হিটালার ও কয়েকটি কয়েন

স্বপ্ন (জানুয়ারী ২০১৮)

মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া
মোট ভোট ৬৬ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৩৫
  • ৫৩
  • ২৮
হিয়াল কবিরাজের বাড়ী যাইবা... আগে কইবা না মিয়া... এইতো সো... জা.... ঐডা কয়েন পাগলার বাড়ী... এরপরে কানা মিয়ার দোহান.... হেরলগেই হিয়াল কবিরাজের বাড়ী.... এভাবেই শিয়াল কবিরাজের বাড়ী চিনিয়ে দেয় সবাই।

গ্রামের শিয়াল কবিরাজকে এক নামে চেনে সবাই-এমনকি রাতের শিয়ালগুলোও। প্রাপক বাড়ীতে নেই বলে, শিয়াল কবিরাজ-এর নামে আসা কোন পোস্টকার্ডও তাই ফেরত যায়নি কোনদিন। তাঁর বাড়ীর সামনেই কানা মিয়ার রকমারী সদাইয়ের দোকান। শরণার্থী শিবিরে থাকার সময়ে জয় বাংলা রোগে এক চোখ হারানো কালা মিয়া-র দোকানটি এখন কানা মিয়া-র দোকান নামেই পরিচিত সবার কাছে।

কাছাভর্তি এত্তোগুলো কয়েন নিয়ে কানা মিযার দোকানে সদাই নিয়ে এসেছে ষাটোর্ধ্ব জামিল মিয়া। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে বড় একটা মাটির ব্যাংকে কয়েন জমানোর নেশা তাঁর। এক পাই, দু-পাই, আধ আনা, ফুটা পয়সা কি নেই তার মাটির ব্যাংকে। গ্রামের মানুষ কয়েন পাগলা নামেই ডাকে তাঁকে। সেই কয়েন পাগলার সাথে কানা মিয়ার দোকানে কি নিয়ে যেনো হট্টগোল বেধেঁছে আজ।

একপিঠে পাল তোলা নৌকা, অন্যপিঠে পাকিস্তান সরকার মুদ্রিত চৌকোণা তামার পাঁচ পয়সাগুলো বেছে বেছে নিয়ে এক পয়সা-দু-পয়সার কয়েকগুলো ফেরত দেয় দোকানী-এ্যাইগুলা নিমু না।
- নিবা না ক্যান! এ্যাইগুলা কি অচল? কয়েন পাগলার মেজাজ বিগড়ে যায়।
- এত্তগুলা কানা পইসা কই পাইছ মিয়া? দোকানী কানা মিয়াও কম যায় না।
- খবরদার কানা, তর এক চোখ কানা দেইখ্যা কি আমার পইসাগুলোও কানা? মুঠো ভর্তি কয়েন নিয়ে কয়েন পাগলা তেড়ে যায় দোকানীর দিকে। হাতের আঙুল গলে মাটিতে পড়ে যায় গোল একটা কয়েন-গড়াতে গড়াতে গোত্তা মারে ঘাসফুলে; কাঁপতে কাঁপতে স্তিরও হয়ে যায় একসময়। কত আনার কয়েন পড়ে গেল সেদিকে চোখ নেই তাঁর; ঝগড়ার তোড়ে টাটানো চোখ দুটো আরো তেতে উঠে; যেন কানা মিয়ার ভালো চোখটাকেও আজ কানা করে দেবে সে। দোকানীর সাথে কয়েন পাগলার কথা কাকাকাটি থামকেই না। কথায় কথা বাড়ে।
- দ্যাশ স্বাধীন হইছে, খবর পাও নাই মিয়া? এক পইসা, দু-পইসা অহন আর চলে না। এগুলা নিয়া কী পানি দিয়া গিল্লা খামু? দোকানী নিবে না কিছুতেই।
- তুমি গিল্লা খাইবা ক্যান। দেও আমারে পানি দেও। হালার পাকিস্তানী কয়েন.... তোর লাইগ্যাই আমার মাছুম পোলাডারে খাইছে খান সেনারা.... অহন তরে খামু.... সব কয়ডা পাকিস্তানী কয়েন আইজ গিল্লা খামু.... সত্যি সত্যি রাগের মাথায় টিনের গ্লাসে পানি ঢেলে ঢকঢক করে দুটি কয়েন গিলে ফেলল কয়েন পাগলা।
- আরে কর কি, কর কি মিয়া! কয়েনগুলাতো অহন পেট কাইট্টা বাইর করন লাগব- কয়েন পাগলার হাত চেপে ধরে দোকানী।
- হাত ছাড় কানা... হাত ছাড় কইলাম। গরম গরম চা দে আমারে। গরম চা দিয়া কয়েন-বিস্কুট খামু। হালার পাকিস্তানী কয়েন... রাখে গড়গড় করতে থাকে সে।

নানার কান্ড দেখে কয়েন পাগলার ছোট নাতির কৌতুহল বেড়ে যায়- কয়েন খাইতে কেমুন লাগে, নানা। আমিও কয়েন খামু...।

