কপালে আরো দুর্ভোগ আছে

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

Abu Umar Saifullah
  • ১৮
  • 0
  • ১৭
শিশির ভেজা সকাল। আবদুর রহিম মুন্সী প্রতিদিনকার নিয়মে মসজিদে
ফজরের নামায পড়ে নুরু মিঞার দোকানে টুন্ডুলের গরম রুটি ও
ডালভাজা খেতে অপেক্ষা করছিল। ঠিক সেই সময় তার সামনে দিয়ে
কাঁধে একটি জাল ও কোমরে সাথে বাঁধা পুলটি নিয়ে হেটে যাচ্ছিল
গোপাল।
জোরে একটি কাঁশি দিয়ে তিনি গোপালকে জিঞ্জেস করলেন ঃ গোপাল
আজ সকাল সকাল কোন দিকে যাওয়া হচ্ছে?
উত্তরে গোপাল বলল ঃ মশায়! এই জালটিই আমার একমাত্র পূঁজি।
সংসারে আয় রোজগার এই জালটির উপর নির্ভর করে , তাতো আপনি
জানেন। আজ হাঙ্গরের দক্ষিণ দিকে যাচ্ছি।
- ঠিক আছে ! যাও। ভাল মাছ ধরা পড়লে দিয়ে যেও। পয়সা নগদে
দিয়ে দেব।
- আচ্ছা! বলে গোপাল যেতে লাগল।
হাঙ্গরের যে ভাব দেখা যায়, আকাশের সাথে তার তেমন বনিবনা হচ্ছে
না। গোপাল তবুও সেই খেপের পর খেপ মেরে যাচ্ছে। কয়েকটি পূঁটি ও
একটি কই মাছ ছাড়া তার জালে এখন পযনর্ত্দ বিক্রিমত মাছ ধরা পড়েনি।
গভীর বিষন্নতার মাঝে ক্ল্যানত্দির ছায়া তাকে ধীরে ধীরে ঘ্রাস করতেছে।
তবুও তার চেষ্টার কমতি হচ্ছে না। মনের জোরটা আর স্থায়ী রাখতে
পারছেনা। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলছে। দক্ষিনা হাওয়ায় বার বার
বৃষ্টির আবাস দিয়ে যাচ্ছে। রাখাল কৃষক সবায় আকাশের এই তান্ডব
মেঘের দৌড়াদোড়ি দেখতে পেয়ে, তারাও বাড়ী ফিরতে দৌড়ের
প্রতিযোগিতা শরু করল। হাঙরের কিনারায় ছোট ছোট পানসীর গুলোর
নোঙর পেলে মাঝিরা ঘরে ফিরে গেল। গোপাল ফিরে গেলে আজ তার
পরিবার না খেয়ে থাকতে হবে। নড়বড়ে মনকে আরো দৃঢ় করে জালটি
হাঙ্গরে ছাড়ল। সকল ভাবনা প্রহর কেটে হঠাৎ জালের রশি টানভারে মনে
হল। খুব সর্তকতার সাথে যখন জালটি উপরে উঠালো, কাদা ময়লা গুলো
ধুয়ে দেখল বড় কোন মাছ নেই। একটি মরা মানুষের মাথার খুলি। তা
দেখে গোপাল যতটা বিস্মিত হয়নি তার চেয়ে অনেক বেশি বিস্মিত হল
খুলিটার কপালে লেখা রয়েছে, "কপালে আরো দূর্ভোগ আছে"। গোপাল
খুব জোরে জোরে হাসল। নিরবতার বেঁদ ছিন্ন করে তার হাসি তাকে
ক্লানত্দি অবছায়া থেকে কিছুক্ষনের জন্য মুক্তি করে দিল। খুলিটা নিয়ে সে
বাড়ী ফিরে আসল। গোপালের বউ রত্না আগ্রহ নিয়ে স্বামীর নিকটে
আসতে দেখল তার হাতে মাছের পরিবর্তে মরা মানুষের মাথার খুলি।
হাসি মুখটি ঘোমরা করে আর কিছুই গোপালের সামনে বলল না। রত্না
নিজের কাজে আবার ব্যসত্দ হয়ে পড়ল। কিছুক্ষন পর নিজেই নিজের সাথে
জ্ঞ্যনর জ্যনর সুরে বলল ঃ আর কত কষ্ট করব? কুলক্ষনে সংসারটা
বসতে চলেছে। আজ আবার মরা মানুষের মাথা খুলি নিয়ে বাড়ী ফিরল।
তাদের মেয়ে আদুরী ও কুসুম স্কুল থেকে ফিরে এসে বাবার হাতে খুলিটা
দেখল । ভয় পেয়ে দৌড়ে মায়ের কাছে গেল। গোপাল খুলিটাকে একটি
বাঁশের সম্মুখীন ভাগে ঝুলিয়ে উঠানের শাঝ বরাবর বাঁশটি মাটি কুপে
খাড়া করে রাখল।
চৌকাঠে বসে খুলিটার দিকে তাকিয়ে বলল ঃ দুভের্াগের আর কি বাকী
আছে আজ দেখেই তবে উঠব। বিকেলের দিকে আকাশটা স্বচ্ছ দেখা
দিতে রত্না, গোপালকে জাল নিয়ে বের হতে অনুরোধ করল। অনেক
বুঝিয়ে সে তাকে বললঃ এইটি আমরা দেখে রাখব। আমাদের উপর
বিশ্বাসটুকু রাখতে পার। গোপাল জাল নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পর রত্না
খুলিটাকে নিচে নামিয়ে কুসুমকে বলল ঃ একটি দ্যা নিয়ে আয়। উনি
এই খুলিটা নিয়ে বসে থাকলে তো আর জাল ফেলতে পারবে না। আর
