হাহাহাহাহাহাহা মেয়েটি খল খল করে হেসে উঠলো, একটা সফেদ সুন্দর কোমল পদ্ম থেকে যেন বিষাক্ত কুৎসিত সাপ বেরিয়ে এলো আতিককে ছোবল দেয়ার জন্য, নাহ শেষ পর্যন্ত ছোবল দিলো না, আস্তে করে সরে গেলো রোহিণী, এত সুন্দর মেয়ে কি করে এমন হয় আতিকের চোখে মুখে ভয়, বিস্ময়। চুপ করে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আতিকের, ওকে হয়ত আজ রাতেই মেরে ফেলা হবে, কিংবা আরও দুই একদিন বাঁচিয়ে রাখবে; কি আসে যায়! ভালোবাসা ওকে এই উপহার দিয়েছে, দিয়েছে ধংস, দিয়েছে অনিশ্চিত মৃত্যু, দিয়েছে অপহরণ, হ্যাঁ অপহরন করা হয়েছে আতিককে এবং এই নিষ্ঠুর খেলার পরিকল্পনা সার্থক হয়েছে ভালোবাসা নামক প্রতারনায়।
আতিকের বাবা Garments ব্যাবসায়ী, কি জানি কিসে তার এত শত্রু হল যে কারনে আজ তার একমাত্র ছেলে আতিকের কিডন্যাপ । আর ওদের কথায় এটা ক্লিয়ার যে আতিককে কিছুতেই ওরা জীবিত ছাড়বেনা।
আতিককে কিডন্যাপ করার ঘটনাটা ও বেশ কমন, ছোট বাচ্চা ছেলেকে যেমন বুদ্ধ বানায় আতিককে ও তেমন বানিয়েছে, এই খবলিয়ে হাসা মেয়েটিই ওকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে বোকা বানিয়েছে দিনের পর দিন। প্রায় চার মাসের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল ওদের যেটা এখন এসে আতিক বুঝতে পারলো আসলে ওটা ছিল ষড়যন্ত্র।
গতকাল যখন ওকে কিডন্যাপ করা হল তখনো ও ভাবছিল রোহিণী ওকে ভীষণ ভালোবাসে, যখন রোহিণী ওকে ওর জন্মদিনের কথা বলে ওর বাসায় নেয়ার নাম করে এই বদ্ধ গুমোট অন্ধকার ঘরে নিয়ে এলো ও তখনো ভেবেছিল রোহিণী নিশ্চয়ই কোন মজা করছে। কি অদ্ভুত!!!
রোহিণী একটা অপরাধী দলের সাথে যুক্ত, এই ভালোবাসা এই যে কতদিন হাত ধরে পাশাপাশি চলা এটা শুধুই ছিল ওর কাজের অংশ।
- কি এত ভাবছঃ? বলে ওঠে রোহিণী।
গতকাল সন্ধ্যায় সেই যে আতিকের হাত ওরা আড়মোড়া করে বেঁধেছে আর খোলেনি, হাত দুটো যেন অবশ হয়ে গেছে, প্রচণ্ড ক্ষুধায় চোখে অন্ধকার দেখছে, যার কিচুক্ষন পর মৃত্যু নিশ্চিত তার আবার ক্ষুধা কি।
- তোমার কি একটু ও খারাপ লাগছেনা রোহিণী? বলে আতিক
- হাহাহাহা শব্দ করে হেসে ওঠে রোহিণী, খারাপ লাগবে কেন?
- তুমি কি এতদিনে আমায় একটুও ভালবাসনাই?
- সে তো তুমি দেখতেই পাচ্ছ,
- তারপর ও তুমি বল
- না, ভালবাসিনাই। ওটা কেবল আমার কাজ ছিল.
- আমাকে হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের কাজ?
- সেটাই।
- তোমার দলের আর লোক কই আমাকে মেরে ফেলার জন্য দা বটি পিস্তল আনতে গেছে?
- হত্যা করতে এত কিছু লাগেনা, মুখে বালিশ চাপা দিলেই হয়।
- তো আমাকে মুখে বালিশ চেপেই মারা হবে,
- হয়ত
- সেটা কখন?
- আজ রাতেই।
- এখুনি তো সেটা করা যায়, তুমিই না হয় আমার মুখে বালিস চেপে ধর, আমি আমার ভালোবাসার হাতেই মরে যাই।
- এই সব আবেগ আমায় হৃদয় স্পর্শ করবেনা আতিক, আমাদের দুজন লোক তোমার বাবার কাছে থেকে তোমার মুক্তির জন্য ২ কোটি টাকা আনতে গেছে ওটা হাতে পেয়ে তবে তোমায় মারা হবে। মৃত্যুর জন্য একটু অপেক্ষা তোমায় করতেই হবে।
- তোমার কি একটুও খারাপ লাগবে না? আবারো জানতে চাইল আতিক।
- লাগবে না। বললাম তো লাগবেনা।
-
রাত ২ টা, আতিক আর রোহিণী তুরাগ নদীর তীরে বসে আছে, রোহিণীর দলের সবাই মারা গেছে পুলিশের হাতে গুলি খেয়ে, আতিকের বাবা কীভাবে কীভাবে যেন এখানে চলে এসেছে পুলিশ নিয়ে যেখানে আতিককে মেরে ওরা ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল। রোহিণীকে আতিকের অনুরোধেই মেরে ফেলা হয়নি, শত হলেও ছিল আতিকের নিখাদ ভালোবাসা। ভালোবাসা ব্যাপারটা সব কিছুর উপরে। এর কোন ব্যাখ্যা নেই একে ছোঁয়া যায় না ধরা যায় না দেখা যায় না কিন্তু পুরো জীবনটা যেন এর অধীন করে দেয় মানুষকে। এত কিছুর পর ও আতিক রোহিণীর প্রতি তীব্র টান অনুভব করে সাথে অনেকখানি ঘৃণাও, কেননা ভালোবাসা আছে বলেই আছে ঘৃণা, আছে কষ্ট জ্বালা যন্ত্রণা অনুতাপ, আচ্ছা রোহিণী কি কখনো অনুতপ্ত হবে! ভাবে আতিক। হয়ত হবে হয়ত হবেনা, কি আসে যায়, সব মানুষ তো আর একরকম হয়না, রোহিণী থাকুক ওর মত ওর হয়ত সাজা হবে জেল হবে এই জীবনে হয়ত আতিকের সাথে আর দেখা হবেনা, তবু ওর জন্য আতিকের ভালোবাসা থাকবে, ভালোবাসা সহসাই কমিয়ে ফেলা যায় না।
২০ জুন - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
৯ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