চোখ বন্ধ করলে আমার সব সময় কেবল নিলা আশরাফ ভাই আর মাসুদের ছবিটাই ভেসে ওঠে।মেয়েটা এখন ও আমার দরজা বন্ধ করেই আছে।বড় অভিমানী মেয়ে আমার।কিভাবে দেব ওর প্রশ্নের জবাব? সেদিন এর ই কথা আমি তখন কেবল ভার্সিসিটি তে ভর্তি হয়েছি।আমার খালাতো ভাই এর বন্ধু আশরাফ ভাই ভার্সিটি তে আমার একমাত্র পরিচিত জন।উনিই আমাকে ভার্সিটির সব কাজ গুলো করে দিতেন।মনে হত খুব বড় মনের মানুষ।তবে আমার খালাতো ভাই কেন জানি উনার থেকে দূরে থাকতে বলত।আমি সব সময় কিছু না কিছু করতে চাইতাম সমাজের জন্য।একটা সমাজ সেবা মূলক কাজে যোগ দিলাম।প্রতিদিন ৩০ জন অসহায় শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়।ওখানে আমার সহযোগী যে ছেলেটা ছিল তার নাম মাসুদ।ও আমার সাথেই পড়ে।প্রথম সেমিস্টার এর পরীক্ষা চলে এসেছে প্রায়।আসরাফ ভাইয়ের কল। কিরে কেমন আছিস? জি ভাইয়া ভালো।আপনি? হা ভালো।তোরে যে কারণে ফোন দিলাম।আমার বাসা থেকে বিয়ে ঠিক করছে।আমি চাই তুই আসবি। ভাইয়া আমার পরীক্ষা আসতে পারব না।তবে আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল। ভাইয়া রাগ করেই লাইন টা কেটে দিল।পরপর ই মাসুদের কল তুমি একটু বাইরে আসবা কথা ছিল। কোথায় যেতে হবে? বটতলার মোড়।যেখানে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম। বাপরে কিছু সামথিং সামথিং মনে হচ্ছে।ব্যাপার কি বলোতো? সেটা আসলেই বুঝবা আসোতো আগে। আচ্ছা ১০ মিনিট আপেক্ষা কর। বট তলায় যেতেই চোখ ছানা বড়া।মাসুদ দাঁড়িয়ে আছে পাঞ্জাবি পরে।হাতে একটা সাইনবোর্ড ভালোবাসি।আমি কাছে যেতেই সাইনবোর্ড টা আমার হাতে দিয়ে বলল তুমি যদি আমাকে ভালোবাসো তবে এটা আমার হাতে দিবা নাহলে ফেলে চলে যাবা।আমি অবাক! বলে কি ছেলে।তবে মাসুদ কে আমার খুব ভাল লাগতো,তাই না করলাম না।তারপর থেকে দিন চলা।দেখতে দেখতে দিন চলে যায়।ভার্সিটি লাইফ শেষ।মাসুদ আমি দুজন ই চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছি।চাকরিটা হলেই আমাদের বিয়ে।আমাদের সপ্ন পূরণ একটা সংসার ফুটফুটে একটা মেয়ে।ভার্সিটির পাশেই ছোট একটা বাসা নিয়ে আমি একাই থাকি।মাসুদ মেসেজ দিলো "দেখা হবে বর হয়ে। সপ্ন এবার পূরণ হবে।নিশ্চয় মাসুদের চাকরি হয়ে গেছে।খুব খুশি খুশি লাগলো। হটাৎ দরজায় কড়া নড়ল।দরজা খুলে দেখি একটা মেয়ে।বলল আমি নিলা।আমাকে একটু সাহায্য করুন।মেয়েটি প্রসব যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।মানবতার খাতিরে ঘরে নিয়ে নিলাম।আমি এ ব্যাপার এ কিছুই জানিনা তবুও সাহায্য করলাম।মেয়েটির একটা মেয়ে হল।মেয়েটির অবস্থা করুণ।মনে হয় বাঁচবে না।আমাকে কাছে ডেকে বলল।মেয়েটির বাবা আশরাফ ভাই।উনি আমাকে চেনে।মেয়েকে যেন আমি ডাক্তার বানাই।তারপর ইহকাল ত্যাগ করলেন।আমি এই সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চা আর মৃত মেয়েটিকে নিয়ে কি করব? সাথে সাথে আশরাফ ভাইকে কল দিলাম। হ্যালো হ্যা বলো।কেমন আছো? ভাইয়া নিলা কে? মানে?