাই যে জামালের হাতে দেয়। সোনার গয়নার কমতি ছিল না। বাবার মৃত্যুর আগে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করতে বেঁচে দিতে হয়। আছে নাকের ফুল । বিধবা মানুষের কাছে যা মূল্যহীন। সোহাগের মানুষ টা মরেছে সেই সোহাগ চিহ্নে আর কি দরকার। তাই নাকফুল টা হাতে তুলে দেয় জামালের-বাবা এইডা নিয়া শহরে বেচ কয়দিন চল দেহি কিছু আর বাইর করতে পারি নাহি।
অতপর নাড়ী ছেঁড়া প্রথম মানিক রে শহরে পাঠায় কাজে। শহর যদিও খুব দূরে না। ছেলেকে বিদায় দিয়ে সুফিয়া খাতুন নিরবে কাঁদে আঁচলের তলে । সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে, বউ জোরে কাঁদে কিভাবে।
সংসার যখন আর চলতে চায়না রুপার গয়নায় হাত দেয় ।
যে সময়টার কথা বলছি তখনকার দিনে পরিবার পরিকল্পনার প্রচার ছিল না। যত দিন একটা নারী সন্তান উৎপাদনে সক্ষম থাকত ততদিন সন্তানের সংখ্যা বাড়তেই থাকত।কোন কোন অবস্থা সম্পন্ন লোকের ঘরে একাধিক স্ত্রী থাকায় তার হয়ত বছরে একের অধিক সন্তান আসত ঘরে। সেই পরিবার গুলো শুধুই তাদের জমির চাষবাসের উপর নির্ভর ছিল । নদীতে সেই জমি বিলিন হবার পর তাদের করুণ জীবন যাপন কল্পনার বাইরে। অসহনীয় কষ্ট।কষ্ট না সইতে পেরে কেউ বা আত্নাহুতি দিয়েছে এমন কাহিনীও আছে। তারা না পারত মানুষের কাছে হাত পাততে না পারত কামলা দিতে। যে লোক টা তাদের বাড়ির কামলা ছিল তার পাশে বসে অন্য গায়ের অন্যের জমিতে কাজ করা কত টা অপমানের তাদের চেয়ে বেশী কে আর জানবে।
যতক্ষণ পারা যায় ক্ষুধার্ত মানুষ গুলো মলিন মুখ না দেখানোর জন্য নিজ ঘরে বসে থাকত। তারপর পরিবারের ঐতিহ্যবাহী জিনিস গুলো ধীরে ধীরে একটা একটা করে বেচা শুরু করত ।সেই মূল্যবান জিনিস কেনার লোকও সে গ্রামে পাওয়া যেত না। সবার অবস্থা প্রায় এক। আবার লোক লজ্জার ভয়ে সম্ভ্রান্ত বংশীয় মানুষ গুলো জিনিস পত্র দূর গ্রাম বা শহরে নিয়ে বেঁচে দিত। যাতে কেউ তাকে না চিনতে পারে। হাতে কয়টা পয়সা এলেই পুরানো বড় লোকের মত বাজার করত । অনেক দিন পর পুরানো অভ্যাস টাকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে ক্রত।শাহেদের মাও তাই করে আর দশ জনের মত।
