ফেরারি জীবনের রেফারি কেউ হতে চায়না। পিন্টু দেওয়ান উত্তরার রাজলক্ষ্মী সুপার মার্কেটে আবার বেফাঁস কিছু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে মাত্র কয়েক দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে।
শেফালি টের পেয়ে বললোঃ
- ও ল্যাডাব্যাডা মিনষে, অমন আওলা ঝাওলা জীবন লইয়া আর কত কু-কাম কইরা ব্যাড়াইবি।
শেফালি পিন্টু দেওয়ানের নব্য আবিষ্কার। এই শেফালিও কিন্তু হেরোইন ব্যবসার মক্ষি স¤্রাজ্ঞী। পালিয়ে পালিয়ে এ বস্তি, সে বস্তি করে সে তার ব্যবসা চালায়। ফলে তার জীবনটাও এখন ফালা ফালা। টাকা কামাই সে করে ঠিকই, কিন্তু ঠোলাদের নাকের নিশানা সব সময় তার দিকেই থাকে।
পিন্টু চুরুটে আগুন দিয়ে বলেঃ
- দ্যাখ শেফু, তুই কিন্তু ম্যালা বক বক করছিস। আমার কাম আমারে করতে দে।
- তুই শালা চৌরাস্তার চোর। আমার কথা খান হুনলে হুন, না হুনলে ফুইটা যা।
শেফালি পিন্টুকে শাঁসায়।
কিন্তু পিন্টুর কোন উত্তর নেই। সে ঠাঁই দাঁড়িয়ে মুখভর্তি ধোঁয়া ছাড়তে থাকে।
শেফালি এবার গজ গজ করতে করতে নিজেই সেখান থেকে চলে যায়।
আসলে শেফালির ব্যারামটা কোথায় তা পিন্টু এত দিনে কিন্তু ধরে ফেলেছে। শেফালি একে দু’য়ে দুই ¯^ামী পাল্টিয়েছে। এখন সে পিন্টুর পিছু নিয়েছে। যদিও সে মুখে কিছু বলছেনা, কিন্তু পিন্টু ঠিকই জানে কোদালে কাটা কেঁচোর মত এই হেরোইন স¤্রাজ্ঞীর জীবনটা এখন পিন্টুর জন্য ধড়ক ধড়ক করছে।
বেগানা আওরাত!
পিন্টু হেঁটে যাওয়া শেফালির উদ্দেশ্যে বলে।
এর মধ্যে শেফালি আবার ঘুরে আসে।
এবার সে পিণ্টুকে বলেঃ
- ল’ গিয়ে আমার সাথে আমার বস্তিতে যাইবি।
- ক্যান, যামু ক্যান? তোর সাথে গেলে আমার আজকার কাম খানা কইরা দিব কে? তুই আমার প্যাটের আগুনটা নিবাইয়া দিতে পারবি?
পিণ্টু তার পেটটা শেফালিকে হাত দিয়ে দেখায়।
শেফালি রাজলক্ষি মার্কেটের লোক জনের ভিড়ের জন্য এবার পিন্টুকে প্রায় ফিস ফিস করে বলেঃ
- আমার সাথে আমার বস্তিতে গেলে তোরে পুরিযার পুরিয়া ডাইল খাওয়ামু, আমার শরীরের মহব্বতের গোস্তো খাওয়ামু, তারপর..........
পিন্টু শেফালিকে হাতে ধরে টপাটপ রাজলক্ষি মার্কেটের তিন তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসে। তারপর আলাউদ্দিন টাউয়ারের সামনে এসে দাঁড়ায়।
এরপর সে একটু জোরেই শেফালিকে বলেঃ
- এই ধ্যাবড়া মাগী, তুই এখনতরি তোর মহব্বতের গোস্তো আর কতজনরে খাইতে দিছস?
- দ্যাখ পিন্টু চোরা, তুই আমারে এমন কইরা কথা ক’বিনা। আমি তোরে মহব্বত করি দেইখা তুই আমারে এমুন কইরা কথা ক’বি?
হেরোইন স¤্রাজ্ঞী শেফালি, যে শেফালি পুলিশকে ঘোল খাইয়ে হেরোইনের ব্যবসা করে, সে এবার অসহায় হয়ে পিন্টুর সাথে কথা বলে।
তারপর সে গজ গজ করতে করতে নিজেকে বলেঃ
- শালা পিন্টু চোরা, তুই আমার মহব্বতের ফাঁকে আমারে অসহায় পাইয়া.........
হঠাৎ পুলিশের বাঁশী।
শেফালি আর পিন্টু দু’জনে দু’দিকে দৌড় দেয়। কিন্তু নিগার প্লাজার সামনের রাস্তায় শেফালি পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়।
ওদিকে পিন্টু, শেফালির ভাষায় পিন্টু চোরা, পুলিশের বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে এয়ারপোর্টের পাশে বলাকা বিল্ডিং এর গেট টপকিয়ে সেখানকার লেক পাড়ে চলে আসে। তারপর একটি ফুল গাছের ঝোপের ভিতর বসে আনেক করে কাঁদে। নিজের জীবনটা এখন তার কাছে অসহায় লাগে। সারা জিন্দেগী সে জেল খেটে আর পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এর ফাঁকে চুরি-চামারি, ঠকবাজি, লুটপাট সব কাজই সে করেছে। ফলে বৌ, ছেলে মেয়ে, সংশার সেই কবেই তার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।
এখন যদি শেফালি তাকে একটু আশা দিল কিন্তু...........
আবারো পুলিশের বাঁশী। তারপর হাত কড়া।
- শালা ঠোলায় আমারে অসহায় করে ছাড়লরে।
পিন্টু দেওয়ান, সেই ফেরারী পিন্টু দেওয়ান, এবার কঠিনভাবে অসহায় বোধ করে পুলিশের উপর মনে মনে তার ঝালটা ঝাড়ে।
এবার এক সাংবাদিক সব কিছু জেনে থানাতে গিয়ে ওসিকে বললোঃ
- ওসি সাহেব, আপনার কি জানা আছে এই পিন্টু দেওয়ান এখন অসহায়? তাকে দয়া করে ছেড়ে দিন।
পুলিশ সদস্যটি উল্টো সাংবাদিককে প্রশ্ন রেখে বললোঃ
- আপনার কি জানা আছে আমরা আইনের কাছে অসহায়?
৩০ মে - ২০১৪
গল্প/কবিতা:
২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