শাহীন, রুমন ও বিপ্লব তিন বন্ধু। প্রতিদিন তাদের যাত্রা শুরু হয় একই সাথে। রুমন ও বিপ্লব শাহীনের সহপাঠী ছিল দশম শ্রেণী পর্যন্ত। বার্ষিক পরীক্ষায় উপযুক্ত নাম্বার না পাওয়াতে পরবতর্ী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হতে পারেনি রুমন ও বিপ্লব। শাহীন কৃতকার্য হয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে আপন লক্ষ্যপানে। এদিকে রুমন ও বিপ্লব ডুবে যাচ্ছে সমাজের অসভ্য এক অন্ধগলিতে। যেখানে তারা নিয়মিত মাদক সেবন ও নেশা করে। চলাফেরায় উশৃংখল ভাব। শাহীন অনেক চেষ্টা করল তাদের দু'জনকে লেখাপড়ায় আবার ফিরিয়ে আনতে, কিন্তু তার সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। কিছুতেই তারা শাহীনের কথায় আগ্রহী হলো না। ফিরে এলো না স্বাভাবিক জীবনে। যতই দিন যাচ্ছে ওদের পথ ততই খারাপের দিকে অগ্রসর হতে লাগল। শাহীন ওদের সাথে বন্ধুত্ব ছাড়তে পারল না ঠিকই। কিন্তু ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করল ওদের সকল কর্মকান্ড। দিনের পর দিন তাদের অবস্থার চরম অবনতি হতে লাগল। তাদের পড়াশোনা আর হলো না। এভাবে চলে যাচ্ছে জীবনের সোনালী সময়। এদিকে শাহীন স্কুল গন্ডি পেরিয়ে কলেজে পা দিয়েছে। এখন হাত বাড়ালেই অনেক বন্ধু খুঁজে পাবে। কিন্তু না, তার মনটা সারাক্ষন রুমন ও বিপ্লবের জন্য শূন্যতা অনুভব করে।
এরই মাঝে একদিন ঘটে গেল এক মারাত্নক অঘটন। তাদেরই গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জাফর হাওলাদারের বাড়ী থেকে গভীর রাতে কিছু মালামাল চুরি হয়। গ্রামের সবাই বলল এটা রুমন ও বিপ্লবের কাজ। এর আগেও তারা হাদী বাড়ীর গফুর শেখের ঘর থেকে টেলিভিশন ও মোবাইল সেট চুরি করেছে, ধরা খেয়ে জরিমানা দিয়েছে। না:। তাদেরকে আর এভাবে চলতে দেয়া যায় না। এভাবে চলতে থাকলে গ্রামের দুর্নাম হবে। শক্ত হাতে ওদের প্রতিহত করা দরকার। জাফর হাওলাদার ও বসে নেই। তিনি যথারীতি আইনের আশ্রয় নিলেন। রুমন ও বিপ্লবকে আইনের হাতে সোপার্দ করা হলো। থানায় নিয়ে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনে রিমান্ড মঞ্জুর করে। সেখানে দু'জনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তোদের সাথে আর কে কে ছিল বল হারামজাদা? রুমন ও বিপ্লব অকপটে বলে দিলো শাহীনের কথা। অথচ শাহীন জানতো না তার অগোচরে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কিছুই। পরদিন পড়ার টেবিল থেকে শাহীনকে ও চুরির অপরাধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসব পরিস্থিতির জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিল না শাহীন। কি আর করা, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বরণ করে নিতেই হলো তাকে। চৌদ্দ দিন কারাগারে থাকার পর দশ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে ছাড়িয়ে আনে তার পিতা হাফিজুর রহমান। সেই সাথে চোর নামের সেই ছোট উপাধীটি যোগ হতে ভুল হলো না। এই যেন প্রত্যাশাহীন প্রাপ্তি। বন্ধুত্বের পরিনাম এমন ভয়াবহ হবে একথা শাহীন কোনদিন ভাবতেও পারেনি। ওর জানা ছিল না বন্ধুর জন্য এমন ত্যাগ স্বীকার করার উপমা। শাহীন মনে করতে চেষ্টা করল তার জীবনের এ পরিনামের জন্য দায়ী কে? তার ভুলটি বা কোথায়? কারাগার থেকে জামিন পেয়ে পরদিন বিকালে তাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীর পাড়ে বসে নিজের ডায়েরীর পাতা উল্টিয়ে তার ভুলের অনুসন্ধান করতে লাগল। কিন্তু কোন ভাবেই যেন তার উত্তর মিলছে না। ততক্ষনে তার মামাতো ভাই সোহাগ এসে পিছন থেকে হাত বাড়িয়ে বলল: যা ঘটে গেছে তা নিয়ে আর চিন্তা করে লাভ নেই। আসলে মানুষের জীবনটা বড়ই বৈচিত্রময়। আজ শুধু তোকে একটি কথা মনে করিয়ে দিব- "সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস; অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।" শাহীন বুঝতে পারলো তার নিজের ভুল। সোহাগকে জড়িয়ে ধরে শাহিন চোঁখের পানি আর ধরে রাখতে পারল না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Rahela chowdhury
কোন লেখকই একটি গল্প বা একটি কবিতা দিয়েই তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারেনি।চেষ্টার ফলেই কবি বা লেখকরা
সাহিত্য অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।চেষ্টা থাকলে আপনি একদিন সাহিত্য অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হবেন।
মনির মুকুল
ভালো, তবে এই ভালো নিয়ে বসে না থাকাই ভালো। বিষয়াঙ্গিকে আরেকটু প্রসার আর বর্ণনায় একটু শৈল্পিক ছোয়া আনলে আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য...
শাহ্নাজ আক্তার
চমত্কার একটা থিম নিয়ে লিখেছ ,,, উপস্থাপনা ও বেশ ভালো ছিল , শেষের দিকে মনে হয় আর একটু বড় করতে পারতে, যাই হোক সুন্দর থিমের জন্য ভোট পেলে ......
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।