প্রথম বন্ধু

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

অজানা আমি KHURSHED ALAM
  • ২৪
  • 0
  • ৪১
রাফি এই রাফি জলদি নিচে আয়।
না আমি যাব না। তোরা যা।
কোন কথা বলা চলবে না। আসতে বলছি তো জলদি আয়।
না না আমি আর যাব না। না না না আমি যাব না!!

চিৎকার করতে করতে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠল রাফি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থেকে দুঃস্বপ্ন দেখছিল। এটাকে কি স্বপ্ন বলবে নাকি বাস্তব বলবে বুঝতে পারছেনা সে। তার অতীতই তাকে দুসসপ্নের মত তাড়া করে বেড়ায় প্রতিনিয়ত। মাদকের ভয়াল ছোবলে জীবনের স্বপ্নগুলো সব দুঃস্বপ্ন হয়ে ধরা দেয় তার মনে।

এমনটা ছিলনা। তারও ছিল একটা সুন্দর সাজানো গুছানো জীবন। বাবা-মা কে নিয়ে স্বপ্নিল একটি পরিবার। সেখানে ছিলনা কোন দুঃস্বপ্নের বসবাস।

রাফি। বাবা-মা’র একমাত্র সন্তান। তার বাবা রফিক সাহেব বড় বেবসায়ি। মা ফিরোজা বেগম সোশ্যাল ওয়ার্কার। তাকা পয়সার কোন অভাব নেই। তার কোন চাহিদা কোনদিন অপূর্ণ থাকেনি। যদিও তার তেমন কোন চাহিদা কোন সময় ছিল না। কারন বড়লোকের ছেলেমেয়েদের চাহিদা এমনিতেই কম থাকে। তাদের সব চাওয়া তো চাওয়ার পূর্বেই পুরন হয়ে যায়। যাক রাফির কোথায় আসি, রাফির ও তেমন কোন চাহিদা ছিলনা। কিন্তু একটা চাহিদা তার ছিল যা সে পায়নি। সে সবসময় বাবা-মা’র সান্নিদ্ধে থাকতে চাইত। বাবা-মা দুজনের ব্যাসততায় তার সে চাহিদা কখনো পুরন হয়নি। জন্মের পর ৬ মাস মাকে কাছে পেলেও বাবাকে তেমন কাছে পায়নি। আর ৬ মাস পর তার প্রমোশন হয়ে আবাস হয় কাজের বুয়ার নিকট। মা আবার বেস্ত হয় তার সোশ্যাল ওয়ার্কে। এভাবেই কেটে যায় সময়। বাল্যকাল বুয়ার সান্নিদ্ধে কাটে। আর কৈশোর কাটে নিজের সাথে একাকি। স্কুল-বাসা-প্রাইভেট টিউটর এভাবেই কাটে সময়। একসময় কৈশোর ও চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। বাবা-মা’র বেস্ততা ও বাড়ে। মাধ্যমিক থেকে পাশ করে যায় কলেজে। প্রথম স্বাদ পায় মুক্ত পরিবেশের। বেড়ে যায় পরিচিতি। বাবা-মা’র অভাব দূর হতে থাকে বন্ধুদের সান্নিদ্ধে।

এভাবেই চলছিল। হঠাৎই ছন্দপতন শুরু হয়। বাবার অনেক টাকা, বন্ধু পেতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। সে প্রথম পাওয়া স্বাধীনতায় বাধনহারা পাখির মত সবাইকে বন্ধু করে নেয়। কিন্তু সেই তাড়াহুরুর বন্ধুত্ব আর বাবা মায়ের বেস্ততা তাকে আজ নিয়ে গেছে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।

টাকার লোভে অনেকেই তার বন্ধু সেজে গেল। নতুনকে খুজে পাবার নেশায় সে পা দেয় বন্ধুদের পাতা ফাঁদে। জড়িয়ে যায় মাদকের বিষাক্ত জালে।

আজ তার নেই স্বাধীন হবার বাসনা। নেই তার বাবা মায়ের বেস্ততা। বিছনার পাশে বসে একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর প্রহর গুনছে দুজন। আর তাকে তার অতিত স্বপ্ন গুলো তাড়িয়ে ফিরছে প্রতিনিয়ত দুঃস্বপ্নের মত।