বিছানায় শুয়ে শাহেদ আজ স্কুলে যাওয়ার কথা বলে মাকে। ছেলের কথায় তার যেন হুশ ফেরে। তাইত –তগর তো স্কুল যাওয়ার বয়স অইছে। খেয়ালই করি নাই। দেহি বাবা ক্যাল তোর চাচারে কই হে কি কয়। শাহেদের বড় চাচা অল্প শিক্ষিত। পাশের হাটের গোডাউনে চাকরী করে। যখন জমি জমা ভাঙতে শুরু করেছে তখন থেকে এই কাজে যোগ দিয়াছে সে। বড় চাচার কাছে ছেলেদের স্কুলে ভর্তির কথা কয় সুফিয়া বেগম। হুম, স্কুলে তো দেয়ন দরকার?খরচ চালাইতে প্যারব্যা।বই,খাতা, কলম পরীক্ষার ফিস কত কিছু লাগে। ভাইজান আপনেরা তো আছেন। কথা ভুল কও নাই জামালের মা। বড় চাচা অইছি কিন্তু ওগোর জন্যি তো কিছু করব্যার প্যারল্যাম না। আমার ঘরেই তো খায়নে আলা কম না আবার ওগো পড়া শোনা তো আছেই।দেহি খোঁজ নিয়া কি করা যায়।
কয়েকদিন পর জামাল ছুটিতে আসে। বড় চাচা শাহেদদের ঘরে বসে অনেক কথা কয়। অনেক ভাবে। তার কষ্ট হচ্ছে কথাটা বলতে । জামালের মা- হেইদিন পোলা গুলারে স্কুলে ভর্তির কতা কইছিলা। তো খোঁজ খবর নিয়া দেখলাম। ওগোর বাপ মইরা গেছে।জামাল ও সিরাজগঞ্জ থাকে। লেহাপড়ার যে খরচ! তাই ভাবছিলাম ওগো দুই ভাইরে সিরাজগঞ্জের এতিম খানায় ভর্তি কইরা আসি। লেহাপড়াও অইব আবার তোমার খরচ ও কমল।
এই কথা সুফিয়া বেগমের মাথায় যেন বাজ পড়ার মত মনে হইল।যে বংশের লোক এতিম খানায় অনুদান দিত আজ সেই বংশের ছেলেরা এতিম খানায় পড়বে?
সে তৎক্ষণাৎ কিছু বলতে পারল না।বড় চাচা মনের অবস্থা বোঝে।তার নিজেরও খারাপ লাগছে।কিন্তু কি করবে?এই দুনিয়ার সব চেয়ে অসহায় অবস্থা যে তার। না পারে তাদের দায়িত্ব নিতে না পারে ছেড়ে দিতে।কি করবে?বেঁচে থেকে বংশের ভাই ভাতিজাদের এই করুণ দশা দেখার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল
মা আর জামাল সংসার নিয়ে কথা কয়।কি করবে এখন? মাগো জানি খুব কষ্ট পাইছ।কিন্তু চাচা খারাপ কয় নাই।আর আমি তো কাছাকাছিই থাকমু দেখ ভালের জন্য।মাগো, অভাবে পড়ছি কি করা যাইব।এই কতা ভাইবা যদি স্কুলে না দেই মূর্খ বানাই , তালি তো আর অবস্থার উন্নতি অইব না ।এক সময় ওরা বড় অইব শিক্ষিত অইব আঙ্গোর অবস্থা তহন এমন টা থ্যাইকব না। মা ছেলের চোখে পানি ।কষ্টে পাথর চাপা দিয়ে তাই করে মা। গায়ের সবাই জানল শহরে নিয়ে ভাই তাদের ভাল স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে।
সেই যে গ্রাম ছাড়া।শাহেদ শমসের অনাথ আশ্রমে বেড়ে ওঠে। রুটিন মাফিক জীবন। শাহেদের ভদ্র উত্তম আচরণ সবাইকে মুগ্ধ করত।খেলাধুলা লেখা পড়ায় আচার ব্যবহার সব কিছুই মন কেড়ে নেয় সবার।তাই তার প্রতি সবাই ভাল দৃষ্টিতেদেখত।কিন্তুশমসের ছিল একটু দুষ্টু প্রকৃতির।মাঝে মাঝেই তার শাস্তি হত। শাহেদ এই নিয়ে খুব কষ্ট পেত।অনেক সময় না খাইয়ে রাখত।কতদিন কেঁদেছে শমসেরের কষ্ট দেখে। তবু কাউকে বলে নাই।