ধমকে উঠে নানা- রাইতে খাইস... খেজুরের রস দিয়া খাইতে জব্বর মিঠা.... অহন বাড়ী যা....। অই কানা একটা আইট্টা কলা দে.... অহন কলার মইদ্যে ঢুকাইয়া কয়েন খামু... হালার পাকিস্তানী কয়েন.... গোধূলীবেলার হট্টগোল শুনে দোকানের সামনে থমকে দাঁড়ায় মেঠো পথিক-একজন, দু’জন, প্রতিবেশী মহাজন; এদিক-ওদিক থেকে অর্ধচন্দ্রাকার ভীড়ে যোগ দেয় আরো কয়েকজন; যেন পিল পিল করে জমতে থাকে পিঁপীলিকার দল। ভীড়ের মধ্যে কেউ একজন বলে উঠে-’যেই ভাবে কয়েন খাইছে। এগুলা বাইর না করলেতো পাগলা মইরাই যাইব। ধর পাগলারে... হিয়াল কবিরাজের কাছে লইয়্যা যাই।’ অতঃপর কয়েকজন মিলে কয়েন পাগলারে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায় শিয়াল কবিরাজের কাছে।

২.
বলছিলাম শিয়াল কবিরাজের কথা। ৪৭-এর দেশ বিভাগের পর ভারতের শিয়ালদহ থেকে আসা মোমতাজ কবিরাজকে লোকজন ‘শিয়ালদহ কবিরাজ’ নামেই চিনত। কালের পরিক্রমায় সেদিনের শিয়ালদহ কবিরাজকে এখন লোকে ‘শিয়াল কবিরাজ’ নামেই ডাকে। কখনো কবিরাজ, কখনো ডাক্তার আবার কখনোবা হুজুর-সব নামেই লোকে চেনে তাঁকে। শিয়াল হাজমের নাম শুনলে তো শিশুরা ভয়ে বিছানা ভিজিয়ে ফেলে।

হাত-পা টিপে টিপে গফুর শিয়ার বাতের ব্যথা পরীক্ষা করছে মোমতাজ তথা শিয়াল কবিরাজ। গফুর মিয়ার পায়ে টিপ দেয়া মাত্রিই টু.. ওয়াও.. টু... ওয়াও.. বিচিত্র শব্দে কোঁকাতে থাকে সে।
- ঐ মিয়া, হগগল রোগীরে দেখছি ব্যাথা পাইলে ওয়াও... ওয়াও... আওয়াজ করে; আর তুমি মিয়া টু... ওয়াও... টু...ওয়াও... কনর ক্যান।’ শিয়াল কবিরাজ বিরক্ত হয়।
-’টুঁ.. ওয়াও... টুঁ.. ওয়াও.... করলে ভালা লাগে হুজুর।’
- ‘চুপ কর মিয়া... ভালা লাগে.... আর আওয়াজ পাইলা না.... টুঁ.... ওয়াও...টুঁ... ওয়াও...’ অতঃপর হোমিও চিকিৎসাকের মতো পুরাতন বাক্সটা ঘেঁটে ঘেঁটে কি একটা শিশি বের করে ঝাঁকি মারে-এক..দুই...তিন বার।
-‘খালি পেডে দিনে তিন বার। কাঁচা পেয়াজ, ইচা মাছ একদম হারাম, বুঝলা মিয়া। আর হ, তেতুল দেখলেতো তোমার আবার জিব্বা দিয়া লুল পড়ে... তেতুলও একদম নিষেদ... নেও হাঁ কর। বলেই কাঁচের শিশি থেকে তিন-চার ফোঁটা ঢেলে দেয় গফুর মিয়ার পান খাওয়া নোংরা দাঁতের ফাঁকে।
-’কিন্তু বাতের ব্যথাতো সারে না হুজুর। অমাবস্যা পূর্ণিমার চিরিক দেয়। আর সহ্য অয় না.... সারারাত ঘুম অয় না... আরও বালা অষুদ দ্যান হুজুর.... বালা অষুদ..., গফুর মিয়া ব্যথায় কোঁকাতে থাকে।

পাশে বসে থাকা মতি মিয়া, চাঁন মিয়াও বাতের ব্যথায় কোকাচ্ছে তখন। ‘হ, হুজুর কিছু একটা করেন। বাতের ব্যথায় বাঁচতে ইচ্ছা করে না... বাঁচতে ইচ্ছা করে না... আরো বালা অষুদ দ্যান... বালা অষুদ...., বলেই কাঁশতে থাকে মতি মিয়া। কাশির তালে তাল মিলিয়ে কাঁশতে থাকে চাঁন মিয়াও। দেখাদেখি একে একে ঘরের সবাই গলা ঝারা দেয়। একজন খ্যাঁক করেতো অন্যজনও খ্যাঁক-খ্যাঁক; আবার একজন খুক-খুক তো অন্যজনও খুক-খুক।