(উনি যেন আকাশ থেকে পড়লেন) আমি বললাম নিলা কে? তুমি কি ভাবে জানো? জানি এভাবে যে নিলার লাশ আমার কাছে আর তার বাচ্চা ও আমার কাছে আর আপনি বাচ্চার বাপ।এখন আমি কি করব? একটা কাজ কর বাচ্চাটা ফেলে আসো আর একটা ঠিকানা দিচ্ছি ওটাতে লাশ পাঠিয়ে দাও।আমি তোমার ভাবি আর বাবুকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি আর কল দিও না। বলেই লাইন কেটে দিল।আর একটা ঠিকানা টেক্সট করে দিল।আমি আবার কল দিয়ে দেখি নাম্বার বন্ধ। কি করব ভেবে না পেয়ে ছোট বাচ্চা আর লাশ নিয়ে ঠিকানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।ওখানে গিয়ে দেখি নিলার মা বাবা কেউ বেচে নেই একটা মাত্র সৎভাই।লাশ দাফনের ব্যবস্থা করল কিন্তু তারা অবিবাহিত মেয়ের বাচ্চার ভার নিতে চাইলো না।কোন উপায় না দেখে বাচ্চাসমেত ফেরত আসলাম।রাস্তায় নিলার বান্ধবি আমাকে দেখে একটা ডাইরি দিয়ে বলেছিল এটা নিলার।আজ আপনাকে দিলাম।বাসায় এসে বাচ্চা মেয়েটা জড়িয়ে ধরলাম।ভাবলাম আজ থেকে ও আমার সন্তান।আমার নমিতা।দুদিন পর মাসুদ আসলো আমার কোলে বাচ্চা দেখে বলল কার সন্তান?তারপর মাসুদ যে আমার বাসা থেকে বের হয়ে গেল আর কোন দিন যোগাযোগ করেনি।মা বাবা ও আমাকে মাসুদের মত ভুল বুঝে দূরে চলে গেল।সব সপ্ন ভেংগে গিয়েছিল। কিন্তু নতুন সপ্ন ছিল নমিতা। আজ ও কি আমাকে ভুল বুঝলো।চারদিকে অন্ধকার, নমিতার দরজা এখন ও বন্ধ।ও কি আমাকে ভুল বুঝলো।দরজার সামনে গিয়ে ডাকলাম মা নমিতা দরজা খোল মা।সারাদিন কিছু খাসনি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
দারুণ একটা কাহিনী তুলে ধরেছেন, অসাধারণ লেগেছে। যে মেয়েটির জন্য এ গল্পের নায়িকাকে বিয়ে করে নায়ক/ মাসুদও শেষে ছেড়ে গেছে, কিংবা নায়িকার বাচ্চা মনে করে নায়ক ভুল বুঝলো সেই নমিতাও একদিন আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে। তবে আরও একটু খোলা যেত, যেমন- নীলার বান্ধবি যে ডাইরি দিয়েছিল সেটাতে কি লেখা ছিল কিংবা কেন দিয়েছে? যদি বলেন- নমিতার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য, তাহলে নমিতার কি স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন কি না? যদি বলেন ডাক্তার বানাতে বলেছে, তবে হয়েছে কি না? কেন নমিতা আপনাকেও একদিন ভুলে গেছে? পাঠক হিসেবে এ কথা গুলো বারে বারে দমক খায় এবং আফসোস রয়ে যায়..... শুভকামনা রইল
সেলিনা ইসলাম
দারুণ একটা পটভূমি। খুব ভালো লাগলো। তবে মনে হল খুব দ্রুত গল্পটা বলা হয়েছে। যদি আরও একটু গুছিয়ে লেখা যেত তাহলে সেরা একটা গল্প হত। গল্প লেখার সময় গল্পের মাঝে পরিবেশ পরিস্থিতির বর্ননা,কিছু উপমা ইত্যাদি দিলে কাহিনী জীবন্ত হয়ে পাঠকের কাছে ধরা দেয়। লেখা শেষ করে লেখক যদি কয়েকবার পড়েন তাহলে দেখবেন নিজেই অনেক কিছু ভুল ধরতে পারবেন। আরও ভালো ভালো গল্প পড়ার প্রত্যাশায় শুভকামনা রইল।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।