জলকন্যা

কষ্ট (জুন ২০১১)

Rajib Ferdous
  • ২৪
  • 0
আমার অনার্স ফাইনাল ইয়ার পরীৰা শেষ হতেই হাঁফ ছাড়লাম। ঠিক করেছিলাম পরীৰা শেষ করেই সোজা গ্রামে যাব। যতদিন ইচ্ছা থাকবো। মায়ের হাতের রান্না খাব। আর বিকালগুলো কাটাবো তালুকদারদের পুকুর ঘাটে বসে মকবুল মিয়ার সাথে গল্প করতে করতে। মকবুল মিয়া হচ্ছে তালুকদার বাড়ি দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত লোক। গ্রামে যাকে বলে পাহারাদার। কেউ কেউ বলে দারোয়ান। আমাকে পেয়ে মকবুল মিয়ার খুশির কোন সীমা থাকেনা। আমি তার এই আনন্দের কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনা।
ঝকঝকে এক সকালে ঢাকা ছাড়লাম আমার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে। বাড়িতে পেঁৗছেই মাকে জড়িয়ে ধরলাম। মা আমার প্রতি তার অনেকদিনের জমানো ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ কয়েক ফোটা চোখের জল ফেললেন। বাবা ব্যসত্দ হয়ে বাজারে গেলেন। আমি নিশ্চিত তিনি বাজার থেকে ফিরে আসবেন যমুনার ছোট ছোট তাজা মাছ নিয়ে। কারন বাবা জানেন, চিকন চালের গরম ধোঁয়া ওঠা ভাতের সাথে কাঁচামরিচ-পেয়াজ দিয়ে রান্না করা যমুনার ছোট তাজা মাছের চচ্চরি আমি ভীষন ভালবাসি।
দুপুরে আমার সেই প্রিয় খাবার দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে একটু ঘুুমিয়ে নিলাম। যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন বিকেল। মা চা করে দিলেন। চা খেয়ে খুব ফ্রেশ লাগছিল। মনটা চনমনে হয়ে উঠল। তাই মনকে আর ঘরে ধরে রাখতে পারলামনা। হাঁটতে বের হলাম আমার প্রিয় গ্রামের পথে। আমাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে একটু সামনে এগুলেই তালুকদারদের বাড়ি। এখানে তালুকদারদের কথা একটু বলে নেয়া ভাল।
তালুকদার বলতে যাকে বোঝায় তিনি ছিলেন তিন প্রজন্ম আগের সিরাজ তালুকদার। সে অনেক কাল আগের কথা। তখন সিরাজ তালুকদার ছিলেন এই গ্রামের সবচেয়ে বিত্তশালী লোক। তিনি মারা যাওয়ার সময় একমাত্র পুত্র সরফরাজ তালুকদারকে তার সব বিষয়-সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান। সরফরাজ তালুকদার তালুকদারি ছেড়ে ঢাকা পাড়ি জমান। ঢাকাতেও তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য করে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে যান। আর গ্রামে তার বিশাল বাড়ি পাহারা দেয় মকবুল মিয়ার বাবা। বছরে বড়জোর দু'একবার সরফরাজ তালুকদার স্ত্রী-সনত্দান নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসতেন বেড়াতে। তার ছিল এক ছেলে আর এক মেয়ে। মেয়েটি ছিল ছোট। দেখতে পরীর মত সুন্দর ছিল। নাম ছিল হুরী তামজা। হুরী তামজা গ্রামে এলে তাকে দেখার জন্য তালুকদার বাড়িতে মানুষের ঢল নামতো।
অবাক ব্যাপার হলো এই হুরীর জন্য পাগল ছিল আমার বাবা। বাবা ছিল হুরীর বছর তিনেক বড়। হুরীরা বাড়িতে এলে বাবা ওদের বাড়িতে সারাদিন ঘুরঘুর করতো। নানা ফুট ফরমাশ খাটতো। কিন্তু বাবার আসল উদ্দেশ্য ছিল হুরীকে তার প্রতি আকৃষ্ট করা।