কাশির তাল না থামতেই গফুর মিয়া আবার বাতের ব্যথায় কোঁকাতে থাকে-‘হ-হুজুর... বালা একটা অষুদ দ্যান, বালা অষুদ...।’ কথা শেষ না হতেই ধমকে উঠে মোমতাজ। ‘নাফরমানি কইর না। আল্লাহ মানুষকে অসুখ দ্যান আবার তিনিই সাফায়াত দ্যান। অষুধতো ওছিলা মাত্র। সবুর কর মিয়ারা।’

অতঃপর চোখ বুজে মোমতাজ। কি জানে পড়তে থাকে বিড়বিড় করে। ফুঁ দেয় গফুর মিয়ার গায়ে, ফুঁ থেকে বাদ যায় না মতি মিয়া-চাঁন মিয়াও। আবার চোখ বুঝে মোমতাজ... দোয়া-দুরূদ পড়তে পড়তে তার সারা মুখ কঠোর হয়ে উঠে। ভাবে... বাতের ব্যথা আর গফুর মিয়ার কথায় যেতে বসেছে। যুদ্ধের পর সবাই কেমন চ্যাটাং চ্যাটাং কথা কয়। সবাই যেন্ স্বাধীন হইয়া গ্যাছে। গ্রামের অশিক্ষিত মূর্খ মানুষ এরা-মাথায় তুলতেও সময় লাগে না, আছড়ে ফেলতেও সময় লাগে না এদের। নাহ্, এতোদিনের নাম-যশ এভাবে হারাতে পারে না সে.... ভেবে ভেবে সারা মুখমন্ডল তার আরো কঠোর হয়ে উঠে। কী যেন একটা উপায়ও পেয়ে যায় সে..। হেসে উঠে আপন মনে...। ধীরে ধীরে চোখ খুলে শিয়াল কবিরাজ-‘আইজ যাও মিয়ারা। জোহরের আযানের সময় অইছে। রাইতে আবার আইস। হাজিরা জমামু। জনপ্রতি দুই ট্যাহা হুজুরের হাদিয়া আর দুই ট্যাহার মিষ্টি লইয়া আইস। দেহি তানার কাছে বাতের ব্যথার দাওয়াই আছে কীনা।’

উঠোনে কয়েক পাগলা ওয়াক.... ওয়াক... করে বমি করছে তখন। মোমতাজ ফিরেও তাকায়না তার দিকে। আনমনে বিড়বিড় করতে করতে পুকুর ঘাটের দিকে চলে যায় সে। ছোট ছোট সবুজ কচুরি পানায় ঢেকে আছে সারাটা পুকুর। অযু বানানোর সময় বার বার মুখে পানির ঝাপটা মারে মোমতাজ, শীতল জলে মাথা মসহ্ করে বার কতক; মুখমন্ডল ঠান্ডা হলেও দিল ঠান্ডা হয় না তাঁর। কেবলি কানে আসে গফুর মিয়ার কথাগুলো.... বালা অষুদ দ্যান.... বালা অষুদ... বাতের অষুদ.....

৩.
বিকাল থেকেই শিয়াল কবিরাজের বৈঠক ঘরে একে একে জমতে থাকে বাতের রোগী। শীতের রাত্রি। খড়-কুটো বিছিয়ে বসেছে সবাই। নানা কথায় সরগরম মোমতাজ মিয়ার বৈঠক ঘর। মোমতাজ মিয়ার থাদেমকে নিয়েই আগ্রহ সবার। বেশ কয়েকবার জ্বীন-পরীতে ধরেছিল তাঁকে।
-‘ভাই জ্বীন দেখতে ক্যামুন... তুমারে নাকি আছাড় মারছিল... ভয়ে নাকি তুমি পেশাব কইরা দিছিলা...’
-‘আরে হ... একদিন নিশি রাইতে পেশাব করনের লাইগা বাইরে গেলাম... মাত্র পেশাব অর্ধেক করছি... ও মাগো.... আসমানের দিকে চাইয়া দেহি এক ঠ্যাং আমাগো মাজারের বটগাছে আর এক ঠ্যাং মিয়াবাড়ীর তালগাছে... ইয়া লম্বা... আমারে কয়... বেয়াদব, তুই আমার সামনে পেশাব করলি... এমন জোরে বড় মারল... আমি সাথে সাথে অজ্ঞান মরার লাহান... তিন দিন... তিন রাইত পরে মোমতাজ হুজুরের পানি পড়া খাইয়া শেষে জ্বর নামল...’
-‘আর তোমার সুন্দর পোলাডারে যে পরী লইয়া গেল... হেই ঘটনাডা আবার কও তো মিয়া..’
-‘কি আর কমু ভাই... হেরেতো দুই দিন বাদে বাদেই পরী লইয়া যায় পরীস্থানে.... আবার দিয়াও যায়... হেরে ছাড়া পরী থাকবারই পারে না... এই তো গেল জুম্মাবার....
কথা শেষ না হতেই মোমতাজকে আসতে দেখে চুপ হয়ে যায় সবাই। বাদ এশা মোমতাজ মিয়া বৈঠকঘরে ঢুকে দেখে কত করে হলেও শ’খানেক মানুষ। এতো বাতের রোগী...। একেবারে মাসনের সারিতে বসে বসে ঝিমুচ্ছে গফুর মিয়া। গফুর মিয়াকে দেখেই কেন জানি মোমতাজের মেজাজ গরম হয়ে যায়। ভাবে... এই ব্যাটার জন্যই তাঁর নাম যশ আজ ডুবতে বসেছে। কুপি বাতির আলোতে মোমতাজের কঠিন চেহারাটা আচঁ করতে পারে না কেউ।
-‘ক্যামুন আছ গফুর মিয়া, কহন আইলা?’,ঢুকতে ঢুকতে জিজ্ঞ্যেস করে মোমতাজ।
-‘হগগলের আগে আইছি হুজুর। হেই বিকাল থাইক্যা বইয়া রইছি। বাতের ব্যথায় আর বইয়া থাকতে পারতাছি না হুজুর।’

