তখন রাত ১টার একটু বেশি বাজে। মেয়েটা কেবল ছটফট করছে। ঘুম যেন ছুটি নিয়েছে আগেই। হয়ত এসব গত দু'দিন প্রিয়তমর সাথে যোগাযোগ না হওয়ার ফল। তার মনে হল- প্রতিবারের নিয়মে এবারও তাকেই "Sorry" বলতে হবে। কারণ কথা বলার খুব প্রয়োজন এখন। একবার ফেসবুকে ঢুঁ মারলেও তাকে পাওয়া গেল না। বোধ হয় ঘুমিয়ে পড়েছে নয়ত রাত জেগে পড়ছে। "ঘুমিয়ে পড়েছো?" মেসেজটা ছেলেটার মুঠোফোনে পাঠিয়ে দ্বিধা দূর করতে চাইলো সে। মিনিটের মধ্যেই ছেলেটার ফোন-
মেয়ে: ঘুমিয়ে পড়েছো? ছেলে: না তন্দ্রায় ছিলাম। ফোনের কাঁপুনিতে কেটে গেল। মেয়ে: ভালো আছো? ছেলে: নেই বললেই চলে। মেয়ে: গলাটা ভাঙা-ভাঙা লাগছে যে... ছেলে: হালকা ঠাণ্ডা লেগেছে আর কি। মেয়ে: কাল বিকেলে সময় আছে? ছেলে: হঠাৎ? মেয়ে: একটু দেখা করা খুব দরকার। ছেলে: সকালে করি তবে? মেয়ে: বিকেলটা আমাকে দিলে কি বড় কোন সমস্যা হবে? ছেলে: না।চলে এসো তবে ৪টা নাগাদ পার্কে। মেয়ে: আচ্ছা ঘুমাও তাহলে এখন।আর জেগে থেকো না। ছেলে: ইচ্ছে করছে না। মেয়ে: Okay. Bye. ছেলে: Bye
যথারীতি পরের দিন পার্কে দেখা হল দু' জনের। কিন্তু "কি দরকার" তা জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেল ছেলেটি।দুজনে কিছুক্ষণ ঘুরাফেরা করলো। জায়গা গুলো নতুন নয়, বরং অনেক পুরাতন। আজ ছেলেটি অনেকটাই নিশ্চুপ। মেয়েটি বলছে, ছেলেটি কেবল তার প্রেক্ষিতে কথা বলে যাচ্ছে। তারপর একটা সময় সন্ধ্যা আকাশে ভর করলো।মেয়েটি বলল,"একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্যে"।"কি সেটা", আগ্রহ নিয়ে বলল ছেলেটি।
মেয়েটি তারপর ছেলেটিকে নিয়ে গেল মেয়েটির বাড়ির ছাদে। ছাদের সিঁড়ি ঘরের কাছে যেতেই হানা দিল "লোডশেডিং"!! অত:পর অন্ধকার সে ঘরে জ্বেলে উঠলো সাতটি ছোট ছোট বাল্ব। জ্বলেই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে নিভে গেল। আগের থেকে বেশি কিছু বাল্ব আবার জ্বলে উঠলো। সাথে জ্বলে উঠলো একটি নাম।ঠিক তার নিচে লেখা "Happy 7th Love Anniversary". ছেলেটির আর বুঝতে বাকি রইল না কেন এত আয়োজন। তার সেই প্রেমিকার মৃত্যুর পর আবার যেন দপ করে জ্বলে উঠল পুরোনো সব স্মৃতি। আজ তার সেই হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার সাত বছর পূর্তি। সময়টা চলে গেছে। চলে গেছে সেই প্রেমিকাটিও।তবে সেই অতীতকে বর্তমানে নিয়ে এসেছে এই মেয়েটি। ছেলেটির বর্তমান হৃদয়সঙ্গিনী। প্রায় ৯/১০ মাস আগে, পরিচয়ের সাতদিন পরে এই দিনটির কথা বলেছিল মেয়েটিকে। বলেছিল কিছু স্মৃতিমাখা জায়গার নাম।যেখানে আজ তারা সারাদিন ঘুরে বেড়িয়েছে। নিজের ভালোবাসার মানুষকেও এভাবে অতীতে ফেরানো যায় ভাবতেই পারে নি সে। ভাবতে পেরেই চোখের কোণে এক টুকরো কুয়াশা ভর করলো। অশ্রুর কুয়াশা। ভালোবাসার অশ্রু।বুঝলো এই মেয়েটি তার জন্যে সব ত্যাগ করতে পারে। কেবল মনের ভালোবাসা বাদে।
ছেলে: কেন ফিরিয়ে নিয়ে গেলে অতীতে? মেয়ে: এই অতীতকে ভোলা যায়? মরে গিয়েও বেঁচে থাকা প্রেমকে? যা তোমার মনে আমার থেকেও বেশি জায়গা নিয়ে রেখেছে। ছেলে: এত দিন শুন্যতা ছিল।আজ শুন্যতা যে পূর্ণতা পেল।এতটা ভালোবাসো বুঝতে পারি নি আগে। তুমিই তো আমার হারিয়ে যাওয়া সেই। ছেলেটি ভাবেও নি প্রেমিকারা ভালোবাসা ভাগাভাগি করতে পারে। এবার প্রমাণ পেল, হুম পারে। তীব্র ভালোবাসা সব করতে পারে। অসম্ভবকেও সম্ভব।
ফুটনোট: ভালোবাসাকে ভালোবাসার সুখের কারণে ছেড়ে দিলে তা হারিয়ে যায় না। বরং সুদে-আসলে ফিরে আসে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মাইনুল ইসলাম আলিফ
সুন্দর গল্প।শিক্ষণীয় ।হতাশ হতে নেই।শুভ কামনা আর ভোট রইল।আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।