একদিন বাবা দুঃসাহসিক একটি কাজ করে বসলো। তার মনের সব ভালবাসা আর আবেগ দিয়ে হুরীর জন্য একটি প্রেমপত্র লিখে ফেলল। আর সেই পত্র গিয়ে পড়ল হুরীর বাবা সরফরাজ তালুকদারের হাতে। ফলে যা হওয়ার তাই হলো। হুরীর বাবা লোক মারফত আমার বাবাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানোর শিৰা দিয়ে ছেড়ে দিলেন। এই ঘটনার ঠিক এক বছর পর তালুকদার বাড়ির শান বাঁধানো পুকুরের শান্তু পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেল সরফরাজ তালুকদারের একমাত্র কন্যা রূপবতী হুরী তামজা। তারপর থেকে সরফরাজ তালুকদার আর কোন দিনই গ্রামে আসেননি।
তখন তালুকদার বাড়ি পাহারা দিত মকবুল মিয়ার বাবা। তার বাড়ি ছিল বরিশালে। প্রথমে সে ছিল সরফরাজ তালুকদারের ঢাকার অফিসের পিয়ন। পরবর্তীকালে বিশ্বসত্দতার কারনে তালুকদার বাড়ির দারোয়ান হয়। মকবুল মিয়ার বাবা মারা গেলে তালুকদার বাড়ির দারোয়ানের দায়িত্ত্ব পায় মকবুল মিয়া। আমি এসব মকবুল মিয়ার মুখ থেকেই শুনেছি বিভিন্ন সময়।
তালুকদার বাড়ির দৰিণ দিকে ছিল মকবুল মিয়ার থাকার জন্য একটি ছাপড়া ঘর। আমি তলুকদার বাড়ির মেইন গেটে দাঁড়িয়ে জোরে কয়েকবার গেটে শব্দ করলাম। কিছুৰন অপেৰা করার পর মকবুল মিয়া এসে গেট খুলে দিল। আমাকে দেখে সে খুবই অবাক হলো। বিষ্ময় নিয়েই বলল, আরে বাবাজি তুমি! এতদিন পর বুঝি আমার কথা মনে পড়লো।
আমি কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসলাম। মকবুল মিয়া আমাকে নিয়ে ব্যসত্দ ভঙ্গীতে তার ঘরে গেল। ঘরে ঢুকে একটি দৃশ্য দেখে আমি প্রায় হোঁচট খেলাম। ঘরের এককোনে টেবিলে বসে পড়ালেখা করছে একটি অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে। বয়স পনের ষোল হবে হয়তো। আমাকে দেখে মেয়েটি পড়া বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে রইলো। মকবুল মিয়া হেসে বললো, বাবাজি, ও হচ্ছে শাপলা। ওর কথা তো তোমাকে আগেও অনেকবার বলেছি। আমার একেবারে ছোট মেয়ে। এবার ম্যাট্রিক দেবে। কিন্তু গ্রামে থেকে পড়ালেখা করতে পারছিলনা। বখাটে ছেলেপেলেগুলান অনেক উৎপাত করে। ওর স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিছিলাম। তাই ওর মা বললো টেস্ট পরীৰাতো শেষ। এখন এই তিনমাস মেয়েকে তোমার কাছে নিয়ে রাখ। না হলে ওর রেজাল্ট ভাল হবেনা। তাই নিয়ে এলাম। কি বল বাবাজি ভাল করিনি?
মকবুল মিয়া কথাগুলো একদমে বলে উত্তরের জন্য আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আমি শাপলাকে দেখতে দেখতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম। বিকেলের শেষ সোনালী সূর্যের আভা জানলার ফাঁক গলে এসে পড়েছিল মেয়েটির সারা মুখে। সেদিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম, এই সাধারনের ঘরে এমন অসাধারনের আবির্ভাব তো কেবল কল্পলোকেই সম্ভব। আমাকে সেই কল্পলোক থেকে বাসত্দবে ফিরিয়ে নিয়ে এলো মকবুল মিয়াই। বলল, বাবাজি কি অসুস্থ?
নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, না আমি ঠিক আছিতো। ভাল করেছেন, শাপলাকে এখানে নিয়ে এসে খুব ভাল করেছেন। ও এখানে থেকেই পড়ালেখা করম্নক। শুধু পরীৰার সময় বাড়ি গিয়ে পরীৰা দিয়ে আসলেই হবে।
আমার কথায় মকবুল মিয়া মনে হয় অনেক খুশি হল। চোখ-মুখ প্রসারিত করে একটি নীরব হাসি হাসলো। আমি সেদিনের মত বাড়িতে চলে এলাম।
তারপর আমি প্রায় প্রতিদিনই তালুকদার বাড়িতে যাই মকবুল মিয়ার সাথে দেখা করতে। মাঝে মাঝে শাপলার পড়ালেখার খোঁজ খবর নেই। কখনো কখনো বাড়ির ভেতরের পুকুর ঘাটে বসে মকবুল মিয়ার সাথে ঢাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করি। সে খুব আগ্রহ নিয়ে এসব শোনে। তার এই আগ্রহ আমার ভাল লাগে।
গ্রামে অনেকদিন থাকবো জেনে একদিন মকবুল মিয়া হাত কচলাতে কচলাতে বলল, বাবাজি যদি কিছু না মনে কর তাহলে একটি কথা বলতে চাই।
আমি মুচকি হেসে বললাম, কি বলবেন নির্দিধায় বলে ফেলুন চাচা।
মকবুল মিয়া মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে বিনীত স্বরে বলল, তুমিতো গ্রামে অনেকদিন থাকবে। আমার মেয়েটাকে যদি একটু আধটু পড়াটা দেখিয়ে দিতে, ও অনেক ভাল ফল করতো। আমারতো আর তেমন টাকা পয়সা নেই যে মাস্টার রেখে দেব।
আমি কিছুৰন ভেবে রাজি হয়ে গেলাম। তারপর থেকে আমি প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় শাপালাকে এক আধঘন্টা অঙ্ক আর ইংরেজিটা কেবল দেখিয়ে দিতাম। বাড়িতে আমি এই কথাটি চেপে গেলাম। পড়াতে গিয়ে বুঝলাম শাপলা ছাত্রী হিসেবেও বেশ ভাল।
প্রায় আড়াই মাস পর মকবুল মিয়া শাপলাকে নিয়ে বরিশাল চলে গেল। বলে গেল মেয়ের পরীৰার পর তাকে নিয়ে আবার সে ফিরে আসবে। এখানে রেখে মেয়েকে কলেজে ভর্তি করে দেবে। মকবুল মিয়া চলে যাওয়ার সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে তালুকদার বাড়ির মেইন গেটের চাবি আমাকে দিয়ে গেল। বলে গেল, বাবাজি তোমার খারাপ লাগলে গেট খুলে ভেতরে গিয়ে পুকুর পাড়ে বসে থেকো।
এরপর দিন যেতে থাকলো। গ্রামে আমার তেমন বন্ধুবান্ধব ছিলনা। যারা ছিল তারা সবাই শহরে। তাই আমার দিনগুলো কাটতে লাগলো অলস, কস্নানত্দিকরভাবে। আমি গ্রামে সারাদিন এলোমেলোভাবে ঘুরেঘুরে সময় কাটাই। আর অপেৰায় থাকি কবে মকবুল মিয়া আসবে তার মেয়েকে নিয়ে। তারপর একদিন আবিস্কার করে ফেলি, আমার এই আকুলতা যতটা না মকবুল মিয়ার জন্য তারচেয়েও বেশি তার মেয়ে শাপলার জন্য। আমি আসলে আমার চেতনে বা অবচেতনে শাপলাকে মনের কোন গহীন চোরা কুঠিতে ঠাঁই দিয়েছি।
রাতে কেবল সেই মেয়ের ছবি চোখে ভাসে। তাকে নিয়ে আকাশ পাতাল ভেবে রাত কাটাই। কিন্তু কাউকে কিচ্ছু বলিনা। এ এমন এক সম্পর্ক যে কাউকে বলাও যায়না। এমনি আমাদের সমাজ। আর আমার বিবেক এই সমাজের কাছেই বন্দী হয়ে যায়। আসলে তাকে হতে হয়। এটি প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম।