আগে থেকেই মোমতাজ রেগে ছিল গফুর মিয়ার উপর। তার উপর বাতের ব্যথা কমে নাই শুনে মেজাজ গেল আরো বিগড়ে। তবু মাথা ঠান্ডা করে বলে মোমতাজ, ‘কি কও মিয়া! এক পাও কব্বরে গ্যাছ। বিকাল থাইক্যা বইয়া রইছ। আইজ আছর-মাগরের-এশা কোনডাই পড় নাই। হাজিরার মজলিশে বেনামাজীর স্থান নাই। তিনি তোমারে এইহানে দেখলে বেজার গোস্যা অইব। তুমি যাও মিয়া।’

সবাই তাকিয়ে থাকলো গফুর মিয়ার লজ্জিত মুখের দিকে। গফুর মিয়াও কী করবে বুঝতে পারে না। অবশেষে কাঁশতে কাঁশতে নিরবে বের হয়ে যায় সে। যেতে যেতে আড়চোখে দেখে তাঁর নিয়ে আসা মিষ্টিগুলো রাখা আছে টিনের পাত্রে, মাটির সানকীতে রাখা গোলাপ জল। আগরবাতিও ধরানো হয়েছে দু’টি।

ততক্ষনে জল চৌকিতে বসে হাজিরার নিয়ম কানুন বলতে শুরু করেছে মোমতাজ হুজুর... ‘কেউ কোন বেয়াদবী করবা না, রাও করবা না; তিনি বেয়াদবী পছন্দ করেন না। আলোও জ্বালাইবা না। মনে আছে মিয়ারা, হেইবার হুক্কার আগুন ধরাইছিল বইল্যা কি থাপ্পড় মারছিল কুতুবদ্দিনের গালে! সুতরাং সাবধান মিয়ারা... সাবধান...।’এরি মধ্যে অনাগত জ্বিনের ভয়ে কেউ একজন টু..ও..ও..ফ...ররর লম্বা শব্দে বায়ুগন্ধ ছাড়ল। গন্ধ পেয়েই ধমকে উঠল মোমতাজ-‘এই কামডা কেডা করলা মিয়া...যাও, ওযু কইরা আইস...‘দু’একজন মুখ টিপে হাসে আর তাকায় এদিক-ওদিক। খুঁজে পায়না কামডা কেডা করল-স্বীকারও করে না কেউ।

কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্ত কুপি বাতি নিবিয়ে দেয়া হলো। সুরা জ্বীন থেকে পড়তে শুরু করলো মোমতাজ। আরো কি সব দোয়া-দুরূদ পড়ছে সে। প্রায় আধা ঘন্টা হয়ে গেল। বৈঠকখানায় সুনসান নিরবতা। মশার কামড়েও নড়ছে না কেউ। দূরে ঝিঁ-ঝিঁ পোকাগুলোই ডাকছে কেবল। হঠাৎ টিনের চালে ধুম-ধুম শব্দ। কাঁপতে থাকে মোমতাজ হুজুর। চিকন ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলতে থাকে-‘আইয়েন হুজুর, আইয়েন...মিষ্টি নেন হুজুর, মিষ্টি...সবই আপনের খেদমতে হুজুর...।’কথা শেষ না হতেই মনে হলো মিষ্টির পাত্রটা ঝনঝন শব্দে মাটিতে পড়ে গেল; কে জানে কোনদিকে ছুড়ে মারল জ্বীন হুজুর। ভয়ে তটস্থ সবাই শুধু শুনতে পেল ফ্যাসফ্যাসে গলা... মেহেরবাহী কয়েন হুজুর... বাতের ব্যথার কষ্ট হুজুর, কষ্ট... বাতের ব্যথার দাওয়াই হুজুর... বাতের ব্যথার দাওয়াই... ভয়ে কম্পমান কেউ ধুপ করে পড়ল যেন। ততক্ষণে টিনের চালে আবার ধুম ধুম শব্দ; পরপর দুইবার। জ্বীন হুজুর চলে গেলেন বলেই মনে হলো।