________________________________________
02

মা আমি গেলাম।
এই রুমি এত সকালে কোথায় যাচ্ছিস এত সকালে। কিছু মুখে দিয়ে যা।
না মা সময় নেই। বাইরে খেয়ে নিব।
কথাটা শুনে মুহূর্তে আঁতকে উঠল যেন সায়রা বেগম। পরক্ষনেই সম্বিত ফিরে পেল।

রুমির বাবা গত হয়েছে আজ ৫ বছর। রুমি আর তার মা এখন এই দুজনই এখন সংসারে। ছিমছাম পরিবার। খুব ভালভাবেই চলছে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন এই সংসার অন্ধকারে ঢেকে যাবার উপক্রম হয়েছিল।

আজ থেকে দশ বছর আগের কথা। তখন রুমির বাবা আমজাদ সাহেব বেচে ছিলেন। নিজের বড় বেবসা। তা নিয়ে ভালই ছিলেন। রুমি তখন HSC পরীক্ষা দিয়েছে । হাতে তিন মাস সময়। এই তিন মাসে সে বন্ধুদের সাথে চলতে গিয়ে কিছু খারাপ সংসর্গে পড়ে যায়। প্রথম দিকে কিছু বুঝতে না পারলেও দিন কয়েক বাদে সায়রা বেগমের কাছে ছেলের কার্যকলাপে সন্দেহ জাগে। এই যেমন মাঝে মাঝে রাত করে বাড়ি ফেরা, দিনভর রুমে শুয়ে বা ঘুমিয়ে থাকা, দেরী করে ঘুম থেকে উঠা। তাড়াহুড়ো করে বাইরে চলে যাওয়া। খাবার এর প্রতি অনীহা,খাওয়ার কথা বললেই বলতো “না মা সময় নেই, বাইরে খেয়ে নিব” (তাই আজ ছেলের মুখে এ কথা শুনে আগের কথা মনে হয়ে গেল)।

ছেলের এই পরিবর্তন সায়রা বেগম এর সন্দেহ হয়। তিনি ছেলের পরিবর্তনের কারন অনুসন্ধানে লেগে পড়েন। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি কাউকে কিছু বলেন নি। এমনকি রুমির বাবাকে ও না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন তার ছেলে ইদানিং নেশা করছে। কথাটা জানতে পেরে তিনি কিছুটা ভীত হলেন কিন্তু ভেঙে পরলেন না। এবার তিনি এই কথা তার স্বামীকে জানালেন। ভেবেছিলেন তার স্বামী হয়ত রাগ দেখাবে। আমজাদ সাহেব কথাটা শুনে রেগেছিলেন বতে তবুও তিনি জানতেন এটা রাগের সময় না। এখন সময় ছেলেকে সুস্থ করে তোলা। যা রাগ দিয়ে সম্ভব না। একটাই মাত্র সন্তান তাদের। আমজাদ সাহেব এখন বেবসায়ে সময় কিছুটা কমিয়ে দিলেন। এ সময়তা তিনি ছেলের জন্য বরাদ্দ করলেন। বাবা-মা দুজনই ছেলেকে চোখে চোখে রাখছে। সরাসরি কিছু না বললেও নেসার খারাপ দিক রুমিকে বুজাচ্ছেন। সে’ই তাদের একমাত্র স্বপ্ন। এতাও বুজালেন। তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরছেন। এতে করে রুমি বাইরে বেশী সময় দিতে পারতনা । আর বাবা- মা কাছাকাছি থাকায় মাদক গ্রহন করাও সম্ভব হচ্ছিল না।

রুমির স্বাস্থ্য কিছুটা খারাপ হয়ে গেল। এভাবে থাকতে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু সেও চাচ্ছিল আর ও পথে না যেতে। কারন সে জেনে গিয়েছে যে কেন ইদানিং তার এত দেখাশোনা হচ্ছে। সে অবাক হয়ে যায় এটা ভাবে যে এত বড় একটা অন্নায় করেছে জেনেও তার বাবা-মা তাকে কিছুই বলল না।এমঙ্কি এটা জান্তেও দিল না যে সে ধরা খেয়ে গেছে। এত টা ভালবাসে তাকে। কিন্তু সে কি দাম দিয়েছে তাদের এ ভালবাসার? নিজের প্রতি তার ঘৃণা জন্মায়। সেই ঘৃণা থেকেই সে প্রতিজ্ঞা করে যত কস্তই হোক সে আর এই ড্রাগস নিবে না।