দিনগুনতে গুনতেই একসময় এসএসসি পরীৰা শেষ হয়ে যায়। আমি অস্থির হয়ে যাই। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক বুক আশা নিয়ে ছুটে যাই তালুকদার বাড়িতে। কিন্তু মকবুল মিয়ার দেখা পাইনা। প্রতিদিন গিয়ে বসে থাকি পুকুর পাড়ে। অভিমানে পুকুরের পানিতে ঢিল ছুড়ি। এভাবে একদিন ঢিল ছুড়তে ছুড়তেই সিদ্ধানত্দ নেই চিঠি পাঠাব মকবুল মিয়ার বাড়িতে। পরৰনেই মনে হয়, চিঠি পাঠাবো কিভাবে? আমি তো তার বাড়ির ঠিকানা জানিনা। মকবুল মিয়া একদিন শুধু কথা প্রসঙ্গে বলেছিল, বুঝলা বাবাজি, ধান, নদী আর খাল, এই তিনে বরিশাল। মকবুল মিয়ার ঠিকানা বলতে তো আমার কাছে কেবল ওটুকুই। কিন্তু এটা কি কোন ঠিকানা হলো? এই ঠিকানায় কি চিঠি যাবে। না যাক, তবু আমি লিখবো। তবু আমি চিঠি পাঠাবো।
আমার কি হয়ে যায় জানিনা। একরাতে দীর্ঘ এক চিঠি লিখে ফেলি। কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো, চিঠিটা আমি মকবুল মিয়াকে না লিখে, তার মেয়ে শাপলাকে লিখি 'প্রিয় শাপলা' সম্মোধন করে। তারপর সেই চিঠি বুক পকেটে রেখে দেই যত্ন করে। প্রতিদিন তালুকদার বাড়ির পুকুর ঘাটে বসে সেটা পড়ি। তারপর পুকুরের কাকচৰু জলের দিকে তাকিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলি।
এরকম একদিনের ঘটনা। সেদিনও আমি পুকুরপাড়ে বসে প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে শাপলাকে লেখা সেই চিঠিটা পড়ছি। চারদিক নিরব-নিসত্দব্ধ। এমন সময় পুকুরের পানিতে মৃদু একটি কম্পন শুরম্ন হল। আমি পড়া বন্ধ করে কিছুটা ভয় আর কৌতুহল নিয়ে পানিতে তাকালাম। কম্পন থেকে এবার ঢেউ তৈরী হল। তারপর ক্রমশ সেই ঢেউ বড় হতে হতে পানিতে ঘূর্ণন তৈরী হল। ঘটনার কিছুই আমি আঁচ করতে পারছিলামনা। প্রচন্ড ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম। দৌঁড়ে পালাতে গিয়েও পারলামনা। মনে হলো পা দু'টো যেন পেরেক মেরে মাটিতে গেঁথে আছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি যখন বিধ্বসত্দ, বিপর্যসত্দ, ঠিক তখনি আমাকে অবাক করে দিয়ে পুকুরের মাঝখানে একটি ষোড়শী মেয়ের অর্ধেকটা ভেসে উঠলো। আমার দিকে তাকিয়ে সে হাসছে। অদ্ভুত সুন্দর সেই হাসি। দৃশ্যটি দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। যে মেয়েটি ভেসে উঠেছে সে আর কেউ নয়, মকবুল মিয়ার মেয়ে শাপলা!
তাৎৰনিকভাবে আমার মনে হাজারটা প্রশ্ন এসে ভিড় করলো। শাপলা কি তাহলে বাড়ি থেকে এসেছে? আমাকে ভড়কে দেয়ার জন্য নিশ্চয় এই ফন্দি করেছে। আগে থেকেই হয়তো পুকুরে ডুব দিয়ে ছিল। মেয়েটি তো আচ্ছা পাজি। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। ফ্যাস ফ্যাসে কন্ঠে কোনমতে বললাম, শাপলা তুমি কখন এলে? চাচা কোথায়? আমাকে এভাবে ভয় পাইয়ে না দিলেও পারতে।
এবার মেয়েটি আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে বললো, আমি তো শাপলা নই। আমি হুরী তামজা। আমি এই পুকুরেই থাকি। পুকুরের তলায় আমার ঘর বাড়ি। অনেকদিন হল লৰ্য করছি তুমি এখানে এসে বসে থাকো। ভাবছিলাম তোমার সাথে একদিন দেখা দেব। তাই আজ দিলাম।
আমি কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, কেন ফাজলামি করছো। উঠে এসো পিস্নজ।
এবার মেয়েটি রিনরিনে হাসি দিয়ে বলল, তুমি সত্যি ভুল করছো। আমি শাপলা নই। আমি হুরী তামজা। তবে শাপলার সাথে আমার প্রতিদিন দেখা হয়। ও এই পুকুরের তলাতেই থাকে। আমরা দুজন খুব ভাল বন্ধু। তুমি কি ওকে খুব ভালবাস? তুমি চাইলে আমি তোমার চিঠিটা ওর কাছে পৌঁছে দিতে পারি।