ঘর্মাক্ত মোমতাজের মুখে গোলাপ জল ছিটাচ্ছে মক্তবের খাদেম। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে তাকায় মোমাতাজ। সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে তার উপর। কুপির আলোয় উৎসুক চোখগুলেঅ জানতে চায় বাতের ব্যথার দাওয়াই। ধীরে ধীরে উঠে বসে মোমতাজ। হাতের ইশারা পেয়ে সে যার জায়গায় বসে পড়ে আদবের সাথে।

মোমতাজ হুজুর বয়ান শুরু করে, ‘আল্লাহ মানুষকে অসুদ দ্যান আবার তিনিই শাফায়াত দ্যান। হুন মিয়ারা, মূলক-ই-জ্বীন, জ্বিনের বাদশা আমাগোরে মেহেরবানী কইরা বাতের ব্যথার দাওয়াই দিছেন... তানার এই দাওয়াই খাইয়া আরব মুলুকের সব বাতের রোগী বালা অইছে। মনযোগ দিয়া হুন মিয়ারা... প্রত্যেক দিন এক টুকরা কইরা শিয়ালের মাংস টানা চল্লিশ দিন নিয়ত কইরা যে ব্যক্তি খাইব তার বাতের ব্যথা সারা জীবনের লাইগ্যা সাইরা যাইব। যাও মিয়ারা শিয়াল ধইরা তানার নামে জবাই কর।’ মনে মনে ক্রুর হাসি হাসে শিয়াল কবিরাজ; ভাবে...গুজবের ওপর দাওয়াই নাই।

এতকাল ধরে গ্রামের নিরক্ষর মানুষগুলোকে ভালোবাবেই চিনে শিয়াল কবিরাজ। গুজবে প্রবল বিশ্বাস তাঁদের-কোন বাছ বিচার ছাড়াই সবধরনের সুবাসিত গুজব এরা সহজেই গলধরণ করে এবং হজমের আগেই গুজবের বহুরঙা সুভাস একে অপরের কানে-বাতাসের কানে ছেড়ে দেয়ার কাজটি বিনে পয়সাতেই করে এরা। গুজবে বিশ্বাস তাদের এতোই প্রবল যে-ভরদূপুরের কড়া আলোতেও ভূত-প্রেতের গুজবে কুঁকড়ে থাকে কেউ কেউ। যা হোক। রাতেই দলবেঁধে শিয়াল ধরতে বেরিয়ে পড়ে গ্রামের মানুষ। মানুষের তাড়া খেয়ে গ্রামে হুক্কা-হুয়া শব্দ বন্ধ হয়ে গেল সে রাতেই।

৪.
পরদিন সকাল হতেই দেখা গেল কেউ একজন বটতলায় বসে ভাঙা ইটের একখানা আধসেরি বাটখারা দিয়ে মেপে মেপে শিয়ালের মাংস বিক্রি করছে। সকালে যেটি বিকোচ্ছিল দু’টাকা টাকা সের দরে; দুপুর না গড়াতেই তা হয়ে গেল চার টাকা সের, শেষ বিকেলে সর্বশেষ পাঁচ টাকায় কেউ একজন কিনে নিয়ে গেল শিয়ারের লেজটিও। শিয়ালের মাংসের এতো চাহিদা দেখে ঝোঁপে-ঝাড়ে-গর্তে সর্বত্রই শিয়াল ধরার ফাঁদ পাতা হলো। শ্মশান কিংবা মুখুর্জদের ভূতরে বাড়ি-কোন ঝোঁপ-ঝাড়ই বাদ গেলনা। জোয়ান-বুড়ো, গ্রামের নেংটি পড়া ছেলে-সবাই নেমে পড়ল শিয়াল শিকারে। হাটে-ঘাটে-মাঠে সর্বত্রই সারাদিন ধরে আজ আলোচনা একটাই-শিয়াল! সবচেয়ে সরগরম গাঁয়ের চায়ের দোকানগুলো, বিকি-কিনিও বেশী আজ।
-‘হিয়ালের মাংস খাইতে ক্যামুন লাগে মিয়া?’, চা দোকানদারকে জিজ্ঞ্যেস করে কেউ একজন।
-‘একটু টক টক লাগে... তয় নুন দিয়া থাইলে বালাই লাগে....’
-‘খাওনের পর বাতের ব্যথা আছান অইছেনি মিয়া....’
-‘ঐ মিয়া একবেলা খাইলেই কী আছান অইব... তয় বুঝি না.... একবার মনে অয় ব্যাথা কম আবার মনে অয় একি রহম... দেহি কয়েকদিন খাই....’
-‘কয়েকদিন ক্যান... হুজুরে কইছে পুরা চল্লিশ দিন খাইতে....’
-‘বুঝলাম তো...কিন্তু এতো হিয়াল পামু কই...হিয়াল তো সব ভাগছে...’
এভাবেই শিয়াল বিষয়ক আলোচনা চলে দিনভর। সন্ধ্যা সমাগত প্রায়। গাঁয়ের দুষ্ট ছেলের দল ন্যাড়া ক্ষেতে তখনও ডাংগুলি শেয়ায় মেতে আছে। প্রচন্ড শীতের মধ্যেও ন্যাংটাই দৌড়াদৌরি করছে ‘দুধভাত খেলোয়াড়’ ন্যাংটা হিরু। সাধারণতঃ বয়সে যারা ছোট এবং ভালোভাবে খেলা পারে না তাদেরকে খেলায় নিতে চায় না কেউ। মাঝে-মধ্যে দলে নিলেও ‘দুধভাত খেলোয়াড়’ নামেই খেলে তাঁরা। খেলার নামে মূলত এরা বড়দের বল, ডাংগুলি, ইত্যাদি কুড়িয়ে আনার ফরমায়েশগুলো তামিল করে থাকে এবং এভাবে খেলার সুযোগ পেলেই খুশি থাকে তারা।