শাহেদ তার লেখা পড়ায় সফলতার সাথে এগিয়ে যায়। ক্লাস ফাইভ ক্লাস এইটে বৃত্তি নিয়ে ক্লাস নাইনে ওঠে। সেই সাথে তিন বছরের বড় শমসের সেও অতটা ভাল না করলেও দুই ভাই এখন ক্লাস নাইনে পড়ে।
তখন ছিল ১৯৭১ সাল। যুদ্ধের দামামা চারদিকে । সিরাজগঞ্জ শহরটাও তার বাইরে না। স্কুল কলেজ সব বন্ধ অনির্দিষ্ট কালের জন্য। কল কারখনা অচল। চারদিক ভয়ংকর অবস্থা। জ্বালাও পোড়াও খুন ধর্ষণ। রাতের অন্ধকারে করুণ আর্তচিৎকার ভেসে আসত। দিকবিদিক মানুষের ছুটে চলা।হাতে কাজ নেই ঘরে খাবার নেই নিজের ঘরে নিরাপত্তা নেই। মা বোনদের ইজ্জত নিয়ে টানা টানি। পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী কে খুশি করতে এদেশীয় কিছু দালাল বাহিনী গড়ে ওঠে কিছু সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে। অভুক্ত মানুষ গুলো কেউ লোভে পড়ে কেউবা না বুঝে সেই দলে ভিড়ছে।বিনিময়ে খাবার পাচ্ছে, পাচ্ছে অন্যায় কাজ করার প্রশ্রয়। গ্রামে যত হিন্দু পরিবার ছিল তাদের অন্যায় ভাবে তাড়িয়ে সেই সব লোকের সম্পদ দখল করছে। কিন্তু আরেক দল আছে যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছে তলে তলে । কেউ জানে না। এক সময় দল বেঁধে গ্রাম ছাড়ে প্রশিক্ষণ নিতে। সীমানা পাড়ি দিয়ে ভারতে যায়। এই দলে শাহেদ আর শমসেরও ছিল।
স্কুল কারখানা যেদিন থেকে বন্ধ হয় তারা তিন ভাই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে আসে। শাহেদের বয়স মাত্র চৌদ্দ ছুই ছুই করে। কিন্তু দেখতে তরতাজা যুবক। লম্বা একহারা সুন্দর দেহের শাহেদকে বার বার আল বদর বাহিনীতে নাম লেখানোর জন্য তোড় জোড় করছে।শাহেদ এই অন্যায়কারীদের দলে নাম না লিখিয়ে দ্রুত মাঝ রাতে কাউকে কিছু না বলে শমসেরকে সাথে নিয়ে বেড়িয়ে আসে। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে সাত নাম্বার সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করে। কতবার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসে। যুদ্ধের শেষ দিকে পায়ে গুলি লাগে এমন অবস্থা হয়েছিল সবাই ভেবেছিল পা হয়ত ফেলেই দিতে হবে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।