মেয়েটির কথায় আমি এবার রীতিমত ভড়কে গেলাম। এ তো অবিশ্বাস্য! ভয়ে দৌঁড়ে গেলাম মকবুল মিয়ার ছাপড়া ঘরের কাছে। পিছন থেকে মেয়েটির সুন্দর অথচ ভয়ংকর হাসির শব্দ শুনতে পেলাম। মকবুল মিয়ার ছাপড়া ঘরের কাছে গিয়ে দেখলাম সেখানে আগের মতই তালা ঝুলছে। এবার আমি যা বোঝার বুঝে নিলাম। সিদ্ধানত্দ নিলাম এখানে আর এক মুুহুর্তও নয়। দৌঁড়ে বাড়ির দিকে যেতে গিয়ে মনে হলো চিঠিটা পুকুর পাড়ে ফেলে এসেছি। সাহস করে সেখানে আবার গেলাম। গিয়ে দেখলাম পুকুরের পানি আগের মতই শানত্দ। কোথাও কিচ্ছু নেই। চিঠিটাও কোথাও খুঁজে পেলামনা। পানিতেও নেই।
বাড়িতে পুরো ঘটনাটা চেপে গেলাম। সেই রাতে আমার প্রচন্ড জ্বর হলো। সারারাত জেগে মা আমার মাথায় জলপট্টি করলেন। এর ঠিক দুই দিন পর বাবার কাছে কথাটি শুনলাম। গত মাসে মকবুল মিয়া তার মেয়ে শাপলাকে নিয়ে তালুকদার বাড়িতে ফেরার পথে মেঘনা নদীতে লঞ্চ ডুবে বাবা মেয়ে দু'জনেই মারা গেছে। মকবুলের লাশটি তিনদিন পর ভাটি থেকে উদ্ধার করা গেলেও শাপলার লাশ কোথাও পাওয়া যায়নি। মকবুলের বড় ছেলে ঢাকায় তালুকদারদের অফিসে পিয়নের চাকরি করতো। সে-ই এতদিন পর এই খবর নিয়ে এসেছে। এখন থেকে মকবুলের এই ছেলেটিই নাকি তালুকদার বাড়ি দেখাশোনা করবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আক্তারুজ্জামান অবাস্তব ঘটনাকে লেখনীতে নিয়ে আসাটা সাহিত্য স্বীকৃত ব্যাপার| এরকম অসংখ্য লেখা প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হচ্ছে| আমার কাছে আপনার লেখাটি ভালো লেগেছে|
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) ভাই রাজিব ফেরদৌস আপনার গল্পটি পড়লাম আমার কাছে কিছুটা অবাস্তব মনে হলো ।
sakil একজন গল্প লেখক বাস্তবতা থেকে যেমন অনেক নির্যাস সংগ্রহ করে লেখেন তেমনি তকে অনেক সময় কল্পনার আশ্রয় ও নিতে হয় . রাজীব ভাইয়া ও বাস্তবত থেকে গল্পের থিম সংগ্রহ করলে ও কিছু কালপনিক বিষয় তুলে এনেছেন . ভালো গল্প . কারণ এটাই লেখার মেজিক আমি মনে করি . বাস্তবের সাথে মিলে গেলে লেখকের চিন্তা সক্তি উপলব্দি করা যায় না . শুভকামনা রইলো যথরীতি .( পরিশেষে একটা কথা না বে পারছি না এখানে গল্প গুলোর পাঠক অনেক কম , কেন তা জানি না )
আবু ফয়সাল আহমেদ বাহ, এইত বেশ হয়েছে! আয়ে টুইস্ট তাই চাইছিলাম. কিছুটা অতিপাকৃত বেপার থাকলেও অতার ব্যাখা করা যায়, আবার ব্যাখা না করলে গল্পের মাত্র হয় অন্য রকম. ভালো লাগলো.
সূর্য হুরী তামজার প্রতি বাবার প্রেম পর্বটা পড়ে একটা সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি গল্পে এর পরিনতি না থাকে এটা নিয়ে কিছু কথা লিখব। কিন্তু শেষ অংশে এসে যে গল্পটা এভাবে মোড় নিবে তা কিন্তু ভাবিনি। ছোট গল্প হিসাবে খুবই ভাল বলা যায়....................... (তবে বাবা-ছেলের ভালবাসার দুজন মানুষই জলকন্যা হয়েছে। লেখককে অনুরোধ করব এদের অগ্রজরা যেন তালুকদার বাড়ীর সাথে সংস্লিষ্ট কারো প্রেমে না পরেন। তাহলে হয়ত একটা জলকন্যা জেনারেশন চালু হয়ে যাবে........ হা হা হা হা হা হা হা )
অবিবেচক দেবনাথ বানান ভুল বাদ দিলে অসাধারণ লেখা।

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