সন্ধ্যা নেমে এলেও ডাংগুলি খেলা চলছে তো চলছেই। কেউ একজন ডাংগুলিটা এতো জোরে মারল যে এটি গিয়ে পড়ল কালভার্টের পাশের বাংকারে। মাত্র মাস দেড়েক আগে বাংকারটি উড়িয়ে দিয়েছিল মুক্তি বাহিনী। ফরমায়েশ অনুযায়ী ডাংগুলি খোজার কাজটা দুধভাত খেলোয়াড় ঐ ন্যাংটা হিরুকেই করতে হচ্ছে। ডাংগুলিটা খুঁজতে গিয়ে সে নামল ধ্বসে যাওয়া বাংকারটার ভেতর। নেমেই ভেতরে কি যেন একটা নড়ে-চড়ে উঠতে দেখে ভাবল শিয়াল নিশ্চয়; গ্রামের মানুষের তাড়া খেয়ে এখানে লুকিয়ে আছে। ব্যস, চিৎকার চেচাঁমেচিতে নিমেষেই শত শত মানুষ জমে গেল ভর সন্ধ্যায়। চারিদিকে জাল দিয়ে বাংকারটাকে ঘিরে ধরল সবাই-যাতে শিয়াল কোনমতেই পালাতে না পারে। বাঁশ-লাঠি, লাঙলের ফলা যে যা পেল তা দিয়েই খোঁচাতে লাগল বাংকারের মধ্যে। কেউ একজন খোচাঁ মারতেই বাঁশের মাথায় রক্ত দেখা গেল, বুঝা গেল শিয়ালের রক্ত। শিয়ালের অবস্থান চিহ্নিত হতেই শুরু হলো অবিরাম খোঁচা; জোরে... আরো জোরে জোরে খোঁচা। ব্যস্, আর যায় কোথায়। এতোগুলো বাঁশ-লাঠির খোঁচায় হামাগুড়ি দিয়ে বের হয়ে আসতে লাগল ধূলি মাখা শিয়াল বাবাজি; জাল নিয়ে প্রস্তুত সবাই। অতঃপর সবার মাথায় যেন বাজ পড়ল। আরে, এটাতো শিয়াল নয়; জলজ্যান্ত একটা মানুষ। কেউ একজন মুখের ধুলোমাটি পরিষ্কার করতেই দেখা গেল হিটলারী গোঁফ-চিনতে কষ্ট হলো না কারো। আরে...এতো হারামজাদা হিটলার। সবাই চিৎকার করে উঠল-
‘হিটলার ধরা পড়ছে...হিটলার...। হিটলার ধরা পড়ছে... হিটলার...’। দুধভাত ন্যাংটা হিরুকে মাথায় নিয়ে তখন নাচখে সবাই। তার জন্যই ধরা পড়েছে হিটালার.... ট্যাংটা হিরু এখন গ্রামের সুপার হিলো।’ বিশেষ কিছু একটা যে করে ফেলেছে-আস্তে আস্তে বুঝতে পারে সে; হজমী খাওয়া কালো জিহবাটা বের করে তাই হিটলারের দিকে ভেংচি কাটে বারবার।

৫.
ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা প্রশান্ত গ্রাম শান্তিপুর। একদা গোধুলী বেলার গরুর খুরের শব্দ ছাপিয়ে কানে আসে বুটের আওয়াজ; হালকা আওয়াজ ক্রমেই ভারী হয়ে আসে। ধাবমান বুটের শব্দ চাপা পড়ে গুলির শব্দে-প্রকশ্পিত হয় চারিদিক। ভয় সন্ধ্যায় পাকিস্তানী সেনারা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাড়খার করে দেয় গেরস্তের উঠোন-বাড়ী। আগুনের লেলিহান শিখাগুলো বড় তালগাছটারও মাথা ছাড়িয়ে মিশে যায় সন্ধ্যা আকাশের আবীর রঙের সাথে। এলোপাথাড়ি গুলিতে মারা যায় কতজন কে জানে...।