যুদ্ধ শেষ হয়। যে যার জায়গায় ফিরে যায় অস্ত্র জমা দিয়ে। শাহেদ ১৯৭৩ সালে এস এস সি পাশ করে সারা বাংলাদেশে স্মমিলিত মেধাস্থান নিয়ে।এরপর সিরাজগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ থেকে আই এস সি পাশ করে।যুদ্ধের পর অস্থির দিনকালে শাহেদ তার পড়াশোনার সেই পূর্বের অবস্থা ধরে রাখতে পারে না। এইদিকে নিজেদের আর্থিক অবস্থাও ততটা ভাল না হওয়ায় চাকরীর চেষ্টা করতে থাকে।আবার পাশাপাশি বি,এ ভর্তি হয়। বিজ্ঞান শাখার মেধাবী ছা্ত্র হয়ে বি,এ ভর্তি হতে হয় অবশেষে। শমসের একটা স্কুলে ঢোকে শিক্ষক হিসাবে। বড় ভাই তের বছর বয়স থেকে সংসারের হাল ধরেছে।নানা চাপে জটিল অসুখে পরে সে।এতদিন পড়াশোনার ফাঁকে টিউশনি করে কিছু হলেও ভাইকে দিত। নানা জায়গায় পরীক্ষা শেষে ব্যাংকে চাকরী হয়।
কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য তার প্রাণপ্রিয় পিতৃতুল্য বড়ভাই যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে তার চাকরী পাওয়ার আগেই মারা যায়। মৃত্যুর সময় দুই বছরের একছেলে আর স্ত্রী রেখে যান। বড় দুই বোনের মত ছোট বোন টার আগেই বিয়ে হয় এক কাঠ মিস্ত্রীর সাথে।বড় বোনেরা ভালই চলছে। কেন যেন ছোট বোন টা দুঃখের বেড়াজাল থেকে মুক্তি পায় না। জন্মের পর পিতৃ হারা। ছোট এই বোন টা অনাদরেই বেড়ে ওঠে। সংসারের চাপে মায়ের অনাহার অর্ধাহারে বুকের দুধ খুব কমই জুটেছে।কেউ তাকে খেয়াল করেনাই । একেবারে আগাছার মতই বেড়ে ওঠা। যে বিয়ে হল স্বামী ততটা সংসারী না। কিছুদিন পরপর যৌতুকের জন্য চাপ দিত।সরকারী চাকরী কত বা বেতন শাহেদের।শমসের সংসারের দায় ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি বাস করে। শাহেদ সবার চাহিদা মেটাতে চাকরীর পাশাপাশি টিউশানি করে পার্টটাইম চাকরী করে তবু চাহিদা শেষ হয় না।জনম দুঃখী মা বিধবা ভাবি তার ছেলে যৌতুক প্রার্থী বোন জামাই পাড়া প্রতিবেশী গ্রামবাসী।সবাই ভাবে শাহেদ দয়ালু ভাল ছাত্র ছিল ভাল চাকরী করে তার কাছে গেলেই পাওয়া যাবে।
কারো বা চিকিৎসা কেউবা পরীক্ষার ফি কারো বিয়ে কারো ঘরে ভাত নেই কারো খুব শখ ঢাকা শহর ঘুরে দেখার কেউ কেউ বায়না ধরে সুন্দর জামা কেনার। তিন বোনের ঘরে অনেক ভাগ্নে ভাগ্নি আছে তাদের আবদার আনুরোধ অনুযোগ।
মাঝে মাঝে শাহেদ রাগ করে । মা আমি কি টাকার কুমির? কোথায় পাব এত টাকা? কত পরিশ্রম করি তোমরা কেউ বুঝলে না। সকাল নয় টা থেকে রাত দশ টা একটানা কাজ কাজ আর কাজ। অথচ আমার হাত সব সময় ফাঁকা। আমি ভাল কাপড় পড়ি না ভাল বাসা ভাড়া করে থাকতে পারি না।