জাল না ফেললে মাছ পাবে কোথায় ? আমরা কি খেয়ে থাকব?। কুসুম
ও আদুরী দাড়ীয়ে দাড়ীয়ৈ মায়ের হাতে খুলি ভাঙ্গা দেখে অনেক আনন্দ
করল। তাদের আনন্দ দেখে রত্নাও মৃদু হেসে বলল ঃ তোদের বাবা এসে
কিছু বললে,এভাবেই তোরা হাসতে থাকবি। তোদের আনন্দ দেখে
রাগের পরিবর্তে উনি ও হেসে উঠবেন।
গোপালের জালে বিকেলে বেশ মাছ ধরা পড়ল। আবদুর রহিম মুন্সীর
বাড়ীতে মাছ নিয়ে আসল। মুন্সী মাছগুলো দেখে অত্যানত্দ খুশী চিত্তে
একশতটাকার একটি নোট বের করে গোপালকে দিলেন। গোপাল ভেজা
হাতে টাকাটা নিয়ে মুন্সীকে কি যেন বলতে ইসত্দত করল।
মুন্সী বুঝতে পেরে বলল , কম হয়েছে নাকি গোপাল? গোপাল বলল ঃ
না! মশায়। মুন্সী বলল ঃ তবে কি? গোপাল মাথার খুলির পুরো গল্পটা
তার নিকট বলল। মুন্সী বলল যা ঐটি নিয়ে আয়।
খুলির জন্য আরো একশ টাকা দেব। আনন্দ আহ্বলাদে ভেজা জালটি
পিঠে রেখে দ্রুত বাড়ী ফিরল গোপাল। তখন ছিল সন্ধ্যা কাছাকাছি সময়।
গোপালে সব আনন্দ বেদনায় পৃষ্ট হয়ে মাথার খুলির ছিন্ন বিচ্ছিন্ন
অংশগুলো চোখে ধরা পড়ল। জাল রেখে উঠানে সে বসে পড়ল। আঁধার
নেমে আসছে , তার পিছন হতে জাল নিয়ে রত্না বাঁশের উপর বিছিয়ে
দিচ্ছে। আদুরী ও কুসুম বাবার দু'পাশে বসে পড়ল। গোপাল খুলির ভাঙ্গা
অংশ গুলো মিলিয়ে মিলিয়ে জোড়া দেয়ার চেষ্টা করল। তবুও লেখার
কোন অংশ বিশেষ পেল না। পুরাপুরি অন্ধকার আর কিছুই দেখা যাচ্ছে
না । গোপাল একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ঃ কি আশ্চার্য! লেখাটি যথার্থ
হতে খুলির শেষটুকু পর্যনত্দ রত্না হাত থেকে মুক্তি পেল না। তবুও জনপদ
মুক্তি খুঁজে মু্িক্তর চেতনা নিয়ে রাজ পথের মিছিলে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
পাঁচ হাজার বেশ ভাল লাগল গল্পটা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
ওয়াছিম পাঠ করে ভালো বোধ করেছি.....................
অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে
সেলিনা ইসলাম কাব্যকথার গভীরতা অসাধারণ... কাহীনির শুরুটা স্বাভাবিকভাবে হলেও শেষে যেদিকে মোড় নিয়েছেন তাতে দক্ষতার নিখুঁত পরিচয় মেলে ... চরিত্রগুলো নক্ষত্রের মত জ্বলজ্বল করছে । খুব সুন্দর উপস্থাপনা । শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
আপু অনেক ভালবাসা থাকলো আপনার প্রতি
আহমেদ সাবের ভেবেছিলাম, গোপালের কষ্টের জীবনের কাহিনী আসবে গল্পে। কিন্তু এলো মাথার খুলি। গোপালের একটা এক শ টাকার নোট পাওয়ার আশা ভঙ্গের বেদনা। যা হোক, গল্পটা ভালই লেগেছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভালো লাগলো| আরো ভালো লেখা পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম| শুভ কামনা|
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য
শেখ একেএম জাকারিয়া ভাল লাগল ভাই আপনার গল্পটি।শুভকামনা।
অনেক ধন্যবাদ
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি Valo prochesta .....asha kori aro valo lekha pabo.....dhonnobad saiful.........3
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার সু মতামতের জন্য
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ..............চমৎকার গল্পটা। আর একটু ঘসামাজা করলে আরো সুন্দর হত।
সালাম আপনাকে আপনার পরামর্শ মনে থাকবে
অজয় ভালো লাগলো .................
ধন্যবাদ আপনাকে

০৯ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