এভাবেই মুক্তিযুদ্ধ শুরুর একমাস না যেতেই তিতাস গাঙ পাড়ের অচেনা পথ চিনিয়ে পাকসেনাদের গ্রামে নিয়ে আসে হিতলা মাতব্বর। স্কুল মাঠেই তাবুঁ খাঁটায় পাকিস্তানী সেনারা। রাত-বিরাতে ধরে নিয়ে যায় যুবতী মেয়েদের। পাকিস্তানী ক্যাম্পের খাবার জোগান দিতে গিয়ে সবার আগেই ফুরিয়ে যায় গম; ক্রমেই শূন্য হয়ে পড়ে গাঁয়ের গোয়ালগুলো। শান্তিবাহিনীর অত্যাচার আর রাতের গগনবিদারী মৃত্যু চিৎকারে শান্তিপুর গ্রামের শান্তি শেষ হয়ে যায়।

প্রায় প্রতিদিনই ক্যাম্পের সামনে চলতে থাকে মুসলমানীর পরীক্ষা-‘ডান্ডি দেখাও, ডান্ডি নাও।’- বলে লুঙ্গি ফাঁক করে বন্দুকের নল দিয়ে নেড়ে চেড়ে পুরুষের ডান্ডির মাথা তথা খৎনা পরীক্ষা চলতে থাকে। খৎনা থাকুন বা না থাকুক জনপ্রতি একশ টাকায় হিটলা রাজাকারের কাছ থেকে নিতে হতো ‘ডান্ডি কার্ড’ মানে ‘আইডেন্টিটি কার্ড’। একদিন বন্দুকের নল দিয়ে গোপনাঙ্গ নাড়াচাড়ার সময় বৃদ্ধ শসয়ের মিযা ভয়ে প্রসাব করে দিয়েছিল বলে সাথে সাথেই গুলি... ভুপেন পালের খৎনা নেই বলে গুলি... বন্দুকের নল দিয়ে পরীক্ষার সময় ভয়ে কুকঁড়ে ছোট হয়ে গিয়েছিল হারিশ মিয়ার গোপনাঙ্গ... এতো ছোট হয়ে গেল যে-খৎনা আছে না নাই বুঝা যাচ্ছিল না ঠিকমতো... অতৎপর গুলি... এভাবেই চলতে থাকে।

একবার রমেশ শীলকে ধরে আনে হিটলা রাজাকারের লোকজন। হাত জোর করে ভয়ে কাঁপতে থাকে সে।
-‘কইলাম তর মাইয়াডারে পাডাইটে... পাডাইলিনা ক্যান...‘ঠান্ডা গলায় বলে হিটলা মাতব্বর।
-‘হুজুর, আপনি ভগবান, আমার মাইয়াডা ধুদের বাচ্চা.. ক্ষমা কইরা দ্যান হুজুর... রক্ষে করেন...’
-‘আচ্ছা ক্ষমা কইরা দিমু.. এদিগে আয়.... আমার চুল-মুখ কইটা মানুষ বানাইয়া দে... ঐ কুদ্দুস, রমেশরে কয়ডা কলা দে... দুইডা বিস্কুটও দেইস সাথে...’
রমেশের চোখে মুখে তবু আতংক কাটে না। অনুগ্রহ পাবার আশায় হিটলা মাতব্বরের মাথার চুল অধিকতর যত্ন করে কাটতে থাকে সে কম্পিত হাতে, নির্দেশমতো মাতব্বরের গোফঁ দু’দিক থেকে চেষে ফেলে দেয়। সাফ-সুতোর শেষে আয়নায় নিজের চেহারা দেখে হিংস্র হাসি হাসে হিটলা মাতব্বর। সউল্লাসে বলে উঠে-‘অইছে, এইবার মন-মতন অইছে...যা, তোরে ক্ষমা কইরা দিলাম... তয় মাইয়াডারে পাডাইয়া দেইস রাইতে... নইলে তর ক্ষুর দিয়াই তরে মুসলমানী করামু...।

-‘একি ওস্তাদ, এতো দেখি পুরা হিটলারী মুছ। এক্কারে হিটলারের লাহান লাগতাছে আপনারে...’ হিটলা মাতব্বরের হিটলারী গোঁফ দেখে উল্লাসে ফাঁকা গুলি করতে থাকে কুদ্দুস-সাঙ্গপাঙ্গরাও যোগ দেয তাতে।

সেদিন থেকে হিটলারী গোঁফের হিটলা মাতব্বর অত্যাচার ও হিংস্রতায় ছাড়িয়ে যায় হিটলারকেও। রমেশ শীলের অবস্থা দেখে গ্রামে যে কয় ঘর হিন্দু ছিল একে একে রাতের আধাঁরে চোখের জলে ভিটে মাটি ভিজিয়ে চয়ে যেত লাগল ওপারে। দখল হতে লাগল পরিত্যক্ত বাড়ীঘরগুলো। ক্যাম্প আক্রমনের যুদ্ধরাতে কিশোর ছেলেটাকে ধরে নিয়ে যাবার সময় পা ধরে কত কান্নাকাটি করল জামিল মিয়া। কোন লাভ হয়নি; বরং হিটলা রাজাকার চিৎকার করে বলতে থাকে-‘আমার দিলে দয়অ নাই, মায়া নাই; আমি হিটলার, আমি হিটলার...’ অস্ত্রের মুখে ছেলেটাকে টেনে হিঁচরে নিয়ে যায় পাকিস্তানী ক্যাম্পের দিকে। অন্যদিকে প্রতিশোধের নেশায় একে একে গ্রাম ছাড়তে থাকে স্বজনহারা যুব-কিশোরের দল।