মা বোঝে না। সে খুব দয়ালু। অভাব ভোগ করেছে সারা জীবন তাই অভাবী সইতে পারে না। কাউকে কিছু দিতে না পারলে মা ভাত খায় না দুই তিন দিন। সারা দিন রাত কাজ শেষে মাকে আদর করে হাত পা ধরে মাফ চেয়ে দুই দিন পর হয়ত ভাত খাওয়াতে পারে। আর ভাত না খেয়ে খেয়ে সে যেন কষ্ট সহিষ্ণু হয়েছে আগাগোড়া। এক চামচ ভাত পাতে নিয়ে মুরগির মত একটা একটা করে খায় আধা ঘণ্টা। শাহেদ চেয়ে চেয়ে দেখে খুব মায়া লাগে তার। কিভাবে এই টুকু খাবার খেয়ে বেঁচে আছে তার মা? খুব অবাক লাগে শাহেদের। মা কোন ভাবেই বুঝতে পারে না তার ছেলের অসহায় অবস্থা। সে শুধু বলে তবুও তো আমরা খেয়ে বেঁচে আছি। এই কথা মনে রেখে যে যা চায় দিতে হবে।
মায়ের এই ভালবাসা প্রশ্রয় পেয়ে আত্নীয় পরিজন সবাই ধীরে ধীরে লোভী আর অলস হতে থাকে। চাইলেই যদি পাওয়া যায় নিজে কষ্ট করে উপার্জন করার কি দরকার। এর সাথে যোগ হয় নতুন উৎপাত। সিরাজগঞ্জ জেলা সেই অতিত কাল থেকেই অবহেলিত। এখানে না আছে উন্নয়ন না কোন সরকার মনে করেছে এদের মানুষ। নদী ভাঙতে ভাঙতে প্রায় পুরো কাজিপুর জেলা নদী গর্ভে বিলীন। শাহেদের যে দুই বোনের ধনী বাড়িতে বিয়ে হয় সেই তারাও আজ বাস্তুহারা। আরও বোঝা যুক্ত হয় মাথায়।এত দায় দেনা দায়িত্ব শাহেদের পাগল হবার জোগাড় । ব্যাংক যেটুকু সুযোগ সুবিধা দেয় পাওয়ার আগেই সেই অর্থের চিন্তা করে ধার দেনা করে। আত্নীয় গোষ্ঠীর চাহিদা মেটায়। পৃথিবীতে বুদ্ধি হবার পর থেকে দেখে আসছে অভাব অনটন। তার ও যে বয়স হচ্ছে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে সেদিকে নজর দেবার কেউ নেই। এত সুঠাম দেহের অধিকারী শাহেদ ভালবাসার সুযোগ পায়নাই। সবসময় টাকার পিছে হন্যে হওয়া শাহেদ টাকা উৎপাদনের মেশিনে পরিণত হয়। যখন তার বয়স ৩৫ বছর।কোন এক ছুটিতে বাড়িতে যায়। সেই ছুটিতে ভাই বোনেরা মিলে শাহেদের বিয়ের কথা ভাবে।
এই বিয়ে করানোর পিছনেও ছিল আত্নীয় পরিজনের স্বার্থ। এই গ্রামে তারা নতুন বাড়ি করেছে।নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া নিজ গ্রাম থেকে সদ্য গ্রামে এসে ভিড়েছে । এই গ্রামের প্রতিষ্ঠিত কোন পরিবারে যদি ভাইকে বিয়ে করানো যায় তবে তারা সুরক্ষিত থাকবে।
অন্য দিকে পাত্রীর বাবাও বিপর্যস্ত বর্তমানে। তার প্রিয় বড় মেয়ে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছে।তাই শিক্ষক বাবাকে সবাই মিলে উল্টো পাল্টা বোঝায়। বড় হয়ে এই মেয়েও যদি একই কাজ করে তখন কি করবে। ভাল যোগ্য চাকরিজীবী ছেলে। হাত ছাড়া করা যাবে না। বয়স একটু বেশী তাতে কি? পুরুষের আবার বয়স?