রুমি নিজেই তার বাবা-মা’র কাছে গিয়ে সব স্বীকার করে ক্ষমা চায়। আমজাদ সাহেব ছেলেকে নিয়ে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে দেন। ৬ মাস পর সুস্থ হয়ে বাবা-মা’র কোলে ফিরে আসে সেই আগের সুস্থ রুমি হয়ে।

আজ আমজাদ সাহেব নেই। রুমিই বাবার বেবসা দেখাশুনা করে। বাবার স্বপ্ন পুরন করার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করছে।

{সন্তানকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বাবা মা কেই হতে হবে একটি সন্তানের প্রথম ও সবচেয়ে ভাল বন্ধু}
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
অজানা আমি KHURSHED ALAM ধন্যবাদ তানভীর vaia . এত ঘভীর vabe পরার জন্য......tobe বানান বিষয়ে যা বলেছেন তা আগেই আমি খন্ডন করেছি . আপনি বোধ হয় খেয়াল করেননি . যাক somaloconar জন্য osongkho ধন্যবাদ . আপনাদের সমালোচনাই আমার লিখার পাথেয় .
তানভীর আহমেদ আসলে একই ক্যাটাগরির দুটি গল্প এখারে রয়েছে যার একটির সাথে অন্যটির সম্পর্ক নেই। ড্রাগসের বিরূদ্ধে একটি ভালো অবস্থান নিঃসন্দেহে। তবে গল্পের বুনন বেশ দুর্বল। ভাষার ব্যবহার খুব ভালো বলা চলবে না। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, বানানের বেহালদশা! চির পরিচিত বহুল ব্যবহৃত শব্দগুলোকে শুধু সচেতনাতার অভাবে (নাকি সচেতনভাবে?) এইভাবে বিকৃতরূপে উপস্থাপনা পাঠকের মন মেজাজ বিগড়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যেমন: বেবসায়ি=ব্যবসায়ী, কারন=কারণ, পুরন=পূরণ, “যাক রাফির কোথায় আস “ বাক্যে “কোথায়” এর পরিবর্তে “কথায়” হবে। সান্নিদ্ধে=সান্নিধ্যে, বেস্ত=ব্যস্ত, তাড়াহুরুর=তাড়াহুড়ার অথবা তাড়াহুড়োর, বেস্ততা=ব্যস্ততা, পরক্ষনেই=পরক্ষণেই, বেচে=বেঁচে, বেসা=ব্যবসা, নেসার=নেশার, বুজাচ্ছেন=বুঝাচ্ছেন, বুজালেন=বুঝালেন, গ্রহন=গ্রহণ, অন্নায়=অন্যায়, এমঙ্কি=এমন কি, জান্তেও=জানতেও, কস্তই=কষ্টই।
Akther Hossain (আকাশ) চমত্কার.থিম নেয়ে লেখা একটি গল্প ! সত্যি বলেছ {সন্তানকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বাবা মা কেই হতে হবে একটি সন্তানের প্রথম ও সবচেয়ে ভাল বন্ধু}
মিজানুর রহমান রানা গল্পটি খুব ভালো লাগলো, শুভকামনা রইলো .
আশা ভালো লাগলো ......
আহমেদ সাবের দুটো বিপরীত পরিণতির গল্প। গল্প হিসেবে কোথায় যেন একটু অপূর্ণতা থেকে গেল।
সূর্য খোরশেদুল, এমন একটা লেখাই পড়তে চাচ্ছিলাম। যেখানে বন্ধুত্বের খারপ দিকটাও আসবে। আসলেই এমন বন্ধুত্ব কখনোই সত্যিকার বন্ধুত্ব হতে পারেনা। এক বন্ধু খারাপ কিছু করলে অন্যদের প্রতিবাদী হওয়া উচিত। গল্পের মেসেজটার কারনে একটা ভাল লাগা সৃষ্টি হলো......... ওয়েলডান।
হোসেন মোশাররফ আপনার গল্পের শেষের মেসেজটিই সবচে গুরুত্বপূর্ণ এবং মনে রাখার মত ......

০৫ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