দেশ স্বাধীনের ক’দিন আগে কোথায় যেনো হাওয়া হয়ে যায় রাজাকার হিটলার। পই পই করে খুঁজেও তাঁর পাত্তা পায়নি কেউ। পালাবার পথ না পেয়ে মুক্তিযুদ্ধাদের ভয়ে এতদিন হয়তঃ বিধ্বস্ত বাংকারেই লুকিয়ে ছিল সে।

এতোদিন পরে হিটলার রাজাকার ধরা পড়ায় গ্রামের মানুষের আনন্দ যেনো আর ধরে না। হিটলারের কোমড়ে দড়ি বেধেঁ এরি মধ্যে সারা গাঁয়ে ঘুরানো হয়েছে কয়েকবার; মশাল হাতে পিছু পিছু ছেলে-বুড়োর দল; বড় ভাইয়ের কাঁধে ন্যাংটা হিরু-গ্রামের সুপার ‘হিরো’-এই শীতের রাতেও ন্যাংটা এখনো; হাততালি দিচ্ছে আর হিটলারকে ভেংচি কাটছে অবিরাম। একেবারে সবার সামনে নেচে গেয়ে যাচ্ছে বয়াতির গানের দল। গানের তালের সাথে মিল রেখে প্রত্যেক অন্তরা শেষে হিটলারের পাছায় বেসম্ভব লাথি মারছে কয়েন পাগলা। ইতোমধ্যেই হিটলারের গোঁফ চেষে ফেলা হয়েছে। হিটলারের ধরা পড়ার আনন্দ গাঁয়ের মানুষের কাছে ঈদের আনন্দের চেয়েও বেশী। সবচেয়ে বেশী আনন্দ কয়েন পাগলার। নয় মাসের যুদ্ধ; এই পর্যন্ত গুণে গুণে নয়টি কয়েন গিলিয়েছে হিটলার রাজাকারকে-‘খা... হারামজাদা হিটলার খা... এইডা ব্রিটিশের কয়েন..., এইডা হিটলারী আমলের কয়েন..., এইডা পাকিস্তানী কয়েন... খা...হারামজাদা খা... এই পাকিস্তানী কয়েনের লাইগ্যাই তো আমার মাছুম পোলাডারে ক্যাম্পে নিছস্...খা, হারামজাদা খা... এত্তদিনের জমানো সবগুলা কয়েন আইজ খাওয়ামু তোরে...খা... আরো খা....’

আকাশে তখন জিলহজ্বের দশমীর ভরা চাঁদ। কাল কুরবানীর ঈদ। গ্রামের কারো হাতেই নেই আজ গুরু বা বকরী কেনার টাকা; নেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত গ্রামের কারো গোয়ালে একটিও কুরবানীর পশু; শুধু জনতার হাতেই আছে একটি নরাধম পশু-রাজাকার হিটলার। তবু রাত পোহালেই কুরবানীর ঈদ। স্বাধীন দেশের প্রথম ঈদ; মুক্তির ঈদ-আনন্দ বেদনা আর পুনর্মিলনের ঈদ-রাজাকারমুক্ত দিনের স্বপ্নস্বাধীন ঈদ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শিশির বিন্দু আবার পড়লাম অনেক ভালো লাগলো
মৌরি হক দোলা আবার পড়লাম.... সত্যিই অসাধারণ! আবারো ভালো লাগল..... শুভকামনা....
Fahmida Bari Bipu দেরিতে অভিনন্দন। তবু জানিয়ে গেলাম। সম্ভবত এবারের দুই সংখ্যাতেই এমন অনাসৃষ্টি হয়েছে। শুভেচ্ছা জানবেন।
ধন্যবাদ প্রিয় লেখিকা।
Jamal Uddin Ahmed অনেক অভিনন্দন।
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
মিলন বনিক অভিনন্দন ও শুভকামনা......
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো লাগেনি ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
সুমন আফ্রী অভিনন্দন... :)
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
Farhana Shormin অভিনন্দন আপনাকে।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
মৌরি হক দোলা অভিনন্দন!
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ওয়াহিদ মামুন লাভলু অনেক অভিনন্দন!
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ মিতা।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
নাসরিন চৌধুরী অনেক অনেক অভিনন্দন রইল
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ আপনাকে। শুভরাত্রি।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

০৬ ডিসেম্বর - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ৭ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৩৫

বিচারক স্কোরঃ ৩.১৫ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.২ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