মুক্তিযোদ্ধা শাহেদ ভদ্র বিনয়ী ভাল মানুষ মানবিক হৃদয়বান ৩৫ বছরের যুবক। ১৫ বছরের কিশোরীকে দিব্যি বিয়ে করল। মেয়ে দেখল না বয়স জানল না কালো না ফর্সা উঁচু না খাটো কিছুই না। শুধু পরিজনদের নিরাপত্তার কথা শুনে।
২৫ বছরের সংসারে শাহেদ একই রকম আছে। সে বড় বাসা ভাড়া করতে পারেনা। স্ত্রী পুত্রদের ভাত কাপড় ছাড়া কোন বিনোদন বিলাসিতা কিছুই না। তার নিজের সংসার বলতে এখনও সেই আগের পরিজনের কষ্ট দূর করার আকুতি ।
শাহেদ নিজেও খুব সুখী তা নয়। বিয়ের পর থেকে আজ অবধি তার স্ত্রী কখনো তাকে অতি আদরে কপালে চুমু দেয় নাই। বুকে জড়িয়ে চোখে চোখ রেখে ঠোঁট ছুঁয়ে বলেনি ভালবাসি। কখনো বলে নাই তোমাকে চাই। তোমার মাঝে হারিয়ে যেতে চাই। কখনই স্ত্রীর কাছ থেকে যৌনতার আহবানে সাড়া পায় নাই। একটা জড় পদার্থের সাথে দিনের পর দিন উপভোগহীন যৌনতা মিলেছে।
অন্যদিকে শাহেদের স্ত্রী সায়মা তারও কি কষ্ট কম? অল্প বয়সে বউ হয়ে আসা। স্বামীর দিকে তাকালেই কেমন মুরুব্বি মুরুব্বি লাগে। তার সাথে কোন কথা শেয়ার করতে পারে নাই। এত আত্নীয় পরিজন ঘেরা প্রতিটি সদস্য সায়মাকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবেছে। খাওয়া পড়া সব কিছুতেই বাঁধা।নিজেকে মনে হয়েছে উপযাজক হিসাবে। এই সব কাউকে বলে নাই সায়মা। বাবা মাকে বলে নাই তারা কষ্ট পাবে ভেবে। স্বামীকে সে ভয় পায় তাই বলে নাই।যদিও বা কখনো কিছু বলেছে একটাই জবাব আমার পরিবারের নামে একটা কথা বললে বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে। একটা জীবন একটা বিরাট স্মৃতির খাতা।আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শাহেদ নিজেকে একা শুন্য মরুভূমি ভাবে। কোথাও কেউ নেই।অফিসের কোলাহল আত্নীয় পরিজন পরিবারের সদস্য সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত।
স্ত্রী পুত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে নাই কখনও ভাবে নাই নিজের জীবনের শেষ সম্বল কি হবে তা নিয়ে। সবাইকে বিলিয়ে শেষ জীবনে শূন্য হাতে।কোন রকম এই আশ্রয় টুকু করেছে স্ত্রী। তবু অনেক কষ্টে। তখন সে নিজেই অনেক বাঁধা দিয়েছে এই কাজে।সব সময় চিন্তা করেছে এই বাড়ি করতে টাকা চলে যাবে অনেক। ঠিক মত সবার দায়িত্ব বহন করতে পারবে না।
সে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অথচ কাগজ পত্র পুরোপুরি ঠিক নেই। সরকারি গেজেট হয়েছে বারবার। তাতে তার নাম নাই।ভারতীয় যে তালিকা তাতে স্পষ্ট লেখা তার নাম প্রশিক্ষণের স্থান। কিন্তু দেশে তৈরি গেজেটে তার নাম নেই।শাহেদ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কোন সুযোগ পায়না। চেষ্টাও করেনা।তার বক্তব্য দেশের প্রয়োজনে দেশের কাজে যুদ্ধে গিয়েছি তার বিনিময়? এযে মায়ের কাছে শ্রমের দাবী চাওয়ার মত। দেশ আমাকে বড় করে তুলেছে তার জন্য নিজে যত টুকু সম্ভব কাজ করেছি এর কি বিনিময় আশা করা যায়!
