সুমনের খুব ইচ্ছা চাঁদে যাবার। অনেক দিন আগে ওর বাবা চাঁদে গিয়েছিলো। বাবার মুখে অনেক গল্প শুনেছে ও। রকেটে চরে চাঁদে যাবার গল্প। ওর বাবা গিয়েছিলো রকেটে থাকা একটা ইঁদুরকে দেখাশোনা করবার জন্য। ইঁদুরটাকে নেয়া হয়েছিলো চাঁদের মাটিতে ইঁদুরটা গর্ত খুরতে পারেকিনা পরীক্ষা করবার জন্য।ইঁদুরের প্রশিক্ষণ ও দেখাশোনার জন্য একজন গবেষক ছিলো। সুমনের বাবার কাজ ছিলো ইঁদুরটাকে খেতে দেওয়া , ইঁদুরটার যত্ন করা,ইঁদুর টার রাখার জায়গা পরিষ্কার রাখা। যে কাজি হোক চাঁদে যাবার স্বপ্নতো তার পূরণ হয়েছিলো।সে বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে অফিস পিয়নের চাকুরী করতো। চন্দ্র অভিযানে এমন কাওকে খোঁজাহচ্ছে শুনে নিজেই আগ্রহকরে যেতে রাজি হয়েছিলো তারপর চাঁদে যাবার স্বপ্ন তার পূরণ হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইঁদুরটাকে চাঁদে আর নামানো যায়নি।হায়দার সাহেব সুমনের বাবা ইঁদুরকে দুধ খাওয়াতে গিয়ে রকেটের ভেতর রাখা পটাশিয়াম জাতীয় বিষাক্ত কিছু মিশিয়ে দিয়েছিলো।অবশেষে ইঁদুরটার সমাধি হয় চাঁদে। তাতে কি ইঁদুরটার সমাধি দিতে নিজে তো চাঁদে হেঁটে এসেছে।সে অনেক দিনের পুরনো গল্প। এখন রকেটের সে যুগ চলে গিয়েছে। চাঁদের সাথে সরাসরি সংযোগ ঘটানো হয়েছে। চাঁদের সাথে তার দিয়ে লিফট তৈরি করা হয়েছে, কত নিখুঁত জ্যামিতিক গণনার মাধ্যমে কাজ করা , পৃথিবী ঘুরলেও কোন সমস্যা হয়না । চাঁদে শহর তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বড় বড় কাঁচের ঘর করে তাতে অক্সিজেন দিয়ে চাষ করা হচ্ছে নানা সবজি ও থাকার ব্যবস্থা হয়েছে মানুষের। পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রয়োজনীয় উপকরণ। এমনকি হেঁটে হেঁটে চাঁদে যাবার প্রযুক্তিও তৈরি হয়েছে। মহাশূন্যে তার দিয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে ধরেধরে শূন্যে উড়ে যাবার থেকে নিজেকে রক্ষাকরে যাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেখতে দেখতে বয়স হয়ে এলো সুমনের। চাকুরীতে অবসর নেয়। পেনশনের টাকা পেয়েছে , জমানো কিছু টাকাও আছে। ছেলেরা নিজেদের মতো স্বাবলম্বী,স্ত্রী মারা গেছে আগেই। এখন ইচ্ছা সে একবার চাঁদে যেতে চায়। লিফটে যাওয়া সম্ভব নয় তাতে খরচ বেশি। তাই পেনশনের টাকা দিয়ে একটা হেলমেট ও একজোড়া জুতা কেনে। সাধারণ কোনজুতা না , এতে আছে উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবস্থা । লেজার আছে হেলমেটে দুটি একটি প্রথমে সিঁড়ি তৈরি করে যাতে উচ্চ ম্যাগনেটিক জুতাতে ভর দিতে দ্বিতীয় লেজার দিয়ে পরবর্তী সিরি তৈরি করা হয়। মোটামোটি খরচ কম কিন্তু সময় ও কষ্ট বেশি করতে হয়। কিন্তু যেতে হবেই , জীবনের শেষ সময়ে শেষ বারের মতো প্রথম প্রেমের সোনিয়াকে দেখতে হবে। মেয়েটাকে অনেক ভালবাসতো কিন্তু তখন ছিলো বোকা,ছিলোনা কোন জীবনের স্থবিরতা। হঠাৎ একদিন জানতে পারে সোনিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। অনেক ধনি পরিবারের ছেলে সোনিয়ার হাসবেন্ড , চাঁদের দেশে বাড়ি তাদের। বিয়ের পর সোনিয়াকে নিয়ে গেছে চাঁদে । সত্যি একদিন সুমন সাহেব প্রস্তুতি নিয়ে রওনা হয় চাঁদে। পর্যাপ্ত খাবার নিয়ে নেয় ব্যাগে ,চাঁদে যাবার ভিসা সংগ্রহ করতে গিয়ে পরিচয় হয় একটা ছেলের সাথে।ছেলেটিই শেষ পর্যন্ত ছিলো ওর সফর সঙ্গী।ছেলেটির বয়স সুমন সাহেবের ছেলের বয়সী। পৃথিবীর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরুকরে সে। হাঁটতে হাঁটতে মধ্যাকর্ষন পর্যন্ত পৌছাতে প্রায় দশদিন লেগে যায়। তারপর মধ্যাকর্ষন শুরুর স্টেশনে বিশ্রাম নেয় কিছুদিন তারপর আবার চাঁদের স্টেশনের দিকে যাত্রা করে। অবশেষে পৌঁছে যায় চাঁদে , তখনো একটা তার ধরে সিরিতে দাঁড়িয়ে আছে সে,চাঁদে পা রাখেনি। হঠাৎ একটা মহিলাকে এগিয়ে আসতে দেখতে পায় চাঁদের স্টেশনে উঠতে। পাশের ছেলেটা : কাকু ,আমার আম্মা , আমাকে নিতে এসেছে। চলুন ,চাঁদে পৌঁছে গেছি। কাছে আসতে সুমন চিনতে পায় নিজের পুরনো প্রিয়তমাকে। হঠাৎ উত্তেজনায় কখন যে সে তার ছেরে দিয়েছে বুঝতে পারেনি। সাথে সাথে পরে যায় নিচে। হঠাৎ সুমন দেখতে পায় খাট থেকে নিচে পরে গেছে সে। পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে। গতকাল বিকেলে ওদের বাড়ির পুরনো রাজবাড়ির বাথরুমে বাথরুম করতে গিয়েছিলো। বাথরুমের সিঁড়ি ছিলো বৃষ্টির পানিতে ভেজা , পিচ্ছল , পিছলা খেয়েপরে পা ভেঙে যায়। তারপর থেকে বিছানাতে পরে আছে সুমন সাহেব।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রবিন রহমান
একটু ভালো লাগা ,একটু বিনোদন ,অবসর সময়ের চাহিদা পুরনের জন্য গল্প সাহিত্য ,সেটার উপাদান দিতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি......।।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।