তার শুধু কষ্ট যুদ্ধে যারা ছিল রাজাকার তাদেরও দুই একজন আছে তালিকায়। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে “ওরা দালাল মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ওরা কিভাবে যায়।আমাকে নাহয় বাদ দিলে কিন্তু ভুয়া লোক কেন ঢুকল এই দলে।”
কাকে বলবে কে শুনবে। শুনলেই বা কি এর পিছনে দিন রাত ব্যয় করে কি লাভ।তদন্ত পাল্টা তদন্ত চলছে চলবে।শুধু সঠিক যে মুক্তিযোদ্ধা সে বাদ পড়বে। টাকার জোরে এত কিছু হয় তার জানা ছিল না।
একসময় সায়মার প্রতি পদক্ষেপ বাঁধা দিয়েছে শাহেদ। অথচ সেই আজ ভরসা হয়ে সংসারের সাধ্য মত সব করছে। তাই এখন তার উপলব্ধি যা কিছু এই জীবনে করেছে তার বেশির ভাগ ভুল ছিল।ভুল ছিল আত্নীয় স্বজনকে এইভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা।অবাধে টাকা পেয়ে কেউ পরিশ্রমী হয় নাই,সবাই অলসতায় ভাসিয়ে পার করেছে। বংশের কোন ছেলে ভাল লেখা পড়া করে উন্নত অবস্থায় নেই।এখনো সবার অভাব রয়েই গেল। সায়মা সব সময় বলত-এভাবে অর্থ না দিয়ে প্রত্যেক কে নিজের পায়ে দাঁড়াতে বল। কাজ করুক শক্ত পায়ে দাঁড়াক। এক জন মানুষ একা কখনও হাজার মানুষের চাহিদা পুরণ করতে পারেনা।তারাও গরীব থেকে যাবে তোমাকেও গরীব বানিয়ে রাখবে। এই কথায় শাহেদ ক্ষেপে যেত। বলত আমাকে সবাই ভালবাসে। আমার কাছে আবদার করার অধিকার সবার আছে। তুমি কখনও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলবে না।
সায়মা এত কষ্ট পেত এই কথা শুনে।তার স্বামী তাকে দুই সন্তানকে মনে হয় পরিবার মনে করে না।এত বছর সংসার জীবন কোন সঠিক কথা বলতে পারত না। সব কথার উল্টা অর্থ খুঁজত।এক সময় মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে পড়া শোনা তাকে শেষ করতেই হবে।নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে।নিজের সন্তানদের যোগ্য করে গড়ে তুলতেই হবে। সন্তানরা নিজের যোগ্যতায় নিজের পায়ে দাঁড়াবে সেই প্রত্যয়ে এগিয়েছে সামনে।আজ সায়মা জয়ী হয়েছে।শাহেদ ও মনে করে সায়মাই ঠিক ছিল। সে ভুল করেছে সারা জীবন। এই অবসর জীবনে কোন আত্নীয় তাকে আর দেখতে আসে না। কেউ ফোন দিয়ে খোঁজ নেয় না। তার সাহায্যে পুষ্ট পরিজন বন্ধু বান্ধব কেউ না। এখনও অনেকেই আসে সেই পূর্বের মত সাহায্য চাইতে । একটা টেলিফোন করে দিতে সেই আগের মত। সে অবসর প্রাপ্ত অপারগ কেউ বিশ্বাস করে না। আগে যত উপকার করেছে শাহেদ সবাই ধুয়ে ফেলে অস্বীকার করে আবোল তাবোল মন্তব্য করে।যেই আত্নীয় তার খেয়ে পড়ে বড় হয়েছে সে আজ তার সাথে টেক্কা দেয়। চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলে দেখ আমার আজ কত কিছুই হয়েছে। তোমার কাছে একবার এই জিনিস টা চেয়েছিলাম দাও নাই। অথচ সে কোন দিন একটা উপহার নিয়ে এসে বলল না তোমার জন্য আমি আজ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে । তোমার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। তুমি না থাকলে হয়ত এই জায়গায় আসতে পারতাম না।
স্ত্রী সন্তান আজ খোঁটা দিতে ছাড়ে না।সায়মা তো কিছু হলেই ভুল দেখিয়ে দেয় ,অতিত টেনে আনে সামনে। সন্তান দেরও কিছু বলার সাহস হয় না। যদি তারাও কথার প্রতিবাদ করে। তাই সংসারে যে যাই করে কিছুই বলে না। চুপ চাপ দেখে যায়।নিরব শান্ত নিস্তব্ধ একা। নিঃসঙ্গ এক ব্যর্থ মুক্তিযোদ্ধা। ক্লান্ত পথিক ক্লান্ত জীবন।তার এই ক্লান্তি কাউকে বলে না।এ বড় লজ্জা। আত্নসম্মানে লাগে।নিজের সকল দায় মাথায় নিয়ে লজ্জাবনত মুক্তিযোদ্ধা তাই সব ভুলের জন্য নিজের ভাল মানুষিকতাকে দায়ী করে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সেলিনা ইসলাম
গল্পের পটভূমি খুব ভালো লাগলো। পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে না পারে চুরি করতে,না পারে কেঁড়ে খেতে! এমন কী না পারে ভিক্ষা করতে। আত্মসম্মান বোধটাই তাঁদের একমাত্র অহংকার! শাহেদের মত বহু মুক্তিযোদ্ধা আছেন যারা কোন ধরণের সুযোগ সুবিধা সরকারের কাছ থেকে ভোগ করেন না। এমনও মানুষ আছেন তিনি কারো কাছে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ও দিতে চান না। পরাধীন দেশে অবস্থা সম্পন্ন থাকলেও,মুক্তিযোদ্ধা হবার দায়ে তাঁর সবকিছুই পুড়ে ছাই করেছে মিলিটারি ও তাদের দোসররা! আরও গল্প পড়ার প্রত্যাশায় অনেক অনেক শুভকামনা।
ওয়াহিদ মামুন লাভলু
ম্যাডাম, আপনার গল্পের বেশ কিছু শব্দ আমার খুব পছন্দ হয়েছে। যেমন-পালান, কামলা ইত্যাদি। --- উপকার করা সত্ত্বেও তা অস্বীকার করা ও অনাকাংখিত মন্তব্য করা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না। অনেক ভাল লাগলো। আমার শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়লাম। বেশ ভালো লাগলো। তবে আপনাকে বেশি বেশি গ/ক পড়তে হবে এবং অবশ্যই চর্চা ধরে রাখতে হবে। অনেক শুভকামনা রইল, ভালো থাকুন ...
নুরুন নাহার লিলিয়ান
নির্জন বিকেল বেলা আর নিস্তব্ধ বিকেল ...।।দুটোই একই শব্দ অর্থ ...।।প্রথম লাইনে পর পর দুই বার এক কথা । সামান্য অন্য রকম । গল্পটা ভাল লেগেছে ।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
গল্পের বিষয় লাজ।এই গল্পটি বিষয়ের সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ।নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ধনী লোক হঠাৎ গরীবে পরিণত হয়ে যে অর্থ কষ্ট পায় লজ্জা নিবারণ পেটের ক্ষুধা। দারিদ্রের কষাঘাতে জীবন থমকে যায়। তাদের সাথে জড়িয়ে যায় নিঃস্বার্থ ভাবে সাহায্য কারী এক মুক্তিযোদ্ধার জীবন। যার দায়ভার জীবনের শেষ পর্যন্ত বহন করতে হয়। না পারে বলতে না পারে সইতে। লজ্জা ,হতাশায় একাকী ক্লান্ত পথিক। পরিবারের কাছে নিজের স্ত্রী পুত্রের কাছে সীমাহীন দারিদ্রের কষাঘাত যার পথ সেই করেছে। তাই তাদের মুখোমুখি হবার সাহস টাও তার নেই। যদি তাদের দ্বারা অপমানিত হতে হয় তার চেয়ে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে। তাই আমি মনে করি গল্পের সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা আছে।
২৬ এপ্রিল - ২০১৮
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।